somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সোহানী
হাজার হাজার অসাধারন লেখক+ব্লগারের মাঝে আমি এক ক্ষুদ্র ব্লগার। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া লেখালেখির গুণটা চালিয়ে যাচ্ছি ব্লগ লিখে। যখন যা দেখি, যা মনে দাগ কাটে তা লিখি এই ব্লগে। আমার ফেসবুক এড্রেস: https://www.facebook.com/sohani2018/

আমার সুইজারল্যান্ড ট্যুর.........পর্ব-৩

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১২ দুপুর ১২:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রথম পর্ব....
Click This Link

দ্বিতীয় পর্ব......
Click This Link

সাধারনত বিদেশ ট্রেনিং বা সেমিনার হলে এমনভাবে সিডিউল হয় যাতে একদিনের বেশী Participant রা ঘুরার সময় পায় না কিন্তু আমরা ব্যাতিক্রম ছিলাম। আমাদের ট্যুর ছিল মোট ১২ দিনের কিন্তু ৩দিনের মাথায় আমাদের সব কাজ শেষ (আমাদের performance সন্দেহতীত ভালো ছিল, ডোনার ও বুঝতে পারেনি আমরা এত তাড়াতাড়ি কাজ শেষ করবো)। যাহোক হাতে যেন লটারী টিকেট পেলাম......কোথায় যাওয়া যায়..। যেহেতু Schengen ভিসা তাই ইউরোপ যেকোন দেশে যেতে বাঁধা নেই।



প্রথমে সিদ্ধান্ত নিলাম ফ্রান্স যাবো তারপর জার্মান যাবো। খোঁজ খবর নেয়ার পর জার্মান বাদ দিলাম কারন ৮ ঘন্টা যেতে লাগে ট্রেনে আর ট্রেনে না গেলে জার্নিটাই বৃথা কারন সেটাই আসল জার্নি। পথের অপরুপ সৈান্দর্য না দেখলে নাকি ট্যুরটাই ব্যার্থ। আর যাওয়া আসা ২০ ঘন্টা আর খরচ মিলে অনেক.....যা আমাদের জন্য কষ্টকর। ফ্রান্স যাওয়া বাতিল করলাম কারন ল্যুভে মিউজিয়াম যদি নাই দেখি তাহলে ফ্রান্স যাওয়া কেন। সুভাকাঙ্খিরা বললো...সবাই আসে সুইজারল্যান্ড দেখতে আর তোমরা যাবা বাইরে.....!!!!!!

সিদ্ধান্ত নিলাম সুইজারল্যান্ড এর ট্যুরিস্ট স্পটগুলাই তাহলে যাবো। প্রথমেই সিলেক্ট করলাম জেনেভা লেক সহ পুরা জেনেভা ঘুরবো একদিন তারপর লুজান যাবো আর লুজান যাওয়ার পথে ওল্ড টাউন দেখবো। পরে ইন্টারলেকান সহ অন্যান্য স্পট ঘুরবো। সঙ্গে হলিউড বলিউড নায়ক/নায়িকাদের সাথে সাক্ষাত করবো কারন Maximum স্যুটিং সেখানে হয়...............।



এখানে সুবিধা হচ্ছে বাস, ট্রাম, মেট্রো খুবই available, প্রতি ৫ মিনিটে পাবেন। আর যেহেতু আমাদের ফ্রি পাস আছে তাই টিকেট কাটার কোন ঝামেলা নেই। তবে ফ্রি পাস শুধুমাত্র ইন্টারসিটির জন্য..সিটির বাইরে গেলে রেল স্টেশন থেকে টিকেট কাটতে হবে। বিমান বন্দরের সাথেই রেল স্টেশন ...আর রেলের টাইম মেইন্টইন দেখলে লজ্জা পেতে হয়......মিনিট না সেকেন্ড ধরে চলে। আবার টিকেটর সুবিধা একবারেই কাটা যায় আর ফিরতের সময় শুধু একবার পাঞ্চ করলেই চলে। প্রতিবার টিকেট কাটতে গেলেই টিকেট মাস্টার (মহিলা) ১ম ক্লাসের টিকেট কাটার জন্য পীড়াপিড়ি করে......ওই কথার কান দিবেন না কারন ১ম আর ২য় শ্রেনীতে তেমন পার্থক্য নেই বললেই চলে শুধু ৩০/৪০ ফ্রা বেশী দেয়া আবার অসুবিধাও আছে মেক্সিমাম বয়স্ক মহিলারা বসে ১ম শ্রেনীতে আর একটু জোরে কথা বললেই হিস হিস করে। একবার আমরা ভুল করে ১ম শ্রেনীতে উঠে পড়েছিলাম কিন্তু টিকেট চেকার কিছুই বললো না.......বুঝতে পেরেছিল আমরা বিদেশী কিন্তু আন্টিদের দাবরানিতে অতীষ্ট ছিলাম সারাটা পথ।।



