আগের কাহিনীর পর...
এরপর আর তেমন কোন মেজর এনকাউন্টার হয় নাই এই এপগুলায়। কয়েকটা ফ্যামিলিয়ার ফেইস দেকছিলাম যেই কলেজে যাইতাম সেই কলেজ থেইকা। কেয়ারফুলি এভইড করছি, নাইলে ব্যাপারগুলা অকয়ারড হইয়া যাইতে পারে!!!
ফেইসবুক ডেটিংঃ এই সময়েই ফেইসবুক নতুন এই ফিচারটা নিয়া আসল। ফেইসবুক ডেটিং। অনেক বড় বড় হেডলাইন হইল। পাবলিসিটি পাইল বেশ। কয়েকদিন পর দেখি ফেইসবুক বিনা কারণে খালি আমারে খোঁচায়। কয় “ট্রাই ইট!!!”। একদিন প্রোফাইলটা খুইলাই বসলাম। দেখলাম ফেইসবুক আমারে আজিব আজিব প্রোফাইল দেখাইতেছে! ক্যারে বাপ। হাবি যাবি বিদেশি সুন্দরি দেইখা আমি কি করতাম? আমি বিয়া করতাম চাই, পিরিত নাহ।
আমার মনে হইছে ওদের এলগরিদমগুলা এখনো ম্যাচিউর হয় নাই। এইখানেও কয়েকদিন পর সাবেক কলেজের কয়েকটা পরিচিত মুখ দেখলাম। এক সুন্দরিরে “লাইক”ও দিছিলাম ভুলে। কই করতাম? বুড়া আঙ্গুল মিস্টেক কইরা ফালাইছে। জুনিয়র পুলাপাইন। তারপর থেকে সুপার কেয়ারফুল ছিলাম যাতে এই আকামটা আর না হয়। কলেজের ইয়ার-এন্ডের শোতে যাইয়া দেখি সেই সুন্দরি ওইখানেও আসছে!!! চোখাচোখিও হইয়া গেল ক্যামন কইরা। কি দরকার ছিল চোখাচোখি হবার?
ঝড়ের বেগে চোখ সরাইয়া লাইলাম।কারন, সিচুয়েশন এস্কেলেট কইরা কুনো ফায়দা হবার সম্ভাবনা কম। খালি জল ঘোলা করা হবে এইটাই। যদিও এর সাথে আমার পারসোনাল কানেকশন ছিল না, তারপরেও আমার কাছে ব্যাপারটা সুবিধার মনে হয় নাই। কয়েকজনরে এরাম লাইক দিলে দেখা যাবে সুন্দরিদের গসিপের টপিক হইয়া যাবার সম্ভাবনা আছে। তাও আবার ভালো কিছুর জন্য না। তাড়াতাড়ি কইরা ফেইসবুক ডেটিং এর প্রোফাইল ডিলিট কইরা দিয়া হাঁপ ছাইড়া বাঁচলাম!!! এই ফিচারটা এক সময় নিজেই একটা ইন্ডিভিজ্যুয়াল এপ হইয়া আসবে, কিন্তু আমি সো ফার এপের যে পারফরমেন্স দেকছি ট্যাট্যা আমি ডিসেপইন্টেড। এই জিনিসটার পরিণতি গুগল প্লাস এর মত হইয়া যাইতে পারে।
পারসোনাল উপলব্ধিঃ
এপগুলা থেইকা ছেলেমানুষদের জন্য কি বউ পাওয়া আসলেই সম্ভব?
উত্তরঃ হুম। সম্ভব। স্ট্যাটিস্টিক্যালি চান্স অনেক কম। ডেডিকেটেড এফোরট দেওয়া লাগবে। ছেলেমানুষদের জন্য ব্যাপারটা একটা আপ-হিল ব্যাটেল। সুন্দরিদের জন্য ব্যাপারটা ডিফারেন্ট হবে কিছুটা। তাছাড়া আমরা বাংলাদেশি আম্রিকানরা এখনো মনে হওয় ইন্টারনেট থেইকা বর-কনে ডাউনলোড করার আইডিয়াটারে সিরিয়াসলি লইতে পারি নাই। পুলাপাইন কিউরিয়াস হইয়া আইডিয়াটারে লইয়া পোকা-পুকি করবে ঠিকই, কয়েকটা ডেটেও যাবে, কিন্তু বিয়া করার সময় অধিকাংশেরই বুকে যথেষ্ট বল থাকবে নাহ।
আর একটা ব্যাপার হইল যে, এই এপগুলাতে চয়েস এত বেশি যে, কোনটা যে রাইট চয়েস আর কোনটা যে উল্টা বোঝাটা মুস্কিল। ফেইক প্রোফাইলের একটা ব্যাপার আছে। একেকজনের এপে প্রোফাইল খোলার মোটিভেশন একেকরকম। অধিকাংশ প্রোফাইল আমার মত, টেস্ট কইরা দেখতে চায়, দেখি তো জিনিসটা কি। যদিও আমি সেমি-সিরিয়াস ছিলাম। এই এপগুলারে সাবধানে হ্যান্ডেল না করতে পারলে প্যাঁচে পইড়া যাবার সম্ভাবনাও আছে (সিম্পল স্ক্যাম থেইকা শুরু কইরা সিরিয়াল কিলার লেভেলের মত সিরিয়াস)।
পুলাপাইন্দের ধৈর্য না থাকলে এপ ট্রাই করার দরকার নাই। জেনারালি সুন্দরিরা এত রিকোয়েস্ট পায় যে কোনটা রাইখা কোনটাতে রিস্পন্ড করবে ওইটাই ভাইবা পায় না। সুন্দরিদেরকে যাইচা ম্যাসেজ করা ব্যাপারটা আমার কাছে এলারজিক। কিন্তু অ্যালার্জি সাপ্রেস কইরা আমিও সিলেক্টিভ্লি সুন্দরিদেরকে ম্যাসেজ করছি। আই হেইটেড ইট।
যদি প্রমিসিং কাউরে পাওয়াও যায়, অপশন ইভালুয়েট করাটা একটা ভয়াবহ রকম কঠিন কাজ। ইঊ সিমপ্লি ডোন্ট নো হোয়াট ইউ আর গেটিং ইনটু। যদিও ব্যাপারটা সবসময়ই এরকম। ইউ নেভার নো হোয়াট ইউ আর গেটিং ইনটু।
ফান-ফ্যাক্টঃ
১। ব্রিটিশ-বাংলাদেশিরা আমেরিকান-বাংলাদেশিদের তুলনায় ভয়াবহ রকমের বেশি মেকআপ করে।
২। কোন সুন্দরির যদি খালি ফেইসের ছবি থাকে ফুল ছবি ছাড়া, তাইলে ওই ছবি মোস্ট লাইকলি ১০ বছরের পুরাতন আর সে মরবিডলি ওবেস। খুব বেশি ধার্মিক হইলে ছবিই থাকবে না।
যাইহোক, অনেকে মনে করবে আমার অনলাইন এন্ডেভার ফেইল্ড। মোটেই ঠিক না। যেহেতু, আমার টার্গেট ছিল সিস্টেমটা সম্পর্কে জানা আমি জানছি। ব্যাপারটা টেরাই দিতে চাইছিলাম মাত্র।
ইন্টারনেট থেইকা বউ ডাউনলোডের এডভেঞ্চার এইখানেই শেষ!
(চলতে থাকপে...।)
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা এপ্রিল, ২০২০ সকাল ৯:৫৮