জনাব রেহমান সোবহান সবাই শিশু বা বেকুব নন, শিরোনামটি পছন্দ না হলেও আসলে এটা জনাব জনাব রেহমান সোবহান এর একটি লেখার মাঝ থেকে তুলে আনা। বিস্তারিত এখানে
Click This Link
এবছরের সেরা জোক্স মনে হয় এ লেখাটি, কেনো বলছি তবে ধীরে ধীরে….(আগে জনাব রেহমান সোবহান এর একটি লেখাটি পড়ে নিন এরপর নিচের এইটি পড়ুন)
১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত জনাব রেহমান সোবহান গ্রামীণ ব্যাংক বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন। বর্তমানে গ্রামীণ ব্যাংক এর বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ উঠেছে তা মুলত সেই সময়ের মধ্যেরই ঘটনা, তাই তিনি এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন, ধন্যবাদ তাকে।
তিনি যারা যারা গ্রামীণ ব্যাংক এর সুনাম গেয়েছেন তাদের কথা, সরকারের ৫% শেয়ারের কথা বলেছেন।বলেছেন নরওয়ে টিভির সমালোচনার কথা , সাবাস,,,,,
১। এরপর মুল আলোচনার এসে উদ্ভট কথা বলেছেন, যেমন লিখেছেন
গ্রামীণ ব্যাংকের বড় সমালোচনা মনে করিয়ে দেয় যে যদিও বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর জরিপ অনুযায়ী ১৯৯৬ সালে দারিদ্র্যসীমার নিচে অবস্থানরত পরিবারের হার ৫১ শতাংশ থেকে ২০০৫ সালে ৪০ শতাংশে নেমে এসেছে, তবু বাংলাদেশে দারিদ্র্যের স্তর এখনো সহনীয় মাত্রার চেয়ে অনেক ওপরে।
আমি বলি ..যেখানে অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশ ১বছরে দুই ডিজিট (১০+) গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে সেখানে বাংলাদেশের অবস্থা আসলেই হতাশাজনক। ৯ বছরে মাত্র ১১% মানুষ দারিদ্র্যসীমার উপরে উঠতে পেরেছে। যদি বলি এই ১১% মানুষ এর জন্য গ্রামীণ ব্যাংক কি করেছে, উত্তরটা বোধহয় আপনার জন্য কঠিন হয়ে যাবে, তবে এটাও ঠিক দারিদ্র্যসীমার উপরে উঠাতে গ্রামীণ ব্যাংক সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করতে পারতো, যা করেছে কি?
জনাব ঐ সময়ে গ্রামীণ ব্যাংক এর নিজস্ব তহবীল কতোটা বেড়েছিলো জানাবেন কি?
২। আমরা সবাই জানি ক্ষুদ্রঋণের সাথে লাখ লাখ মানুষের জীবিকা জড়িত। ক্ষুদ্রঋণ বন্ধ হোক এটা আমরা কেউ চাই না, তাই বলে এর খারাপ দিকটা কমিয়ে আনা যাবে না,,,তা কেনো? সবাই কি শুধু না জেনেই আজকাল সমালোচনা করে নাকি? মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি (এমসিআরএ) বা হালনাগাদ গবেষণা হোক এটা সবাই চাই। আমার তো মনে হয় এবার বোধ হয়: কেচো খুরতে না আবার সাপ বেরিয়ে যায়!
৩। আপনি বলেছেন গ্রামীণ ব্যাংকের অনৈতিক কাজ করার যে অভিযোগ উঠেছে, তা অনেক গুরুত্বের দাবি রাখে। আশা করি, নরওয়ে সরকারের বিবৃতি এবং সম্প্রতি অধ্যাপক ইউনূসের সংবাদ সম্মেলন এই প্রশ্নের সার্থক পরিসমাপ্তি ঘটিয়েছে। না এটার পরিসমাপ্তি হয়নি।
শুনুন আমার জানামতে নরওয়ে সহ দায়িত্বশীল কেউ : ‘নরওয়ের দেওয়া তহবিল অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো কাজে ব্যবহার কিংবা দুর্নীতিমূলক কাজে জড়িত থাকা অথবা তহবিল তছরুপের মতো কাজের অভিযোগ করেনি।’ বরং অভিযোগ ছিল এটা: ক) গ্রামীণ ব্যাংক অনৈতিক ভাবে ১৯৯৬ সালে নরওয়ের দেওয়া তহবিল গ্রামীণ কল্যান নামক প্রতিস্ঠানে সরিয়ে নিয়েছিলো এবং খ) গ্রামীণ ব্যাংক এর সুদের হার অনেক বেশি এবং অমানবিকভাবে সুদের কিস্তি আদায় করা হয়।
উল্লেখ্য যে , গ্রামীণ ব্যাংক (ক) অভিযোগটি স্বীকার করে, এবং বলে যে ট্যাক্সের টাকা বাচাতে তারা একাজ করেছিলো! পরবর্তীতে সেই টাকা আবার ফেরতও দেয়া হয়। Click This Link
অভিযোগ (খ) নিয়ে আজোও গ্রামীণ ব্যাংক কোন সদুত্তর দেয়নি।
৩। আপনি লিখেছেন: সমালোচক/বিশ্লেষকদের কেউই গ্রামীণ ব্যাংকের মালিকানা কিংবা বাস্তবিক করপোরেট স্ট্যাটাস নিশ্চিত হওয়ার সামান্যতম চেষ্টাও করেননি। করপোরেট স্ট্যাটাস !!! এর মানে কি বড় কোনো প্রতিস্ঠান বা বিশাল কেউ কোন অন্যায় করলে তা বলা যাবে না যেহেতু সে বিশাল কিছু তাই,,,হায়রে সেলুকাস!
