

পুরোনো রোমান্টিক মুভি দেখতে কার না ভাল লাগে! সেদিন মোড়ের দোকানটায় হঠাত্ করেই নজরে পড়ল একটা ডি.ভি.ডি.। আমীর খান আর জুহি চাওলা অভিনীত "কেয়ামত সে কেয়ামত তাক"। উহ্, গানগুলো যে প্রিয় ছিল আমার! কিনেই ফেল্লাম ডি.ভি.ডি.।
সেই গতানুগতিক ফর্মূলার ছকে বাঁধা ছবির ঘটনা। পূর্বপুরুষের পাপের সাজা নির্দোষ পরবর্তী প্রজন্মের ঘাড়ে। কথায় আছে না, একের দোষ অন্যের ঘাড়ে। মূল theme নিয়ে অজস্র চলচ্চিত্র রয়েছে বাজারে - চলচ্চিত্রের ছড়াছড়ি। ছবিটা দেখতে দেখতেই মনে এল সেই অমোঘ বাণী, "ইতিহাসের বিশেষত্ব হচ্ছে যে, ইতিহাস থেকে কেউ শিক্ষা গ্রহণ করে না।"
ঝেড়ে কাশি। বাংলাদেশ আমাদের গর্ব। এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি, সকল দেশের রানী সে যে, আমার জন্মভূমি। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে যে স্বাধীনতা আমরা অর্জন করেছি, তার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকব আমরা সকলে, সন্দেহ নেই কোন তাতে। তাই বলে, আমাদের শ্রদ্ধাবোধ কিংবা ঘৃণাবোধ, নীতিবোধ কে অতিক্রম করলে তো সেই "ইতিহাস"-এরই পুনরাবৃত্তি ঘটবে, তাই নয় কি?
আমাদের দেশের বুদ্ধিজীবী শ্রেণী, বিশেষ করে যাঁরা লেখক, তাঁরা খুবই প্রভাবশালী । মানুষ গড়ার কারিগর। তাঁরা স্বয়ং যখন "ইতিহাস"-এর পুনরাবৃত্তি ঘটান, তখন দৃষ্টিকটু লাগে বৈ কি। কোন প্রথিতযশা লেখক যখন তাঁর উপন্যাসে লেখেন যে, প্রবাসী মামার কাছে ভাগ্নে বেড়াতে গিয়ে পাকিস্তানী কশাইয়ের জবাই করা হালাল মাংশ খেতে কুন্ঠাবোধ করে, তখন ঘুরেফিরে "কেয়ামত সে কেয়ামত তাক" এর গল্পই শুধু মনে পড়ে আমার। যেমনটি মনে পড়ে টি.ভি. নাটকগুলোর ভিলেন চরিত্রে দাড়ি-টুপির সমাহার দেখে।
পাকিস্তান কিংবা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতিমালার সাথে সাধারণ নির্দোষ জনগণকে
(বিশেষতঃ পরবর্তী প্রজন্মকে) মিলিয়ে একাকার করার ফল "কেয়ামত সে কেয়ামত তাক"- এর ঘটনার মতই ভয়াবহ হতে পারে।
ইসরাইলের কথাই ধরুন না কেন। হিটলারের আমলে ইহুদীরা অমানুষিক নির্যাতন ভোগ করেছিল বিধায়, বর্তমানে ইসরাইলের সকল কর্মকান্ডকে সমর্থন করা কোন নীতির কথা নয়।
নীতি হল সত্য এবং ন্যায় কে সমর্থন করা, অন্যায় ও অসত্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়নো - সে অন্যায়কারী যে দেশেরই নাগরিক হোক না কেন । মহান জাতি হিসেবে আমাদের কর্তব্য, যেন জাতীয়তাবাদের আতিশয্যে আমরা নীতিবোধ অতিক্রম না করি। নয়তো জাতীয়তাবাদ তরুণ প্রজন্মের কাছে পুঞ্জীভূত ঘৃণারই নামান্তর হয়ে ধরা দেবে। কেয়ামত থেকে কেয়ামত পর্যন্ত ঘৃণার বিষবাষ্প ছড়ানো কোন মহত্বের নিদর্শন নয়।
আমার কথা আজকের মত ফুরোলো, নটে গাছটি মুড়োলো। দেখুন এই প্রথম ব্লগে লিখছি (আগের লেখাটা ছিল স্বগতোক্তি), তাই ভুলভ্রান্তি ক্ষমা করবেন। বিদায়।
পুনশ্চ: আমি অত্যন্ত আলসে একজন মানুষ বিধায়, কোন comment এর পাল্টা জবাব দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভবপর নয়। সেজন্যে ক্ষমাঘেন্না করে দেবেন এই বিশ্বাস নিয়ে আজকের পোস্টের এখানেই সমাপ্তি ঘোষণা করছি।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১০ ভোর ৫:৫৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




