somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধারাবাহিক সায়েন্স ফিকশান উপন্যাস: ডায়েরি (পর্ব দুই)

২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ৯:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



তিন।
টিটুন স্কুল থেকে ফিরেই প্রতিদিনেরমত স্কুল ব্যাগটা ড্রয়িং রুমে ফেলে দৌড়ে বাবার রুমে গেল। তার বাবা ড. সাফায়াত সাহেব একজন নামকরা বিজ্ঞানী, কোয়ান্টাম ফিজিক্সের মস্তান লোক। তিনি সারাক্ষণ গবেষণা নিয়ে ব্যস্ত থাকেন, এই মুহূর্তে তিনি কম্পিউটারে মুখ বুজে কাজ করছেন।

“কোয়ান্টাম টেলিপোর্টেশন হচ্ছে এমন একটি পদ্ধতি যেখানে কোয়ান্টাম তথ্য যেমন ফোটন, ইলেকট্রন ইত্যাদি আকারে এক-জায়গা থেকে আরেক জায়গায় দ্রুত স্থানান্তর করা যায়।” বলেই ড সাফায়াত বসার চেয়ার ঘুরিয়ে টিটুনের দিকে তাকালেন।

আবার বলতে শুরু করলেন “কোয়ান্টাম টেলিপোর্টেশন যদি আমরা করতে পারি তাহলে মুহূর্তেই আমরা তথ্য শুধু এই পৃথিবীর মধ্যেই নয় বরং এই মহাবিশ্বের যেকোনো যায়গায়, এমনকি যে কোন সময়ে পাঠাতে পারি। এটাকে তুই সময় পরিভ্রমণ যন্ত্রও বলতে পারিস।“ বলেই তিনি টিটুনের দিকে তাকালেন প্রতিক্রিয়া দেখার জন্য।

টিটুন বিরক্তি নিয়ে বলল “বাবা তুমি আমাকে দেখলেই এই একই কথা শুরু কর। তোমার কাছ থেকে এই ব্যাপারগুলো শুনতে শুনতে আমার মুখস্থ হয়ে গেছে।“

ড. সাফায়াত সাহেব ছেলের কথায় ভ্রুক্ষেপ না করেই টিটুনকে চেয়ার এগিয়ে দিয়ে বললেন “মন দিয়ে শুন। আমরা যদি কোয়ান্টাম টেলিপোর্টেশন করতে পারি তাহলে আমরা শুধু ডিজিটাল তথ্যই নয় বরং আস্ত মানুষকেও কোয়ান্টাম টেলিপোর্ট করতে পারব যে কোন জায়গায়, যে কোন সময়ে বলেই বললেন ব্যাপারটা ইন্টারেস্টিং না?”

আবার শুরু করলেন “তবে মানুষ হল একটা বস্তু, মানে ফিজিক্যাল অবজেক্ট, তবে আইনষ্টাইনের সূত্র অনুসারে এনার্জি সমান সমান এম সি স্কয়ার অর্থাৎ বস্তু হল এনার্জির আরেকটা ফর্ম, তার মানে আমরা যদি মানুষকে এনার্জিতে কনভার্ট করে টেলিপোর্ট করতে পারি তাহলে কিন্তু মানুষ সহজেই এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায়, আরেক সময়ে পাঠাতে পারব।“ টিটুনের দিকে তাকিয়ে দেখলেন টিটুনের কোন মনোযোগ নেই।

প্রসঙ্গের বাইরে গিয়ে বললেন “কিরে মন খারাপ টিটুন?”

“হুম, আজকে স্কুলে বদরুলের সাথে” বাক্যটা শেষ না করেই থামল টিটুন তারপর আবার বলল থাক বাদ দাও।“

“কি হয়েছে আমাকে খুলে বল?” বললেন বাবা সাফায়াত।

টিটুনের চুপ হয়ে আছে, বাবা বললেন “চল ডাবা খেলি, অনেক দিন আমরা ডাবা খেলি না।“

“আজ খেলতে ইচ্ছে করছে না বাবা।“ মুখ ভোঁতা করে বলল টিটুন।

“হুম তাহলে চল কম্পিউটারে একটি গেইম খেলি এক সাথে? বলেই বললেন তোর মা মনে হয় রান্না ঘরে আছে, যা তোর মাকে দুই কাপ চা দিতে বল। আমরা চা খেতে খেতে গেইম খেলি।“

