ছবি - ittefaq.com
মার্কিন সেনাবাহিনী আফগান তালেবানদের ক্ষমতাচ্যুত করে দুই দশক (২০ বছর) কঠোরভাবে দমন করে তাদের কর্মকান্ড বহাল রেখে চলে যাওয়া শুরু করতেই সেই পারজিত তালেবানরা আবার অস্ত্রহাতে সংগঠিতভাবে আফগান সেনাবাহিনীকে নাস্তানাবুদ করে একের পর এক শহর দখল করতে করতে শেষ পর্যন্ত কাবুলের পতন ঘটায় এবং প্রেসিডেন্ট হাউস দখলে নেয়। তার আগেই রক্তপাতহীন এ অভ্যুত্থানের মুখে দেশটির প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি অন্য দেশে পালিয়ে যান এবং পদত্যাগ করেন।এখন তালেবানরা দেশে তাদের সরকার গঠন এবং তাদের শাসন কায়েম করবে।যুক্তরাষ্ট্র সৈন্য প্রত্যাহারের আগে তালেবানদের সঙ্গে সম্পর্ক কোন জায়গায় রেখে গেছে তা সামনে দেখার বিষয়। তবে একটি দেশের জনগণকে চরম বিপদের মুখে যে ফেলে গেছে তা দৃশ্যমান।এবার একটু পিছনে ফিরে দেখি,আমেরিকার আফগান দখলের পটভূমি এবং ছেড়ে যাওয়ার সময় কি নিয়ে যাচছে আফগানিস্তান থেকে এবং আমেরিকা বিহীন আফগান নিয়ে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ রা কি ভাবছেন।সবশেষ খবর, রাজধানী কাবুল দখলের (রোববার - ১৫/০৮/২০২১) পর আফগান যুদ্ধের সমাপ্তি ঘোষণা করেছে তালেবান। এরই মধ্যে নতুন সরকার গঠনের প্রস্তুতি শুরু করেছে তারা। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে সুসম্পর্ক চায় বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি।
আমেরিকার আফগানিস্তান দখলের পটভূমি বা কারন -
সময় ১১ই সেপ্টেম্বর ২০০১ । আমেরিকার ইতিহাসে ভয়াবহতম সন্ত্রাসী হামলার দিন।দিনটি ছিল মঙ্গলবার। বিশ বছর আগে আমেরিকায় চারটি যাত্রীবাহী জেট বিমান ছিনতাই করে সেগুলো দিয়ে আঘাত হানা হয় নিউইয়র্কের দুটি আকাশচুম্বী ভবনে, যে ঘটনায় নিহত হয় কয়েক হাজার মানুষ।এই হামলা ছিল শতাব্দীর অন্যতম সবচেয়ে ভয়াবহ একটি হামলা। শুধু আমেরিকানদের জন্যই নয়, গোটা বিশ্ব চমকে গিয়েছিল ঘটনার ভয়াবহতায়। কত মানুষ মারা গিয়েছিল? এসব হামলায় সব মিলিয়ে মারা গিয়েছিল ২,৯৭৭ জন। এই হিসাবের মধ্যে ১৯ জন ছিনতাইকারী অন্তর্ভুক্ত নেই। নিহতদের বেশিরভাগই ছিল নিউইয়র্কের লোক।
** চারটি বিমানের ২৪৬ জন যাত্রী এবং ক্রুর প্রত্যেকে মারা যান।
** টুইন টাওয়ারের দুটি ভবনে মারা যান ২,৬০৬ জন - তাৎক্ষণিক ও পরে আঘাত থেকে।
** পেন্টাগনের হামলায় প্রাণ হারান ১২৫ জন।
এই ঘটনায় আমেরিকার প্রতিক্রিয়া কী ছিল ?
