মনে আছে লেলিহান শিখা, জঙ্গল পোড়ানো যজ্ঞের হুংকার? সেই একই বলদর্পী দখল মত্ততা আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে তোমার উচ্ছ্বাস কেড়ে নিচ্ছে, উদ্দাম তরঙ্গের মাঝে বিছিয়ে কাঁটা, তোমাকে ক্ষতবিক্ষত করে নিঃসাড় মাংসের মতো কেটে কেটে বাজারে বিকোচ্ছে বহুদিন। আর এখন তোমার দমবন্ধ কাতর নিশ্বাসের ফিনকি দিয়ে গড়িয়ে পড়া অবশিষ্টাংশটুকু প্রাচীরে নিক্ষিপ্ত হবে, গুহার অভ্যন্তরে পঁচিয়ে হাড-খুলি জাদুশক্তি সংগ্রহ করবে নতুন দেবতারা।
তাকিয়ে দেখ কতকাল তোমার সহদোরা সতীর্থরা বুকের পাজর ভাঙা বেদনায় বিষাক্ত চৌচির, তুমি জান এটা সেই বিরহের কাল নয়; বিচ্ছেদ ধার্য করে তোমার নাকফুল বালা স্রোতস্বিনী কেশরাশি ছিঁড়ে খুবলে নিয়ে গেছে তারা। তোমার সঙ্গে ছিল মাতৃমঙ্গলের পলি, প্রাণের পুষ্টি, ঋতুজাগরণের সিক্ত ধারা। আগমন ব্যকুলতায় উছলে যতটুকু প্রদক্ষিণ করার ইচ্ছা হতো তাতে অবাধে নাড়িনক্ষত্রের কাছে তোমার দেহস্থিত বার্তা পৌঁছে যেত। অতপর প্রশান্ত নাইয়র শেষে থিতু হয়ে জড়ো হতে মহোনায়-- বঙ্গোপসাগরে। সংবৎসর উৎস ও গন্তব্যের এই চক্রাকার চলনে মাতৃবক্ষে যে ঐশ্বর্য তুমি ঢল ও প্লাবনে ছড়িয়ে দিতে পার তাতেই ডাকাত পড়ে, পাহারায় বসে সাদাচোখ।
সবলে প্রবাহিত শাখা-প্রশাখায় স্বচ্ছন্দ হিল্লোলভরা তোমার প্রতিটি পথ কাঁটামুক্ত নির্বিঘ্ন করার রুকু মওলানা ঠিকই ধরেছিল, বাধাহীন প্রাণাবেগ অটুট রেখে তোমাকে নিজের নিয়মে আবাহন করেছিল তাঁর মোনাজাত। তিনি তাঁর রবের স্ব-ভাব-- রবুবিয়াতের দিকে মুখ রেখে তোমার অস্তিত্বের জাত ও সিফাত সাফসাফ অন্তরে উপলব্দি করেন। সে আলোতে এখনো অনেকদূর দেখা যায়।
তুমিই শিবকে বল, এ পাথেয় সম্বল করে তোমার বিনীত-সন্তানরা যেন লালন ও সুরক্ষার লাঙ্গল হাতে ফের বর্ষায় মাঠে নামে, রাবনের প্রতিরোধি হাত ধরে নতুন দেবতাদের কোপানল শেষবারের মতো নিভিয়ে দিতে পারে।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




