somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

৭১ টিভিতে ব্লগার মাহমুদুল হক মুন্সী, শাহবাগ আন্দোলন আর আমাদের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, সামু ব্লগের কান্না । ।

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গতরাতে ৭১ টিভিতে একাত্তর জার্নালে যোগ দিতে দেখলাম ব্লগার মাহমুদুল হক মুন্সী কে। নানা কথা বলে দিন শেষে তিনি বুঝিয়ে দিলেন শাহবাগের সাথে যোগ না দিলে বিএনপির ভবিষ্যত শেষ, তারা ইতিহাসের রাজনৈতিক দল হয়ে যাবেন। কতটুকু বুঝে আর কতটুকু কামনা করে তিনি এই কথাটা বলেছেন বুঝার চেস্টা করলাম। দলীয় আবেগ ভাল জিনিস তবে তাতে যদি শুধু উচ্চাভিলাস থাকে আর রাজনৈতিক প্রজ্ঞার অভাব থাকে তখন সেটা কেবলই বুলি হয়ে যায় , আর অন্য কিছুর বহিঃপ্রকাশ হয়না। ব্লগিং আর রাজনীতির ময়দান দুটার ফারাক এখন ও যোজন যোজন দূর তেমনি ব্লগারদের রাজনৈতিক শিক্ষা আরো অনেক গ্রহন করতে হবে বলেই মনে হয় ।

মাহমুদুল হক মুন্সী সহ বাকি আয়োজক ব্লগাররা সম্ভবত এখন ভুলে গেছেন শাহবাগ আন্দোলনের জন্মকথা , সেটা না হলে একটা প্রতিস্ঠিত রাজনৈতিক দলের বিনাশ হয়ে যাওয়া এত সহজে তারা উপলব্ধি করার কথা ভাবতে পারতেন বলে মনে হয়না ।রাজনীতি একটা লীগ ম্যাচের টুর্নামেন্ট, মাঝে মাঝে কোন কোন দল রেলিগেশনে পড়ার চান্স তৈরি হলেও ফিরে এসে পরের দফায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবার সম্ভাবনা যারা উড়িয়ে দেয় তারা হয় ফর্মুলায় বুঝেনা না হয় আত্মভরিতে ভোগে ।

গনমানুষের চাওয়ার প্রতিফলন নিয়ে যে আন্দোলন সেটার প্রাপ্তিও কিন্তু কম নয়। শাহবাগের কল্যানেই আইন সংশোধন হয়েছে, নতুন সচেতনতা তৈরি হয়েছে মানুষের মাঝে, মানবতাবিরোধী অপরাধীরা আর সহজে পার পাবে বলে মনে হয়না । দাবী আদায়ের অবিচলতাই একটা আন্দোলনকে সামনে টেনে নিয়ে যায়, সেখানে সবসময় সবার সহযোগীতা না পেলেও সেটা নিজ গতিতেই এগিয়ে যায়, যেমনটা যাচ্ছে শাহবাগ, কিংবা বলা চলে শুরুর দিকে যেমনটা গিয়েছিল শাহবাগ। এখন যদি বলি শাহবাগ তার পথ হারিয়ে ফেলেছে , অবশ্য এই নিয়ে নানা তর্ক হতেই পারে।

শাহবাগের প্রথম কালো দাগ থাবা বাবা ওরফে রাজীব। সব লাশই যে আন্দোলনে গতি নিয়ে আসবে এই ধারনাটা ভুল প্রমান করে দিল রাজীবের লাশ, আফসোস ব্লগার নেতারা সেটা বুঝেও বুঝলেননা। অযথা মিথ্যা গল্প ফেঁদে আর মিডিয়ার সহযোগীতা নিয়ে দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের প্রথম শহীদ বানাতে উঠে পড়ে লাগলেন। ফলাফল নেতিবাচক, মিথ্যার জয় কখনো হয়না, আর কয়েকটা শয়তানের শাস্তি নিশ্চিত করার আন্দোলনকে দেশ মাতৃকার মুক্তির আন্দোলনের সাথে গুলিয়ে ফেললেন তারা। মুক্তিযুদ্ধ ছিল বুলেটের দিকে বুক চিতিয়ে দাঁড়ানো, মেটাল ডিটেক্টর পেরিয়ে রাস্তায় বসে থাকা নয়। তুলনা সবসময় যে প্রয়োজন তাত নয়, অন্যায় কারীদের সাজা দিতে হবে কথা শেষ, সেটাকে স্বাধীনতা আন্দোলনের সাথে তুলনা করার কোন মানে নেই, আমরা পরাধীন নই বলেই রাজাকরদের শাস্তি দাবী করতে পারছি, এটা হচ্ছে ৩০ লাখ শহীদের প্রতি দায় শোধের একটা প্রকৃয়া মাত্র , সোনার বাংলাদেশ গঠন না করা পর্যন্ত সে দায় শোধের কোন উপায় নেই।

শাহবাগ আন্দোলন এখন কোন পথে ?