আমেরিকা এই হামলার জন্য আল কায়েদাকে দায়ী করে এবং ওই হামলার এক মাসেরও কম সময় পর প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিউ বুশ আফগানিস্তান আক্রমণ করেন আল-কায়দাকে নিশ্চিহ্ন করতে এবং ওসামা বিন লাদেনকে খুঁজে বের করতে। আমেরিকার নেতৃত্বাধীন এই অভিযানে যোগ দেয় ন্যাটো সহ আন্তর্জাতিক মিত্র জোট। যুদ্ধ শুরুর কয়েক বছর পর ২০১১ সালে মার্কিন সৈন্যরা অবশেষে ওসামা বিন লাদেনকে খুঁজে পায় প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানে এবং তাকে হত্যা করে।
ঘটনার ধারাবাহিকতা বা ঘটনা পরস্পরা -
ছবি - ittefaq.com
ম্যানহাটনের বুকে তখনও জমে রয়েছে টুইন টাওয়ারের ধ্বংসাবশেষ।ক্রমশ ৩ হাজার মানুষের প্রাণহানির ক্ষত আক্রোশের আকার ধারণ করছে আমরিকানদের মনে।প্রতিশোধের আগুনে তখন জ্বলছে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী দেশ আমেরিকা। বলে বুঝিয়েও তাদের নিরস্ত করতে পারেনি বিশ্বের তাবড় ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলো। সেই ক্ষতে প্রলেপ দিতে আমরিকা রাতারাতি সৈন্যসামন্ত নিয়ে আফগানিস্তানে হামলা এবং তথাকথিত সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের নামে একটি দেশ দখল। কিন্তু দীর্ঘ ২০ বছর ধরে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করে, হাজার হাজার সৈন্যের দেহ কফিনবন্দি করে, দেশের ইতিহাসের দীর্ঘতম যুদ্ধ শেষ করে খালি হাতেই আফগানিস্তান থেকে ফিরতে হচ্ছে আমেরিকাকে। প্রায় বিশ বছর পর আমেরিকান সৈন্য আফগানিস্তান ছেড়ে যাচ্ছে চলতি বছর আগস্ট মাসেই। আর অনেকের আশংকা ছিল আমেরিকা চলে যাওয়ার পর ইসলামপন্থী এই গোষ্ঠী আবার আফগানিস্তানে তাদের ঘাঁটি গাড়তে সচেষ্ট হবে। তবে সকল আশংকা-অনুমান ভূল প্রমাণ করে তালেবান আমেরিকা থাকা অবস্থায়ই আফগান দখল সমাপ্ত করেছে।
আমেরিকার আর্থিক ক্ষতি -
পেন্টাগন থেকে এখনও পর্যন্ত যে পরিসংখ্যান পাওয়া গেছে তাতে, গত ২০ বছরে আফগানিস্তানে যুদ্ধের পিছনে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি ডলার খরচ করেছে আমেরিকা। এর মধ্যে শুধুমাত্র আফগান সেনাকে প্রশিক্ষণ দিতেই খরচ হয়েছে ৮ হাজার ৯০০ কোটি ডলার। ২০২০ সালের একটি রিপোর্টে পেন্টাগন জানায়, সরাসরি যুদ্ধেই তাদের ৮১ হাজার ৫৭০ কোটি ডলার খরচ হয়েছে।
মূলত আল কায়দা এবং তাদের আশ্রয়দাতা তালেবানকে নিধনের লক্ষ্যেই আফগানিস্তানে পা রেখেছিল আমেরিকা।যার প্রেক্ষিতে ২০০৯ সালে আফগানিস্তানে সেনা বাড়িয়ে ১ লাখ করেন আমেরিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। আফগান সেনা এবং পুলিশ মিলিয়ে তালেবানের বিরুদ্ধে আমেরিকার হয়ে লড়াইয়ে নামে ৩ লাখ সেনা।সিগার-এর রিপোর্ট বলছে, আমেরিকার সেনার ২ হাজার ৪৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে আফগানিস্তানে। বেসরকারি সংস্থা থেকে নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে আফগানিস্তানে গিয়ে প্রায় ৪ হাজার জন মারা গেছেন, তাদের অধিকাংশের মৃত্যুর কোনও রেকর্ডই নেই পেন্টাগনের কাছে। আবার গুরুতর জখম হয়ে ফিরেছেন ২০ হাজার ৬৬৬ জন। সিগারের দাবি, সব মিলিয়ে আফগানিস্তান থেকে বেঁচে ফিরেছেন যেসব সৈনিক, তাদের চিকিৎসা এবং কল্যাণমূলক ভাতা বাবদ ২৯ হাজার ৬০০ কোটি ডলার খরচ হয়েছে আমেরিকার। যত দিন তারা বেঁচে থাকবেন ততদিন তাদের ভাতা দিতে হবে আমেরিকা সরকারকে।
তবে আমেরিকা পানির মতো টাকা খরচ করলেও গত ২০ বছরে আফগানিস্তানের পরিস্থিতির তেমন কোনও পরিবর্তন হয়নি। বাঁধ, পাকা রাস্তা, স্কুল, হাসপাতাল তৈরি হয়েছে বটে, কিন্তু ২০২০ সালে বিশ্ব ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী আফগানিস্তানে এখনও বেকারত্বের হার ২৫ শতাংশ এবং দারিদ্রের হার ৪৭ শতাংশ।
আমেরিকার কি শুধুই আর্থিক ক্ষতি হয়েছে না আরো কিছু ?
