আমি খুব চঞ্চল একটি ছেলে ।
স্কুলে পড়তে বাবার পকেট কাটা রপ্ত করে ফেলেছি ।
কি দোষ আমার স্কুলের টিফিনের সময় খুব ক্ষুধা লাগত। বাবার কাছে টাকা চেয়ে টাকা পেতাম না। বিকল্প চুরি। বালেশের ভিতর টাকাটা রেখেছে । সার্চ করে পয়ে গেলাম। টার্গট ছিল ২/১ টাকা চুরি। ২০ টাকার একটি নোট ছাড়া আর কিছু নাই। অগত্যা সেটাই নিতে হল। টাকার জন্য রীতিমত চিৎকার। ভয় পেলাম কিন্তু পিছু হঠলাম না। একে একে সবাইকে জিজ্ঞেস করা হল। এবার আমার পালা। আমি আগেই সিরিয়াস হ্যা বলা যাবে না। ধরা পড়লে দুটো মাইর। এক চুরির আর দ্বিতীয় এত বড় নোট হাত নেয়ার । তখন দুই টাকা পেলে অনেক মজার জিনিস কিনতে পারতাম।
শেষ পর্যন্ত বাবা টাকাটা পেল না। হেঁটেই মফ্সল শহরে গেল। অনকে দিন এই টাকাটা ভেঙ্গে খেয়েছি।
১১ সদস্যের পরিবার বাবার উপার্জন খুবই সামান্য ছিল।
সংসারে ৫ কেজি চাল কিনতে হতো। সাথে ২৫০ গ্রাম ডাল। সয়াবনি তখনও বাজারে আসেনি। সরিষার তেলই কিনে খেতাম।
দুইটা গাভী ছিল। দুধ বিক্রি করে দিতাম। অনেক সময় সবার পড়ে খেতে আসলে ডালটুকু জুটত না।
সাদা ভাত খেতে ইচ্ছে করত না।
তখন মাকে গালাগাল করেছি । কখনও ডিম ভেজে খেয়েছি আবার কখনও না খেয়েই ঘুমিয়েছ । রাতে বাবা বাজার করে নিয়ে আসত। মাছ কেটে পরিস্কার করে ধুঁয়ে তারপর মাকে ডেকে তুলত।
মাছ ভাজি করে তার পর আমাদের ডেকে তুলত ভাত খাইয়ে ঘুম পারাত।
মা সবচয়ে ভালো খাবারটা বাবার জন্য রেখে দিত। তার বক্তব্য ছিল তোর বাবা অসুস্থ হলে আয় করে খাওয়াবে কে?
স্কুলের বেতন দিতে না পারায় নতুন ক্লাসে শিক্ষক আমার রোল কল করত না। আমি ছিলাম মেধা তালিকার ছাত্র। পরে স্যারের সাথে যোযোগ করি। স্যার বলল হেড স্যারের পারমিশন নিয়ে আয়। টাকা কবে দিবি।
তারপর রোল কল চলে সমানে।
আর থামে না।
এখনও চাকুরী জীবনে জীবনের রোল কল চলে। এখনও অনেক কিনে দেই পিচ্ছগুলারে কিন্তু ভুলতে পারি না হারানো অতীত। বারবার দোলা দেয় স্মৃতির মানসপটে।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




