somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এক কথায় প্রকাশ

১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার এলাকায় বন্ধুরা মিলে মাঝে মাঝে জুরি বোর্ড বসাই। এই জুরি বোর্ডের সম্মানিত সকল সদস্যগণ (বন্ধুরা সব) এক এক জন দেশের নামকরা বিসিএস ক্যাডার এবং একই সাথে সংসদ সদস্য। জুরি বোর্ড চলাকালীন সময়ে কোন নেতিবাচক কথা বলা যায় না। নেতিবাচক কথাও অস্তিবাচক বা ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে বলতে হয়। আর তা যদি কেউ না করে তবে সবাই মিলে তাকে আমরা ‘ভালোবাসা’ দেই (মানে উত্তমমধ্যম আর কি)। জুরি বোর্ডে আমার একটা আলাদা পদবী আছেঃ বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপক (ব্যাঙ্গার্থে)। যদিও মনে পড়ে এসএসসিতে টেনেটুনে বাংলায় পাশ করেছিলাম! যাই হোক বাংলা নিয়ে কথা বলার কারন হচ্ছে হঠাৎ একটা প্রবাদ মনে পড়ে গেল তাই। ‘অমর’। সেই বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপক আজ কনফিউসড। ‘অমর’ মানে কি ‘মরে গিয়েও বেঁচে থাকে যেঃ অমর’-এটা নাকি ‘মারা যায় না যেঃ অমর’-এটা? প্রথমটা যদি ঠিক হয় তবে এর এক কথায় প্রকাশ কি হবেঃ ‘মরে গিয়েও বার বার মরে যেঃ_____??’।

মানুষ অনেক কারনেই মারা যায়। জরা, খরা, ব্যাধি, রোগ, শোক, অসুখ। লজ্জায় আর অপমানেও মানুষ মারা যায়। কোনো একসময় শুনেছিলাম ‘Death is preferable to dishonor’......অপমানের চেয়ে মৃত্যু ভাল। আচ্ছা যদি প্রশ্ন করিঃ ‘এই পৃথিবীতে মরে গিয়েও সবচেয়ে বেশী অপমানিত হয়েছেন কোন জন?’ ‘কোন জন মরে গিয়েও বার বার মরেছেন?’ উত্তর কি কারও অজানা? আমাদের বড় বেশী অবাক হতে হয় যখন দেখি ‘গনতন্ত্রের’ পতাকাবাহী পশ্চিমা বিশ্ব নিজেদের মানব রচিত আদর্শ দেশে দেশে ফেরি করে বেড়ায়; আমাদের আহ্‌বান করে তাদের আর্দশের দিকে আর তা দিয়ে আমাদের শেখানো হয় ‘মতামতের স্বাধীনতা’ কাকে বলে! অসংখ্য বার এই ‘মতামতের স্বাধীনতার’ নগ্ন রূপ উন্মুক্ত হয়েছে সারা বিশ্বের বিবেকবান মানুষের কাছে।
ইরাকের ‘আবু গারিব’ এ পবিত্র কোরআনের অপমান। ভারতে কোরআনকে পদদলিত করা। ডেনমার্কে রসুলুল্লাহ্‌ (সঃ) এর কার্টুন প্রকাশ। এই ‘ফেইসবুকে’ তাঁকে নিয়ে কার্টুন আঁকার প্রতিযোগীতার আয়োজন। আর ফ্রান্স ছাড়িয়ে গেছে সবাইকে সব দিক দিয়ে। আবার তারা ধৃষ্টতা দেখাল ‘মতামতের স্বাধীনতার’ কল্যাণে। আর কি আশা করা যেতে পারে তাদের কাছ থেকে? আল্লাহ সুবনাহু ওয়াতায়ালা পবিত্র কোরআনে বহু পূর্বেই জানিয়ে দিয়েছেন তাদের উদ্দেশ্যঃ
“তারা মুখের ফুৎকারে আল্লাহ্‌র আলো নিভিয়ে দিতে চায়। কিন্তু আল্লাহ্‌ তাঁর আলো পূর্ণরুপে বিকশিত করবেন যদিও কাফিররা তা অপছন্দ করে” (৬১:৮)।

