somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এন ইডিয়ট ইন ম্যারিজ!!! (আট)

২৪ শে এপ্রিল, ২০২০ সকাল ৯:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
(ডিচক্লেইমারঃ এই সিরিজের পোস্টগুলা শুধু বিনুদনের জন্য! জিন্দা কিম্বা মুর্দা কারুর সাথে কাহিনী মিল্লা গেলে কেউ দায়ী নহে!!!


আগের কাহিনীর পর...
সুন্দরি তিনঃ একদিন এক সুন্দরির বায়ো-ডাটা পাইলাম। সুন্দরির বাড়ি আমাদের এলাকাতেই। দেখলাম সুন্দরি নাকি হাজী দানেশের স্টুডেন্ট। মাস্টার্স কমপ্লিট! তাও নাকি আমি যেই সাবজেক্টে পড়তাম সেই সাবজেক্টেই। এইসব শুইনাই তো এক্সাইটেড হইয়া গেলাম!

এইটা ঠিক যে আমি এই ক্যাম্পাসটারে বেশ মিস করি। কারণ হইতে পারে যে আমি হাজী দানেশের ড্রপ-আউট। এই পর্যন্ত যতবার দেশে গেছি প্রত্যেকবারই আমি ক্যাম্পাসটারে দেখতে গেছি, একটু সময়ের জন্য হইলেও। একটা নস্টালজিয়া কাজ করে আরকি।

যাইহোক, ফেসবুক থেইকা শুরু হইয়া, ফোনে কথা হইল। কথা বইলা অনেক নাইস মনে হইল। আর একটু কথা কইতে যাইয়া দেখি সুন্দরি আমার একজন মেয়ে-ফ্রেন্ডের (সাবেক ক্লাসমেট) রুমমেট ছিল! কিছু সময় ক্যাম্পাসের খোঁজখবর লইতেই চইলা গেল।

তারপর স্ট্যান্ডার্ড কিছু প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করলাম। এই যেমন,
তুমি বিয়া করবা কিনা?
তোমারে বিয়া করার জন্য কেউ চাপাচাপি করতেছে কিনা?
আম্রিকা আস্তে কুন আপত্তি আছে কিনা?


সুন্দরির উত্তর শুইনা তো আমার ভিড়মি খাওয়ার মত অবস্তা!

বিয়া করবা কিনা এইটার উত্তর দিল, সে সিউর নাহ। মনে হয় বিয়া করবে। বাসা থেকে বিয়া দিতে পারে। তাও সেই মুহূর্তে না। ছয় মাস পরে হইতে পারে!
বিয়া করার জন্য কেউ চাপাচাপি করতেছে কিনা? এইটার উত্তর যে কি দিছিল ভুইলা গেছি! মনে হওয় নেতিবাচক উত্তরই দিছিল।
আম্রিকা আস্তে কুন আপত্তি আছে কিনা, এইটারও কোন ডেফিনিটিভ আনসার নাই। আন-ডিসাইডেড!

তারপর সে আরকটা কথা কইল যেইটা শুইনা আমি ডেফিনিটলি ভিড়মি খাইলাম। সে কইল যে তার সাথে কথা কইতে গেলে নাকি তারে বিয়া করাই লাগবে। পরে না করা যাবে না। আউচ!

এই সব শুইনা আমার সব এক্সাইটমেন্ট পুরা ফাটা বেলুনের মত চুপসাইয়া গেল। আমি মনে করছিলাম, নিজের ক্যাম্পাসের সুন্দরি, আগে কথা না বললেও সুন্দরিরে অনেক পরিচিত মনে হইতেছিল। তার উপর নিজের সাবজেক্টের! এইটা মনে হয় নরমাল একটা ব্যাপার। নিজের এলাকার/স্কুলের/শহরের কাউরে পাইলে একটু বেশিই আপন মনে হয়।

