আগের কাহিনীর পর...
সুন্দরি একঃ এইটা হইল প্রথম সুন্দরি। সুন্দরির বাড়ি আমাদের এলাকাতেই। সুন্দরি নাকি চিটাগাং ইউনিভার্সিটি থেইকা একটা কঠিন সাবজেক্টে মাস্টার্স করছে। হাজি দানেশে থাকতে এই সাবজেক্টটারে সবাই যমের মত ভয় পাইতাম। যাইহোক, আমার ছোটভাই আমারে বায়ো-ডাটা, ছবি আর ফেইসবুক প্রোফাইল দিয়া রাখছিল। আমি মনে হয় নিজেই রিচ আউট করছিলাম।
কিছুক্ষণ ফেসবুকে চ্যাট কইরা দেখলাম, সুন্দরি স্মার্ট আছে (মাথার দিক দিয়া)! পরে ফুনে কথা বলার শিডিউল করলাম একদিন (রাতে)। এখনো মনে আছে, আমি হাইকিং করতে নিউ-হ্যাম্পশায়ার যাইতেছিলাম ওই রাতে। রাতেরবেলা রাস্তার পাশে অন্ধকারে গাড়ি দাড় করায়া সুন্দরির সাথে আধাঘণ্টার মত কথা কইলাম। কি নিয়া কথা কইছিলাম মনে নাই। খালি এইটা মনে আছে যে সুন্দরি তার ওজন নিয়া বেশ ডিফেন্সিভ। ইন মাই ডিফেন্স, আমি ব্যাপারটা তুলি নাই, কোন কমেন্ট করা তো দুরের কথা। আর ফেসবুকে ছবি দেইখা কে কত চিকন/মোটা ওইটা এসেস করা আমার পক্ষে সম্ভব নাহ। পরেরদিনের হাইকটা লাইফের একটা মেমোরেবল ডে ছিল। এইদিন আমি মাউন্ট ওয়াশিংটন হাইক দিছিলাম!!! পাঁচ হাজার ফিট এলিভেশন গেইন + ১১.৩১ মাইল(১৮.২ কিলোমিটার) ভেরি ডিফিকাল্ট ট্রেইল + সাড়ে আট ঘণ্টা টোটাল হাইক-টাইম! আহা!!! কি একটা দিন ছিল!!
এইদিকে আমি আমার বায়ো-ডাটা মামার সাথে কন্সাল্ট করলাম। ডিসকাস করলাম এই সুন্দরিরে নিয়া। সে কইল সে অলরেডি এই সুন্দরিরে দেখছে। দেইখা পিছাইয়া আসছে। কেন পিছাইয়া আসছে ওইটা আর কি কইতাম? ব্যাপারটা ভালো লাগল না। আমার এক নাঙ্গা-কালের ফ্রেন্ড চিটাগাং ইউনিভার্সিটিতে পড়ত। অরে কল দিয়া কইলাম বাপ (ওরে বাপ ডাকি এমনিতেই), এই সুন্দরিরে চিনিস? সে শুইনা এই কেইসে আগাবার এগেইন্সটে স্ট্রংলি এডভাইস করলো। কিছু রিয়েজনিংও দিল।
আমি তো বেশ ডি-মরালাইজড। মনটাই খ্রাপ। এরাম হইলে ক্যামনে হবে। বুঝলাম এইখানে হবে না। কিন্তু সমস্যাটা হইল, সুন্দরিরে কইতাম ক্যামনে। এইটা যদি কই, সে হার্ট হবে, কনফিডেন্স কইমা যাবে। চিন্তা করলাম আরেকদিন কথা কইয়া দেখি, সুযোগ হইলে কইয়া দিমু যে হবে না।