এদের কাজ কর্ম দেখে আজ আমাদের যতটা না অবাক হতে হয়, তার চেয়ে বেশী অবাক হতে হয় ‘মুসলমান’ ভাই বোনদের অবস্থা দেখে। যেই মুসলিমরা এক সময় গোটা পৃথিবীর নেতৃত্বের আসনে অধিষ্ঠিত ছিল, তাদের অবস্থা আজ এতটাই করুণ হয়েছে যে তাদের প্রিয় নেতাকে যখন অপমান করা হয়, তখন তারা কোলে শিশুর মত গুটিশুটি দিয়ে বসে থাকে। তারা আজ ভুলতে বসেছে কিভাবে এক মুসলমান বোনের শুধু ওড়না টান দেওয়াতে খলিফা মুহতাসিম বিল্লাহ্ চিৎকার দিয়ে বলে উঠেছিলেন.....খোদার কসম! আমি এমন এক সৈন্য বাহিনী পাঠাবো যার সামনের অংশ থাকবে ঐ দেশে আর শেষ অংশ থাকবে আমার প্রাসাদে! আজ রসুলুল্লাহ্‌ (সঃ) কে নিয়ে এই সব দানবেরা উপহাসের আসর পেতে বসেছে। ভাবতে খারাপই লাগে যে তখনও আমরা নিজেদের মুসমান বলে দাবী করি যখন হযরত মুহাম্মদ (সঃ) বলেনঃ
“তোমাদের কেউ-ই পরিপূর্ণ বিশ্বসী হতে পারবেনা যতক্ষণ পর্যন্ত না তোমরা তোমাদের সন্তান, পিতা-মাতা ও অন্যসব মানুষের চেয়ে আমাকে বেশী ভালোবাস”। (বুখারী, মুসলীম)

নিজেকে একবার প্রশ্ন করিঃ আমাদের মা বোন কে কেউ অপমান করলে যতটুকু তাড়না অনুভব করি, সারা পৃথিবীর জন্য যিনি রহমত স্বরুপ এসেছেন, যাঁকে সৃষ্টি করা না হলে কিছুই সৃষ্টি করা হত না, যাঁর উপর আল্লাহ্‌ নিজে দুরুদ পাঠ করেন; তাঁকে আজ অপমান করা হচ্ছে, আর আমাদের কাছ থেকে কি প্রতিক্রিয়া এসেছে? কিছু করতে না-ই বা পারলাম, একবার তো চিৎকার করে এই জঘন্য অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারি! করেছি কি? ঈমানের সর্বনিন্মের পরিচয়ও কি কখনো দিয়েছি?
‘মতামতের স্বাধীনতার’ এই রঙ্গমঞ্চে একের পর এক ‘নাটক’ সাজানো হবে; আর আমরা যদি চুপ করে বসে থাকি, তবে আল্লাহ্‌ আমাদের সতর্ক করে দিচ্ছেনঃ
“হে ঈমানদার গণ তোমরা যদি আহলে কিতাবদের (ইহুদি ও খৃষ্ঠান) কোন দলের আনুগত্য কর, তবে তারা তোমাদেরকে ঈমান আনার পর আবার কাফিরে পরিণত করবে”। (সূরা আল ইমরান)

মুসলমানের জন্ম চুপ করে বসে বসে ললিপপ খাওয়ার জন্য হয়নি। “তোমরাই হলে সর্বোত্তম উম্মত, মানবজাতির কল্যানের জন্যেই তোমাদের উদ্ভব ঘটানো হয়েছে। তোমরা সৎকাজের নির্দেশ দান করবে ও অন্যায় কাজে বাধা দেবে এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে” (৩:১১০)। অন্যায়ের প্রতিবাদ করুন যদি আপনি মুসলমান হন। আর যিনি সবকিছু দেখেন, শুনেন; তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করি সেই খিলাফত ব্যবস্থার জন্য যা আমাদের এই চরম অসভ্যতা থেকে মুক্তি দিবে। আমীন।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×