যাইহোক, ঊপ্রের তিনটা প্রশ্নই আমার জন্য ডিল ব্রেকার ছিল। কোন সুন্দরি যদি নিজে থেইকা বিয়া করতে না চায় তারে আমি কোনদিনই বিয়া করার পাবলিক না। ফ্যামিলি ইমোশনালি ব্লাকমেইল কইরা সুন্দরিরে জোর কইরা রাজি করাইতে পারে। এইটা প্রিভেন্ট করার জন্য এত চেষ্টা। আর বিয়ার পর আম্রিকা না আসলে আমি বিয়া করতাম ই বা ক্যারে? তার উপ্রে কথা বললে বিয়া করতেই হবে এইটা মানা আমার পক্ষে সম্ভব না।

যাইহোক, মন খারাপ কইরা তারে কইলাম ওকে তাইলে তুমি আগে বাসায় আলাপ কইরা দেখ। আমরা পরে আবার আলাপ করমুনে। তুমি আমারে সিদ্ধান্ত তখন জানাইয়ো। আপচুস!!!

কয়েকদিন পর আবার কথা কইলাম, আম্রিকা আসার ব্যাপারটা তখনো রিজল্ভ হয় নাই। আমি যেইটা বুঝলাম যে, সুন্দরি তখনো সিউর না যে সে আম্রিকা আসবে কিনা। ওয়েল, তখন এক রকম বাধ্য হইয়াই কইলাম যে আমাদের তাইলে আর কথা বলার কুন লজিক নাই। উই নিড টু স্টপ টকিং। তারে আরও কইলাম যে সে যদি মাইন্ড চেঞ্জ করে তাইলে যেন আমারে জানায়, যেইটা আনলাইকলি।

তবে সবশেষে, একটা কাজের কাজ করলাম যে, আমরা কমিউনিকেশন চ্যানেলটা ওপেন রাখবো। ক্যাম্পাসের জুনিয়র-সিনিয়র হিসাবে যাতে ফিউচারে দরকার হইলে এইটারে ইউজ করা যায়। মজার ব্যাপার হইল এই চ্যানেলটা আমার মামার বিয়ার ক্ষেত্রে ইন্সট্রুমেন্টাল ছিল! সি প্লেইড এ ভেরি স্মল বাট এক্সট্রিম্লি সিগ্নিফিক্যান্ট রোল ইন ইট!!! এন্ড আই থ্যাঙ্ক হার ফর দ্যাট!

সুন্দরি চারঃ একদিন এক সুন্দরির গল্প শুনলাম। সুন্দরির ভইনের কিড আমার কাজিন নাকি সেইম ইশকুলে যায়। সুন্দরির বইন নাকি মাস- খানেক হইল আম্রিকায় আসছে। এখন এইখানেই থাকতেছে। বাংলাদেশ বাড়ী নাকি কাহারোলে। কিন্তু সমস্যা হইল, তাদের ফ্যামিলির অরিজিন নাকি রাজশাহী/চাপাই থেইকা (আমাদের এলাকায় তাদেরকে মালধইয়া বলে)। আমি কইলাম আমার কুন সমস্যা নাই। মানুষ ভালো হইলে সমস্যা কি?

কিন্তু একটা সমস্যা হইল আমার আম্মা এই ব্যাপারটায় হাফ-রাজি। বলে মালধইয়া বিয়া করবি? লোকে কি বলবে? আর মাইয়া নাই? এইটা ঠিক যে এই সুন্দরিরে বিয়া করলে আসলেই আমাদের এলাকার লোকজন একেকজন একেক রকম কোথা শোনাবে। বলবে আর মাইয়া পায় নাই যে একজন মালধইয়ানি বিয়া করছে। কিন্তু আমি ছেলেটা বেশ খারাপ, লোকের এইরকম কথায় খুব একটা কান দেই না। আমার কাছে যেইটা ভালো মনে হয় ওইটাই করি। বিপদে পড়লে আশেপাশে হারিকেন দিয়াও খুইজা কাউরে পাওয়া যায় না। নিজের প্রব্লেম নিজেই সল্ভ করা লাগে।