এরপর একদিন মেসেজ দিলাম একদিন, কইলাম ব্যাস্ত নাকি? সুন্দরি কয় ব্যাস্ত না। আমি কইলাম ফুন দিমু? কয়, না একটু নাকি পড়াশুনা নিয়া ব্যাস্ত আছে। কিছু কইতে চাইলে চ্যাটেই কইতে পারি। সামনে নাকি একটা চাকরির এক্সাম আছে, ১৫ দিন পর। এই কথা শুইনা চিন্তা কইরা দেখলাম, সামথিং ইজ বেরি রং। এরাম পড়ুয়া ইস্টুডেন্ট আমি গেবনেও দেখি নাই, যে পনের দিনে পরের এক্সাম এর জন্য ফুনে কথা কইতে পারবে না। এরপর আমি চুপচাপ হইয়া গেছিলাম।
সুন্দরিও পরে আর নক করে নাই। আমিও মনে মনে খুশি, যে আমারে আর তারে নিয়া ডিল করতে হয় নাই। অনেক পরে এক বিশ্বস্ত সূত্রে শুনছিলাম, সুন্দরি নাকি ফ্যামিলি ছাইড়া বিদেশে আস্পে না!!! কিন্তু প্রশ্ন হইল এইটা যদি হয় কাহিনী, তাইলে সুন্দরির ফ্যামিলির সাইড থেইকা কনভারসেশন স্টার্ট করছিল ক্যারে? এইটা একটা মিস্টিরি!!! যেই মিস্টিরি সলভ করার ইচ্ছা, সময় বা এনার্জি আমার নাই।
সুন্দরি দুইঃ এইখানে খুব কাছের এক বৌদি আছেন। যাইহোক, একদিন বউদিরে কইলাম বউদি বিয়া করতাম চাই। আম্নের পরিচিত কুনো সুন্দরি থাকলে এট্টু পরিচয় করায় দেন না ক্যারে? একটু ফুনে পিরিত কইরা নাইলে দেইখা শুইনা বিয়া কইরা লাইলাম! উনি চিন্তা ভাবনা কইরা কিছুদিন পর আমারে উনার এক বান্ধবীর সাথে পরিচয় করায়া দিল। সুন্দরির বাড়ি নাকি দিনাজপুর শহরেই। থাকে ঢাকায়। প্রাইভেট ইউনিভারসিটি থেইকা আইন লইয়া পড়ছে। চিন্তা কইরা দেখলাম কথা কইতে গেলে আইনের ম্যারপ্যাচে না ফালায়া দ্যায়।
সাত-পাঁচ ভাইবা, ফেইসবুক থেইকা চ্যাট শুরু হইল। আস্তে আস্তে কথা ফোনেও গড়াইল। মাঝে মাঝে কইথা হইত একটু আধটু। সুন্দরি মুটামুটি নাইস ছিল, কিন্তু বিভিন্ন কারণে আমার সাথে কথা বলার মত সময় কইরা উঠতে পারতেছিল না। যেহেতু আমার মেইন স্ট্রাটেজিই ছিল যে আমার ফুনে কথা বইলা ভাইব নেওয়ার চেষ্টা করা লাগবে, সো কথা না বলতে পারাটা ডিল-ব্রেকার হইয়া দাঁড়াইল আমার জন্য।
ব্যাপারটা হইল, সুন্দরি যদি বিয়া করার মত একটা ব্যাপারে সময় দেওয়ার মত সময় বাইর করতে না পারে তাইলে এইটা তার কাছে হাই প্রায়োরিটি আইটেম না। আর আমার কাছে তখন এইটা সেকেন্ড হাইয়েস্ট প্রায়োরিটি ছিল। এক সময় ফর্মাল কোন ডিক্লারেসন ছাড়াই কমিউনিকেশন গ্যাপ হইয়া গেল। ইট জাস্ট ডাইড। আমিও আর আমার সাইড থেইকা আর কিছু করি নাই। আসলে সুন্দরির কিছু মেজর ফ্যামিলি ইস্যু ছিল যেইগুলা হয়তো তার কন্ট্রোলের বাইরে ছিল। যাই হোক দ্যাটস দ্যা এন্ড অফ ইট।
(চলতে থাকপে...।)
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই এপ্রিল, ২০২০ ভোর ৬:৫২