somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জাপানের ডায়েরীঃ চিকিৎসা ব্যবস্থা -ওদের আর আমাদের ফারাক:((

২৪ শে জুলাই, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আগের পর্বঃ জাপানের ডায়েরীঃ প্রবাসে বাংলাদেশকে খোঁজা।

একজন রোগী যদি ডাক্তারের কাছে বন্ধুসূলভ ব্যবহার ও মানসিকভাবে সাপোর্ট পায়, রোগীর রোগ ৫০% কমে যায়। ডাক্তারী একটা সন্মানিত পেশা, যা শুধু সেবার চাদরে মোড়ানো। কিন্তু আমাদের দেশে কিছু কিছু ডাক্তার নামক *******(স্টার দিলাম, আপনারা নাম বসায়ে নেন) এই মহান পেশাকে কসাই এর পেশায় নামিয়ে ফেলেছে। দেশের বাহিরে বেশি টাকা খরচ করেও মানুষ বিদেশে চিকিৎসা নিতে উৎসাহিত হচ্ছে, কারন আমাদের দেশীয় বেশিরভাগ ডাক্তারেরই ব্যবসায়িক মানসিকতা। যেখানে উচিত পরম মমতায় একজন রোগীকে ব্যবস্থাপত্র দেয়া, সেখানে তাদের মাথায় থাকে কত দ্রুত সময়ে কত বেশি রোগী দেখা যায়, নগদ নারায়নের তড়িৎ ব্যবস্থার জন্য। দূর্ভাগা আমরা, একে আমরা পাচ্ছি অবহেলিত চিকিৎসা ব্যবস্থা আবার নেই কোন জবাবদিহীতা। যেন মগের মুল্লুক।

যাহোক আজ জাপানের ডায়েরীতে থাকছে, জাপানে চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে আমার নিজের অভিজ্ঞতার বিবরনী।


যদিও জাপানে ইংরেজী প্রচলন একেবারে কম। তারপরও চিকিৎসাক্ষেত্রে কিছুটা আশার সঞ্চার হয়, কারন ডাক্তাররা একটু হলেও ইংরেজী পারে, মোটামুটি উতরে যাওয়া যায়। সবচেয়ে ভালো লাগার দিক হলো, ডাক্তার থেকে শুরু করে হাসপাতাল/ক্লিনিকের সব স্টাফদের অমায়িক ব্যবহার। সিরিয়াল নেবার কোন ঝামেলা নাই, ক্লিনিকে গিয়ে কাউন্টার এর সামনে মেশিন থেকে সিরিয়াল নিলেই হলো, এরপর সিরিয়াল আসলে রোগ অনুসারে (অনেক সময় প্রথমবারের মত হাসপাতালে গেলে, একটা ফরম পুরুন করতে হয়, দেহে কি সমস্যা দেখা দিয়েছে, যা দেখে ওরা ঠিক করে কোন স্পেশালিষ্ট ডাক্তারকে দেখাতে হবে) নিদিষ্ট ডাক্তারের সাথে আলাপন। ডাক্তারের মাঝে নেই কোন তাড়াহুড়া, যে একজনকে পার করে দিলেই আর একজন রোগী আসবে। একজন রোগী যদি মনখুলে সময় নিয়ে ডাক্তারের সাথে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করতে না পারে, সুচিকিৎসা অসম্ভব, যা আমাদের দেশে সম্ভব না, এক দুলাইন শুনেই আমাদের দেশে ডাক্তার ব্যবস্থাপত্র দেয়া শুরু করেন, কিন্তু জাপানে ডাক্তাররা বেশি দায়িত্ববান, মন দিয়ে রোগীর কথা শুনবে, দরকার হলে যথাযথ টেষ্ট দেবে, কিন্তু আমাদের দেশের মত কমিশন খাওয়ার লোভে দরকার না হলেও আজাইরা টেষ্টের ফাঁদ না। কোন কিছু শিওর না হয়ে, কখননই ব্যবস্থাপত্র দেবে না।

আর জাপানে যেকোন ক্লিনিক/হাসপাতালে প্রথমবার গেলেই একটা আইডি কার্ড করে দেয়, আর সাথে আইডি নাম্বারের অধিনে ওদের কম্পিউটারে রোগীর রোগের ইতিহাস ও সাথে কি ব্যবস্থাপত্র দেয়া হয়েছে, কি টেষ্ট করেছে, ফলাফল কি, সবই আপডেট থাকে, ফলে বারবার হাসপাতালে গেলে ফিরিস্তি গাইতে হয় না। [আমাদের দেশে এমন যে কবে হবে, ডিজিঠাল বাংলাদেশ:(( )


ছিমছাম পরিবেশ দেখেই মনটা ভালো হয়ে যাবে চিকিৎসা কেন্দ্রে এসে, এখানে কমপক্ষে ৩০জনের মত লোকজন রিসেপশনে অপেক্ষা করে, অথচ কোন হইচই নাই, পিন পতন নিরবতা প্রায়, আর আমাদের দেশের কোন হাসপাতালের কথা চিন্তা করুন, পুরা হাট-বাজার।






ছিমছাম রিকভারি রুম


কোন টেস্টের জন্য যখন স্পেশাল ড্রেস পরতে হয় রোগীকে, সেক্ষেত্রে রোগীর ব্যক্তিগত জিনিসপত্র রাখার জন্য বিশেষ সিকিউরড ব্যবস্থা। ছোট লকার থাকে, যেখানে রোগী নিজেই তার সবকিছু রেখে লক করে নিজের কাছেই চাবি রাখতে পারে, পরে নিজেই বের করে নিতে পারে, টেষ্টের পরে। যদিও চুরির কোন সম্ভবনাও নেই।


আমাদের দেশে যেখানে এটা কল্পনাও অবাস্তব। ১টাকার কয়েন রাস্তায় পড়ে থাকলেও সেটা নিমিষেই ঊধাও হয়ে যাবে।


অবাক লাগে, সাথে কষ্টও লাগে আমাদের রাজনীতিবিদদের বড় বড় কথা শুনে, কিন্তু আসল কাজে কেউ এগিয়ে আসে না, নেই কোন জবাবদিহীতা, যে যেমন পারছে চিকিতসার নামে কতিপয় ডাক্তার লুটে খাচ্ছে আমাদেক, আর গোটা চিকিতসক গোষ্ঠিকে কলংকিত করছে, সেই সাথে মাঝে মাঝেই অকালে ঝড়ে পড়ছে জীবন, বাড়ছে অনাকাংখিত মৃত্যু।/:)


সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুলাই, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:৫১
৯টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×