somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শহুরে ফোকলোর

১৩ ই মে, ২০২০ সকাল ১১:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাসা থেকে মাঝে মাঝে আশে পাশের শহরে যাই । আর কত বন্দি থাকা যায় । বেশ কদিন আগে গেলাম পাশের শহর নায়াগ্রা অন দ্যা লেকে । পুলিশের চার পাচটা গাড়ী চোখে পড়ল । লেকের পাড়ের রাস্তায় দাড়িয়ে গাড়ীর ইনডিকেটর লাইট অন করে আমেরিকার ফোর্টটা দেখছিলাম । দেখলাম আমাকে পুলিশের গাড়ী পেরিয়ে গেল । লুকিং গ্লাসে তাকিয়ে দেখি আমাকে পেরিয়ে গিয়েই গাড়ী ঘোরাচ্ছে । অনুমানে বুঝলাম ফাইন খাব । আমার পেছনে এসে দাড়িয়ে টিকিট ধরায় দেবে । এমন পার্কে যাবার জন্য একজন কে ৮০০ ডলারের টিকিট দিয়েছে । পুলিশ গাড়ী ঘুরিয়ে আসবার আগেই আমি কেটে পড়লাম । এমন আকালের দিনে দন্ড খাবার কোন ইচ্ছা নেই । কিন্তু মানুষ আর কত ঘরে বন্দি থাকবে । ঘরে বন্দি থাকতে থাকতে কেউ বউ পেটাচ্ছে কেউ বাচ্চাদের পেটাচ্ছে এমন পারিবারিক ক্রাইম বেড়ে গেছে । এমনটাই দেখলাম এই শহরের কদিন আগের পত্রিকায় । তারপর টরোন্ট শহরের এক রেস্টুরেন্ট থেকে রাতের আধারে চোররা সব কিছু চুরি করে নিয়ে গেছে ।

আবার কিছু খবর পত্রিকায় আসছে না তা হলো, যেমন কিছুদিন আগে দুই সাউথকোরিয়ান কে চাইনিজ ভেবে চাকু মেরেছে । কদিন আগে চাউর হয়ে ছিল এক ডেনটিষ্ট পুলিশের ইউনিফর্ম, গাড়ী, আমর্স নিয়ে প্রায় তের বা পনের জন মানুষ কে মেরে ফেলেছে । মানুষের বাইরে আসবার প্রবনতাকে রুখবার জন্য সরকার মিলিটারী নামাতে চেয়েছিল । কিন্তু তাতে কেউ ভেটো দিয়েছে । ভেটোর যুক্তি ছিল এই মিলিটারী নামিয়ে ২য় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানীজ দেরকে খুজে খুজে বের করে ইনট্রারোগেট সাথে জাপানে ফেরত পাঠানোর মত কাজ করা হয়েছে । তাই, নো মিলিটারী । আবার বাংলাদেশে ইন এইড অফ সিভিল পাওয়ারে মিলিটারী নামানো দুধভাত ।

গত দুমাস ধরে এমন আটকানো পৃথিবীতে । অফিস যাবার সময় রেডিও অন করি । অফিসে গিয়ে সময় থাকলে পেপার পড়ি । রেডিও তে বলা হচ্ছে টাকা খরচ কম করে করুন । সন্তান কে এই টাফ টাইমটা বোঝানোর চেষ্টা করুন । হাতে টাকা রাখুন । বন্দি পৃথিবীতে ঘটনার শেষ নেই ।
এমন বন্দি দিনে টরোন্টোর এক তরুনী - মায়া কুপারস্টোক তার প্রায় ৩০ জন ভাইবোন কে খুজে পেয়েছে । তার মা ছিল সিংগেল মাদার । জামাই ছিলনা । মায়ার মা যে স্পার্ম ডোনার কোম্পানীর কাছে যে ব্যাক্তির স্পার্ম নিয়েছিল সেই একই ব্যাক্তির স্পার্ম ব্যবহার করে আরও মহিলারা সন্তান জন্ম দিয়েছে । সব মিলে মায়া খুজে পেয়েছে তার ৩০ জন ভাইবোন কে । চিন্তা আটকে যাবার মত ঘটনা ।

মাঝে নেটফিল্চকে একটা সিরিয়ালে দেখেছিলাম একজন সিআইএর এজেন্ট তার মৃত স্বামীর স্পার্ম ব্যবহার করে সন্তান ধারনের চেষ্টা করছে । কদিন আগে পেপারে আপনার প্রশ্ন কলামে দেখলাম একজন ৭০ বছরের বিপত্নীক বৃদ্ধ সকালে হাটতে বের হবার সময় তিনি একজন ৬৫ বছরের বিধবা মহিলার সাথে কথা বলছেন, হাটছেন । দুজন দুজনার ঘরে ফিরবার সময় বাই বলার সময় হাগ করছেন । তো তারা কি আবার বিবাহ করতে পারেন কিনা । এমন প্রশ্নে উওরে -
প্রশ্নের উওরদাতা লিখেছেন আবশ্যই বিবাহ করতে পারেন ।

