ইদানীং নতুন একটা ট্রেন্ড চালু হয়েছে " দ্বীনি পরকীয়া "
শুনতে খুব অবাক লাগলেও এখন এটা " মাস-না, ওয়া ছুলাছা, ওয়া রুবা " এর নাম দিয়ে চালিয়ে দিচ্ছে।
তথাকথিত দ্বীনি ভাইবোন গুলো দ্বিতীয় বিবাহ করার নামে মূলত দ্বীনের দোহাই দিয়ে পরকীয়াই করে যাচ্ছে। তাদের নোংরামির নাম দিয়েছে " মাস-না, ওয়া ছুলাছা, ওয়া রুবা " ফেসবুকে এই নামে গ্রুপও আছে একটা।
একজন স্ত্রীর হক পরিপূর্ণ আদায় করতে পারে না, তিনিই আবার " মাস-না, ওয়া ছুলাছা, ওয়া রুবা " বাহানা দিয়ে দ্বিতীয় বিবাহ করার নামে দ্বীনি পরকীয়াতে লিপ্ত। অথচ একজন আদর্শ স্বামী হিসাবে স্ত্রীকে যথাযথ সম্মান দেওয়া, তার যাবতীয় প্রয়োজনের খেয়াল রাখা, শারীরিক ও মানসিক শান্তনা দেওয়া, পরিবারের কর্তা হিসাবে একজন দায়িত্ববান স্বামীর দায়িত্ব পালন করা ইত্যাদি।
তারা মূলত সুতা নিসার ৩য় নাম্বার আয়াতের হাওয়ালা দিয়ে " মাস-না, ওয়া ছুলাছা, ওয়া রুবা " নামে ভণ্ডামি করতেছে। এই আয়াতের সানে নুজুল আর আয়াতের তাফসীর না পড়েয় নুজের মন গড়া কথা দিয়ে পরকীয়াকে চালিয়ে যাচ্ছে। এই আয়াতে যেমন ২,৩,৪ বিয়ের কথা বয়া হয়েছে ঠিক তেমনি ভাবে একটা মানদণ্ডও দেওয়া হয়েছে।
যদি তোমরা আশংকা কর যে, তোমরা স্ত্রীদের মধ্যে সমান বিচার করতে পারবে না, সবার মাঝে সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারবে না, তাহলে শুধু একটাই বিয়ে করব। কিন্তু তারা আয়াতের এই অংশটা পড়েনা। শুধু অর্ধেক আয়াত দিয়ে তাদের নোংরামিকে হালাল করার অপচেষ্টা করে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে একজন স্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা, তার যাবতীয় খেয়াল রাখা, পরিবারের যাবতীয় সব দায়িত্ব পালন করতে হিমশিম খেতে হয়, সেখানে দ্বিতীয় বিবাহ করা একেই বারেই অসম্ভব। দ্বিতীয় বিবাহ করার জন্য পাগল হয়েছে কিন্তু প্রথম স্ত্রীর সমস্ত দায়িত্ব পালন করেনা। এটা মূলত নেক সুরতে ভন্ডামি করা ছাড়া কিছুই না।
وَإِن خِفتُم أَلّا تُقسِطوا فِي اليَتامى فَانكِحوا ما طابَ لَكُم مِنَ النِّساءِ مَثنى وَثُلاثَ وَرُباعَ فَإِن خِفتُم أَلّا تَعدِلوا فَواحِدَةً
বাংলা অনুবাদ -
আর যদি তোমরা আশঙ্কা কর যে, ইয়াতীমদের ব্যাপারে তোমরা ইনসাফ করতে পারবে না, তাহলে তোমরা বিয়ে কর নারীদের মধ্যে যাকে তোমাদের ভাল লাগে; দু’টি, তিনটি অথবা চারটি। আর যদি ভয় কর যে, তোমরা সমান আচরণ করতে পারবে না, তবে একটিই বিয়ে কর। [ সুরা নিসা-৩]
আয়াতে সুস্পষ্ট বর্ণনা করা হয়েছে, যদি সুবিচার ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা করতে না পার, তবে একটাই বিয়ে কর। অর্থাৎ আপনি আগে একজন স্ত্রীর সম্পূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন তার পরে অন্য স্ত্রীর কথা চিন্তা করুন। যেহেতু একজন স্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতেও আপনি ব্যর্থ, সেখানে দ্বিতীয় বিবাহ করা কোন ভাবেই সম্ভব না। অন্য ভাবেও বলা যায়, প্রথম স্ত্রীর যাবতীয় দায়িত্ব, প্রয়োজন সব মিটাতে না পারলে, দ্বিতীয় বিবাহ করার ইচ্ছা করা নিতান্তই যৌনলালসা। আদর্শ স্বামী, আদর্শ বাবা, আদর্শ অভিভাবক হওয়ার চেস্টা করুন, তবেই সমাজ সুন্দর হবে, রাস্ট্র সুন্দর হবে ইনশাআল্লাহ।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জুন, ২০২২ সকাল ৯:২৩