১০ অক্টোবর ক্লিনিক্যাল সোশ্যাল ওয়ার্ক (CSW), সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের আয়োজনে বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস উদযাপিত হয়।
এবারের বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয়: “প্রবীণদের মানসিক স্বাস্থ্য”। এ উপলক্ষে জনসাধারণের মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্য
এ উপলক্ষে জনসাধারণের মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি বর্নাঢ্য Rally ও মানব বন্ধনের আয়োজন করা হয়। Rally টি সকাল ৯.৩০ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে যাত্রা শুরু করে অপরাজেয় বাংলা হয়ে বিভিন্ন রাস্তা প্রদক্ষিণ করে প্রেস ক্লাবে গিয়ে শেষ হয়।
উক্ত Rally তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. মো: নুরুল ইসলাম, ক্লিনিক্যাল সোশ্যাল ওয়ার্ক (CSW), ঢাবি’র প্রতিষ্ঠাতা ও কোর্স কো-অর্ডিনেটর প্রফেসর তাহমিনা আক্তার, কোর্স শিক্ষক ড. তানিয়া রহমান, ড. মোঃ শাহিন খান, ড. শেখ তৌহিদুল ইসলাম, মিসেস শাহানা নাসরিন সহ বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। Rally টি জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গনে বাংলাদেশ ক্লিনিক্যাল সাইকোলোজি সোসাইটি, নাসিরুল্লা সাইকোথেরাপি ইউনিট, ঢাবি, ক্লিনিক্যাল সাইকোলোজি বিভাগ ঢাবি এবং সাইকোলোজি বিভাগ, জবি এর সাথে যৌথ মানব বন্ধনে অংশগ্রহন করে। বক্তারা তাঁদের বক্তব্যে সমাজের বয়োঃবৃদ্ধদের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় সকলকে আরও বেশি সচেতন হওয়া ও তাদের পরিবারের সাথে বসবাসের সুযোগ নিশ্চিত করার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন।
“প্রবীণদের মানসিক স্বাস্থ্য” এ প্রতিপাদ্য বিষয়কে ঘিরে এবার দিবসটির শ্লোগান ছিল পরিবার ও সমাজে প্রবীণদের জীবন হোক আনন্দময়। বক্তারা বলেন, পৃথিবীব্যাপী চিকিৎসা মনোবিজ্ঞানের অভূতপূর্ব উন্নতির সাথে সাথে মানুষের গড় আয়ু বেড়ে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক এব জরীপে দেখা গিয়েছে, ষাটোর্ধ বয়স্ক ব্যক্তির সংখ্যা পৃথিবীতে ৮০০ মিলিয়ন ছাড়িয়ে গিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে , ২০৫০ সালের মধ্যে এ সংখ্যা ২ বিলিয়নেরও বেশী হবে। বাংলাদেশে এখন পুরুষের গড় আয়ু ৬৯ বছর ও মহিলাদের গড় আয়ু ৭০ বছর। ২০১২ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশে ৬৫ বছর বা তার বেশী বয়সী মানুষ সমগ্র জনগোষ্ঠীর ৪.৮%।
বক্তারা আরো বলেন, বয়স বেড়ে গেলে ব্যক্তির শারীরিক সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায় এবং ব্যক্তি অনেক ধরনের জটিল ও দীর্ঘমেয়াদী রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। অনেকে অবসর নেয়ার ফলে আর্থিক অস্বচ্ছলতার মুখে পতিত হন। কেউ কেউ সামাজিকভাবে ভীষণ একা হয়ে পড়েন। কারো কারো আপনজনেরা মারা যেতে শুরু করে। একাকীত্ব ,মৃত্যু ভয় ইত্যাদি সব কিছু মিলিয়ে অনেকেই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। এর ফলে তারা খুব সহজেই মানসিক রোগের ঝুঁকির মধ্যে পড়েন।
মানব বন্ধনে বক্তারা জানান, দেশে দিন-দিন প্রবীণদের সংখ্যা বাড়ছে। তাদের জন্য পর্যাপ্ত মানসিক স্বাস্থ্য সেবা দেবার জন্য সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে আমাদের ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়ার এখনই সময়। এক্ষেত্রে যে বিষয়গুলোর প্রতি গুরুত্বারোপ করতে হবে:
o প্রবীণদের স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলা ও স্বাস্থ্য সম্মত জীবন যাপনে উৎসাহিত করা
o দ্রুত মানসিক রোগ সনাক্ত করে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা নিশ্চিত করা
o তাদের চিকিৎসায় পরিবার ও সমাজকে ( কমিউনিটি) যুক্ত করা
o সরকারি সেবা বাড়ানোর পাশাপাশি বিভিন্ন এনজিওদেরকে প্রবীণদের মানসিক স্বাস্থ্য সেবা দানে যুক্ত করা
o প্রবীণদের অন্য প্রবীণদের চিকিৎসায় স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে অংশ নিতে উৎসাহিত করা
o সরকারি বেসরকারি উদ্যোগের সমন্বয় করা অর্থাৎ পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা দানের উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা।
বক্তারা দাবী জানান, প্রবীণদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নে এখনই প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা দরকার, কারণ উপরের পদক্ষেপসমূহ প্রবীণদের পক্ষে একাকী অনুসরণ করা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে পরিবার, সমাজ তথা রাষ্ট্রের প্রত্যেকেই নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখতে হবে। তবেই এ বছরের বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবসের শ্লোগান স্বার্থক হবে।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:১৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




