'তখন আমি বেশ ছোট। প্রেম করা ব্যাপারটা তখনও ঠিকমতো বুঝে উঠিনি।' বিকেলে হন্যে হয়ে ডিউস বলে ক্রিকেট খেলি। জ্যামিতি আর দাদুকে সমানুপাতিক হারে ভয় পাই। জেরিকে টমের চেয়ে বেশী ভালোবাসি। সদ্য সাইকেল চালানো শিখে মনে হয় মুক্ত পাখি। পরপর দুটো সিঁড়ি না টপকে পা ফেলার বৃথা চেষ্টা করি। ফুল প্যান্ট পরি শুধু বিয়েবাড়ি যেতে হলে। ফড়িং ধরতে পারি, আর তার লেজে সুতো বেঁধে ঘুড়ির মত ওড়াতে পারি। মাঝে মাঝে ঝড়ের রাতে বাবুই পাখি ধরে রেখে সকালে গরম ভাত খাওয়ায় ছেড়ে দিতে পারি। তীর-ধনুক নিয়ে কাকদের তাড়া করতে পারি। স্কুল ফেরতা দুপুরে মায়ের হাতে ভাত খেয়ে মাঠের দিকে ছুটি। সন্ধেবেলা মাঠ থেকে বাড়ি ফিরে হাত পা ধুয়ে দুধ মুড়ি খেতে বসি।
.
ঠিক তেমন কোন এক বিকেলে। কোন এক বৃষ্টির বিকেলে। কালচে মেঘলা বিকেলে। লোডশেডিং হব হব করেও হয়নি এমন বিকেলে। 'অরনী' নামের মেয়েটা বৃষ্টিতে ভীষণ ভিজতে চাইছিল। কিন্তু ঝমঝমে বৃষ্টিও হচ্ছে না। মেয়েটির ছাদে অপেক্ষা করছিল বৃষ্টির প্রতিক্ষায়। কালো অবাধ্য চুলগুলো বারবার লেপ্টে যাচ্ছিলো তার চিবুকে। মেয়েটি চুলগুলো সারানোর বৃথা চেষ্টা করে যাচ্ছে! আমি চিলেকোঠায় দাঁড়িয়ে হতবাক হয়ে সে দৃশ্য দেখেছিলাম। এখনো ভীষণ লজ্জা পাই এটা ভেবে। মনে পড়লে, মনের ভেতর রবিন্দ্রনাথ এর কলার টিউন বেজে ওঠে। 'তখন আমি বেশ ছোট। প্রেম করা ব্যাপারটা তখনও ঠিকমতো বুঝে উঠিনি।'
কিন্তু, আজ গভীরভাবে উপলব্ধি করি, সেদিনের সে মেয়েটিকে, কী ভীষণ ভাবে ভালোবেসে ফেলা যায়।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



