(ডিচক্লেইমারঃ এই সিরিজের পোস্টগুলা শুধু বিনুদনের জন্য! জিন্দা কিম্বা মুর্দা কারুর সাথে কাহিনী মিল্লা গেলে কেউ দায়ী নহে!!!)

আগের কাহিনীর পর...

একদিন ক্যালিফোর্নিয়ার এক সুন্দরির সাথে ম্যাচ হইল। প্রোফাইল ঘাইটা দেখলাম সুন্দরি বেশ হাই মেইন্টেন্যান্স একটা চিড়িয়া। ব্রাউজারে একটু এক্সট্রা টাইম স্পেন্ড করতেই সুন্দরির সোশ্যাল মিডিয়া স্ক্রিনে ভাইসা আসল। দেখলাম সুন্দরি আসলেই হাই মেইন্টেইন্যান্স।
কি মনে কইরা সুন্দরিরে নক দিলাম। কিছুক্ষণের মধ্যেই রিস্পন্ড করল। আলাপ সালাপ করতে যাইয়া সুন্দরি দেখি মাত্র কলেজ শেষ করছে মাগার আমার বয়েসি। আমি ব্যাপারটারে পজিটিভলি নিলাম কারণ এইখানে পুলাপাইনের পড়াশুনা বিভিন্ন কারণে ডিলেইড হইয়া যাইতে পারে। আম্রিকায় লাইফ একেকজনরে একেকভাবে সাইজ করে। আমার নিজেরই চার বছরের কোর্স পাঁচ বছর লাগছে।

যাইহোক দুই দিন মনে হয় এপে চ্যাট করলাম একটু। আমার কাছে চ্যাটিং ব্যাপারটারে বেশ মনের ভাব প্রকাশের জন্য আইডিয়াল মনে হয় না মোটেই। একটা সিম্পল কথা বলতে পনের মিনিট লাইগা যায়। পনের মিনিট ফুনে কথা কইলে ম্যালা গ্রাউন্ড কাভার করা যায়। পিরিত করলে অবশ্য আলাদা ব্যাপার!

তাছাড়া ততদিনে আমি নিজেই বিরক্ত হইয়া গেছি। লেফট-রাইট সোয়াইপ করতে করতে আমার এনার্জি শেষের পথে। বুড়া আঙ্গুল ব্যাথা হইয়া গ্যাছে! আর হাই হ্যালো করতে করতে বেশ ভালো এনার্জি লাগে। মাসখানেক হইয়া গেল এপ ইউজ করতেছি কিন্তু কোন সুন্দরির সাথে ফুনে কোথাও বলতে পারলাম না। এইটা কুনো কোথা হইল?

আমি সুন্দরিরে পাক্কা আল্টিমেটাম দিয়া কইলাম দেখ সুন্দরি, তুমি যদি সিরিয়াস হও তাইলে ফুনে কথা কইতে হবে। না হইলে তুমি মুড়ি খাও। আমার চ্যাট করার অত সময় নাই। সুন্দরি আমারে তখন ফুন নাম্বার মেসেজ কইরা দিল। আমি তখনই তার সাথে একটা এপয়েন্মেন্ট ঠিক কইরা রাখলাম।

পরেরদিন সময়মত কল আমিই দিলাম। কল দিয়া তো বিপদে পইড়া গেলাম। এইরাম আননোন সুন্দরির সাথে কথা বলার অভ্যাস ভুইলা গেছি ম্যালা দিন হইল। এই ব্যাপারগুলা কিন্তু একটা আর্ট। যাইহোক তোতলাইতে তোতলাইতে কথা শুরু করলাম। সুন্দরির সাথে কইয়া ভালোই মানে হইল। কথা কইতে কইতে শুনলাম যে তার এক “বেস্টি”র ইদানিং এই এপ দিয়া বিয়া হইছে এইজন্য সে সুপার এক্সাইটেড হইয়া এপে সাইন আপ করছে, ব্রেইন স্কেপ্টিকাল মাগার বিশ্বাস করলাম। যাইহোক তারে প্রথমেই জিগাইয়া লইলাম যে তুমি বিয়া করতে আসলেই চাও কিনা না চাইলে তুমি ভাগ। আমাই আমার রাস্তায় ভাগি। আমার এরাম সুন্দরির সাথে ছ্যাবলামি করার মত মতো এক্সট্রা টাইম নাই।

যাইহোক সুন্দরির কাছ থেইকা শুনলাম, সে নাকি একটা বিউটি পার্লারে কাজ করে। বিউটিশিয়ান!!! শুইনাই তো মনের ভিত্রে কু-ডাক দেওয়া শুরু করছে। আমার আবার হেভি মকাপে এলারজি। কুন সুন্দরি যদি হেভি মেকাপ করছে আমি তারে আর সুন্দরি পাই না। এই সুন্দরি দেখি এই ব্যাপারে এক্সপার্ট!