২০ বছর দীর্ঘ যুদ্ধে আমেরিকার ভাবমূর্তি যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা টাকার অংকে নির্ণয় করা সম্ভব নয় বলে মত কূটনীতিকদের একটা বড় অংশের। তাদের মতে, ভিয়েতনাম থেকে শিক্ষা নিয়ে আফগানিস্তান থেকে আগেই সরে যাওয়া উচিত ছিল আমেরিকার। শান্তি এবং স্থিতাবস্থা ফিরিয়ে আনার আশ্বাস দিয়ে এক সময় আফগানিস্তানে ঘাঁটি গেড়েছিল আমেরিকা। কিন্তু আফগানবাসীকে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে তল্পিতল্পা গুটিয়ে নেওয়া আমেরিকার পক্ষে মঙ্গলজনক নয় বলে মনে করছেন কূটনীতিকরা।তাদের মতে, ইতিহাস সাক্ষী গৃহযুদ্ধ বাধলেই আফগানিস্তানে বিদেশি শক্তির আগমন ঘটে। আমেরিকা আফগানিস্তান ছেড়ে পুরোপুরি চলে গেলে তার পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।
দু’দশক আগে আমেরিকার নেওয়া একতরফা সিদ্ধান্তে এখনও পর্যন্ত আফগানিস্তানেরই সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। ৯/১১ হামলায় যদি আমেরিকার তিন হাজার নিরীহ মানুষের প্রাণহানি হয়ে থাকে তবে তার বিপরীতে গত ২০ বছরে আফগানিস্তানে প্রাণ হারিয়েছেন ৪৭ হাজার ২৪৫ জন নাগরিক যাদের তালেবান, মুজাহিদিন বা অন্য কোনও সংগঠনের সঙ্গে দূর দূর পর্যন্ত কোনও সংযোগ ছিল না। আফগানিস্তান নিয়ে খবর করতে গিয়ে ৮০ জন সাংবাদিক প্রাণ হারিয়েছেন। আবার যুদ্ধক্ষেত্রে স্বেচ্ছাসেবকের কাজ করতে গিয়ে ৪০০-এর বেশি মানুষ মারা গেছে। এই সব তথ্য দিয়েছে যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে করা আমেরিকারই ব্রাউন ইউনিভার্সিটির একটি রিপোর্ট।
যুদ্ধে নেমে কতজন সেনা মারা গেছে এখনও পর্যন্ত তার সঠিক হিসাব যদিও খোলসা করেনি আফগানিস্তান সরকার।দেশের সেনাদের মনোবল ভেঙে যাবে বলেই তা গোপন রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছে আফগান সরকার। তবে গত ২০ বছরে প্রায় ৭০ হাজার আফগান সেনা মারা গেছে বলে অনুমান বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনের।
এত ক্ষমতা ও শক্তি থাকার পরেও মহাশক্তিধর আমেরিকা তালেবানকে রুখতে পারল না কেন ?
