somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রথম থেকেই আমি জানতাম যে সে সমকামী, বলছিলেন জুলহাস মান্নানের বন্ধু......

২৮ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১১:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

" জুলহাস মান্নানের সাথে তার যে বন্ধুকে খুন করা হয়েছে, সেই মাহবুব রাব্বির সাথে তার বন্ধুত্ব ছাড়া আর কোন সম্পর্ক ছিল না বলেও উল্লেখ করছিলেন তিনি।"(বন্ধু)

তার মানে জুলহাস মান্নানের সাথে নিহত তার বন্ধুর 'অনৈতিক' সম্পর্ক ছিলো কিনা এ নিয়েও সন্দেহ,সংশয় তৈরী হয়েছিলো বা প্রশ্ন উঠেছিলো?

প্রতিদিনের সংবাদ ডট কমে প্রকাশিত সংবাদটিঃ
২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসে
রীতিমতো একটি অসাধ্য কাজ করে
ফেলেন একদল মানুষ। তারা
বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো
এমন একটি পত্রিকা প্রকাশ করে
বসেন যেটির উদ্দেশ্য সমকামীদের
পক্ষে কথা বলা। বাংলা ভাষার এই
পত্রিকাটির নাম রূপবান।
এর আগে বাংলাদেশের
সমকামীরা কখনো এমনভাবে
প্রকাশ্য হয়নি, নিজেদের
অধিকারের কথা তাদেরকে কখনো
বলতেও শোনা যায়নি। তখন
রূপবানের সম্পাদকীয় বোর্ডের
একজন সদস্য ছিলেন জুলহাস মান্নান।
আর সোমবার আততায়ীদের হাতে
নিহত হওয়ার আগ পর্যন্ত রূপবানের
সম্পাদনার দায়িত্ব ছিল
জুলহাস মান্নানের হাতেই।
২০১৫ সালে রূপবানের প্রথম বর্ষপূর্তি
উপলক্ষে বিবিসি বাংলাকে
একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন
জুলহাস মান্নান। সেখানে তিনি
বলেছিলেন, রূপবান সমকাম নয় বরং
সমপ্রেমে বিশ্বাসী মানুষের
ভালবাসার অধিকারের বিষয়টি
তুল ধরতে চায়। সমপ্রেমে বিশ্বাস
করে এমন মানুষদের জীবনধারা,
ভালোলাগা ও দু:খ কষ্টের বিষয়টি
তুলে ধরে রূপবান। বাংলাদেশে
সমকামীরা অদৃশ্য জীবনযাপন করে
কিন্তু আমরা জানাতে চাই যে এই
সমাজেই আমরা আছি এবং আমরা
আপনাদের পরিবারেই সদস্য।
বাংলাদেশের মতো রক্ষণশীল
সমাজে এ ধরণের পত্রিকা প্রকাশ
নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে
পরবর্তী দিনগুলোতে নানা বিতর্ক
হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে
জুলহাস মান্নান বলেছিলেন,
এদেশের রক্ষণশীল সমাজে সমপ্রেম
নিয়ে পত্রিকা বের করতে
গ্রহণযোগ্যতার বিষয়ে তাদের বেশ
কৌশলী হতে হয়। এটা একটা বাড়তি
চাপ। মোটে দুটি সংখ্যা বের
হয়েছিল রূপবানের।
জুলহাস মান্নানের ঘনিষ্টরা
বলছেন, প্রথম সংখ্যাটি ভালভাবে
বের করা গেলেও দ্বিতীয় সংখ্যা
বের করতে গিয়েই সমস্যায় পড়েন
তারা। যে প্রিন্টিং প্রেসে
ছাপা হচ্ছিল রূপবান, তারা আর
ছাপতে রাজী হচ্ছিল না। এক
পর্যায়ে রূপবান ছাপা বন্ধ করে দেয়
তারা, পরে আর কোনও প্রেসই
ছাপতে রাজী হয়নি। ফলে দ্বিতীয়
সংখ্যায় রূপবান বেরিয়েছিল
মোটে অল্প কয়েকটি কপি।
রূপবানের এই দুটিমাত্র সংখ্যাই
বিস্তর বিতর্ক তুলেছে। এমনকি
জুলহাস মান্নানের মৃত্যুর পরেও
দেখা যাচ্ছে এই বিতর্ক চলছে।
