somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সেই মেয়েটি এখন সুপার স্টার....!!!!-#:-*:-*

১১ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৪:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

চেহারায় যতোটুকু না জৌলুস তারচেয়ে প্রেম যেন উছলে পড়ে তার কথাবার্তায়, আচার আচরণে আর অঙ্গভঙ্গিতে। সহজ-সরল পুরুষ তাই না জেনেই বাহুবন্ধনে আবদ্ধ হতে যেন প্রতিযোগিতায় নামে। এভাবেই একের পর এক পুরুষের কাঁধে ভর করে সে এখন স্টার। তবে পাড়ার লোকেরা নাকি তাকে ডাকে হাই সোসাইটির কলগার্ল বলে ।

মেয়েটি জীবনের লক্ষ্য ঠিক করেছে মডেল হবে।তাই চেহারায় গ্লামার আনার জন্য সময় করে সপ্তাহে বিউটি পার্লারে যায়। যেমন তেমন বিউটি পার্লার নয় শহরের সেরা বিউটি পার্লার ‘পারসোনা’তে। যেখানে অর্ধনগ্ন করে শরীর ম্যাসাজ করায়। ম্যাসাজ করানোর সময় সে একদিন খুব লজ্জা পেয়েছিলো মনে মনে। কারন তার মনে হয়েছিল কোন এক সিসিটিভি অপারেটর বোধহয় বসে বসে কোন ফাক ফোকরের ক্যামেরাতে তার নগ্ন শরীর গিলে গিলে খাচ্ছে।

চারদিকে ভালো করে চেয়ে দেখে সে। কোন ক্যামরা নাই তো? থাকলেও সমস্যা নেই।কতজনেরইতো ভিডিও বের হয়েছে। কই তার ক্যারিয়ারে কোন সমস্যা হয়েছে কি? বরং উন্নতি হয়েছে। পনের কোটি মানুষকে চেহারা দেখাতে হলে একটু টপলেস, একটু খোলামেলা হতেই হয়। তাছাড়া এটা একবিংশ শতাব্দী, ডিজিটাল বাতাস বইছে চারপাশে। এসব এখন কোন সিরিয়াস বিষয় নয়।

মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি হলো বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখা। তাই মেয়েটির স্বপ্ন নামিদামি মডেল, সুপারস্টার হওয়া। স্বপ্ন পুরণে বিভোর সে। তবে হুট করে তো আর মডেল হওয়া যায়না, প্রতিযোগীতার বাজারে যোগান এত বেশি যে দরদাম করার যো নাই।যা বলে তাতে সই। কোনমতে রঙ্গীন প্লাটফর্মে একটু পা রাখতে পারলেই হলো, তারপর ধীরে ধীরে সিড়ি বেয়ে আগানো যাবেই। এরপর মডেল ,ছোট বা বড় পর্দার নায়িকা কত কিছু হওয়া যাবে।

গেল কয়েক মাসে এ ঘর ও ঘর ঘুরে তামান্না একটি বিষয় বুঝে গেছে, মডেল হতে তেমন প্রতিভার দরকার লাগে না, সুন্দর মুখাবয়ব আর চলনসই ফিগার থাকলেই হলো। আর যে করেই হোক একবার রঙ্গীন জগতে জায়গা করে নিতে পারলে জীবনটাই বদলে যাবে।কত শুভাকাঙখী , কত ভক্ত ,ফ্যান, ফেসবুকে শয়ে শয়ে লাইক, কমেন্টস পড়বে, আর কত কি..!!!!! তাই স্বপ্ন পুরণে সোজা-বাঁকা যে পন্থাই অবলম্বন করা দরকার, তার কিছুই করতে পিছপা হতে চায়না মেয়েটি। কারণ সে জানে পর্দা সবাইকে নেয় না।

পুজিবাদী ব্যবস্থায় পণ্যকে ক্রেতার হাতে দেওয়ার পর মূল্য দেওয়া হয় । অর্থাৎ আগে দেওয়া পরে নেওয়া তথা মূল্যবিনিময় । কিন্তু বিপত্তি ঘটে পণ্য হিসেবে ব্রান্ড দেওয়া নারীর শরীরের ক্ষেত্রে । এখানে আগে শরীর, পরে বিনিময়। এই শরীরী অস্ত্র যে যত ভালভাবে ব্যবহার করতে পারে, তার তত চাহিদা। তাই প্রয়োজনে এই অস্ত্র ব্যবহার করতে কোন দ্বিধা রাখে না সে।