বিশ্বের বড় বড় রাজনীতি বিশ্লেষক ও কূটনীতিকদের মতে, আফগানিস্তানে আমেরিকা দখলদার হিসাবে অহংবোধের লড়াই করতে গিয়েছিল যে কিনা ক্ষমতা ও শক্তির গর্বে অন্ধ ছিল। কিন্তু তালেবানের কাছে তা ছিল শিকড় তথা দেশ রক্ষার লড়াই। তাই যতবার আঘাত নেমে এসেছে, ভূপাতিত হয়েও বারবার মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে তারা। গুলি-বোমায় একজন তালেবান মারা গেলে তার জায়গায় আরও ১০ জন এগিয়ে এসেছে।
আমেরিকার সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে লাঘমান প্রদেশের তালেবানের সামরিক শাখার প্রধান মৌলবি মুহাম্মদ কায়েস বলেন, "এই লড়াইটা আমাদের কাছে ঈশ্বরের আরাধানার মতো। তাই এক ভাই মারা গেলে, দ্বিতীয়জন উপরওয়ালাকে অসন্তুষ্ট করবে না। বরং সর্বশক্তি দিয়ে আগুনে ঝাঁপিয়ে পড়বে"।
২০১৩ সাল থেকে আফগানিস্তানে প্রায় ২৭ হাজার বোমা নিক্ষেপ করেছে আমেরিকা। এর মধ্যে গত বছরই ৭ হাজার ৪০০ বোমা নিক্ষেপ করা হয়। কিন্তু মার্চ মাসে আমেরিকা সেনা সরানোর কথা ঘোষণা করার পর থেকে সেখানে তালেবান এবং আমেরিকার সেনাদের মুখোমুখি সংঘর্ষ প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। বরং আফগান সেনাকেই বেছে বেছে নিশানা করেছে তালেবান। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠনের অনুমান, বর্তমানে আফগানিস্তানে সক্রিয় তালেবান যোদ্ধার সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজার।
এছাড়াও মধ্যস্থতাকারী হিসেবে এবং আংশিক সময়ের যোদ্ধা হিসেবে বহু সদস্য তালেবানদের হয়ে লডাই করছেন যারা সরাসরি তালেবানের সঙ্গে নাম জড়াতে রাজি নন। আফগান সেনাবাহিনী থেকেও বহু সৈন্য তালেবানে যোগ দিয়েছেন। আবার হানাহানি এড়াতে তাদের সঙ্গে সমঝোতার পথ বেছে নিয়েছেন বিভিন্ন প্রদেশের গভর্নররা। তাতেই আশরফ গনি, আমেরিকা এবং ন্যাটোকে হটিয়ে ২০ বছর পর ফের তালেবান কাবুলে শাসন কায়েমের পথে রয়েছেন বলে মনে করছেন কূটনীতিকরা।
ছবি - bbc.com
দীর্ঘ দুই দশক আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসনের পর ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে কাতারের দোহায় এক শান্তিচুক্তির মাধ্যমে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহার করতে সম্মত হয় যুক্তরাষ্ট্র। এর বিপরীতে আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অংশ নিতে তালেবান সম্মত হয়।এই বছরের মে মাসে সৈন্য প্রত্যাহারের কথা থাকলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এপ্রিলে এক ঘোষণায় ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সৈন্য প্রত্যাহারের কথা জানান। পরে জুলাই সময়সীমা আরো কমিয়ে এনে ৩১ আগস্টের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন তিনি।
মার্কিনিদের সাথে চুক্তি অনুসারে আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সরকারের সাথে তালেবানের সমঝোতায় আসার কথা থাকলে কোনো সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেনি দুই পক্ষ। সমঝোতায় না পৌঁছানোর জেরে তালেবান আফগানিস্তান নিয়ন্ত্রণে অভিযান শুরু করে। ৬ ই আগস্ট প্রথম প্রাদেশিক রাজধানী হিসেবে দক্ষিণাঞ্চলীয় নিমরোজ প্রদেশের রাজধানী যারানজ দখল করে তারা। যারানজ নিয়ন্ত্রণে নেয়ার ১০ দিনের মাথায় রোববার (১৫/০৮/২০২১) কাবুল দখল করে তালেবান যোদ্ধারা।
তালেবানদের আফগানিস্তান দখল করে নেওয়ার পর বিশ্বনেতাদের প্রতিক্রিয়া -