অনেকে নাম পরিচয় প্রকাশ না
করবার শর্তে কথা বলেছেন, এবং
সবাই একবাক্যে বলেছেন,
জুলহাস মান্নান ছিলেন একজন
মাটির মানুষ, তিনি কারো সাথে
কোন ঝামেলায় জড়াতেন না,
ঝগড়া করতেন না, এমনকি খুনসুটিও নয়।
ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল
কলেজের ছাত্র ছিলেন
জুলহাস মান্নান। সেখানে তার
শৈশবের একজন সহপাঠী বলেছেন ,
‘জুলহাস ছিল খুব মেধাবী, খুব পড়ুয়া
এবং খুবই বন্ধু অন্ত:প্রাণ। তিনি সবার
সাথেই মিশতে পারতেন। তিনি
সমকামী ছিলেন কিনা সেটা
জানতাম না। তবে তিনি আমাদের
থেকে কিছুটা আলাদা সেটা
বুঝতাম। কিন্তু এটা আমাদের বন্ধুত্বে
কখনো কোন প্রভাব ফেলেনি।
পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে
পড়াশোনা করেছেন এবং সেখানে
তাকে যারা চিনতেন তারা
বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে
জুলহাস ছিলেন জনপ্রিয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ে
জুলহাস মান্নানের সহপাঠী, বন্ধু
এবং এখন একসাথেই কাজ করছেন, এমন
একজনের সঙ্গে কথা হয়েছে
বিবিসির, যার বর্ণনায়,
জুলহাস ছিলেন একজন বিশাল হৃদয়
মানুষ। যে কারো বিপদে ঝাঁপিয়ে
পড়তেন। এজন্য তাকে অনেক
সমস্যায়ও পড়তে হয়েছে। প্রথম
থেকেই আমি জানতাম যে সে
সমকামী, বলছিলেন
জুলহাস মান্নানের এই বন্ধু, কিন্তু
সেটা আমাদের বন্ধুত্বের জন্য
কখনো কোন সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়নি।
সে ছিল একজন স্বাভাবিক মানুষ।
জুলহাস মান্নানের সাথে তার যে
বন্ধুকে খুন করা হয়েছে, সেই মাহবুব
রাব্বির সাথে তার বন্ধুত্ব ছাড়া
আর কোন সম্পর্ক ছিল না বলেও
উল্লেখ করছিলেন তিনি।
কলাবাগানের ওই বাড়িতে
জুলহাস মান্নানের সঙ্গে থাকতেন
তার মা এবং একজন গৃহকর্মী। বহু বছর
ধরে তারা ওই বাড়িটিতে
রয়েছেন।
চাকরিজীবনেও সফল ও জনপ্রিয়
ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছিলেন
জুলহাস মান্নান, সেটা বোঝা যায়
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র
জন কিরবির বক্তব্যে। কিরবি
বলেছেন, তিনি ছিলেন মার্কিন
দূতাবাসের প্রিয় কর্মী।
ফেসবুকে জুলহাস মান্নানের
পাতাটিকে এরই মধ্যে
‘রিমেম্বারিং’ হিসেবে সংরক্ষণ
করা হয়েছে। অনেকেই সেখানে
তাদের বক্তব্য তুলে ধরেছেন।
নেদারল্যান্ডস থেকে লারিসা
করপোরাল নামে একজন লিখেছেন,
আমার বিশ্বাস হচ্ছে না। আমি এখন
কাঁদছি কিন্তু বুঝে উঠতে পারছি না
উম্মাদ মানুষেরা কেন তোমার
মতো মিষ্টি একটি মানুষের এমন
ক্ষতি করবে।
সূত্র : বিবিসি।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১১:২৬
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিনেতা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৫



বলতে, আমি নাকি পাক্কা অভিনেতা ,
অভিনয়ে সেরা,খুব ভালো করবো অভিনয় করলে।
আমিও বলতাম, যেদিন হবো সেদিন তুমি দেখবে তো ?
এক গাল হেসে দিয়ে বলতে, সে সময় হলে দেখা যাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×