somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একাল ও সেকাল (পর্ব-১)

২২ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অ আ লেখালেখি আরেকটি প্রজেক্ট শুরু হল। আমরা সবাই একটা সময়ের সাক্ষী । আমাদের বড় হয়ে যাওয়ার পিছনে অনেকগুলো গল্প থাকে। যেগুলো আজকের বড় হতে থাকা ছেলে মেয়ের কাছে অবাস্তব ও অলৌকিক মনে হতে পারে। তবু অনেক কিছু শেখার থাকে। জানার থাকে। সেসব কথাগুলো আমাদের সবার কাছে পৌছে দেওয়াটা খুব জরুরী। নতুন প্রজম্ম যাতে ভুল পথে চলে না যায় সে দিক নজর রাখা আমাদের দায়িত্ব।

একাল ও সেকাল (পর্ব-১)
-------------------------
প্রথমবার স্কুল পালালাম। আমার মত ছাপোষা ও ভীরু ছেলের মতন স্কুল পালানোটা রীতিমতন ভয়ঙ্কর কিছু। বাবা রোজ অফিস যাওয়ার পথে আমাকে স্কুলে নামিয়ে দিয়ে যান। আজ ক্লাসে ঢুকে পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে গেলাম। শরীর যে খারাপ ছিল তাও না। আমার একটা নতুন বন্ধু হয়েছে ওর নাম নয়ন। আমাদের দু’জনের নামের সাথে মিল থাকায় সাতদিনের মাথায় গাঢ় বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছিল। নয়নের কথা মতন স্কুল থেকে প্রথমবার পালালাম। নয়ন থাকত স্কুলের কাছের কলোনীতে। তাই পালিয়ে গিয়ে ওর বাসায় গেলাম। ওদের বাসাটা কেমন যেন অগোছানো। বেশীক্ষন থাকি নি। বেরিয়ে বাড়ী চলে আসলাম। মা আমাকে দেখে বকা দিলেন। পরে আদর করলেন, ছেলের বোধহয় শরীর ভালো না।

পরের দিন আমাকে ক্লাস শিক্ষক ডেকে বললেন, কাল স্খুলে আসো নি কেন? আমি দুরুদুরু কম্পনে বললাম, ”শরীর খারাপ করেছিল”। স্যার বললেন, কাল বাবার কাছ থেকে সাইন নিয়ে অনুপস্থিতির দরখাস্ত নিয়ে আসবে। জীবনের প্রথম মিথ্যা কথা বলা শুরু। নয়ন আমার পিছনে বসে মুচকি হাসছিল। আমার ভিতর অপরাধবোধ হচ্ছিল। তখন ঠিক করলাম আর পালাবো না। অতঃপর মাসখানিক পড়াশুনা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে গেলাম। একগাদা হোমওয়ার্ক। সামনে রোজা চল্লিশ দিনের একটা বড় বন্ধ আছে তাই অনেক পড়ার চাপ। স্কুল খুলে পরীক্ষা। স্কুল ছুটি শেষে আজকাল মা আসতে পারে তাই রোজ আমার প্রিয় কিছু সহপাঠিদের নিয়ে রেললাইন দিয়ে হাটতে হাটতে বাড়ী ফিরি।

আজ স্কুল বন্ধ হয়ে যাবে। স্কুল ছুটির পর নয়ন বললো, আজ আমাদের বাড়ীতে তোর দাওয়াত। আমি অবাক হলাম, বলা নেই কওয়া নেই, হঠাৎ দাওয়াত। না করতে পারলাম না। একটু খারাপ লাগলো এই ভেবে মা রোজ আমার জন্যে খাবার বানিয়ে রাখে আমি বাড়ী ফিরে সেগুলো গোগ্রাসে গিলতে থাকি প্রতিদিন। নয়নদের বাড়ীতে ফোন ছিল না। আজ খাব না, এই কথাটা মাকে জানানো গেল না। মা আমার জন্যে খাবার নিয়ে অপেক্ষা করবে। ভয় ঢুকে গেল। আমি আজ শেষবারের মতন নয়নের বাসায় গেলাম গিয়ে দেখি একদল ছেলে বসে সিগারেট খাচ্ছে। পাশে ছড়ানো ছিটানো বিরিয়ানীর প্যাকেট, কাঁচের বোতল ভর্তি কোক। হঠাৎ চোখে পড়ল একটা ছেলে নেতিয়ে পড়ে আছে। পাশে সিরিঞ্জ পড়ে আছে। নয়ন আমাকে রেখে পাশের ঘরে গিযেছিল। আমি তখন বুঝতে পারলাম আমি ফেঁসে গেছি নেশাখোরদের ঘরে। ওদের বাড়ীটা এক তলা, আরো কয়জন আসবে বলে মূল দরজার ছিটকানী খোলা ছিল। আমি বাথরুমের কথা বলে পালিয়ে গেলাম। সেদিন যেভাবে স্কুল পালিয়েছিলাম। সেই পালানোর সুবাদে আজকে আমি শিক্ষিত মানুষ হতে পেরেছি। আমার মতন অনেকে আছেন যারা কখন পালাতে পারেন না, চান না তখন তাদের জীবন থেকে ছুটি নিতে হয়। তাদের পরিবার ধ্বংস হয়ে যায়।

আজ যারা বাবা-মা, অভিভাবক তাদেরকে আমি অনুরোধ করব, আপনার ছেলেমেয়ে কাদের সাথে মিশছে তাদের সম্পর্কে খবর রাখুন। তাদের বাড়ীতে যান। তাদেরকে অভিভাবকসহ বাড়ীতে দাওয়াত করুন। নিয়মিত স্কুল শিক্ষকদের সাথে যোগাযোগ রাখুন। ছেলে মেয়েদের সাথে সব কিছু শেয়ার করুন। ওদেরকে কথায় কথায় বকতে যাবেন না। বন্ধু হয়ে যান। দেখবেন ওরা আপনাকে গর্বিত করবে দারুন কিছু করে।

অয়ন আহমেদ
২২ই আগষ্ট, ২০১৩

ayondiary.wordpress.com
ayonphotography.wordpress.com
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×