তালেবানরা আফগানিস্তান দখল করে নেওয়ার পর নানারকম প্রতিক্রিয়া জানাচেছন বিশ্বনেতারা। কেউ উদ্বিগ্ন, কেউ বা আত্মপক্ষ সমর্থন করতে ব্যস্ত।
১। মার্কিন প্রতিক্রিয়া - মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এক বিবৃতিতে বলেছেন, "আরও এক বছর বা পাঁচ বছরও মার্কিন সেনা যদি আফগানিস্তানে থাকত, তাহলেও কোনো ফারাক হতো না। আফগান সেনাই নিজের দেশকে রক্ষা করতে পারল না। অন্য দেশের অসামরিক বিরোধ মেটাতে আমেরিকার সেনা অনন্তকাল ধরে সেখানে থাকবে এটা আমার কাছে গ্রহণযোগ্য নয়"।এদিকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ফেরা তালেবানের সঙ্গে শর্তসাপেক্ষে কাজ করার বিষয়ে আগ্রহ দেখিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ আগ্রহের কথা জানান যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিনকেন জানান, "দেশের জনগণ, বিশেষ করে নারী ও কিশোরীদের মৌলিক অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা দেখালে এবং সন্ত্রাসীদের আশ্রয় না দিলে তালেবান নেতৃত্বাধীন সরকারের সঙ্গে কাজ করবে যুক্তরাষ্ট্র"।
২।যুক্তরাজ্যের প্রতিক্রিয়া - যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন," আফগানিস্তানের পরিস্থিতি খুবই কঠিন জায়গায় চলে গেল এবং ভবিষ্যতে তা আরও খারাপ হতে পারে। তার মতে, কোনোরকম চুক্তি ছাড়া সমমনোভাবাপন্ন দেশগুলো যেন তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি না দেয়"। আজ বুধবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টের জরুরি অধিবেশন ডাকা হয়েছে। সেখানে আফগান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হবে।
৩। জাতিসংঘের আবেদন - জাতিসংঘে আফগানিস্তান নিয়ে জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। তবে তালেবান কাবুলে ঢোকার পরই জাতিসংঘের তরফে আবেদন জানানো হয়েছে, তারা যেন সংযম বজায় রাখে।
৪। কানাডার প্রতিক্রিয়া - কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন, "আফগানিস্তানের মানুষ, বিশেষ করে নারী, বাচ্চা মেয়ে, এলজিবিটি সম্প্রদায়ের পাশে আগের মতোই থাকবে কানাডা"।সেই সঙ্গে বেশ কিছু আফগানকে কানাডায় নিয়ে আসার কথাও বলেছেন তিনি। তিনি জানিয়েছেন, কাবুলের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর আবার দূতাবাস খোলা হবে।
৫।তুরস্কের প্রতিক্রিয়া - তুরস্ক জানিয়েছে তালেবানরা চাইলে সহায়তা দিতে প্রস্তুত রয়েছে আঙ্কারা। আফগানিস্তান থেকে ন্যাটো সেনা প্রত্যাহারের পর কাবুল বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পরিকল্পনাও বাদ দিয়েছে দেশটি। তুর্কি সূত্রের বরাত দিয়ে সোমবার রয়টার্স এই খবর জানিয়েছে। তুরস্কের একটি সূত্র জানিয়েছে বিমানবন্দরের সাম্প্রতিক বিশৃঙ্খল পরিবেশের আলোকে তুর্কি সেনাদের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পরিকল্পনা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে গেছে। এরদোগান বলেছেন, "তার দেশ পাকিস্তানের সঙ্গে মিলে আফগানিস্তানের স্থিতিশীলতার জন্য কাজ করবে। এ ব্যাপারে যথাসাধ্য সবকিছুই করা হবে।"
