somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কোরআনের উদ্ভট প্রাণী, ভূমিকম্প আর দোদূল্যমান মুসলমান

৩০ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৫:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মানুষ এমন এক আজব প্রাণী যার ভেতরে স্বাথপর-দ্বান্দ্বিক বৈশিষ্ট মনে হয় জন্মগত। গাড়ীতে বসা থাকলে হরহামেশা রিক্সাওয়ালার দোষ। রিক্সায় থাকলে গাড়ীওয়ালার চৌদ্দগুষ্টি উদ্দ্ধার করে ছাড়ে। বাসের জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকে সাধের বাসের নাগাল পেলে মুড়ির টিনে দুইটা বাড়ি দিয়ে “ঐ যা!!! দাড়ায়া রইছস ক্যান” না বললে তার ভাল লাগেনা। নিজের সিটের ব্যাবস্থা হয়ে গেলে................ “একটা লোক-ও যদি দাড়ায়া লস......তয় ভাড়া দিমু না কিন্তু!!!” বলতে তার বাধে না। র্দুগন্ধময় গনতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় পূজিঁবাদী নর্দমার কারনে ঢাকা কেন্দ্রিক নাগরিক ব্যস্ততায় মানবতাবোধ আজ বিবর্জিত। অথচ বেস্ট কেস সিনারিও কিন্তু হতে পারত সহমর্মিতার, নির্ভরতার আর পরার্থপরতার। নাই। কি মনে হয় মানুষ একদিনে সব এমন হয়ে গেছে? জ্বি না চান্দু! যাক ঐ আলোচনা আরেকদিন করা যাবে। আপাতত যে কথা বলতে চাই তা বলে বিদায় নিই।

আবার খেয়াল করেছেন কখনো মানুষ কাউকে ‘কনভিন্স’ কিংবা কোন কিছু ‘বোঝাতে’ গিয়ে কি ধরনের এ্যাপ্রোচ ফলো করে? কয়েক রকমের। (১) প্রেমিক জামাই তার প্রেমিকা বউকে কনভিন্স করতে কিংবা তার ভালোবাসার প্রগাড়তা বোঝাতে গিয়ে চাঁদ তারা বহু কিছুর সাথে তুলনা করে। আকাশের তারা এনে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। বহু কষ্ট করে একুশটা নীল পদ্ম এনে দেবারও কথা দেয়। এ ভাব প্রকাশ ‘আবেগের’; ‘অবাস্তব’। (২) আবার সেই একই ব্যাপারই খুব কাঠখোট্টা হয়ে যায় যখন দেনা-পাওনা হিসাব চলে আসে। ‘বাস্তবতা’ তখন প্রাধান্য পায়। অফিসের বস নিযুক্ত কর্মচারীর কেপিআই দেখে বছর শেষে সিধান্ত নেন এ বছর তার প্রমোশনটা দেয়া যায় কিনা! এক্ষেত্রে আর ‘আবেগ’ কাজ করেনা। অফিসের বসকে চাঁদ এনে দেবার প্রতিশ্রুতি দিলে প্রমোশন মিলবে কিনা জানিনা; বোধ করি অর্ধচন্দ্র সাথে সাথেই মিলবে! কর্মচারীকে বোঝাতে হয় হিসাব কষে যে গত একবছর সে ফাঁকিবাজি না করে কোম্পানীর জন্য অনেক কিছু করেছে।

মানুষ অন্যকে বোঝানোর জন্য কখনো ‘আবেগের’ আশ্রয় নেয় অথবা আবেগের ঠিক বিপরীত ‘বাস্তবতা’ দিয়ে অন্যকে বোঝাতে করতে চায়। অথচ এক্ষেত্রে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ (সুঃওঃতাঃ) ‘আবেগ’ আর ‘বাস্তবতা’ বাইরে আরও দুটো বিষয়ের (আমার জানা মতে) অবতারনা করেছেন। (১) ‘অদৃশ্য’ এবং (২) ‘উদ্ভট/অদ্ভুত’ (যা আমাদের সাধারণ বোধে অসম্ভব বলে প্রতিয়মান হয় এমন কোন কিছু) বিষয়ের অবতারনা করে মানুষকে বোঝানো কিংবা সর্তক করেছেন। আজ ‘উদ্ভট/অদ্ভুত’ বিষয়টা নিয়ে একটু ভেবে দেখা যেতে পারে। পবিত্র কোরআন কিংবা হাদিসে যখন ভবিষ্যতের কোন ঘটনার বণর্না দেয়া হয় তা ‘কারন’ প্রায়শঃই অনুপস্থিত থাকে। যেমন কেয়ামতের পূর্বে বছর মাসের মত মনে হবে-এ কথা হাদিসে বলা হয়েছে। কিন্তু কেন? তা এখন আমরা খানিকটা আন্দাজ করতে পারিঃ মানুষের বৈষয়িক লোভ হতে সৃষ্ট ব্যস্ততাই এর কারন। লেখাটা লেখার কোন তাড়নাই বোধ করি করতাম না যদি না দেখতাম বার বার ভূমিকম্পের পর কিছু মানুষের ব্যাভিচার আর পাপের ‘কারনদর্শানো’কে কতিপয় বিজ্ঞ ‘বোকা’ কর্তৃক হেয় প্রতিপন্ন করার প্রয়াশে লিপ্ত আছে।