যেকোন বাস, ট্রাম, মেট্রো উঠলেই আপনি জেনেভা লেক এ পৈাছাতে পারবেন কিন্তু সমস্যা হলো ভাষা.....প্রতি স্টপেজই নোটিস করে তবে ইংরেজি নয় তাই আপনাকে বুঝে নিতে হবে আর অবশ্য সঙ্গে সিটি ম্যাপ থাকলে কোন সমস্যাই না। (এয়ারপোর্টই নেমে Information booth এ সিটি ম্যাপ চেয়ে নিলেই হলো...ফ্রি দিবে।) আমরা লেকের পাড়ে নেমে আধ ঘন্টা বিভিন্ন লোককে জিঙ্গাসা করেও খুঁজে পাইনি কারন কেউই জেনেভা লেক চেনে না আর আমরাও লেকের পাড়েই লেক খুঁজছিলাম.....:):):):):):):):).... জেনেভা লেক বর্ননাতীত সুন্দর (লুজান দেখার আগ পর্যন্ত মনে হয়েছে)। লেকের অন্য পাড়ে ফ্রান্স......অপূর্ব.....এতো পরিস্কার পানি যে পানির নিচের পাথর পর্যন্ত দেখা যায়.......পানিতে হাস খেলা করে....কেউ ঢিল ছুড়ে না.......ময়লা ফেলে না.........হাসের রোস্ট খাওয়ার কথাও কেউ মনে করে না.. ......কোথাও হিসুর গন্ধ নেই.........বুড়িগঙ্গার কালো পানের কথা মনে করিয়ে দেয়। আহারে বুড়িগঙ্গাটাকে যদি একটু যত্ন আত্বি করতো.........সেটাও এমন চমৎকার টুরিস্ট স্পটের মর্যাদা পেত।



জেনেভা সিটিতে ঘুরার মত অনেক স্পট আছে কিন্তু অবশ্যই মেইন রেল স্টেশন এ সাবধান থাকতে হবে চোর বাটপারের ভয়ে......আমাদের দেশের যেকোন স্টেশনের মত চোর বাটপারে ভর্তি। একটু অসাবধান হয়েছেন তো গেছেন। আমার বসের ল্যাপটপ মূহুর্তের মধ্যে গায়েব হয়ে গেছে..............পুলিশকে বলার পর ব্যাগ উদ্ধার হয়েছে তবে ল্যাপটপ ছাড়া (চোর ব্যাটার মনে হয় ব্যাগ আছে...)।

আন্ডারগ্যাউন্ড মার্কেট আছে কিছু কম মূল্যে কিনা কাটা করা যায় অবশ্য ডিসকাউন্ট এখানে মূল্যবান...ভালো ভালো জিনিসে ডিসকাউন্ট এ দেয়। তবে খাবার জিনিস অবশ্যই কুপ সুপার সপ থেকে কিনবে কারন ওখানে অনেক অনেক কম দাম অন্যান্য সুপার সপ থেকে।

আমাদের পরবর্তী অভিযান লূজান এ......ট্রেন জার্নি তারপর স্টেশন চেইন্জ করে ই-ট্রেনে। আমরা লূজান এ নেমে হতভম্ব হয়ে গেলাম......এখানে না এলে সুইজারল্যান্ড ট্যুরটাই বৃথা হতো............ ... সে যে কিরকম সৈান্দর্য্য তার বর্ননা করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। এ যেন অপার্থিব প্রাকৃতিক সৈান্দর্য্য............প্রকৃতির সাথে মানুষের চেষ্টা........সব মিলিয়ে অন্যরকম পরিবেশ............... আর মনটা যেন কোথায় হারিয়ে যায় লেকের পাড়ে বসলে..........সেখান থেকে আসতেই মন চায় না। তুলনা করতে পারছি না তাই কিছু ছবি দিলাম আপনাদের জন্য।



আজ আর না লিখলাম...ছবি দেখুন আর পরবর্তী লেখার জন্য অপেক্ষায় থাকুন......
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১২ দুপুর ১২:৩২
২০টি মন্তব্য ২০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অপরূপের সাথে হলো দেখা

লিখেছেন রোকসানা লেইস, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৩৫



আট এপ্রিলের পর দশ মে আরো একটা প্রাকৃতিক আইকন বিষয় ঘটে গেলো আমার জীবনে এবছর। এমন দারুণ একটা বিষয়ের সাক্ষী হয়ে যাবো ঘরে বসে থেকে ভেবেছি অনেকবার। কিন্তু স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×