৬।চীনা প্রতিক্রিয়া - বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তিধর দেশ চীন তালেবান সরকারের সঙ্গে সহযোগিতামূলক ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও গভীর করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনইং বলেছেন, "আফগান জনগণের স্বাধীনভাবে নিজেদের ভাগ্য নির্ধারণের অধিকারকে সম্মান জানায় চীন"। আফগান জনগণের ইচ্ছা ও পছন্দকে চীন সম্মান করে বলে মন্তব্য করেছেন চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনইং। সোমবার (১৬ আগস্ট) এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, "তালেবানরা বার বার বলেছে তারা চীনের সাথে সুসম্পর্ক চায়। আমরাও তাদের এই ইচ্ছাকে স্বাগত জানাই। চীন সবসময় আফগানিস্তানের সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা এবং ভৌগোলিক অখণ্ডতাকে মর্যাদা দিয়েছে"।
৭।রাশিয়ার প্রতিক্রিয়া - এদিকে রাশিয়া জানিয়েছে, "তারা কাবুলে কূটনৈতিক উপস্থিতি বজায় রাখবে এবং তালেবানদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলার আশা করছে। তালেবানদের দেশের শাসক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার তাড়াহুড়ো নেই এবং তাদের আচরণ ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে "।
৮। পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া - পশ্চিমা সমর্থিত সরকারকে উৎখাত করে তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করাকে ‘দাসত্বের শেকল ভাঙা’র সঙ্গে তুলনা করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তার মতে, এর মাধ্যমে দাসত্বের শৃঙ্খল ভেঙেছে আফগানরা। সোমবার পাকিস্তানে ইংরেজি শিক্ষাবিষয়ক এক বক্তৃতায় এ মন্তব্য করেন ইমরান। আফগানিস্তান ইস্যুতে সিদ্ধান্তে অপেক্ষা করতে চায় পাকিস্তান। কাবুলের নতুন সরকারকে স্বীকৃতির বিষয়ে এখনই কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে চায় না পাকিস্তান। এই বিষয়ে তাদের ভবিষ্যৎ কী হবে - তা ঠিক করতে তারা চীন, রাশিয়া ও ইরানের মতো দেশের সাথে একত্রে কাজ করবে বলেও জানানো হয়েছে।
৯।ইরানের প্রতিক্রিয়া - আফগানে বর্তমান স্পর্শকাতর পরিস্থিতিতে যে কোনো যুদ্ধ, সংঘাত কিংবা সহিংস পরিস্থিতি ঠেকানোর জন্য অন্তর্বর্তী সমন্বয় পরিষদের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়ার প্রতি ইরানের সমর্থন থাকবে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফ আফগানিস্তানের প্রতিবেশী দেশগুলোতে বাস্তুহারা আফগান নাগরিকদের ঢল সামাল দেয়াকে এই মুহূর্তের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয় বলে মন্তব্য করেন। বিশেষ করে করোনা মহামারীর এই সময়ে এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলা করা দুঃসাধ্য ব্যাপারে বলে জানান জারিফ।এ ছাড়া, ইরানের প্রেসিডেন্ট এব্রাহিম রইসি বলেন, ইসলামি ইরান বিশ্বাস করে আফগানিস্তানে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় সেদেশের নেতৃবৃন্দের দৃঢ় ইচ্ছাশক্তি জরুরি।তিনি বলেন, ইরান অত্যন্ত সতর্কতার সাথে আফগান পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে এবং আমরা ওই দেশটির সাথে সুপ্রতিবেশীসূলভ সম্পর্ক চাই।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সাঈদ খবিত জাদেহ সাংবাদিকদের বলেছেন, আমরা আশা করি আফগানিস্তানের সব পক্ষ রাজনৈতিক উপায়ে বিরাজমান সমস্যা সমাধানে ভূমিকা রাখবে এবং আফগানিস্তানে যেই ক্ষমতায় থাকুক না কেন আফগানদের মাধ্যমেই সংকট সমাধানে ইরান সবসময় ওই দেশটির পাশে থাকবে।
আফগানিস্তানে আমেরিকা ও তার দোসররা যা করেছে তা কি সন্ত্রাস বিরোধী যুদ্ধ, নারী স্বাধীনতা রক্ষা না দখলদারদের দ্বিমুখীতা ?
