শ্রাবু,
ইদানিঙ্গকালের দিনগুলো যেন একটু কেমন কেমনই কাটছে। গত সপ্তাহে বুধবার রাতে অসুস্থ হয়ে পড়ি হঠাৎ। প্রচন্ড জ্বর আসে। অথচ পরদিন পরীক্ষা! অনেক কষ্ট করে ন্যূনতম প্রিপারেশন নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। সকালে এক্সাম হলে যায় অনেক কষ্ট করে। কোন মতে পরীক্ষা দিয়ে বেরিয়ে আসি। সেই থেকে অসুস্থতা পূর্ণ মাত্রায় চেপে ধরে। হাড়ের জোড়গুলোয় প্রচন্ড ব্যাথা। প্রাণ অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে। ঘুমের ঘোরে সারারাত "লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ" পড়ি। ব্যাথার জ্বালায় প্রচন্ড অস্থির ছিলাম। আমাদের এখানকার ডাক্তারের উপর আস্থা উঠে গিয়েছিল বহুদিন আগে থেকেই। ব্যাথার স্ট্যাতাস ফেইসবুকে দেওয়ার পর রিমি (RMC'র ফার্স্ট গার্ল) জানায় আর্থ্রাইটিস নামে এক ভয়ঙ্কর রোগের লক্ষন এটা। প্রচন্ড ভয় পাই। অনিচ্ছা সত্ত্বেও দৌড়ায় ডাক্তারের কাছে।
যাবার আগে রুমমেটদের বলে গেছিলাম দেখিস আবার প্যারাসিটামল দিবে। ডাক্তারকে সব খুলে বললাম। ডাক্তার বললো এটা কিছু না। একটু বেশি লাফালাফি করেছ সেজন্য। Entacyd আর Flamex দিল ওষুধ হিসেবে। ছয়টা ছয়টা করে বারটা। দিনে দুইবার খেতে হবে। সকালে আর রাতে।
আমার সকালটা কেনজানি একটু বেশিই দেরিতে হয়। এবার আসার পর মাত্র ২-৩ দিন ব্রেকফাস্ট পেয়েছি ক্যাফেটেরিয়ায়। পাবই বা কিভাবে? ঘুম থেকে উঠি ১০ টায়। সকালে ওষুধ খেতাম ১২ টায়, রাতেরটাও ১২ টায়
কয়েকদিন মিশুকটাও জ্বালালো বেশ। তুমি জান, আমি লাইত জ্বালিয়ে ঘুমাতে পারিনা রাত্রে। আর শালা মিশুইক্যা নাকি রাতে লাইট ছাড়া ঘুমাতেই পারে না। সালা কি এখনও বাবু নাকি!!
একটা হেডফোন কেনা জরুরী হয়ে পড়েছে। রুমমেটদের জ্বালাতে ভাল লাগে না। আজ বেশ কয়েক ডলার তুললাম ব্যাঙ্ক থেকে। বাজারে গেছিলাম। টমেটো, গাজর কিনেছি। টমেটো খেতে পারি। কিন্তু গজর খেতে গিয়ে দাতে ব্যাথা লাগে।
যে দাতটার ফিলিং করিয়েছিলাম। সেটার পাশটা একটু ভেঙ্গে গেছে সম্ভবত। জান শ্রাবু ইচ্ছামতো খেতেও পারি না। কেনার সামর্থ থাকলেও খাবার সামর্থ নেই। চানাচুর সহ অনেক কিছুই বাদ দিতে হয়েছে দাতের সমস্যার কারণে । দাতের দাক্তারের কাছে যাওয়া লাগবে আরেকবার।
তোমার ম্যাসেজ পেয়ে আমি অনেক খুশি হয়েছি। আমি সারাদিন ক্লাশে ছিলাম, তাই রিপ্লাই দিতে পারিনি।
জান, রাকিব ভাই না আমাদের টিচার এখন। আজ আমাদের ল্যাব নিয়েছে। রাকিব ভাইকে চিনছো না? ঐ যে আমাদের কলেজের। একসাথে বাসে গিয়েছিলাম রাকিব ভাইয়ের সাথে। রাকিব ভাইকে দেখে কেন জানি একটু লজ্জা লজ্জা লাগছিল। আমাকে জিজ্ঞেস করছিল, "কি খবর, কেমন আছ?" আমি ভাল বলেই দৌড় দিয়ে পালিয়ে এসেছি।
এখন খুব ভাল আছি আল্লাহর রহমতে। আজকের এক্সাম ভাল হয়নি একদমই। সময় পাইনি কমপ্লিট করার। অথচ আমার পড়া ছিল সবই। যাহোক, আমার মন খারাপ না। আমি ভাল আছি এজন্য আল্লাহর কাছে লাখ লাখ শুকরিয়া।
আমি আর তোমাকে ভালভাবে পরালেখা করতে বলব না। কি হবে এত পড়াশোনা করে? খামাখা! আমাদের জীবনে পড়ালেখাই কি সব? তোমার যেটা ভাল লাগে সেটা করিয়ো। আমি বাধা দেব না। আল্লাহ তোমাকে ভাল রাখুক, সুস্থ রাখুক। তাহলেই খুশি।
আজ আম্মু কল দিয়েছিল। আম্মুকে খুশি খুশিই মনে হলো। বাড়ির সবাই ভালই আছে সম্ভবত। তোমার ভাইয়াও ফোন দিয়েছিল। আমাকে বেড়াতে ডাকছিল
আমি না করে দিয়েছি
ভাল থাক। পারলে কাল আবার লিখব।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।