গ্রামীণ ব্যাংক কোনো এনজিও নয় বরং একটি বাণিজ্যিক ব্যাংক, চতুরীপুর্ণ কথার একটা সীমা থাকা উচিত। এনজিও বলতে সকল বেসরকারী প্রতিস্ঠানকে বুঝায়। আর গ্রামীণ কল্যান কিন্তু এনজিও প্রমান এখানে আছে
http://www.ngoab.gov.bd/
৪। গ্রামীণ ব্যাংকের আয় ব্যাংকটির নিম্ন আয়ের মালিকদের কাছে লভ্যাংশ আকারে ফিরে যায়….কিভাবে বিশ্বাস করি বলেন,,,, নিম্ন আয়ের মালিকদের উন্নয়নের প্রমান তো পাই না কিংবা গ্রামীণ ব্যাংকের আয় ব্যাংকের ঋণদান কার্যক্রমের বিস্তার ঘটাতে তা রিসাইকেল করা হয়। কথা সত্য ,,,তবে এতে লাভ হয় কার ,,,গ্রামীণ ব্যাংকের নাকি জন গনের?
৫। গ্রামীণ ব্যাংকের সদস্যরা দারিদ্র্য থেকে বেরিয়ে এসেছেন কি না, তা নিরূপণের লক্ষ্যে অধ্যাপক ইউনূস ১০টি মানদণ্ড স্থির করেছেন। কেউ দারিদ্র্য থেকে বেরিয়ে এসেছেন কিনা,,,এটা বিচার করা কি খুব কঠিন কাজ ? তার জীবনযাত্রা সহ কিছু বিষয়ের দিকে নজর দিলেই তো বুঝা যায় কে দারিদ্রসীমার নিচে আর কে,,,কোথায় !
৬। গ্রামীণ কল্যাণ নামের প্রতিষ্ঠানটি, যেখানে নরওয়ের অর্থ স্থানান্তর করা হয়েছিল, সেটির লক্ষ্য গ্রামীণ ব্যাংকের সদস্যদের স্বাস্থ্য ও শিক্ষাসংক্রান্ত চাহিদাগুলো মেটানো। দানের টাকা দিয়ে নিজেদের নাম কামানো?
৭।অধ্যাপক ইউনূস বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন এবং দেখিয়ে দিয়েছেন যে এসব নিম্ন আয়ের মানুষের টিকে থাকার জন্য কোনো দান-খয়রাতের প্রয়োজন নেই। .এটি আংশিক সত্য,,,সত্যের সাথে মিথ্যা কে অতি চতুরতার সাথে মিশানো হয়েছে। অধ্যাপক ইউনূস বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন এটি সত্য *তবে আপনি নিজেই ২ লাইন আগেই লিখেছেন নরওয়ের টাকাটি মুলত দান ছিলো। তবে কিভাবে…এসব নিম্ন আয়ের মানুষের টিকে থাকার জন্য কোনো দান-খয়রাতের প্রয়োজন নেই ,,,,এটি লিখলেন?
৮। ঋণগ্রহীতাদের অর্থনৈতিক লাভের কারণেই গ্রামীণ ব্যাংক পরিণত হয়েছে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ ক্ষুদ্র অর্থায়ন প্রতিষ্ঠানে। সম্পুর্ন মিথ্যে কথা,,,,ঋণগ্রহীতাদের অর্থনৈতিক লাভ হলে তাদের আয় বাড়তো,,,দারিদ্র কমতো আসলে সত্য হলো গ্রামীণ ব্যাংক অতি মুনাফার মাধ্যমে পরিণত হয়েছে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ ক্ষুদ্র অর্থায়ন প্রতিষ্ঠানে।
৯।বিশ্বের অনেকে গ্রামীণ ব্যাংক এর প্রশংসা করেছেন,,,,তাই বলে কি তাদের দোষের কথা বলা যাবে না? ভালোকে ভালো মন্দ কে মন্দ বলাটাই তো উচিত। যেহেতু এই লেখাটি বাংলায় লিখতেছি তাই বাংলাভাষী ছাড়া আর করো পড়ার সম্ভাবনা কম,,,যাইহোক বাংলাদেশের বৈশ্বিক ভাবমূর্তির উন্নতিতে…গ্রামীণ ব্যাংক এর ভুমিকা কি? গ্রামীণ ব্যাংক এর ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন বা ডকুমেন্টরি কিন্তু এখন বিদেশিরাই তুলে ধরেছেন।
১০। আগেও বলেছি আবারও বলছি,,,গ্রামীণ ব্যাংক এর ক্ষুদ্রঋণ তখন ই শুধু সফল হবে যখন এটি বাংলাদেশের মানুষ কে প্রকৃত স্বাবলম্বী করবে, তবে তা হতে হবে অতিরিক্ত সুদ বা ঋণচক্রের সৃষ্টি না করে।
গ্রামীণ ব্যাংক এমন একটি প্রতিস্ঠান যা নিজেই ঋণ নিতে আগ্রহী না বরং ঋণ দিতে আগ্রহী,,,একই প্রতিস্ঠান এর এরুপ দ্বিমুখী আচরন কেনো…কেউ কি আমাকে একটু জানাবেন?
(অন্যান্য ব্লগেও প্রকাশিত)

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