১।মিথ্যায় ভরা এক মিশন আমেরিকা সন্ত্রাস বিরোধী যুদ্ধ,মানবাধিকার,নারী অধিকার,এবং গণতন্ত্রের নামে আফগানিস্তানে যে মিশনে নেমেছিল এটি ছিল একটি বড় মিথ্যা । জো বাইডেন চান না, যে মিশন চারজন মার্কিন প্রেসিডেন্টের আমলে চলেছে, সেটা পঞ্চম জনের সময়ও চলুক। আর, মানবাধিকার? নারী অধিকার? গণতন্ত্র? মনে হচ্ছে, এখন আর এসব পশ্চিমাদের সমস্যা নয়, হঠাৎ করে এখন এগুলো আফগানদের নিজেদের সমাধানের বিষয় হয়ে উঠেছে।সম্প্রতি বাইডেন বলেছেন,"আফগান নেতাদের একসাথে কাজ করতে হবে,তাদের নিজেদেরই তাদের জন্য লড়তে হবে, তাদের দেশের জন্য সংগ্রাম করতে হবে"।
২।আফগানদের প্রতারিত ও পরিত্যক্ত করা - বাইডেন তার বক্তব্যে এটা উল্লেখ করেননি যে, ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্র শুধু তালেবান ও আল-কায়েদার সাথে লড়তে আফগানিস্তানে যায়নি। আফগানদের গণতন্ত্র এনে দেয়ারও অঙ্গীকার করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। আফগান নারীদের অধিকার রক্ষার কথাও বলেছিল তারা। কিন্তু এখন এটা পরিষ্কার যে, ওই বক্তব্যগুলো শুধু ফাঁকা বুলিই ছিল।নারী অধিকার কিংবা গণতন্ত্র কোনোটাই মূল অগ্রাধিকারের বিষয় ছিল না।আফগানিস্তানের যে নারীরা এতদিন তাদের অধিকারের জন্য লড়ছিলেন, তাদের এই আশ্বাস দেয়া হয়েছিল যে, গণতন্ত্র ও আইনের শাসন সবসময় জয়ী হয়। কিন্তু এখন এই নারীরা নিজেদের প্রতারিত ও পরিত্যক্ত মনে করছেন। অনেক নারী অধিকার কর্মী এখন তাদের জীবন নিয়ে শঙ্কায় আছেন।
৩। আফগান শরণার্থীদের গ্রহণ করতে হবে - ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আমরিকাকে আফগান শরণার্থীদের গ্রহণ করতে হবে। সাম্প্রতিক সময়ে লাখ লাখ আফগান ঘর ছেড়ে পালিয়েছেন। এরপরও আফগানিস্তানকে ‘নিরাপদ দেশ’ চিহ্নিত করে ইউরোপে আশ্রয় নেয়া অনেক শরণার্থীকে দেশে পাঠানো হয়েছে। ইউরোপ আর বলকান দেশগুলোতে আশ্রয় নেয়া অনেক আফগান করুণ অবস্থায় আছেন।
এতদিন আফগানিস্তানের যুদ্ধবাজ ও দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতিবিদদের সমর্থন না করে জার্মানিসহ পশ্চিমা বিশ্বের উচিত ছিল আফগান মানুষ, সমাজ ও সংস্কৃতি বোঝার চেষ্টা করা। নারী অধিকার কর্মীদের অর্থহীন অঙ্গীকারের বাণী না শুনিয়ে তাদের শঙ্কার কথা শোনা উচিত ছিল। আরো উচিত ছিল সেনাবাহিনী গড়ে তোলায় সহায়তা না করে ভবিষ্যৎ গড়তে আফগান মানুষদের সহায়তা করা।এখন কী হবে? পশ্চিমা বিশ্বে আশ্রয় নেয়া আফগান শরণার্থীদের এখন যত দ্রুত সম্ভব আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এড়িয়ে গ্রহণের ব্যবস্থা করতে হবে। যে শরণার্থীদের আশ্রয় আবেদন ঝুলে আছে সেগুলোর দ্রুত নিস্পত্তি করতে হবে। আগামী কয়েক মাস ও বছরে যে আফগানরা আসবেন তাদেরও গ্রহণ করতে হবে। এভাবে অন্তত ইউরোপ আফগানিস্তানের মানুষের ঋণ কিছুটা পরিশোধ করতে পারবে।
ছবি - bbsbangla.com.bd
