করোনার আঁতুড়ঘর হল চীন। চীনের উহান প্রদেশে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রথমবার এই রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয় যা পরবর্তীতে সারা বিশ্বকে কয়েক দফা ঝাঁকি দিয়ে যায়। উহানে যখন এই ভাইরাসে ব্যাপক সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হতে থাকে, তখন সবার এটিচিউড ছিল এরকম - চীনে হচ্ছে, আমাদের দেশে আসবে না। কিন্তু চীনের সীমানা ছাড়িয়ে এই সর্বনাশা ভাইরাস যখন সুদূর ইতালিতে আঘাত করে, তখন সবার টনক নড়তে শুরু করে।
চীনে এটিকে যেরকম পোষ মানিয়ে রাখা হচ্ছিল, ইতালিতে কিন্তু মোটেও সেরকম ছিলনা পরিস্থতি। মুক্তির আনন্দে দিশেহারা হয়ে ইতালিকে এই ভাইরাস নিজের বংশ বৃদ্ধির উর্বর ভূমি বলে বেছে নেয়। এর পরে আর তাঁকে পায় কে? স্পেন, ফ্রান্স, জার্মানীতে তান্ডব ঘটিয়ে আমেরিকা হয়ে ইন্ডিয়া - তারপর বর্ডার পাস করে ঢুকে যায় অভাগা বাংলাদেশে। চলার পথে সে দেশে দেশে ঘরে গরীবকে আরও গরীব আর তথ্যপ্রযুক্তির মালিক ধনীদেরকে আরো ধনী বানিয়ে পৃথিবী প্রদক্ষিণে লেগে যায়। এই যাত্রায় সে তার চারণভূমি হিসেবে বেছে নেয় মূলত বিশ্ব মোড়ল আমেরিকা, প্রতিবেশীদেরকে জালিয়ে মারা ভারত-রাশিয়া এবং বিশ্বের এক প্রান্তে নির্জীব হয়ে পড়ে থাকা ব্রাজিলকে। হাজার লাখ ছাড়িয়ে সেসব দেশের সংক্রমণ এখন হিসাব করা হয় কোটির অঙ্কে। কিন্তু জন্মভূমি চায়না? সেখানে কি অবস্থা?
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে সংক্রমণ শুরু হবার পরে ২০২০ সালের মার্চ নাগাদ সেখানে সংক্রমণ ছিল ৮০ হাজারের কাছাকাছি। কিন্তু তারপরেই রহস্যজনক কারণে সংখ্যাটা ঐখানেই পজ হয়ে পড়ে থাকে। আর বাড়েনা। বিশ্বে তোলপাড় হয়ে যায়, কিন্তু চায়না এক জায়গাতেই থেকে যায়। এর রহস্য কি?
তবে এ বছরের শুরুর দিকে ডেলটা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণের সময় শুনেছি চীনে নাকি তার কিছুটা ধাক্কা লেগেছিল। তখন একবার স্কোরকার্ডে ঢু মেরে দেখি সঙ্খ্যাটা ৮০ হাজার থেকে অনেক কষ্টে ৯০ হাজারের ঘর পার করেছে। কিন্তু পরের ৯ মাস সংখ্যাটা ওখানেই আটকে ছিল। রিসেন্টলি অমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট চালু হবার পর আরেকবার চেক করে দেখি, ইয়েস সংখ্যাটা অবশেষে ৫ ডিজিট ছুয়েছে। অভিনন্দন চীনকে - করোনা সঙ্ক্রমণে নতুন মাইলফলক স্পর্শ করার জন্য।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২১ বিকাল ৪:২৮