“আমি চা খাই না, তুমি জান না?” মাথা নিচু করে গম্ভীর মুখে বলল টিটুন।

“ওকে ঠিক আছে, আমার জন্য চা দিতে বল। নতুন ফিফা গেইমটা খেলি, নতুন ভার্সন বেরিয়েছে।“

“বাবা আজ আমার কিছুই ভাল লাগছে না।“

সাফায়াত সাহেব বুঝতে পারলেন ছেলের মন খারাপ। তিনি এবার বললেন “বদরুলের কথা কি যেন বলছিলি, কি হয়েছে আজ স্কুলে মারামারি করেছিস?”

“থাক বাদ দাওতো। আমার বলতে ইচ্ছে করছেনা।“ বলেই জোরে মাকে তাড়া দিলেন বাবাকে এক কাপ চা দেবার জন্য।

টিটুনের মা রাবেয়া ততক্ষণে দরজার সামনে এসে দাঁড়িয়ে আছে। তিনি ছেলের দিকে তাকিয়ে আছেন, চোখদুটো ঝাপ্সা হয়ে আসে তার, বুকের ভিতরটা কেমন জানি খালি খালি লাগে। তিনি আচল দিয়ে চোখ বুজে টিটুনের দিকে তাকিয়ে বললেন “এখান থেকে আয় বলছি, তোকে না এই রুমে আসতে নিষেধ করেছি, নাস্তা দিয়েছি টেবিলে।“

“তুমি দেখছ না বাবার সাথে কথা বলছি?” উঁচু গলায় বলে টিটুন।

মা ঘরে ঢুকে ছেলের হাত ধরে হেঁচকা টান দিয়ে বললেন “তাড়াতাড়ি চল নাস্তা করবি, এখন সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা বাজে।“

“তুমি দেখছ না বাবার সাথে কথা বলছি, হাত ধরে টানছ কেন?” খেঁকিয়ে বলে বলে টিটুন।

মা টিটুনের দুই কাঁধে হাত দিয়ে ঝাঁকি দিয়ে বলে “তোর মাথা কি নষ্ট হয়ে গেছে? বাবা মারা গেছে প্রায় তিন বছর হল। কোথায় তোর বাবা?” বুকের ভিতর থেকে মোচর দিয়ে উঠে রাবেয়ার।

টিটুন বাবার চেয়ারের দিকে তাকায় সেখানে শুধুই শূন্যতা, সবই তার ভ্রম। বাবা নেই আজ তিন বছর হল। গত তিন বছরে এমন কোন মূহুত্যও নেই যখন সে তার বাবাকে মনে করেনি। সাফায়াত সাহেব আমেরিকার ষ্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করার সময় টিটুনের জন্ম হয়। টিটুনের প্রথম বন্ধু, খেলার সাথি বলতে বাবাই ছিল, সে পৃথিবীটা জেনেছে বাবার মাধম্যে, যখন আমেরিকায় চাকরি করত টিটুনকে প্রায় তার সাথে নিয়ে যেত তার কর্মক্ষেত্রে। তারা বাংলাদেশে এসেছে প্রায় তিন বছর হল, আমেরিকায় বাসায় সাফায়াত সাহেব একটি ছোট্ট ল্যাবরেটরি বানিয়েছিল। টিটুন বাংলাদেশে এসেও বাবার জন্য একটি ঘর বরাদ্দ রেখেছে, বাবার পুরনো কম্পিউটার, বই পত্র এবং প্রতিদিনের ব্যাবহারিক জিনিষ দিয়ে সাজিয়েছে ঘরটা।

“বাবা মরে নি, তিনি বেচে আছে” মুখ শক্ত করে বলে টিটুন। তার চোখে ঝাপ্সা হয়ে আসে।

একটি দীর্ঘশ্বাস ছাড়েন মা। ছেলের মাথায় পরম মমতায় হাত বুলিয়ে পুনরায় বলেন “চল নাস্তা করবি, সেই সকালে স্কুলে গিয়েছিস, দুপুরেও আজ বাসায় আসিস নাই, এক সাথে নাস্তা করব।“

তিন বছর আগের সেই ভয়বহ ঘটনাটার কথা এখনো স্পষ্ট মনে আছে টিটুনের কারন ঘটনাটা তার সামনেই ঘটেছিল। এর কোন ব্যাখ্যা টিটুনের কাছে নেই। “বাবার কিছু হয়নি সে অদৃশ্য হয়ে গেছে” মাথা নিচু করে অস্পষ্ট স্বরে বলে টিটুন।