কাবুল দখলের বিজয়ী তালেবানরা আমেরিকার দালালদের গুলি করে মেরে ফেলতে পারত, প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে রক্তের গঙ্গা বইয়ে দিয়ে ক্ষমতা দখল করতে পারত, আমেরিকা ও তার মিত্র ন্যাটো জোটের দূতাবাস দখল করে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে পারত। কিন্তু তারা এসব করেনি। বরং ধৈর্য ধরেছে। বিদেশীদের দূতাবাস থেকে বিমানবন্দরে যাওয়ার এবং বিমানে করে নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। এমনকি যেসব মার্কিন দোসর ২০ বছর ধরে তালেবানের বিরুদ্ধে কাজ করেছে, ষড়যন্ত্র করেছে, মানুষ হত্যায় দখলদারদের সহযোগিতা করেছে তাদেরও পাকড়াও করেনি তালেবান। প্রাণের ভয়ে ভীতসন্ত্রস্ত ওই ব্যক্তিদের মধ্যে দেশ ছেড়ে যাবার প্রাণান্ত চেষ্টা দেখা গেছে কাবুল বিমানবন্দরে। বিমানে ওঠার প্রতিযোগিতায় সৃষ্ট বিশৃঙ্খলায় নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে সাতজন প্রাণ হারায়। আর এসকল জায়গায় তালেবানরা যে সহনশীল আচরণ করছে এটাই লক্ষ করার বিষয়।
ছবি - এএফপি
কাবুলে উপস্থিতির প্রথম দিনেই তালেবানের উপ-প্রধান মোল্লা আবদুল গনি বারাদারের ঘোষণায় বলেন, "তালেবানের মূল লক্ষ্য আফগানিস্তানের স্বাধীনতা অর্জন করা , তবে তারা এখনো আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানে বিশ্বাসী"। ১৬ আগস্ট কাতারের দোহা থেকে দেয়া বিবৃতিতে বারাদার বলেন, "তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতায় একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করতে চায় না। তালেবান মনে করে, আফগানিস্তানের সব শ্রেণীর মানুষ আইনের দৃষ্টিতে সমান"।
তিনি আরো বলেন, "ইসলামী অনুশাসনের আওতায়, সব আন্তর্জাতিক আইন ও রীতিনীতি, মানবাধিকার, সংখ্যালঘুদের অধিকার, নারী অধিকার এবং বাকস্বাধীনতার প্রতি তালেবান সম্মান প্রদর্শন করে। এ ছাড়া, তালেবান নারীর শিক্ষা, চাকরি, সম্পদের মালিকানা ও ব্যবসা করার অধিকার প্রদান করবে"। তবে এসবই হবে ইসলামী আইন ও জাতীয় স্বার্থের প্রতি লক্ষ্য রেখে।
এ প্রসঙ্গে একটি কথা না বললে নয়। কোনো দেশের মানুষ নিজেদের স্বাধীন ইচ্ছায় আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার পাবে, এটাই আন্তর্জাতিক বিশ্বের স্বীকৃত রীতি।আফগানরা সেই অধিকারবলে ইসলামকে তাদের আদর্শ হিসাবে নিলে কারো কিছু বলার থাকতে পারে না। আমরা কেবল এটুকু বলতে পারি, শরিয়াহ আইনে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সব মানুষকে যেসব অধিকার দেয়া হয়েছে তার প্রাপ্তি নিশ্চিত করা হলো কিনা।আমেরিকার বিখ্যাত পিউ রিসার্চ সেন্টারের সমীক্ষায় দেখা গেছে, "আফগানিস্তানের ৯৯ শতাংশ মানুষ শরিয়াহ আইন চায়"।এখানে মুখোশধারী দখলদার ও গণতন্ত্রীদের দেশের ‘প্রগতি’শীলদের পিঠ যতই চুলকাক, আফগানরা যুদ্ধ করে নিজেদের মুক্ত করেছে, নিজেরাই নিজেদের আদর্শ ঠিক করবে। বাইরে থেকে কারো নাক না গলানোই বোধ হয় সম্মানজনক। আমেরিকার লজ্জাজনক পৃষ্ঠপ্রদর্শনের পর অন্যদের এ নিয়ে মাথা না ঘামানোই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
তথ্যসূত্র ও সহযোগীতায় - বিবিসি, আল জাজিরা,ডয়চে ভেলে,বার্তাসংস্থা রয়টার্স এবং হিন্দুস্তান টাইমস।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৫:৪৪