গত জুনে টেকব্রিজওয়ার্ল্ডের অধীনে আইস্টেপ(iSTEP- Innovative Student Technology ExPerience) শিক্ষানবীশ হিসেবে চট্টগ্রামে কার্নেগী মেলন ইউনিভার্সিটির (সিএমইউ) পাঁচ সদস্যের একটি দল দুটি প্রকল্পে কাজ করার জন্য এসেছে।
টেকব্রিজওয়ার্ল্ড মূলত সিএমইউর রোবোটিক ইনসটিটিউট এর অধীনে একটি গবেষক দল যাদের মূল লক্ষ্য হল উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যকার বিবাদমান প্রযুক্তিগত বিভেদ দূর করা।তাদের অধীনে আইস্টেপের উদ্যোগটি প্রথম শুরু হয় ২০০৯ সালে যার অন্যতম লক্ষ্য হল সিএমইউর শিক্ষার্থীদের অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের উন্নয়নের জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সৃজনশীলভাবে ব্যবহারের অভিঞ্জতা দান। জুন থেকে অগাস্ট পর্যন্ত মোট দশ সপ্তাহ উল্লেখিত দলটি এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন (এইউডব্লিউ) এবং এনজিও ইপসার (ইয়াং পাওয়ার ফর সোস্যাল একশান) সাথে যৌথভাবে প্রকল্প দুটো সফল করার জন্য কাজ করছে।
প্রকল্প দুটির একটি হল ইংরেজী শিক্ষার একটি মোবাইল গেমস উদ্ভাবন করা, যেটি বাংলা সংস্কৃতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ন হবে। অন্য প্রকল্পটি হল কম খরচে ব্রেইল লিখন শিক্ষার সহায়ক যন্ত্র উদ্ভাবন যা বাংলা ব্রেইল লিখন শিক্ষার কাজেও ব্যবহার করা যাবে।
এই ধরণের সফটওয়ার বাজারে অনেক থাকলেও ইংরেজী শিক্ষার এই মোবাইল গেমসটি মূলত শিক্ষকের সহযোগিতার জন্য ডিজাইন করা হলে। যেহেতু শিক্ষার্থীদের জন্য কম্পিঊটারে ব্যবহার করাই সহজ। এখন এটি কম্পিঊটারে ব্যবহার করার উপযোগী করা হয়েছে। আমাদের পরিকল্পনা গুলো এভাবেই পরিবর্তিত হয়।
অন্যদিকে ব্রেইল লিখন শিক্ষার সহায়ক যন্ত্রটির কাজ প্রায় সম্পন্ন । আমরা হয়ত অনেকেই জানি না ব্রেইল লিখার কত সমস্যা।দৃষ্টি প্রতিবন্দীরা সাধারণত ব্রেইল পদ্ধতিতে লেখাপড়া করে যেখানে স্লেট এন্ড ষ্টাইলাসের সাহায্যে তারা লিখে থাকে। স্লেট এন্ড ষ্টাইলাসে স্লেট হচ্ছে দুইটি কাঠ বা প্লাস্টিকের বোর্ড উপরে নিচে করে সংযু্ক্ত থাকে। উপরের বোর্ডটিতে কিছু আয়তাকার ছক থাকে এবং নিচের বোর্ডটিতে উপেরের বোর্ডের আয়তাকার ছকগুলো্র ঠিক নিচে ৬টি ডট থাকে। শিক্ষার্থী্রা এই দুই বোর্ডের মাঝখানে একটি পুরু কাগজ রেখে ষ্টাইলাস (একটি পিন যার সাহায্যে কাগজ ছিদ্র করা হয়) এর মাধ্যমে লেখে। লেখা শেষ হয়ে গেলে পৃষ্ঠা্টিকে স্লেট থেকে বের করে পৃষ্ঠা্টির অপর পিঠে পড়তে হয়।
ঠিক আয়নায় কোন লিখা দেখানো হলে আমরা যেমনটি উল্টো ভাবে দেখি।
এই ব্রেইল পদ্ধতির প্রধান বাধা হল ব্রেইলে যে ৬টি ডট আছে তা নিয়ে শিক্ষার্থী্রা বিভ্রান্ত হয়ে পরে বিশেষ করে নতুন শিক্ষার্থী্রা। আর এই বিভ্রান্তি দূর করতেই ব্রেইল লিখন সহায়ক যণ্ত্রের উদ্ভাবন। এই যণ্ত্রটি কম্পিউটারের সাথে সংযুক্ত করে চালনা করতে হয়। যণ্ত্রটিতে রয়েছে অডিও সিস্টেম যার মাধ্যমে শিক্ষার্থী্কে সব ধরনের নির্দেশনা দেওয়া হয়।
যণ্ত্রটির পরীক্ষামূলক ব্যবহারের জন্য ইপসার পরামর্শে একটি দৃষ্টি প্রতিবন্দীদের স্কুলে ইতোমধ্যে কাযর্ক্রম স্বম্পন্ন হয়েছে ।উল্লেক্ষ্য যে, যণ্ত্রটি উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণতার বিষয়টি বিবেচনায করা হয়েছে। যদিও দৃষ্টি প্রতিবন্দীদের জন্যে যণ্ত্রটি আশার আলো জ্বালিয়েছে কিন্তু বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশে যেখানে কম্পিউটার অনেকের কাছে স্বপ্ন । অন্যদিকে বিদ্যুৎ সরবরাহের অবস্থা আমাদের অজানা নয়। যার ফলে এখন এই যণ্ত্রটিকে কম্পিউটারের সাহায্য ছাড়া ব্যবহারের উদ্দ্যেশে প্রক্লপটির মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে।
এই প্রকল্প দুটি আরও সফল হতে পারে যদি আমরা বিভিন্ন প্রাথমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ব্যবহারের সু্যোগ হয়। এই স্বপ্নটি হয়ত বাস্তবায়ন করা সম্ভব কিন্তু এই ডিজিটাল বাংলাদেশে কয়টি স্কুলে কম্পিঊটার আছে। থাকলেও বিদুৎ থাকবে কিনা তার নিশ্চয়তা কোথায়?
আর ও তথ্যের জন্য:
http://www.techbridgeworld.org/istep/
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে জুলাই, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:০০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