গেল বছরের মাঝামাঝি কোন একদিন দেখা হয়েছিল মেয়েটির সঙ্গে । অফিসের সামনের ক্যাফেটেরিয়ায় কথা হয়েছিল সেদিন। মনের অনেক না বলা কথা। বলেছিল, স্বপ্ন সুপারস্টার হওয়ার। অনেক বড় সুপারস্টার হতে চায় সে। এক ঘন্টার বাতচিত। মনের মধ্যে লুকায়িত রঙ্গীন স্বপ্ন যে মানুষকে কতটা অসহায় আর ঝুকি নিতে বাধ্য করে সেদিন দেখেছি তার চোখে।

এক বছর পর..........................................

আজ সে ছোট খাট অভিনেত্রী। মিউজিক ভিডিওতে অভিনয় করে। টেলিফিল্মে পার্শচরিত্রেও কাজ করে।মডেলিং করে। সেবার বিভিন্ন প্রোডাকশন হাউজ ঘুরেছিল মেয়েটি, কাজ হয়নি। সবাই শুধু সুযোগ দিবে বলে, দেহভোগের পায়তারা করেছে। বাতচিত শেষে সেদিন তাকে নীতিকথা বলে বিদায় দিলাম। না দেয়ার কি আছে, সবেমাত্র এসএসসি পাশ মেয়ে। এখনই এত কিছু কি দরকার...????

এরপর কালেভদ্রে বাতচিত, এসএমএস। দেখা হওয়ার মাসতিনেক পর ফোন দিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছিল ,মিডিয়া এত খারাপ কেন? কি আর বলার? এক প্রোডাকশন হাউজ নাকি কাজের অফার দেয়ার কথা বলে বিনিময় চেয়েছে। কাজের আগেই বিনিময়, এ কেমন কথা,,সেদিন বিনিময়ে যায়নি মেয়েটি। খুব লেগেছে তার। দেহের প্রতি পুরুষের কেন এত লোভ।মেনে নিতে পারেনি সে। নিজেকে বিসর্জন দিয়ে কাজ করতে রাজি নয় সে।

গেল মাসে দেখা হয়েছিল মেয়েটির সঙ্গে, কত বদলে গেছে তার জীবন, লাইফ স্টাইল। দেহে-বস্ত্রে রঙ্গীন দুনিয়ার ছাপ। অনেক না বলা কথা অকপটে বলেছে সে, তবে এবার তার অভিব্যক্তিতে কোন ক্ষোভ নেই। কেবলই একটু সুর পাল্টেছে। বলেছে, শুধু একটু দেহের বিনিময়ে নাম অর্থ যশ খ্যাতি পেলে ক্ষতি কি???সত্যিই কথাই বলেছে সে, কত মানুষই তো নানা কারণে দেহদান করে স্বার্থে, নি:স্বার্থে কিংবা বাধ্য হয়ে। স্বপ্ন পুরণে এত অল্প বিসর্জন না দেয়ার কি আছে?

মাস চারেক আগে ফোন দিয়ে বলেছিল, সে পালিয়ে আসতে চায় তার প্রেমিকের সঙ্গে,পরিবারের বেড়াজাল থেকে মুক্ত হতে চায়। কিন্তু ছেলেটি রাজি হয়নি। বলে কিনা প্রেম আর বিয়ে এক জিনিস নয়। সত্যিই তো বলেছে ছেলেটি, প্রেম আর বিয়ে কি এক জিনিশ ? প্রেমিকা হওয়াতো অনেক সোজা, কিন্তু স্ত্রী...?? কামনার প্রেমে তো ভাবনা চিন্তা বাছাই লাগে না, কিন্তু বিয়ে,,,?? তা কি হয়, পরিবার ,সমাজ, স্টেটাস, সতীত্ব কতকিছূই তো ভাবতে হয়....