রাজনীতি ছাড়া কোন জাতির মুক্তি নেই, ব্লগার নেতারাও কি সে পথে হাঁটছেন ?? শাহবাগ ছেড়ে মিরপুর মতিঝিলে এই শোডাউনের মানে কি ! পরবর্তী কর্মসূচি তে কি দেশ ব্যাপী রোডমার্চ ও উঠে আসবে ? মানবতাবিরোধীদের শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য এই শোডাউন কি খুবই ফলপ্রসু কিছু হবে নাকি কারো রাজনৈতিক উচ্চাভিলাসের হাতিয়ার মাত্র । জনসম্পৃক্ততার তো অভাব নেই শাহবাগে,জামাত নিষিদ্ধের পথে সরকারের এত হঠকারীতা কেন ?

ইমরান সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রংপুর মেডিক্যালের ,বর্তমান স্বাচিপ নেতা , কেউ কিন্তু এই নিয়ে কোন প্রশ্ন তোলেনি, কারন সবার লক্ষ্য এক ও অভিন্ন । লক্ষের পথে না হাঁটলে কিন্তু জনগন এক সময় জানতে চাইবেই ছাত্র লীগের সভাপতি সেক্রেটারি কি শুরু করেছিল এই আন্দোলন যে আজকে তাদেরকেই সামনে নিয়ে আসতে হবে, তারা ছাড়া কি এই জাতি অচল।

এই আন্দোলনে বিএনপি যোগ না দেয়ায় অনেকেই দেখি বিএনপির মৃত্যু ঘোষনা করে দিতে ভীষন উতসাহী, বাকশালের পথে যেতে খুব বেশী আর বাঁধা থাকবেনা তাহলে। আহবায়ক নেতারা একবারও চিন্তা করলেননা এই জাগরনে শাহবাগের চত্ত্বরে বশে থাকা মানুষের মাঝে বিএনপির সমর্থক কোন অংশেই কম নয়। বিএনপি যে কৌশলে খেলছে তা হয়ত অনেকের কাছে গ্রহনযোগ্য নাও হতে পারে তাই বলে তার ধ্বংস ঘোষনা করে দেয়া বাতুলতা মাত্র। বিএনপি খেলছে ক্ষমতার জন্য, শাহবাগ নিশ্চয় তা নয় । এই জিনিসটা শাহবাগ থেকে যতদ্রুত উপলব্ধী করা যাবে সবার জন্য তত মঙ্গল। শাহবাগে কোন ক্ষমতার খেলা খেলতে চাইলে আদতে সেটা ভাল কোন ফল আনবে বলে মনে হয়না ।

শাহবাগ থেকে অযথা যে খেলাটা নিয়ে টানাটানি চলছে সেটা হল মাহমুদুর রহমানকে নিয়ে টানাটানি। মিথ্যা বললে তাকে ধরতে সরকারের সমস্যা কি আমি বুঝিনা। শিক্ষকরা স্মারক লিপি দিতে গেলে টিয়ারশ্যাল খায় আর শাহবাগের জন্য মন্ত্রীর অপেক্ষা, তবুও গ্রেফতারের কোন নাম নেই , এটাও কি খেলার কোন অংশ !!!! রাজীব একটা ইসলাম বিদ্বেষী শয়তান, একথা মেনে নিতে সমস্যা কি ??

তাতে আন্দোলনের মূল লক্ষ্যের সাথে কোন সমস্যাত দেখিনা। নেতারা আর মিডিয়ার হলুদ মানুষগুলো যুক্তি দেন রাজীবের এই লেখাগুলো আগেত দেখি নাই। আরে গর্দভের দল ব্লগে কোন দিন ঘুরে দেখছস কি হয়, ব্লগাররা ব্লগের সব বাইরে নিয়ে আসলেত প্রতিদিনই দেশে তোলপাড় হইত । একদিকে রাজীবের মা কে ধরে কান্নাকাটি অন্য দিকে ইসলাম রক্ষার মেসেজ- খুব বেশী সুখকর দৃশ্য নয় দেখার জন্য, বোঝার জন্য ।আসিফ সাহেব মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে ফেসবুকে যে কটুক্তি করেছিলেন, সেটা যদি মঞ্চে থাকা ছাত্রলীগের পোলাপানকে দেখানো হয় তারা ঐখানেই তারে চাপাতি দিয়া কোপ দিবে বাজি ধরে বলতে পারি।

