somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দ্যা মিনিমাম ওয়েজে'স এন্ড এসি রুমে আতেলদের মহা মসকারা X(

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সকালবেলা অফিসে লগইন করে দেখি শ'দুয়েক ডেক্সের মধ্যে অর্ধেই ফাঁকা কারন কি খুঁজতেই জানলাম পোশাকশ্রমিকদের বিক্ষোভ-অবরোধের কারনে ঢাকায় যানচলাচল একপ্রকার স্থিবর, সবাই রাস্তায় হাপ্যিতাস করছে প্রচন্ড জ্যামে। শ্রমিকদের দাবী একটাই ন্যূনতম মজুরী ৮০০০ টাকা চাই তাই ভাংগ গাড়ি, কারখানা পোড়া, দোকান, হাসপাতাল কিছুই বাদ পড়ছেনা , দিনকে দিন গ্যাঞ্জাম বেড়েই চলছে বন্ধ হবার কোন নাম-গন্ধ নাই। তবে এই আগুনে অনেকেই জেনে অথবা নাজেনেই প্যাট্রল ঢালছে। যেমন আমাদের মহান সুশীল সমযদারেরা এসি রুমে ঘোষনা দেয়, ৮,২০০ হবে ন্যূনতম মজুরী (দাদা আমারে একবার ওগো বাড়ি নিয়া যা ওর বাসার বুয়া, দারোয়ান কয় টেকা পায় সেইটা জানতে খুব মুন চায়) আজ দেখলাম প্রথম আলোর মত পত্রিকায় উপসম্পদকীয়তে সামওয়ান আতেল আরো একধাপ এগিয়ে আবিস্কার করেছে, শ্রমিকের জন্য প্রায় ১৮ হাজার টাকা মজুরি ধরতে হবে-

মন চাই একটা ছড়া কই;
বা বা কি চমৎকার !!!
তাইরে নাইরে নাই
আমারা সবাই হিরোক দেশে যাই :D

আতেলওলারা B-) কি একটি বার ভেবে দেখেছে এই শিল্প যদি কোন কারনে একেবারে বন্ধ হবে যায় তবে ৩০/৩৫ লক্ষ লোকের বিকল্প কর্মসংস্থান কি হবে ? তারা কি জানে যেখানে সরকারী চাকরীর ন্যুনতম বেতন ৪,১০০ টাকা, মহান শিক্ষকের ন্যুনতম বেতন ৪,৭০০ টাকা একই সাথে দেশের অর্ধেকের বেশী লোকই গড়ে আমাদের পোষাক শ্রমিকের ন্যূনতম মজুরী থেকেও কমপায় যতই এই সরকার চিল্লায়া গলা ফাটাক, দেশ এখণ মধ্যবর্তী আয়ের দেশে পরিনত আজ !

থাক এবার আসল কথায় আসি আমি যেহেতু এই লাইনে আমার রুটিরুজি তাই আমি দাবী রাখতে পারি এই কয়েকটি তৈরীপ্রোশাক শিল্প নিয়ে কিছু পয়েন্ট আউট করার। প্রথমেই আসি একজন পোষাক শ্রমিকের মাসিক খরচ কত হতে পারে, ন্যূনতম মজুরী ৩০০০ কারা পায় আর তাদের গড় সংখ্যাই কত প্রতিটি কারখানায়।

একটা বাস্তব ধারনা দেই যদি প্রতি চার জন শ্রমিক যদি একটি মেসে ভাড়া থাকে তবে জনপ্রতি সর্বোচ্চ ৭০০থেকে ৮০০ টাকা দেওয়া লাগে আর মেস সিসটেমে খেলে তার মাসিক খাবার খরচ পরে ১৫০০ থেকে ২০০০টাকার মধ্যে, সুতরাং বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী তার মোট জীবনযাত্রার খরচ পড়ছে সর্বোচ্চ মোট: ২৮০০টাকা (এই নিয়ে কারো বিতর্ক করার অবকাশ থাকলে আগে গিয়ে ৫ জন পোষাক কর্মীর সাথে কথা বলে আমার কাছে আসুন)