যাইহোক আমি কইলাম কোথা কইয়া দেখতে সমস্যা কি। মানুষ ভালো হইলে মালধইয়ানি আমার জন্য কোন সমস্যা না। সুন্দরির ভইনের সাথে কথা কইলাম ফেইসবুক মেসেঞ্জারে একদিন। ভদ্রমহিলা সুপার এক্সাইটেড!!! আমারে সব শুনাইল যে কার কতগুলা টাকা আছে। কার কয়টা বাড়ি আছে। আমি তো টাকায় ইন্টারেস্টেড না মাগার ডিস্রিস্পেক্টফুল না হইয়া চুপ কইরা শুনলাম। তারপর কইলাম আফনের ভইনের সাথে আমার কথা বলা লাগবে, ক্যামনে কথা কমু ওইটা বলেন।

উনি প্রথমে কইলেন যে উনার চাচা আপস্টেট নিউইয়র্কে (সিরাকিউস) থাকে। উনার সাথে আগে কথা বললে ভালো হয়। আমি তখন কইলাম ঠিকাছে। বুঝলাম ইন্টারভিউ দেওয়া লাগবে। লোকজন মনে করে যে ইন্টারভিউ ব্যাপারটা যে ইন্টারভিউ দ্যায় তার জন্য ডিসেডভান্টেজাস। আমি মনে করি ব্যাপারটা আলাদা। এইটা যে ইন্টারভিউ দিবে তার জন্যেও একটা ইন্টারভিউ নেওয়ার সুযোগ। ব্যাপারটা একটা টু-ওয়ে স্ট্রিট। যাইহোক একদিন রাইতে ভদ্রলোক আমারে ফেইসবুক মেসেঞ্জারে কল দিলেন, উনার সাথে কথা বইলা ভালোই লাগল। ভদ্রলোক পরিশ্রমী।

ভদ্রলোকের সাথে কথা কইয়া বুঝলাম উনি কনফারেন্স রুমে আছেন। মানে হইল ফুল স্পিকার মোডে কথা বলতেছেন উনি। পুরা ফ্যামিলি শুন্তেছে। ব্যাপারটা ভাল লাগে নাই আমার কাছে। আসলে ওইটা ব্যাপার না যা সবাই সুন্তেছে, ব্যাপারটা হইল কাউরে না জানাইয়া তার কথা স্পিকারে অন্য কাউরে শুনানো জিনিসটা প্রাইভেসি ভায়োলেশন এবং অভদ্রতা। যাইহোক ইন্টারভিউ দিয়া বুঝলাম এই নেগোসিয়েশনে আমার আপার হ্যান্ড আছে।

কিন্তু আরেক প্যারা শুরু হইল। সুন্দরির ভইন ফেইসবুক মেসেঞ্জারে আমারে অনলাইনে দেখলেই কল দিয়া বসে। আমি কখন যে অনলাইনে থাকি আমি নিজেই জানি না। ইন্টারনেটে ২৪ ঘণ্টা কানেক্টেড থাকি। এরাম করলে ক্যাবা কইরা হবে। আমি এমনেই চাই না যে লোক বিনা কারণে আমারে বেশি বিরক্ত করুক। আমি আমার ফ্যামিলির সাথেই কথা বলি সপ্তাহে একদিন আর ইনি আমারে কল দ্যায় দিনে দুইদিন? ডব্লিউটিএইচ ম্যান???