“তোর সাথে এই নিয়ে আর কথা বলতে ইচ্ছে করছে না। কালকে সাইক্রিয়াটিস্টের কাছে যেতে হবে” আবার বলে মা রাবেয়া। গত তিন বছর ধরে সাইক্রিয়াটিস্টটের কাছে যায়। ছেলে কবে স্বাভাবিক ভাবেন রাবেয়া।

চার।
“কেমন আছ টিটুন?” বললেন সাইক্রিয়াস্টিক শফিক সাহেব।

শরিফ সাহেব একজন সনাম ধন্য সাইক্রিয়াস্টিক, দেখতে মোটা, ভুরিটা শার্ট বেদ করে সামনের দিকে বের হয়ে আছে, মাথায় বিশাল ফকফকা একটি টাক, সাইক্রিয়াস্টিক শরিফ সাহেবের বয়স আনুমানিক ষাট হবে, আধপাকা চুল, তিনি অনেকটা গম্ভীর। শরিফ সাহেবের মাথার উপরে সাধা লাইট জ্বলছে, সেই আলো তার টাকের উপরে প্রতিফলিত হয়ে চকচক করছে। টিটুন তার মার সাথে সাইক্রিয়াস্টিক শরিফ সাহেবের কাছে এসেছে, তার মা বাইরে অপেক্ষা করছে।

“ভাল।“ মাথা নিচু করে বলল টিটুন।

“চা খাবে?” চা দিতে বলি।

“না আমি চা খাই না।“ বলল টিটুন।

শরিফ সাহেব পিয়নকে ডেকে নিজের জন্য এক কাপ চা অর্ডার দিয়ে টিটুনের দিকে তাকালেন। “তারপর বললেন বাংলাদেশে তোমার কেমন লাগছে, স্কুলে নিয়মিত যাচ্ছ?”

“মোটামুটি লাগছে।“ ভোতা মুখে বলল টিটুন।

শরিফ সাহেব মুচকি হাসলেন, কারণ তিনি প্রায় তিন বছর ধরে টিটুনকে দেখে আসছেন, প্রথম প্রথম স্কুলে যেতেই চাইতো না, কান্না কাটি করতো, মার সাথে বায়না ধরতো পুনরায় আমেরিকায় ফিরে যাবার জন্য। আর এখন মোটামুটি বলছে মানে নিশ্চয়ই মানিয়ে নিয়েছে হয়তবা ভাবলেন তিনি।

সাইক্রিয়াস্টিক শরিফ সাহেব হঠাৎ সিরিয়াস-ভাবে বললেন “তুমি বলছে তোমার বাবা অদৃশ্য হয়ে গেছেন?“

“হুম, আমি আগেও আপনাকে বলেছি” জিব দিয়ে ঠোট ভিজিয়ে বলল টিটুন।

“কিভাবে অদৃশ্য হল? আরেকবার বল।“

টিটুনের চেহারায় বিরক্তির ছাপ, “কতবার বলব?”

“বল আরেকবার শুনি” চেয়ারে আয়েশ করে হেলান দিয়ে বললেন সাইক্রিয়াস্টিক শরিফ সাহেব।

“আমার বার বার একই কথা বলতে ভাল লাগে না। তাছাড়া আমি আপনাকে অনেক বার এই কথা বলেছি।“ বলল টিটুন।

“মনের মধ্যে কথা লুকিয়ে রাখতে নেই টিটুন। তুমি ভাব এখানে কেউ নেই, আবার বল দেখবে হালকা লাগছে।“

একটি দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল ”লাব নেই। আমি জানি আপনি আমার কথা বিশ্বাস করেন না।“

ততক্ষণ পিয়ন চায়ের কাপ টেবিলে রেখে গেছে, শরিফ সাহেব চায়ের মগে সুড়ুত করে চুমুক দিয়ে বললেন “কে বলল আমি তোমরা কথা বিশ্বাস করি না?”

“তার মানে আপনি কি আমার কথা বিশ্বাস করেন?” পাল্টা প্রশ্ন টিটুনের।

“আমি ঠিক বিশ্বাসও করি না আবার অবিশ্বাসও করি না। শেকসপিয়র বলেছেন ‘দেয়ার আর মোর থিংক ইন হ্যাভেন এন্ড আর্থ।‘ বুঝতে পারলে?”