নানা রকম ডায়ালগে ভরপুর ফেসবুক। বিএনপি হালকা ত্যানা পেচানোর চেস্টা করলেও ব্লগাররা সুন্দর জবাব দিয়েছিল আমরা বাংলা পরীক্ষার সময় বাংলা পরীক্ষা দেই, অংক না । আশাকরি ব্লগ নেতারা এই বিষয়ে অবিচল থাকবেন । পরীক্ষা দিচ্ছেন পরীক্ষাই দিন, পিএলে চলে যাবেননা, পিএলে কিন্তু সবাই আবার সব সাবজেক্টই এক আধটু নাড়াচাড়া করে দেখেন, দেখতে হয়। আপাতত রাজনীতি নিয়ে বেশী চিন্তা না করে আসল পরীক্ষা দিন, বাংলা প্রথম পত্র পাশ করা সোজা হলেও দ্বিতীয় পত্র একটু কঠিনই বলা চলে।

যাই হউক অনেকে অনেক রকমের পাখি শিকারে ব্যস্ত । এর মাঝে নতুন করে কেঁদে কেটে অস্হির দেখলাম আমাদের জানা আপাকে। তিনি এত অস্হির কেন বুঝলামনা । শাহবাগ আন্দোলনের তিনিই জননী এই উপাধী পাবার এত সখ তার কেন হল বুঝলামনা, বিএনপি বিলুপ্ত হলে নতুন দল বানাবে কিনা কে জানে । জীবনের হুমকি নিয়া এই দেশের সবাই আছে, এইটা নিয়া তিনি নতুন করে আলোচনা না করলেও পারতেন।

আত্মজিজ্ঞাসা জিনিসটা আমাদের নাই, সব সমস্যার মূলে এই অভাব। তাকে কেন আজকে কান্নাকাটি করতে হয় এই কথা তিনি একবার ও চিন্তা করছেন বলে মনে হয়না । তাকে নিয়ে নোংরা কথা বললে যেমন তার খারাপ লাগে তেমনি পিয়ালের বাচ্চা মেয়েটাকে নিয়ে নোংরা কথা বললে পিয়ালেরও খারাপ না খুন করার ইচ্ছা জাগাটাই স্বাভাবিক । আর এই সব পরিস্হিতির উদ্ভব এর পেছনে নিজের দায় অস্বীকার করার কোন সুযোগ আছে বলে মনে হয়না । ছাগু আর নাস্তিক এই দুই শূয়োরকূলকেই তিনি ইচ্ছামতন কোলে নিয়ে আদর করেছেন।সো এখন তারা এক আধটু খামছি দিবে কি আর করা । নাস্তিকদের যেসব পোস্ট এখনও সামুতে আছে ইসলামকে আঘাত করে সেগুলার অযুহাতে চাইলেই সামুকে বন্ধ করে দিতে পারে সরকার যেকোন সময়। সো জান বাঁচানো ফরয মনে করে সেগুলো সরান।

যে সুন্দর ইচ্ছা নিয়ে বাংলা ভাষায় ব্লগ চালু করেছেন সেটাকে সমুন্নত করুন। মাডারেটরের স্বল্পতার অযুহাত দিয়ে বিদ্বেষী পোস্ট গুলাকে লম্বা সময় ঝুলে থাকার সুযোগ দিলে হিট বাড়লেও আখেরে ফল ভাল হয়না। বাংলা ভাষাকে ভাল বেসে এত টাকা খরচ করতে পারছেন আশাকরি আর দুচারটা মডারেটরের খরচ ও ম্যানেজ করে ফেলতে পারবেন ।

আরেকটা কথা, রেসিডেন্ট পালতেও হিসেব করে পালবেন, এতদিন যেগুলা পালছেন তা এখন খুব একটা কাজে দিচ্ছে বলে মনে হয়না। যখন তখন পোস্ট পয়দা করলেই আর নিজেরে এলিট ভাবলেই নেতা হওয়া যায়না ।

যাই হউক টেনশন নিয়েননা, সামুর কিছু হবেনা, সবার ভালবাসায় সামু টিকে থাকবে, মালি হিসেবে আপনি শুধু ঠিক মত সার দিলেই হবে, ভাল ফসল ফলবেই।
৬টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×