somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সোহানী
হাজার হাজার অসাধারন লেখক+ব্লগারের মাঝে আমি এক ক্ষুদ্র ব্লগার। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া লেখালেখির গুণটা চালিয়ে যাচ্ছি ব্লগ লিখে। যখন যা দেখি, যা মনে দাগ কাটে তা লিখি এই ব্লগে। আমার ফেসবুক এড্রেস: https://www.facebook.com/sohani2018/

টেক্সাস স্যুটিং ও আমার ভাবনা

২৮ শে মে, ২০২২ সকাল ১০:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



খবরটি যখন চলছিল তখন আমি ড্রাইভ করছিলাম। হঠাৎ করে যেন আমার পৃথিবী দুলে উঠলো। কি ভয়ংকর ঘটনা, কি ভীষন কষ্টের খবর।আমি বিধ্বস্ত, ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না কি বলা উচিত! এতো দিন স্কুলে গান স্যুট হয়েছে দেখেছি কিন্তু এরকম এ্যালিমেন্টারী স্কুলে স্যুটিং আর দেখিনি। দু'দিন ধরে কোন খবরে স্ক্রল করি না, টিভি খুলি না, পেপার পড়ি না। কোনভাবেই আমি নিতে পারছি না এ খবর।

সবাই আঙ্গুল তুলছে অস্র বিক্রির দিকে কিন্তু আসল সত্য কথা কাউকে বলতে শুনিনি। হাঁ, অস্রের সহজলভ্যতা এরকম ঘটনার জন্য অবশ্যই বড় একটি কারন। কিন্তু প্রশ্ন? অস্র হাতে থাকলেই কি ঝাঁপিয়ে পড়বে? মেজাজ খারাপ হলেই নির্বিচারে মানুষ মেরে ফেলবে? ছোট ছোট শিশুগুলোর উপর ঝাঁপিয়ে পড়বে? কেন হচ্ছে এমন ঘটনা বার বার? কেন এমন ১৭-১৮ বছরের টগবগে যুবক নির্বিচারে রক্তের হলি খেলছে?

উত্তরটা আমি নিজেই খোঁজার চেস্টা করেছি। হয়তো কেউ মানবেন কেউ মানবেন না। কিন্তু যে যাই বলুক সময় থাকতে আমাদেরকে যে এর সমাধান বের করতেই হবে!!

আমার মতে প্রধান কারন, পরিবারহীনতা। এখানকার সমাজ, কালচার, পরিবার সম্পর্কে যতটুকু জেনেছি বুঝেছি এখানকার শিশুদের বড় একটা অংশ নিরাপত্তাহীনতা, ভালোবাসাহীন জীবন, ট্রমাটিক শৈশব কাটায়। বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ যেমন একটা কমন বিষয় তেমনি নতুন সংসার গড়াটাও তাদের জন্য স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু এর সবচেয়ে বড় ভিক্টিম হলো শিশুরা। কারন এরা একদিন হঠাৎ করে দেখে তার চেনা পৃথিবী সম্পূর্ণ অচেনা। কেউ হয়তো বাবার কাছে কেউবা মায়ের কাছে থাকে। কিন্তু নতুন পরিবেশে দেখা যায় সে অবহেলার স্বীকার হচ্ছে প্রতি পদে পদে। যে আদরে হয়তো বেড়ে উঠেছিল এতোদিন তা থেকে ছিটকে পড়েছে সে। কেউ মেনে নেয় আবার কেউ পারে না। কিন্তু তাদের ছোট্ট সে মনের ক্ষোভের মেঘ বাড়তে থাকে দিনের পর দিন।

দ্বিতীয় কারনটিও আমি বাবা-মার দিকেই আঙ্গুল তুলবো। জীবনের ব্যাস্ততা এখানে চরম পর্যায়ে। দু'পাশে বাবা-মা দু'জনেই ব্যাস্ত থাকে বাস্তবতায়। ছোট্ট শিশুটিকে নিজের সময় দেবার পরিবর্তে তার হাতে তুলে দেয় মোবাইল বা ট্যাব। আমি এমন কোন শিশু এখানে পাইনি যার হাতে কোন গ্যাজেট দেখিনি। পাশাপাশি বাবা-মা নিজেরাও ব্যাস্ত থাকে স্যোসাল মিডিয়ায়। সেলফি লাইক কমেন্টেস এর নেশায় আর কিছুর দিকে তাকানোর সময় নেই তাদের। এভাবে ধীরে ধীরে শিশুটি চারপাশের ভালোবাসা খুঁজে বেড়ায় গেমের মাঝে। সত্যিকারের ভালোবাসাই ঠিকভাবে বোঝে না। বাবা-মায়ের ভালোবাসা ট্রান্সফার হয় নতুন নতুন গ্যাজটে, খেলনা বা গেইমের মাঝে।

তৃতীয় কারনটি নিয়ে আমি বরাবরেই সোচ্চার। আর তা হলো গেইমের নেশা। শিশুদেরকে ব্যাস্ত রাখতে যে গেইমের পথ বাবা-মা দেখিয়ে দেয় তা থেকে সহজে ফিরতে পারে না তারা। নেশা নেশা নেশা........ গোলাগুলি, রক্তারক্তি, খুনোখুনি খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে যায় তাদের কাছে। মানবিকতা, ভালোবাসা, আদর-স্নেহ..... সব কিছুই ম্লান হয়ে যায় ধীরে ধীরে। সবাইকে শত্রু মনে করে, সব কিছুর সমাধান মৃত্যু মাঝেই আছে তা ভেবে নেয়, তাই সবাইকে মারার জন্য মরিয়া হয়ে উঠে। আর গেইমগুলোও এমনভাবে তৈরী তা থেকে বেরিয়ে আসা খুব কঠিন হয়ে পড়ে।

আমেরিকা কানাডার মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে মারাত্বক সোচ্চার। তারপরও কেন কোন সমাধান হচ্ছে না? অবশ্যই কিছু না কিছু হচ্ছে। যার কারনে হয়তো অনেক ভয়াবহতা থেকে রক্ষা পা্চ্ছি। মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সোচ্চারের পাশাপাশি দরকার শিশুদেরকে একটা সুন্দর শৈশব দেয়া, পরিবার দেয়া, নিরাপত্তা দেয়া, স্নেহ-ভালোবাসা দেয়া। সেটা কি খুব কঠিন? মোটেও কঠিন নয় কিন্তু।

ছবি: স্কাই নিউজ
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মে, ২০২২ সকাল ১০:৩৮
২৫টি মন্তব্য ২৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পরিণতি - ৩য় পর্ব (একটি মনস্তাত্ত্বিক রহস্য উপন্যাস)

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১২:২৮



( পরিণতি ৬১ পর্বে'র একটি মনস্তাত্ত্বিক রহস্য উপন্যাস ।)

তিন


আচানক ঘুম ভেঙ্গে গেলো ।

চোখ খুলে প্রথমে বুঝতে পারলাম না কোথায় আছি । আবছা আলোয় মশারির বাহিরে চারপাশটা অপরিচিত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইফতার পার্টি মানে খাবারের বিপুল অপচয়

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৩



গতকাল সরকারি ছুটির দিন ছিলো।
সারাদিন রাস্তাঘাট মোটামুটি ফাকাই ছিলো। ভাবলাম, আজ আরাম করে মেট্রোরেলে যাতায়াত করা যাবে। হায় কপাল! মেট্রো স্টেশনে গিয়ে দেখি গজব ভীড়! এত ভিড়... ...বাকিটুকু পড়ুন

গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩


একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×