২০১০ সালের ৩১ শে অক্টোবর প্রনীত সর্বশেষ মজরী অনুযায়ী ৩০০০ টাকা শ্রমিক শ্রনীতে যাদের পদবী হেলপার/সহকারী শুধু মাত্র তারাই ৩০০০ টাকা মজুরী পেয়ে থাকে এবং এদের প্রধান কাজ হলো অপারেটকে সহযোগিতা করা যেগুলো হালকা কাজ বলে বিবেচিত আর অভারটাইম মিলিয়ে ৫০০০/-(+/-) হয়ে যায় অন্যদিকে প্রতিটি কারখানায় ৩০০০টাকা মজুরীর প্রাপ্ত শ্রমিকের সংখ্যা সর্বসাকূল্যে ১৫% থেকে ২০% হয়ে আর বাদ বাকী প্রায় ৮০% থেকে ৮৫% শ্রমিকেরাই তার যোগত্য আর অভিজ্ঞতার বলে মাসে গড়ে প্রায় ৬,০০০টাকা হতে ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত আয় করে থাকে যা আমাদের মেঙ্গ পাবলিকের অনেকেরই অজানা আরো অজানা হলো একজন শ্রমিক ইউফরম,হাজিরা বোনাস,ঈদ বোনাস সন্ধাকালীন নাস্তাতো পেয়েই থাকে একই সাথে এখন আশুলিয়া, ইপিজেড, গাজীপুররের অনেক কারখানা দুপুরের খাবার অথবা সমপরিমান টাকা শ্রমিকদের দিয়ে থাকে, হ্যাঁ এখন কথা হলো সব কারখানাই তো আর সমান সূযোগ সুবিধা বিদ্যমান নেই তাই আমিও চাই মজুরি বাড়ানো হউক বিবেচনা সীমানার মধ্যে । ৩০০০ টাকার স্থলে ৪০০০/৪৫০০ দিলে নবীন শ্রমিকেরা তাদের থাকা খাওয়ার পরও দের থেকে দুহাজার টাকা হাতে প্রতি মাসে উদবৃত্ত থাকবে । ভেবে দেখুন যে দেশে লক্ষ লক্ষ শিক্ষিত বেকার মাত্র চার থেকে পাচঁ হাজার টাকা বেতনের চাকুরির জন্য জুতার তলী শেষ করছে , হালের বলদ , জমি বিক্রী করে চওড়া সূদে বিদেশে গিয়ে লাশ হয়ে দেশে ফেরে- শেয়ার বাজারে ধসে রাস্তায় গড়াগড়ি খেয়ে কাঁদে সেখানে সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যগ্যে অর্থ, শ্রম, মেধা দিয়ে তিল তিল করে গড়া এই শিল্প আজ বিশ্বের বুকে ২য় বৃহত্তম রপ্তানীকারক দেশ শুধু মাত্র বায়ার কমমূল্যে পোষাক নেওয়ার কারনে আর না হলে এই দেশে সামান্য একটা সোনামূখী সূচও তৈরী করার ক্ষমতা রাখেনা সেখানে বায়ার আর কিসে ইমপ্রস হয়ে অর্ডার কন্টিনিউ করবে? বায়ার যদি সস্তায় মাল নেয় তবে মালিকরা কি টাকশাল থেকে টাকা ছাপিয়ে দ্যাতোব্য প্রতিষ্ঠান পালাবে ? আমাদের সবার উচিত নয়কি বায়ার মালিক শ্রমিক প্রতিনিধিকে নিয়ে সরকার এক টেবিলে বসা পন্যের দাম বাড়ানো নিয়ে একই সাথে এটাও মাথায় রাখতে হবে বায়ারের কাছ থেকে বেশি দাম নিতে হলে আমাদের কোয়ালিটি বাড়াতে হবে এবং শিপমেন্টের লিড টাইম কমাতে হবে । ভারত বা চায়না যেখানে একটি মাল ৪৫ দিনে শিপমেন্ট করতে পারে সেখানে সেই মাল শিপমেন্ত করতে আমাদের সময় লাগে ৮০ থেকে ৯০ দিন। একটা জিনিস সবাইকে মাথায় রাখতে হবে শ্রমের মজুরি কম বলেই আমারা কম দামে ভারত, চীন, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান কে প্রতিযোগিতায় পিছনে ফেলে বেশি অর্ডার নিতে পারছি করতে পারছি লাখ লাখ লোকের কর্মসংস্থান ।

সবশেষে আমি হলফ করে বলতে পারি ৮০০০ মজুরি যদি শেষ পর্যন্ত পোষাক শিল্পের মালিকদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয় তাহলে গুটিকয়েক অবস্থাপন্ন কারখানা বাদে এই ছোট আর মাঝারি কারখানা গুলোর মালিকরা আতিপাতি গুটিয়ে ফেক্টরির সদর দরজায় তালা মারা পালানো ছাড়া আর কোন গত্যন্তর থাকবেনা আর সেই সব গারমেন্স মালিকেরা না হয় শেষতক কিছুএকটা করে টিকে থাকবে কিন্তু শ্রমিকের কোথায় যাবে ওই সুশীল ওলাদের সিম্পজিয়ামে নাকি ট্রান্সকমের ফিলিপস বাতির কারখানায়?? বাংলাদেশের সোনালী দিনের পাট শিল্পতো আজ শুধু রচনা আর ইতিহাসের পাতায় ঠায় নিয়েছে , এবার শত প্রতিকূলতার ভেতরে সংগ্রাম করে টিকে থাকা আমাদের গার্মেন্টস শিল্পটা বোধ হয় একই পরিনতির দিকে এগিয়ে চলছে শেষতক......আমি সুরঙ্গের শেষ মাথায় কোন আলোর সন্ধান পাচ্ছিনা কারন পচন তো সবার আগে মাথা থেকে শুরু হয় ! :(

পদটিকা : ভাইরে তুই গাইয়ের দুধ খাও, গোবর জমিতে দে , লাকরি বানাও , পারলে ওরে দিয়া হাল চাষ করা কিন্তু খোদার কসম লাগে ওরে জবাই দিসনা ! :((
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১:৩৯
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×