সপ্তাহখানেক আগে ফোন, মেয়েটি আমার সঙ্গে দেখা করবে।জানালাম সময় পেলে জানাব। জীবনের ব্যস্ততায় আর জানানো হয়ে ওঠেনি....

পরিশেষে, মেয়েটি অনেক বড় সুপারস্টার হতে পারবে কিনা জানি না, তবে তার আগেই যদি জড়ে পরে ?বলেছিল, পরিবারের জন্য সে কিছু করতে চায়,,কতটুকু পারবে জানি না।শখের নেশায় সে যে জগতে পা বাড়িয়েছে, শখ শেষ হয়ে গেলেও কি সে বের হয়ে আসতে পারবে?? কারণ, এ জগত যে নেশার জগত।স্বপ্ন পূরণের নেশায় এ জগতের মানুষগুলো এতোবেশি তলিয়ে যায়-ফেরার পথ থাকে না। যখন ভুলটুকু ধরা পড়ে; তখন কিছুই করার থাকে না।

ক্যারিয়ার গড়ার স্বপ্ন সবারই থাকে। কিন্তু মেয়ে বলে অনেক ভেবেই পা বাড়াতে হয়। কারণ পুরুষশাসিত ও পুঁজিবাদী সমাজ এখনও শোষণ এবং লাভের বস্ত্ত বলেই ভাবে নারীকে।সবশেষ তামান্নাদের জন্য একটি কথাই বলার, হে নারী, তুমি স্বেচ্ছায় লুন্ঠিত হতে না চাইলে, কেউ তোমাকে লুণ্ঠন করতে পারে না.......
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৪:৫৯
১২টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কোরআন কী পোড়ানো যায়!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৮

আমি বেশ কয়েকজন আরবীভাষী সহপাঠি পেয়েছি । তাদের মধ্যে দু'এক জন আবার নাস্তিক। একজনের সাথে কোরআন নিয়ে কথা হয়েছিল। সে আমাকে জানালো, কোরআনে অনেক ভুল আছে। তাকে বললাম, দেখাও কোথায় কোথায় ভুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেঞ্চুরী’তম

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


লাকী দার ৫০তম জন্মদিনের লাল গোপালের শুভেচ্ছা

দক্ষিণা জানালাটা খুলে গেছে আজ
৫০তম বছর উকি ঝুকি, যাকে বলে
হাফ সেঞ্চুরি-হাফ সেঞ্চুরি;
রোজ বট ছায়া তলে বসে থাকতাম
আর ভিন্ন বাতাসের গন্ধ
নাকের এক স্বাদে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরানের প্রেসিডেন্ট কি ইসরায়েলি হামলার শিকার? নাকি এর পিছে অতৃপ্ত আত্মা?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯


ইরানের প্রেসিডেন্ট হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত!?

বাঙালি মুমিনরা যেমন সারাদিন ইহুদিদের গালি দেয়, তাও আবার ইহুদির ফেসবুকে এসেই! ইসরায়েল আর।আমেরিকাকে হুমকি দেয়া ইরানের প্রেসিডেন্টও তেমন ৪৫+ বছরের পুরাতন আমেরিকান হেলিকপ্টারে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভণ্ড মুসলমান

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:২৬

ওরে মুসলিম ধর্ম তোমার টুপি পাঞ্জাবী মাথার মুকুট,
মনের ভেতর শয়তানি এক নিজের স্বার্থে চলে খুটখাট।
সবই যখন খোদার হুকুম শয়তানি করে কে?
খোদার উপর চাপিয়ে দিতেই খোদা কি-বলছে?

মানুষ ঠকিয়ে খোদার হুকুম শয়তানি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোথাও ছিলো না কেউ ....

লিখেছেন আহমেদ জী এস, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:১৯




কখনো কোথাও ছিলো না কেউ
না ছিলো উত্তরে, না দক্ষিনে
শুধু তুমি নক্ষত্র হয়ে ছিলে উর্দ্ধাকাশে।

আকাশে আর কোন নক্ষত্র ছিলো না
খাল-বিল-পুকুরে আকাশের ছবি ছিলো না
বাতাসে কারো গন্ধ ছিলোনা
ছিলোনা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×