আসলে ব্যাপারটা আর ডীপ। সুন্দরিরা মেকআপ কইরা মুখের (কোন কোন ক্ষেত্রে পুরা শরীরের) মানচিত্র পুরাই বদলাইয়া দ্যায়। চোখের সামনে যা দেখা যায় পুরা ব্যাপারটাই নকল। আমি যদি কুনো সুন্দরির ব্যাপারে আমার নিজের চোখেরে বিশ্বাস করতে না পারি তাইলে তো মহা সমস্যা। অনেকেরই এই কথা শুইনা ম্যালা সুন্দরির ল্যাঞ্জায় অগ্নি লাইগা যাইতে পারে মাগার আমি কোন কেয়ার করি নাহ। আপ্নেরা দুরে যাইয়া মুড়ি খান।

যাইহোক দুই সপ্তাহে মনে হয় তিন দিন কথা বললাম এভারেজে পনের মিনিট কইরা। একদিন কথা কইতে কইতে ফিসফিস কইরা কইতেছে আব্বু আসতেছে আর কথা কইতে পারতাম নাহ। তারপর কাইটা দিল। আর আমি তো মনে মনে আগুন। সুন্দরি কয় কি? আব্বা আসতেছে তো কি হইছে? আমারে তোমার আব্বুর সাথে কথা বলাইয়া দিবা! আমি কি তুমার সাথে লুকাইয়া লুকাইয়া পিরিতের ধান্দায় আছি? চিন্তা কইরা দেক্লাম সুন্দরি মোটও সিরিয়াস নাহ। আমার সময় খাওনের ধান্দায় আছে। কিন্তু মনে মনে ভাবলাম দেখিই না কোথাকার পানি কথায় গড়ায়!

এর মধ্যে সুন্দরি কয় আমার ফেইসবুকে এড হইতে চায়। আমি আমার ফেইসবুকে কাউরে সহজে এক্সেস দ্যাই না। আর এই সুন্দরি নাকি ফেইসবুকে ঢুকতে চায়। চিন্তা কইরা দেক্লাম কি আর হবে? ঢুকুক না হয়। সুন্দরির ফেইসবুকে তো আমিও এক্সেস পামু। এরপর ঝড়ের বেগে সুন্দরির ফেইসবুক ঘাইটা দেখলাম আমার হাইপোথেসিসগুলা সব সত্যি! টিপিকাল আম্রিকান সুন্দরি! বিউটি পার্লারে কাজ করার সুবাদে মেকআপ লইয়া ভালোই ক্রিয়েটিভ।

যাইহোক চিন্তাভাবনা কইরা দেখলাম এই সুন্দরিরে দিয়া আমার আমার বউ বানান হবে নাহ। এরে বাদ দেওয়া লাগবে। তারপর চুপ মাইরা গেলাম। একদিন দেখলাম সুন্দরি এয়ারপোর্টে চেকিন দিছে। মেসেজ দিয়া কইলাম কই যাও? কয় বাংলাদেশে যাইতেছি। দেড় মাসের ছুটিতে! আমি কইলাম হ্যাভ ফান! কাম ব্যাক ম্যারিড! সুন্দরি প্রোটেস্ট কইরা কয় হ্যায় বিয়া করতে যাইতেছে না। আমি কইলাম দেখমু নে! আসলে ব্যাপারটা হইল আমদের মত পুলাপাইনেরা দেশে গেলে সবার মাথায় ওই চিন্তাটাই আসে। আমিও তার ব্যাতিক্রম না।

এক মাস পরে দেখি সুন্দরি বিয়ার ভিড্যু পোস্ট করছে। এইটা স্বীকার করা উচিত, ভালোই হইছিল কিন্তু ভিড্যু গুলা। তারপরে যখন আম্রিকা ফেরৎ আইলো মেসেজ দিলাম, কংগ্রারাচ্যুলেশন্স!!! সুন্দরি কয় থ্যাঙ্কিউ!!! বিয়া কইরা লাইলাম, মাগার প্লান ছিল না। আমি মনে মনে কইলাম ভালো কাজ করছ, এই অধমের উপকার করছ একটা!!!

এরপর কুন খোজ খবর নাই, বাংলাদেশ থেইকা আইসা এইটা লেখার সময় দেক্তেছি সুন্দরি আমারে আনফ্রেন্ড দিয়া দিছে!!! তার আগে মনে হওয় আমার বউ এর ছবি দেইখা গ্যাছে!!!!

(চলতে থাকপে...।)