জাফর ইকবালের সাপ্রতিক লেখাটা সবাই আশা করি পড়ে থাকবেন।লেখাটা প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই ছাগুদের তীব্র ব্যথার চিতকারে ব্লগ ফেসবুকে একাকার অবস্থা। আমি জাষ্ট স্যারের লেখার একটা প্যারা তুলে ধরছি। এইখানে উনি জামাত শিবির নিয়ে বলেছেন---
"আমরা সবাই জানি এই দেশের সাথে সবচেয়ে বড় বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল জামাতে ইসলামী। জার্মানীতে নাৎসী বাহিনী নেই, ইতালীতে ফ্যাসিস্ট বাহিনী নেই কিন্তু আমাদের দেশে কেমন করে জামাতে ইসলামী থেকে গেল? এখন আমরা সবাই জানি কেন এবং কেমন করে সেটা ঘটেছে কিন্তু যেটা এখনো আমি বিশ্বাস করতে পারছি না সেটা হচ্ছে সেই জামাতে ইসলামরীর একটা ছাত্র সংগঠন আছে। মুক্তিযুদ্ধ করে স্বাধীন হওয়া বাংলাদেশের কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা কেমন করে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী জামাতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন করে? কম বয়সী তরুণদের দেশ নিয়ে স্বপ্ন দেখার কথা, দেশের জন্য লাগাম ছাড়া ভালোবাসার আবেগে ডুবে যাবার কথা, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অহংকার করার কথা, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে উচ্ছাস করার কথা, পয়লা বৈশাখে রবীন্দ্র সঙ্গীত গাওয়ার কথা, ছাব্বিশে মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুনে রক্ত গরম করার কথা, ষোলই ডিসেম্বরে মাথায় লাল সবুজ পতাকা বেধে পথে নেমে যাবার কথা, একুশে ফেব্রুয়ারীতে ফুল নিয়ে শহীদ মিনারে প্রভাত ফেরী করার কথা অথচ সেই বয়সের তরুণেরা এসব কিছু না করে কেমন করে সেশদ্রোহী বিশ্বাসঘাতক যুদ্ধাপরাধীদের নেতা হিসেবে মেনে তাদের আজ্ঞাবহ হয়ে কাজ করতে পারে? দেশকে ভালো না বেসে কেমন করে সেই দেশকে মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন থেকে ঠেলে সরিয়ে পাকিস্তান বানানোর চেষ্টা করতে পারে? আমি জানি আমি কখনোই এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাব না, কেউ যদি কিছু একটা উত্তর আমাকে দেয়ার চেষ্টাও করে আমি সেটা বুঝতে পারব না! ""
এইখানে আমি বিশ্বাস করি একটি সুস্থ চিন্তার এবং শিক্ষিত বাঙ্গালির কোনোই দ্বিমত থাকতে পারেনা এবং নাই। কিন্ত একদল লোক ব্লগে ফেসবুকে এই লেখা প্রকাশের পর থেকেই যথারিতী জাফর ইকবালের পিছে লেগে গেছে। আমি ছাগু শব্দ ব্যবহার করাটা পছন্দ করতামনা। কিন্ত হাড়ে হাড়ে টের পেলাম, এই লেখাটার বিরুদ্ধে যারা সোচ্চার তাদের ছাগু বলাটা দোষের কিছুই হইতে পারেনা।
ছাগুদের চিনার উপায় হইলো, এই লেখাটার বিরুদ্ধে তারা কথা বলবে। এখন এই লেখার সমালোচনা হতেই পারে। সমালোচনা হলে এই লেখা নিয়েই হবে কিন্ত না। ছাগুরা করবে কি, জাফর স্যার মেয়েদের সাথে নাচছে হিন্দি গানের সাথে, স্যারের মেয়ে ওমুক তমুক ছবি দেয়, স্যার ঐ বিষয়ে চুপ, উনি যুদ্ধ করেনাই। আরে শালা ছাগু উনি ব্যাক্তিগত জীবনে কি করলো তা নিয়া তোর লগে কে লাগতে গেছে?? এই লেখায় উনি ভুল কি লিখছে এইটা বল?? একটা শিক্ষিত ছেলে কিভাবে জামাত সমর্থন করে এইটার উত্তর আগে আমারে দাও তুমি?? যারা এই দেশটার জন্মই চায় নাই, তাদের হাতে তুমরা এই দেশটা কিভাবে তুলে দেওয়ার কথা ভাবো। অনেকে বলে যে শিবিরের পোলাপানতো যুদ্ধের সময় ছিলোনা, ওদেরতো কোনো অপরাধ নাই। কিন্ত জেনেশুনে দেশবিরোধিদের সমর্থন দেওয়াটা কি অপরাধ না??
ছাগুরা এইসব প্রশ্নের কখনো উত্তর দিবেনা, না দিয়ে লাগবে কিসে? আমার নিকের পিছে। আমার নিক বিভ্রান্ত নাবিক, আমি নিজেই বিভ্রান্ত আমি আর কি বলবো?? ছাগুরাম বাপুরে আমার নিক শুয়োরের বাচ্চাই না হয় হইলো, কিন্ত আমি যা কইলাম তা ঠিক কিনা এইটা বল আগে??
