অনেক স্বপ্ন নিয়ে আমরা ভর্তি হয়েছিলাম সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ।সবসময় খুজে বেড়াতাম সরকারি এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঝে প্রভেদ । কিন্তু এখন মনে হয় হয়ত প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় অনেক ভালো হতো । অপর্যাপ্ত ল্যাব, দক্ষ শিক্ষকের অভাবের পাশাপাশি রয়েছে শিক্ষক স্বল্পতা ।শুধু তাই নয় রয়েছে যোগাযোগ সমস্যা, অপর্যাপ্ত আবাসন ব্যবস্থা । কিন্তু কেন এত সমস্যা, যেখানে শিক্ষাখাতে সরকারের সবার্ধিক ব্যয়ের কথা বলা হয়ে থাকে ????
আগেই বলে নেই কোন বিশ্ববিদ্যলয়ের কথা বলছি । বলার পরে হয়ত পাঠকবৃন্দ নাক কুচঁকাবেন, “যে এটা কোথায় নাম তো শুনি নাই !! অজ পাড়া গাঁয়ের বিশ্ববিদ্যালয়, অবস্থাতো একটু খারাপ হবেই ।” স্বানামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে কথা আমরা আগ্রহ ভরে শুনি, তাদের কোন আন্দোলন তা নৈতিক হোক বা না হোক বাস্তবায়নের দ্রুত ব্যবস্থা করা হয় ।আচ্ছা আমি নো.বি.প্র.বি(নোয়াখালি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়) এর কথা বলছি । নামটি বলতে ভালো লাগেনা । কেননা অনেকে প্রশ্ন করেন এটা প্রাইভেট কিনা? নোয়াখালিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কথাতো শুনি নাই !!! কিন্তু কেন এমন ?? কেন একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যলয়ের কথা শিক্ষার্থীরা জানবে না । প্রতিবছর এখানে প্রায় ২০০ জন শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার জন্য অনেক আশা নিয়ে ভর্তি হয় । কিন্তু হতাশ হয়ে পরের বছর এ অন্য কোন বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা প্রাইভেট এ চলে যায় । কেন কেন???
আমরা উচ্চশিক্ষায় অনেক পিছিয়ে আছি ।তাই নানা যায়গায় নানা নতুন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে । কিন্তু এইসব বিশ্ববিদ্যলয়ের সাথে প্রাইভেট এর পার্থক্য শুধু জায়গায় । প্রাইভেট বিশ্বিদ্যালয় হড়ে উঠে একটি-দুইটি বড় বিল্ডিং নিয়ে, আর এখানে থাকে প্রচুর ভূমি । কিন্তু সুবিধার দিক থেবে প্রাইভেট থেকে পিছিয়ে থাকে ।( প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যলয়ের অবমাননা করা আমার উদ্দেশ্য নয় । কেননা প্রাইভেট আমাদের থেকেও অনেক এগিয়ে এখন । আমি শুধু আমাদের হতাশা,আর কষ্টের কথা তুলে ধরছি । )
কিছু হতাশ হবার বিষয় আগে একটু দেখি::
১. প্রথমেই আমাদের একাডেমিক ভবন সমস্যা ।একটি মাত্র ভবনে ৪টি অনুষদ এবং এবং একই সাথে আবাসন আর কোন বিশ্ববিদ্যলয়ে আছে বলে আমার জানা নেই ।
২. পর্যাপ্ত ল্যাব এর অভাব । এখানে আগত কিছু শিক্ষার্খী বলে থাকে ওদের স্কুল কলেজে এর থেকে ল্যাব ভালো ছিল ।এমন কি শিক্ষকরাও বলে থাকেন তোমাদের এখানে তো কিছুই নেই,আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে আর অনেক কিছু পেতাম । তাই শিক্ষকদের ও এখানে থাকতে অনীহা দেখা যায় ।
৩. এখন সময় প্রযুক্তি ও যোগাযোগের । বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এখানে থাকা উচিত ভালো গতির ইন্টারনেট ব্যবস্থা, ভালো কম্পিউটার ল্যাব ।যেহেতু এখানে কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড টেলিকমিউনিকেশন অনুষদ রয়েছে তাই এর কমিউনিকেশন ব্যবস্থা আরও ভালো হওয়া উচিত । কিন্তু পুরোটাই গুড়েবালি ।কিছু স্বল্পমানের কম্পিউটার এবং সামান্য সংখ্যক মড়েম এর মাধ্যমে অল্প কিছু পিসিতে নেট রয়েছে,তাও ২-৩kbps এর বেশি স্পিড পাওয়া যায় না ।
৪. পর্যাপ্ত পরিমান দক্ষ এবং ভালো শিক্ষকের অভাব । এখানে শিক্ষক খুবই কম । তথাপি আমরা ভাগ্যবান যে কিছু ভালো শিক্ষক আমরা পেয়েছি, তারা এত অপ্রতুলতার মাঝেও আমাদের অনেক সাহায়্য করেন । কিন্তু তথাপি শিক্ষক স্বল্পতা প্রকট ।তদুপরি শিক্ষকরা এখানে কিছুদিন থেকে অন্য কোন ভালো প্রতিষ্ঠানে চলে যান ।
৫. আবাসন সমস্যা এখানে সবচেয়ে বড় সমস্যা । মোট ভর্তি হওয়া ৪টি সেশনের মধ্যে দুইটি সেশন হল এ থাকে,তাও অনেক কষ্ট করে । সব মেয়েই হলে থাকে ,কিন্তু এক রুম এ ৬-৭ জন করে । আর যারা বাইরে আছে তাদের কথা না হয় বাদই দেয়া যাক ।
৬. এখানে বিদ্যুত মাঝে মাঝে আমাদের দেখে যায় ।দিনে অন্তত ১০-১২ ঘন্টা বিদ্যুতহীনতায় কোন বিশ্ববিদ্যালয় ভোগে কিনা কে জানে?? গতকালও সন্ধ্যা থেকে ১১টা পর্যন্ত বিদ্যুত ছিলনা । এটা নিত্যদিনের ঘটনা । আমরা ল্যাব করার জন্য ল্যাবে যা্ই, সাথে সাথে লোডশেডিং । আমাদের ল্যাব আর করা হয়ে উঠে না । বাজেট এর কারনে এখনও কোন জেনারেটর কেনা হয় নাই ।
৭. আমাদের নানা পরীক্ষার ফী,সেমিষ্টার ফী এর দিকে তাকালে মনে হয় আমরা বেষ্ট সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি । পরীক্ষার ফী ১০০০টাকা, প্রতি ক্রেড়িট ১৫০টাকা আর কোন সরকারী বিশ্ববিদ্যলয়ে আছে কি?? আমরাই সেরা !!!