“আচ্ছা আপনি কি আমাকে পাগল ভাবেন?” প্রসঙ্গের বাইরে গিয়ে জিজ্ঞেস করল টিটুন।

“টিটুন শোন আমি তোমাকে পাগল ভাবছি না, আমাকে আবারো বল আমি খুব মনোযোগ দিয়েই শুনব। তোমার গল্প শোনার জন্য আমি টাকা পাই তাহলে শুনব না কেন?” হালকা রসিকতা বললেন সাইক্রিয়াস্টিক শরিফ সাহেব।

টিটুন শক্ত হয়ে বসে আছে। তিন বছর আগের স্মৃতিতে ফিরে যায় সে, তখন তারা আমেরিকায় ফ্লোরিডায় থাকে। “ঘটনাটা যখন ঘটে তখন মা সুপার মার্কেটে গিয়েছিল কেন জানি, আমি বাসার বাবার সাথেই ছিলাম, হঠাৎ আলোর ঝলকানি তারপর ভয়াবহ ধবধবে সাধা আলোয় ঘরটা আলোকিত হয়ে যায় আমাদের। একটি ঘন কালো ঘূর্ণয়নমান বাতাস পাকা খেয়ে ভয়াবহ একটি ছায়ামূর্তিতে রূপ নেয়, থেমে থেমে আকাশের বজ্র পাতের মত ছায়ামূর্তির শরীরে বিদ্যুৎ চমকাতে থাকে।“ বলেই থেমে যায় টিটুন। গলাটা ভীষণ ধরে আসে তার।

“আমি পানি খাব স্যার।“

সাইক্রিয়াস্টিক শরিফ সাহেব টিটুনের দিকে পানির গ্লাসটা এগিয়ে দেন, ঢগঢগ করে টিটুন পানি খেয়ে নেয়। পুনরায় বলে চলে, “তারপর সেই ছায়ামূর্তিটি বাবাকে গ্রাস করে নেয়, বাবা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণা আকারে সেই ছায়া মূর্তির উদরে অদৃশ্য হয়ে যায়।“ টিটুনের গলা আবেগে কাঁপছিল।

সাইক্রিয়াস্টিক শরিফ সাহেব একটি দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন। তার ধারনা পুরো ঘটনাটাই টিটুনের অবচেতন মনের বানানো একটি ভ্রম। সত্য ঘটনার কোন ফাক ফোকর থাকে না, তবে কাল্পনিক বা মস্তিস্কের ভ্রমে তৈরি গল্পে অনেক ফাক থাকে, তাই তিনি এর ফাঁক-ফোকর বের করার চেষ্টা করছেন। এতে যেই ব্যাপারটা ঘটবে তা হল তিনি যখন ঘটনার ফাঁক-ফোকর নিয়ে প্রশ্ন করবেন টিটুনকে, টিটুন প্রশ্নের উওর দিতে দিতে এক সময় এমন এক জায়গায় আটকে যাবে তখন ঘটনার পক্ষে আর কোন যুক্তিই থাকবে না। সাইক্রিয়াস্টিক শরিফ সাহেব চেষ্টা করছেন টিটুনকে এমন একটি সমীকরণের মাঝে এনে দাড় করাতে যেন তার চেতন মন নিজেই বুঝতে পারে ঘটনাটি সত্য নয়। সাইক্রিয়াস্টিক শরিফ সাহেব ঘটনাটার একটি হাইপোথেসিস দাড় করাচ্ছেন মনে মনে।

কিছুক্ষণ চুপ থাকেন তারপর নীরবতা ভেঙ্গে বলেন “শুনেছি তোমার বাবা একজন বিজ্ঞানী ছিলেন, ঘটনাটা ঘটার আগে তিনি কোন এক্সপেরিমেন্ট করছিলেন?”

“আমি ঠিক জানি না, আমার মনে নাই” অন্যমনস্ক ভাবে বলে টিটুন।

“তুমি কি ভুত বা প্রেতে বিশ্বাস কর টিটুন?”