নিজামি মুজাহিদ গোলাম আজমের মত আরো অনেক প্রসিদ্ধ রাজাকাররা যে দল পরিচালনা করে, সেই দল একটা শিক্ষিত যুবক কিভাবে সমর্থন করতে পারে?? এই কথাটার উত্তর শুধু আমাকে দাও। এখন ইতিহাস টেনে আনতে পারে, আসলে যুদ্ধটা পুরাটাই ভারতে ষড়যন্ত্র, মুজিব দেশটা ভারতের হাতে তুলে দিত ইত্যাদি ইত্যাদি। অনেক ত্যানা এইসব নিয়া প্যাচানো হইছে। আমার সাফ কথা শুনে নাও ছাগুসকল, তোমাদের সব কথাই ধরো মাইনা নিলাম,কিন্ত রাজাকাররা আর হানাদাররা মিলে যে আমাদের বাংলাদেশিদের হত্যা করছে এইটা কি ভুল?? এইটা কি মিথ্যা?? হানাদাররা না হয় অন্য দেশের লোকদের হত্যা করলো, ১২০০ মাইল দুরের একটা দেশের একটা সশস্ত্র সৈন্য দলের সাথে এক হয়ে তুমি নিজ ভুমির ভাইদের হত্যাটা কোন যুক্তি দিয়ে সহি করতে চাও আমাকে বলো?? কোনো যুক্তি দিয়েই তুমি সহি করতে পারবেনা কোনোদিনও পারবেনা। আমি খুব বেশি বুঝিনা, খুব বেশি ইতিহাস জানিওনা, কিন্ত এইটুক বুঝি জামাত শিবির সমর্থকরা দেশের জন্য ক্ষতিকর। আমাকে এখন বাআল সরকারে বাল বলতে পারো, ভারতের দালাল বলতে পারো কিন্ত আমি যাই হইনা কেনো, জামাত শিবির সমর্থকদের চেয়ে দেশটাকে অনেক বেশি ভালবাসি এইটা বুকে হাত দিয়েই বলতে পারি।
ইতিহাস নিয়ে পরে থাকলে হবেনা আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে, এইসব বিচার টিচার না করে কে জামাত কে শিবির এইসব না দেখে সবাই মিলে আমাদের দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চিন্তা করতে হবে!!! এরকম কথা ভদ্র ছাগুরা বলে থাকে। ছাত্রলীগ ছাত্রদল থেকে শিবির নিয়ন্ত্রিত ক্যাম্পাসে উশৃংখলতা কম হয়, এইসব কথাও অনেকে বলে থাকেন। কিন্ত কথা ঐ একটাই দেশের জন্মের সময়, দেশের ঘোর বিপদের সময় যারা আমাদের উপর আক্রমন করা হায়নাদের সাথে হাত মিলিয়ে আমাদের হত্যা করতে পারে তাদের এবং তাদের সমর্থকদের হাতে দেশ যদি অনেক সুন্দরও হয়ে যায় তাও আমি তাদের সমর্থন করতে পারিনা। আর তারা যে সামনে বিপদ হলে শ্ত্রুদের সাথে হাত মিলিয়ে আমাদের উপর ঝাপিয়ে পরবেনা তার নিশ্চয়তা কি??
আওয়ামিলীগ সরকার বুঝে গেছে নতুন প্রজন্মের ভোটটা খুবই দরকারি এবং কার্যকরি, এবং যুদ্ধপরাধিদের বিচারের ব্যাপারে অধিকাংশ তরুনই একমত। তাই তারাও এইটাকে বেশ ভাল ভাবে ব্যবহার করছে, এবং আগামি নির্বাচনেও তাই চাইছে। কিন্ত আগামি নির্বাচনে আর লাভ হবে বলে আমি বিশ্বাস করিনা। শুধু যুদ্ধঅপরাধিদের বিচার করতে নিশ্চয় গোটা সরকারের কাজ করতে হয়না। সাধারন মানুষের মাত্র তিনটা চাহিদা আঈন শৃংখলার উন্নতি,দ্রব্যমুল্য আর বিদ্যুৎ। এই তিনটা ঠিক থাকলে সাধারন মানুষ আর কিছুই চায়না। এই তিনটাই ঠিক নাই। আরো অসংখ্য কারন আছে আওয়ামি সরকারের জনপ্রিয়তা হ্রাস পাওয়ার পিছনে। আমার আশা একটাই, অতি দ্রুত বিএনপি সমস্ত যুদ্ধঅপরাধিদের দলচ্যুত করে নতুন ভাবে জোট করবে। তাদের নির্বাচনের ইস্তিহারেও রাজাকারদের বিচারের ব্যাপারটা আসবে, রাজাকারদের সাথে জোট বাধার ভুলটা তারা স্বীকার করবে। যদিও জানি অসম্ভব।
আমার চাই আমরা একাত্তরে যেভাবে এক হয়ে হানাদার রাজাকারদের পরাজিত করেছিলাম , এখন আবার একইভাবে এক হবো। জামাত শিবির যাতে আমার দেশের ধর্মভীরু মানুষগুলোকে ধর্ম দিয়ে একাত্তরে তাদের জানোয়ারের সুলভ কার্যকলাপ ভুলিয়ে দিতে না পারে। আমাদের সবার সচেতন হতে হবে, ফেসবুক ব্লগে অনেকেই সক্রিয় আছে জামাত শিবিরের ইমেজ ঠিক করতে, তাদের ইমেজ যাতে একাত্তরে যা ছিলো এখনো তাই থাকে, তা দেখাটা আমাদের দায়িত্ব।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে মে, ২০১২ রাত ১০:০৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।