কোরআন তার কথায় পরিষ্কার। আমি বুঝি আর না বুঝি অথবা বুঝেও না বুঝার ভান করি। আল্লাহ বলেন, “যখন তার কাছে আমাদের বাণীসমূহ পাঠ করা হয় সে বলে ''সেকেলে কল্পকাহিনী!’’ (৬৮:১৫)। ইসলামের আকিদ্বায় আখেরী জামানায় বেশী বেশী ভূমিকম্পের কথা বলা হয়েছে। আর তার অন্যতম একটি বড় কারন হিসেবে পাপ বেড়ে যাওয়াকে দেখা হয়। আমরা যারা ‘ধরি মাছ না ছুঁই পানি’ টাইপের মুসলমান, তাদেরকে পবিত্র কোরআনের এই পরিষ্কার আয়াতের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যখন আল্লাহ পাক বলেন- “যখন প্রতিশ্রুতি (কেয়ামত) সমাগত হবে, তখন আমি তাদের সামনে ভূ-গর্ভ থেকে একটি জীব নির্গত করব। সে মানুষের সাথে কথা বলবে। এ কারণে যে, মানুষ আমার নিদর্শনসমূহে বিশ্বাস করত না।-” (সূরা নামল-৮২)।

আমাদের ‘বাস্তবতা’ বলে কোন বায়োলজিক্যাল রেশনালিটি ছাড়া ভূগর্ভ থেকে ‘প্রাণীর’ জন্ম ‘অসম্ভব’। উপরের আন্ডার লাইন করা শব্দগুলো খেয়াল করুন। কেয়ামতের পূর্বে সে জীবের আগমন ঘটবে। মানুষ জীব জন্তুর ভাষা বোঝে না। কিন্তু সেই প্রাণী মানুষের ভাষায় কথা বলবে। প্রশ্ন জাগে এরকম এক ‘উদ্ভট’ কিংবা ‘অদ্ভুত’ প্রাণীর কথা আল্লাহ (সুঃওঃতাঃ) কোরআনে বলার কি কারন থাকতে পারে যার জন্মই হবে প্রাকৃতিক নিয়মের ব্যতয়ের মধ্য দিয়ে? ‘অতীতের’ অনেক জাতি আল্লাহ ধ্বংস করেছেন তাঁর নিদর্শণগুলোকে অস্বিকার করার কারনে যাদের কাছে আল্লাহর আয়াতগুলো ছিল ''সেকেলে কল্পকাহিনী!’’। আমরা যারা ‘বর্তমানে’ ঘোরের ভিতরে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব-সন্দেহ নিয়ে দোদূল্যমান মুসলমান হিসেবে দিন গত করছি তাদের জন্য পরিষ্কার ভাবে আল্লাহ বলে দিচ্ছেন একটু অপেক্ষায় থাক সেই দিনের জন্য যেদিন তোমার ‘বাস্তবতার’ লজিকে পরিপূর্ণ মস্তিষ্ক ভীষণ ঝাঁকি খাবে তোমার ‘বাস্তবতায়’ ঘটানো আমার ‘উদ্ভট’ ‘নির্দশনের’ মাধ্যমে। তোমার এখনও বিশ্বাস হচ্ছেনা যে আমি এমন করতে পারি!?

আমরা মানুষরা অন্যকে সর্তক করতে কিংবা বুঝাতে হলে কি করতাম??? যত পারতাম অংক কষে, তথ্য উপাত্ত হাজির করে ট্রাই করতাম। আল্লাহর কথা পরিষ্কার। আর তা ঘটবেই। কোন সন্দেহ নাই। আর এখনও যদি কোন সন্দেহ থাকে তবে আল্লাহই বলছেন তারা আর কিছুর অপেক্ষা করে না এ ছাড়া যে তাদের কাছে ফিরিশ্‌তারা আসুক, অথবা তোমার প্রভুর নির্দেশনামা আসুক। এইভাবে আচরণ করেছিল তারা যারা এদের পূর্বে বিদ্যমান ছিল। আর আল্লাহ্ তাদের প্রতি অন্যায় করেন নি, বরং তারা তাদের নিজেদের প্রতিই অন্যায় করে যাচ্ছিল (১৬:৩৩)”।

প্রশ্নঃ আমি কি অপেক্ষায় থাকবো না প্রস্তুতি নিব!!???

জাযাক-আল্লাহ।
৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×