“না, কেন?” প্রশ্ন করে টিটুন।

“তোমার কি মনে হয় সেদিন ভুত এসে তোমার বাবাকে অদৃশ্য করে উড়িয়ে নিয়ে গেছে। বলেই তীক্ষ্ণ ভাবে তাকালেন” সাইক্রিয়াস্টিক শরিফ সাহেব।

একটু থামলেন সাইক্রিয়াস্টিক শরিফ সাহেব তারপর উত্তরের অপেক্ষা না করেই বললেন “এমন কি হতে পারে না তিনি হয়ত কোন এক্সপেরিমেন্ট করছিলেন, সেখান থেকে শর্ট সার্কিট লেগে বিস্ফোরণ ঘটে।“

থেমে টিটুনের প্রতিক্রিয়া দেখার অপেক্ষা করলেন আবার শুরু করলেন “আমি খবর নিয়ে জেনেছি সেদিন ফ্লোরিডাতে টর্নেডো ছিল, হয়ত বা সেই বিস্ফোরণের পর টর্নেডো হয়েছিল, সেখানে তোমার বাবাকে উড়িয়ে নিয়ে গিয়েছিল। হয়তবা এই ব্যাপারটা তোমার মস্তিষ্ক মানতে পারছে না, সে অন্য একটি রিয়েলিটি ক্রিয়েট করেছে সেখানে তোমার মনে হচ্ছে তোমার বাবাকে কোন গোস্ট, বা ভিনগ্রহ প্রাণী হোয়াটে-বার এসে কণিকা আকারে অদৃশ্য করে নিয়ে গেছে।“ বলেই টিটুনের প্রতিক্রিয়া দেখার জন্য থামলেন সাইক্রিয়াস্টিক শরিফ সাহেব।

ফের বলতে শুরু করলেন “এক এক মানুষের মস্তিষ্কের প্রতিরোধ ব্যাবস্থা এক এক রকম, বাবা হারানো বেধনা তোমার জন্য অনেক কঠিন, তোমার মস্তিষ্ক তাই এমন একটি রিয়েলিটি তৈরি করেছে সেখানে তোমার মনে হচ্ছে তোমার বাবাকে ভুত বা ভিন গ্রহ প্রাণী নিয়ে গেছে। তোমার মস্তিষ্কের ধারনা এতে ঘটনাটা মেনে নেয়া তোমার জন্য সহজ হবে! তবে দ্বীর্ঘ মেয়াধে ব্যাপারটা তোমার জন্য ক্ষতি করছে।”

“আমি জানতাম আপনি বিশ্বাস করবেন না।“ একটি দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল টিটুন।

“আমার ব্যাখ্যা-টাকি তোমার পছন্দ হচ্ছে না টিটুন?“

“আমার ভাল লাগছে না আজ স্যার” বলেই উঠে দাঁড়াল টিটুন।

“টিটুন তোমার বাবা কি কোন গোপন এক্সপেরিমেন্ট করছিল, তার কোন তথ্য, বা ডিভাইস কি তোমাদের বাসায় আছে?”

“না, বাবা আমেরিকার ফিউচার ইনকর্পোরেশন ল্যাবরেটরি নামক এক ল্যাবে কাজ করত, সেখানকার লোকজন তন্নতন্ন করেও কিছু পায়নি আমাদের বাসায়” বলেই বেরিয়ে যায় টিটুন।

সাইক্রিয়াস্টিক শরিফ সাহেব জানে না, টিটুন আজ ভয়াবহ একটি মিথ্যা কথা বলেছে, আমেরিকার ফিউচার ইনকর্পোরেশন ল্যাবরেটরির লোকজন যখন তাদের বাসায় তন্নতন্ন করে খুঁজে তখন তার বাবার ডায়েরিটা তার পিঠ ব্যাগের ভিতরেই ছিল। ঘটনাটা ঘটার কিছুক্ষণ আগে তার বাবাই ডায়েরিটি তার পিঠে রেখেছিল এবং কাউকেই ডায়রিটির ব্যাপারে বলতে নিষেধ করেছিল। তার বাবা কি জানত কি ঘটবে? মনে মনে ভাবে টিটুন।

বিঃ দ্রঃ প্রতিদিন একটি করে পর্ব দিয়ে বারটি পর্বে শেষ করে ফেলব।

আগের পর্বঃ ধারাবাহিক সায়েন্স ফিকশান উপন্যাস: ডায়েরি (পর্ব এক )



সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জুন, ২০২৩ দুপুর ১:১১
৪টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৯


হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×