জাগরীর দুই সদস্য গত ১০ এপ্রিলে ইযুথ এন্ডিং হাঙ্গার নামের এক সংস্থা 'ন্যশনাল ইযুথ পালামেন্ট' নামক একটি প্রগ্রাম পরিদর্শন করতে রাজশাহীতে যায়। এ লিখাটি তাদের ব্যক্তিগত কিছু অভিঙ্গতার, অনুধাবন এর উপর ভিত্তি করে লিখা।
---------------------------------------------------------------------------
বেশ কয়েক দিন থেকেই ঢাকার যানজট এবং বিদুৎ সমস্যা নিয়ে ক্রমেই ঢাকার উপর বিরক্ত ভাবটা বাড়ছিল। মনে মনে প্রতিদিন অপেক্ষা করছিলাম কিভাবে এর থেকে পালানো যায়। হঠাৎ করেই একটি সুযোগ মিলে গেল। জাগরীরএক বন্ধুর কাছ থেকে ই-মেইল পেলাম রাজশাহীতে ইযুথ এন্ডিং হাঙ্গার নামের এক সংস্থা 'ন্যশনাল ইযুথ পালামেন্ট' করছে ১০ এপ্রিল সকাল ১০ টায়। কেও যেতে চাইলে যোগাযোগ করতে বলা হল। সুযোগটা হাতছাড়া করাটা মনে হয় বুদ্ধিমানের কাজ হতোনা। তাই জাগরীর আর এক বন্ধুকে (পারেল) সঙ্গে নিয়ে বলেই ফেললাম আমরা যাচ্ছি। পরিকল্পনা মতন সবকিছু ঠিক ভাবে এগুচ্ছিল। এক ফাকে রাজশাহী বাড়ি এক বন্ধুকে ফোন করে জেনে নিলাম রাজশাহীর বাস ঢাকার কোন কোন জায়গা থেকে ছাড়ে। অতঃপর ৯ তারিখ সকাল ১২ টায় রওনা দিলাম রাজশাহীর উদ্দেশ্যে। রাজশাহী যেতে যেতে আমাদের এই সুন্দর দেশটাকে আবারও উপভোগ করছিলাম আমরা দুইজনই।
বিকাল ৫ টার দিকে যখন রাজশাহী নামলাম তখন বিকেলের সূর্যের তেজ অনেকটাই কমে এসেছে। বাস টার্মিনাল থেকে নেমে রিক্সা দিয়ে নিদিষ্ট স্থানে যেতে যেতে কেবলই মনে হচ্ছিল রাস্তা এত ফাঁকা কেন। আমরা যারা ঢাকায় থাকি তারা সবসময় অনেক অনেক মানুষ দেখতেই অভ্যস্ত, তাই হঠাত করেই একটু খালি রাস্তা দেখে খানিকটা খটকা লাগল। এই রহস্যের সমাধান করতে খুব একটা গবেষনা করতে হলনা। আমাদের দেশের ঢাকা কেন্দ্রিক সকল সুযোগ সুবিধা যে এর কারন তা অনুধাবন করা গেল অতি সহজেই। রাজশাহীর মতন ঐতিয্যবাহী প্রাচীন একটি শহরে যাকে সিল্ক সিটি বলা হত এবং যেখানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রুয়েট এবং মেডিকেল কলেজ এর মতন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে সেখানে কেন এখনো কাজের সুযোগ সৃষ্টি হয়নি তা দেখেই আমরা খানিকটা অবাক হলাম। এসকল চিন্তা করতে করতে আমরা আমাদের নিদিষ্ট স্থানে এসে পৌছালাম। অতঃপর, নাম নিবন্ধন শেষ করেই ছুটলাম পদ্মা নদীর পারে, উদ্দেশ্য নদীমাত্রিক দেশ বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান নদীকে কাছ থেকে দেখা। রিক্সা চালককে বলতেই সে আমাদের নিয়ে গেল। কিন্তু নদীর পারে নেমেই মনটা বিষাদে ভরে গেল। যে নদীকে নিয়ে গল্প, নাটক, উপন্যাস, কবিতা রচনা করেছেন সাহিত্যিকরা, যে নদীর মাছ না পেলে হয়না বাংলা বর্ষবরন, সে নদী আদৌও জীবিত কিনা তা নিয়ে সন্দেহ জাগে। পদ্মা নদীর মাঝি কুবের যে নদীতে নৌকা চালিয়ে মাছ ধরত সে নদীতে আমি আর পারেল মিলে হেটে হেটেই পাড়ি দিলাম। ইচ্ছা, কপিলার সঙ্গে কোনদিন দেখা হলে বলব "তোমার কুবেরের থেকেও আমরা কম যাইনা, পাড়ি দিয়েছি পদ্মা হেটে হেটে!!"।
নদীর চারপাশে তাকিয়ে যতটুকু পানি আছে বলে মনে হল তা দিয়ে একজন প্রাপ্তবয়ষ্ক মানুষের সারা দিনের কাজ হবে বলে মনে হলনা। পদ্মার এই অবস্থা দেখে আমি কবি হতে পারিনি কিন্তু কোন বিখ্যাত কবি থাকলে আমি নিশ্চিত সে মহাকাব্য রচনা করে ফেলতেন। বর্তমান সরকারতো ইলেকসানে জিতার আগে অনেক কিছুই বলেছিল, পদ্মা নদী রক্ষার প্রসঙে কিছু বলেছিল কিনা এসব ভাবতে ভাবতে যখন ফিরছি তখন দিনের সূর্যও বিদায় নিচ্ছিল আর একটি নতুন দিনের আশায়, নতুন কিছুর সম্ভাবনা নিয়ে।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই এপ্রিল, ২০১০ রাত ৯:২০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