আবার আর এক ৪৫ বছরের মহিলা লিখেছেন আমার আগে দুজন স্বামী ছিল । দু স্বামীর সন্তান সন্তত্বীও আছে । এখন আবার আমি নুতন বয় ফ্রেন্ড পেয়েছি । তার সাথে সম্পর্ক প্রায় দুবছরের তো আমার কি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারি ?
উওরদাতা উওর দিয়েছেন না ।

ইদানিং অফিসে পত্রিকা চোখে পড়েনা । ব্রেক টাইমে মোবাইল ই ভরসা । কাজের অংশ হিসেবে দিনশেষে কিছু খাবার প্রডাক্ট এর দাম কমাই । যেগুলো আগামী দু বা তিনদিনের ভেতরে মেয়াদ উত্তীর্ন হবে । এক ভদ্রলোক ছিলেন আমার রেগুলার কাস্টমার । ফ্রজেন পিতজা কিনতেন । বয়স প্রায় ৬৫র কাছাকাছি । এই দেশে এসছেন পোলান্ড থেকে । শৈশব কেটেছে ওয়ার ছ শহরে । আমাকে বল্ল তুমি কি পোল্যান্ড সম্পর্কে জান ? আমার ভাষা ভাষা ধারনা দিলাম । ২য় বিশ্বযুদ্ধে হিটলারের টর্চার ক্যাম্পের একটা ছিল ওসওয়িজে । আর বল্লাম আমার দেশের একজন কে চিনি যিনি তোমার দেশের ওয়ার ছ বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করেছিলেন । ভদ্রলোক শুনে খুব খুশি হলেন । এরপর থেকে আমাকে পেলেই কথা বলতেন । কুশল বিনিময় করতেন । ইদানিং ভদ্রলোক কে আর দেখছিনা ।

আবার মাঝে মাঝে মনে পড়ে সেই বৃদ্ধের কথা করোনাকালে কতদুর এগুলো তার প্রেম বিবাহ । এমন প্রেম কিছু কিছু রাস্ট্রের মাঝেও দেখা যায় যেমন ক্যানাডাকে নেদারল্যান্ড প্রতিবছর লাখ খানেক করে টিউলিপ ফুল পাঠায় ভালবাসার নিদর্শন হিসেবে । ২য় বিশ্বযুদ্ধে হিটলারের নাতসী বাহিনী নেদারল্যান্ড দখল করলে নেদারল্যান্ডের রানী পালিয়ে ক্যানাডা চলে আসে । সেই ভালবাসার নিদর্শন আজও ডাচরা দেয় ।

একি ভাবে হিটলারের ভয়ে বৃটেন থেকে বৃটিশ রাজাও বর্তমান রানীর বাবা সপরিবারে পালিয়ে আসতে চেয়েছিল ক্যানাডাতে । হিটলারের সাথে বৃটিশ সন্ধির খসরা রেডি ছিল । কিন্তু চার্চিল সেটা থামিয়ে দেয় ।

সব থামানো গেলেও করোনাকে থামানো যাচ্ছেনা । বন্যা, খড়া, ভুমিকম্প এমন দুর্যোগে যেমনটা কিছু মানুষের কিছু প্রতিষ্ঠানের লাভ হয় । তেমন করোনা পরবর্তী পৃথিবীর হিসাবে হয়তোবা কিছু বদলাবে । কিছু দেশ লাভবান হবে । যে ইউরোপ আমেরিকাতে একদা শিল্প বিপ্লব হয়েছিল তারা আজকে একটা সুই তৈরি করছে না । তাদের ওয়ারকিং ক্লাশকে মিনিমাম ওয়েজ দেবার বদলে তারচেয়ে কম খরচে প্রডাক্ট তৈরি করছে চায়না থেকে । সেই জায়গাটা বদলে যাবার বিরাট এক সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে । আইফোন তার একসেসরিজ ইনডিয়াতে তৈরি করার চিন্তা করছে । যেমনটা এখনকার বেশকিছু প্রডাক্ট ওয়াশিং মেশিন, চুলা, ফৃজ, ওভেন, ডিশ ওয়াশিং মেশিন মেড ইন চায়নার পাশাপাশি লেখা থাকে মেড ইন মেক্চিকো, ব্রাজিল । যেমন কাপড়ে চায়না , বাংলাদেশ, ইন্ডিয়ার, কম্বোডিয়ার পাশাপাশি মিয়ানমার, জর্ডান, পাকিস্তান দেখা যায় ।

সে সুবিধা নেবার জায়গায় বাংলাদেশ কি আছে ? বাংলাদেশের ডিপসিপোর্ট, আটলেনের রাস্তা, দ্রুত গতির ট্রেন, নিরবিচ্ছিন্ন বিদুত, সিলিকন ভ্যালির আদলে কমপিউটার ভ্যালি এগুলো কি আছে ?
নাকি বাবা জর্দা দিয়া পান খেয়ে গাল ভরা গল্প বিমান থেকে হাতির ঝিল দেখলে লসএন্জেলেস, প্যারিস মনে হয় । ল্যারি পেজ দুখু মিয়ার জমিতে শনির আখরাতে গুগল টাওয়ার তৈরি করবে । নাম জারীর কাগজ রেডি শুধু সাইন করাটা বাকী । বিলগেটস চ্যাংখার পুলে আলাল দুলালের স্বরনে সাইকেলে প্যাডেল মারবেন ।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই মে, ২০২০ রাত ১:২৫
৪টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×