৮. এখানে কোন ক্লাব সেটা বিজ্ঞানবিষয়ক হোক কিংবা সাংস্কুতিকই হোক না কেন, অনেক দূরে হবার কারনে কোন স্পন্সর পাওয়া যায় না । ফলে ক্লাবগুলোর অকাল মৃত্যু ঘটে ।
-------যাই হোক সমস্য কথা শুনতে কারো ভালো লাগেনা । আমিও আর বলতে চাইনা । তাহলে সমস্যাই লিখতে হবে,পোষ্ট আর করা যাবেনা ।
কিন্তু সরকারের কাছে কিছু প্রশ্ন থেকে যায় । কেন আমার এত বঞ্চিত ?? কি অপরাধ আমাদের ??কেন একটা বিশ্বিদ্যালয়ে এত সমস্যা থাকার পরেও আরএ নতুন নতুন বিশ্ববিদ্যালয় খোলা হচ্ছে??? কেন স্বয়নসমূর্ণ হবার পরেও বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয়ে কোটি টাকার বাজেট দেয়া হয়, অথচ আমাদের প্রয়োজনীয় জিনিসগুলোই দেয়া হয় না ?? কেন আমরা ল্যাব, শিক্ষক পাইনা???
কিছু হাস্যকর কথা শোনা যায় । যেমন এই বিশ্ববিদ্যালয় আর এক সরকারের সময় প্রতিষ্ঠিত হয় ।তাই বর্তমান সরকার এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যপারে উদাসীন ।মাঝে মাঝে এসব কথা বিশ্বাস করতেও ইচ্ছে হয় । কেননা নতুন করে বিশ্ববিদ্যালয় খোলা হচ্ছে সেখানে ভালো অনুদান দেয়া হচ্ছে । আমরা কেন পিছিয়ে আছি??
সরাকারের কাছে আমাদের আবেদন ,নতুন মানহীন বিশ্ববিদ্যালয় না খুলে আগে যেসব বিশ্ববিদ্যাল রয়েছে তাতে পর্যাপ্ত সুবিধাসমূহ দেয়া হোক । যাতে করে দক্ষ জনগোষ্ঠি গড়ে উঠে । তা না হলে আমাদেরই আবার হয়তো বেকারত্বের অভিশাপ মাথায় নিয়ে নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়তে হবে ।
সরকারের একটু সু-দূষ্টিই পারে আমাদের অনেক সমস্যা সমাধান করে দিতে । তা না হলে আমাদেরও বলতে হবে বাংলাদেশে সরকার লোকদেখানোর জন্য সব করে । সত্যিকারের কিছু করার জন্যনা । রাজনৈতিক নেতৃবিন্দেরা এলাকায় নতুন প্রতিষ্ঠান খুলে কিন্তু অন্য এলাকা থাকে অবহেলিত । তাই দয়া করে সরকারের একটু দৃষ্টি দেয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি ।অন্তত আমাদের প্রধান সমস্যগুলো যাতে দ্রুত সমাধান করা হয়, কেননা তা না হলে আমাদের শিক্ষা পুরোটাই অভিশাপ হয়ে থাকবে আমাদের অর্থাৎ জাতির জন্য ।
“ সবার প্রতি আমার অনুরোধ পোষ্টটি যাতে ষ্টিকি করা হয় । যদি পারা যায কোন পত্রিকায় প্রকাশিত করা হোক ।”
ধন্যবাদ সবাইকে এতক্ষন ধরে পেচাল শোনার জন্য । তাও সবার সহযোগীতা আশা করছি ।
ব্লগার ইয়াসিনের বিশেষ অনুরোধে তার এই লেখাটি পোস্ট করলাম,,,
ধন্যবাদ

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




