আজ ১০ জানুয়ারি। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। বাঙালি ১৯৭১ সালে ৯ মাসের সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্যদিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছিল ঠিকই, কিন্তু সেই স্বাধীনতা যেন অপূর্ণ থেকে গিয়েছিল বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে। ১৯৭২ সালে এদিনে বঙ্গবন্ধুর প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে সেই স্বাধীনতা পূর্ণতা পেয়েছে। বাংলার মায়ের কোলে ফিরে এসেছিল খোকা।
সেই প্রত্যাবর্তনকে বাঙালি স্বতস্ফূর্তভাবে পালন করবে সেটা স্বাভাবিক। এবারও তার ব্যতিক্রম ছিল না। যদিও করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে উদযাপনে কিছুটা ভাটা ছিল। মুজিববর্ষ থেকে শুরু করে অনেক অনুষ্ঠানই সীমিত হয়েছে গত বছর থেকে, করোনার কারণে। তবে এমন অবস্থায়ও ভোগান্তিতে পড়েছে ঢাকার মানুষ।
ঢাকার মানুষ আজ অবর্ণনীয় ভোগান্তির শিকার হয়েছে। এ সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে ঘর থেকে বের হয়েই চলার স্বাধীনতায় বাধা পেয়েছে ঢাকাবাসী। কারণ, ঢাকা ম্যারাথন। এই ম্যারাথন আয়োজনের নামে পুরো ঢাকার প্রধান কয়েকটি সড়ক বন্ধ ছিল। হাতিরঝিল এলাকাও বন্ধ ছিল। এর প্রভাব পড়েছে ঢাকা শহরের অলিতে গলিতে।
রাজধানীর রামপুরা এলাকা থেকে কারওয়ান বাজারের দিকে যাওয়া মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন সবচেয়ে বেশি। এমনই কয়েকজনের সাথে কথা হলো। একপর্যায়ে তারা ক্ষোভের সঙ্গে জানালেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা জ্যামে বসে থাকার তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা। জ্যামের স্বর্গরাজ্যে কর্মঘণ্টার এমন অপচয় যেন স্বাভাবিক হয়ে গেছে।
এসব মানুষের আজ একটাই প্রশ্ন ছিল, সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসেই কেন করতে হবে এসব? এতে কি বঙ্গবন্ধুর সম্মান বাড়ে? বঙ্গবন্ধু তো কোনো ভোগান্তির সৃষ্টি করেননি। সেই হিসাবে এটা গতকাল শনিবার বা তার আগের দিন শুক্রবার করা যেত? তাহলে কি খুব বেশি ক্ষতি হয়ে যেত? নাকি সাধারণ মানুষ ভো্গান্তিতে না পড়লে তারা এই ম্যারাথনের কথা মনে রাখতো না?
এমন কষ্টের মধ্যেও একজন দিলেন রসিকতার রসদ। বলতে হয় বাঙালির রসবোধের কথা। জ্যামে আটকে থেকে সারওয়ার নামের একজন বললেন, ‘যে শহরে সাধারণ মানুষ অলওয়েজ হাজার মাইল বেগে দৌড়ের ওপর থাকে, সেখানে ম্যারাথন আয়োজন এক ধরনের বিলাসিতা নয় কি? কী দরকার ছিল সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে ম্যারাথন আয়োজনের?’
সব কথার মূল কথা হলো-- পরবর্তীতে এমন যেকোন সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে কর্তৃপক্ষ জনভোগান্তি লাঘবের বিষয়টি মাথায় রেখে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন বলে আশা করি।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১০:২০