যাইহোক, সুন্দরির সাথে যোগাযোগ হইল একদিন। ফুনে কথা কইলাম মনে হয় ৫ মিনিট। কথা কইয়াই বুঝলাম সুন্দরিরা মিটিং কইরা আমারে কল দিছে (আবার)। স্পিকারে কল দিয়া সবাই মিলে…। ব্যাপারটারে পছন্দ হয় নাই। সুন্দরি বেশ চতুর ছিল। তার সাথে মনে হয় আর দুই দিন কথা হইছিল। সুন্দরির কথা বলার মন ছিল ষোল আনা। মাগার ফ্যামিলি নাকি সেই লেভেলের ধার্মিক ছিল, কথা নাকি বেশি কইতে দিবে না।

যাইহোক যেইটা জানলাম ওইটা হইল, সুন্দরির চাচা এইখানে ২০-২৫ বছর আগে আসছে। অনেক পরিশ্রম কইরা নিজের জন্য কিছু করছে। কয়েকটা বাসা কিনছে, আর পুরা ফ্যামিলিরে আনছে। সেই এক্সটেন্ডেড ফ্যামিলির সাইজ নাকি প্রায় ৩০ জনের মত। আমি চিন্তা কইরা দেক্লাম এইখানে যদি বিয়া করি তাইলে কি হবেঃ

পজিটিভ সাইডঃ
বউ বাংলাদেশ থেইকা আস্তে দেরী হবে নাহ। যেহেতু সুন্দরি অলরেডি এইখানে। ম্যারিড লাইফ তাড়াতাড়ি শুরু হইয়া যাবে।

নেগেটিভ সাইডঃ
আম্মা রাজি না, ফ্যামিলি হাফ-রাজি থাকলে ম্যালাদিন গ্যাঞ্জাম পোহাইতে হবে।
সুন্দরি পড়াশুনা হাফ কইরা আসছে। একাডেমিক প্রোফাইল দেইখা বুজছি, এইখানে পইড়া শেষ করতে পারবে না (নো অফেন্স)।
ফ্যামিলির সাইজ!!! এতগুলা লোকরে আমি ক্যামনে সামলাইতাম? নামই তো মনে রাখতে পারতাম না। তাছাড়া আমি এইখানে একলা, আমার সাথে গেইম খেলা শুরু করলে আমি কুপোকাত হইয়া যাবো। এরা চাইলেই আমার ইন্ডিপেন্ডেন্সের বারটা বাজাইয়া দিতে পারবে।

সুন্দরি আর তার ভইনরে কইলাম কথা না কইলে তো হবে নাহ। আমি আপনাদের ব্যাপারটা বুঝি, আমনেরা ম্যালা ধার্মিক, ভইনেরে কথা কইতে দিবেন না। আই রেস্পেক্ট দ্যাট। কিন্তু কথা কইতে না দিলে আমার কিচ্ছু করার নাই! গুড লাক!

এইটা সুন্দরির গল্প এইখানেই শেষ!

(চলতে থাকপে...।)
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে এপ্রিল, ২০২০ সকাল ৯:২৬
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মেঘ ভাসে - বৃষ্টি নামে

লিখেছেন লাইলী আরজুমান খানম লায়লা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩১

সেই ছোট বেলার কথা। চৈত্রের দাবানলে আমাদের বিরাট পুকুর প্রায় শুকিয়ে যায় যায় অবস্থা। আশেপাশের জমিজমা শুকিয়ে ফেটে চৌচির। গরমে আমাদের শীতল কুয়া হঠাৎই অশীতল হয়ে উঠলো। আম, জাম, কাঁঠাল,... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনের গল্প

লিখেছেন ঢাকার লোক, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৩৫

মাত্র মাস দুই আগে আমার এক আত্মীয়ের সাথে দেখা আমার এক বোনের বাড়ি। তার স্ত্রী মারা গেছেন তার সপ্তাহ দুই আগে। মক্কায় উমরাহ করতে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমান

লিখেছেন জিনাত নাজিয়া, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:১২

" অভিমান "

তোমার ঠোঁটে বোল শিখেছি
তুমি আমার মা, কেমন করে
ভুলছ আমায় বলতে
পারিনা। এমন করে চলে
গেলে, ফিরে ও এলেনা। হয়তো
তোমার সুখেই কাটছে দিন,
আমায় ভাবছ না।

আমি এখন সাগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

×