আমি ভাবলাম হেঃ হেঃ হেঃ, আমাকে ভয় দেখায় , আমিও এমন ভাব করলাম যে সত্যি সত্যি জন্গলে থাকতে যাচ্ছি। যেদিন যাত্রা করব সেদিন সকালে ফোন করলাম বন্ধুর কাছে , কোন হোটেলে থাকব? আমি ঝাড়ি খাইলাম জবাবে "যেখানে রাইত সেখানে কাইত।"আমি ধরা , তারাতারি গুগল ম্যাপ বের করলাম, খাইছে এ দেখি পাহাড় আর পাহাড় আর দেখি জন্গল। তারাতরি পাহাড়ে চরার জুতা , ছুরি , প্যারাসিটামল , মশা ও শাপের ঔষধ ,পানি পিউরিফিকাশন ট্যাবলেট, স্যালাইন জোগার করলাম।
যাত্রা শুরু করলাম কলাবাগান থেকে রাত ১১ টায়,গারিতে বেশির ভাগই উপজাতি(চেহারা দেখে অনুমান করলাম)।গারিতে তেমন উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটেনি, খালি একজন মাঝপথে অভিযোগ করল এসি নাকি গরম বাতাস দিচ্ছে
প্রায় ২ ঘন্টা ৩০ মিনিট পর রুমা ঘাটে পৌছলাম,আহা অনেক্ষন পরে প্রানের দেখা পেলাম।দারুন নদী।সান্গু নদী।আমার দেখা আমার সবচাইতে সুন্দর নদি।দেখা মাত্র যে কেউ প্রেমে পরবে।শান্ত এবং সুন্দর।
রুমা ঘাট থেকে রুমা বাজার, নৌকা ভাড়া করলাম প্রায় ১ ঘন্টা , বাতাসের অনুকুলে।রুমা বাজারে গিয়ে প্রথম কাজ খাওয়া, বন মোরগের মাংশ কি যে মজা না খেলে বোঝানো যাবে না।খেয়ে দেয়ে ঘুম পাচ্ছে,এমন সময় আৎকে উটলাম , যে ১৫ কিমি হাটতে হবে।আমর মাথা চক্কর দিলো ১৫ কিমি তাও পাহাড়ী উচুনিচু রাস্তা।এমন সময় মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে!!একটা উপায় বের করতে হবে,একজন গাইড ভাড়া করলাম, গাইড বুদ্ধি দিল চান্দের গাড়ীতে করে যাবার জন্য।সবাই মহাখুশী,গাড়ী ভারা করে গাড়িতে চেপে বসলাম।রুমা থানাতে এন্ট্রি করে যাত্রা শুরু করলাম।
মোবাইল ফোনে নেটওয়ার্ক না থকলে কি হবে?গান ঠিকি বাজে , কানে হেড ফোন দিয়ে হিপ হপ গান শুনতে শুনতে খোশ মেজাজেই ড্রাইভার গাড়ি চালাচ্ছে।কিন্তু কলিজায় পানি নাই কারো।কি বলব !! যদি একটু এদিক ওদিক হ্য় তাহলেই শেষ!!!!বলতে না বলতেই দেখি আরেকটি চান্দের গাড়ি পাহাড়ের কিনারে গাছের সাথে ঝুলে আছে,আমদের ড্রাইভার গাড়ি থামিয়ে হেড ফোন খুলে পাহাড়ি ভষায় কি প্রশ্ন করল পাহাড়ি ভষায় কি উত্তর ও পেলো।আমি জিগ্গেস করলাম কিভাবে ঘটল? আমার দিকে তিক্ন দৃষ্টিতে তাকাল।উত্তর না দিয়েই হিপ হপ মেজাজে গাড়ি চালাতে লাগল।
একটি পহাড়ের চুড়ায় উঠলাম,হায় হায় এ কি ?দেখি সামনের পাহাড়ে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। আর সে কি কাঠ পোড়ার শব্দ! আমি ড্রাইভার কে জিগ্গেস করলাম কি ব্যাপার?হিপ হপ ড্রাইভারের চোখে মুখে বিস্বয় আর ভিতি!আমাদের গাইড আমাদের আস্বস্হ করল ভয়ের কিছু নেই জুম চাষ,তবে বাতাস বিপরিত দিকে,গাড়ি ঝুকি পুর্ন ভাবে দ্রুত চলতে লাগল,
যেন আগুন আমাদের ক্ষতি না করতে পারে,আগুনের প্রচন্ড তাপ,চারিদিকে আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছে,তার মধ্যে গাড়ি ছুটে চলছে,এক্কেবারে সিনেমা!!!!! আমি চোখ বন্দ করে সুরা কিরাত যা পারি তা এক এক করে পরতে লাগলাম। আল্লাহ তার বান্দাদের অনেক ভালোবাসেন।
গড়ি একটি পাহড়ী পারায় এসে থামল,চারিদিকে কান্না চিৎকার আহাজারি,বাতাস বিপরিতে থাকর জন্য আগুন জুম চাষীদের বাড়ি-ঘড় পুরিয়ে দিচ্ছে ,আমরা লাঠি সোঠা নিয়ে আগুন নিভানোর জন্য প্রস্তুতি নেই।গাইড আমাদের বাধা দিল,আগুনের তিব্রতা প্রকট তাছাড়া পরিশ্রম করলে দেহে পানি শূন্যতা দেখা দিতে পারে, এখানে পানির যোগান নাই।
পাহাড়িরা বুদ্বি করে নিজেদের ঘর নিজেরাই পুড়িয়ে দিচ্ছে যেন বাতাস আগুন না ছড়াতে পারে।ভাল কাজ দিল আগুন কমে আসল।
আমরা আবার যাত্রা শুরু করলাম।কিছুক্ষন পর যাত্রা বিরতি ,গাড়ি এবং ড্রইভার বিশ্রাম নিচ্ছে সামনে অনেক কঠিন রাস্তা মনে হচ্ছে।উপরে তকিয়ে দেখি অনেক উচূ পাহাড় কিছু ঘর বারি দেখা যাচ্ছে ,বগা লেক।আমরা ঐখানে যাচ্ছি,এতক্ষন ছিল ইটের রাস্তা এখন বালুর রাস্তা,অনেক কষ্টে গাড়ি উপরে উঠছে,ভ্য় হচ্ছে যদি গাড়ি উল্টে যায়।গাড়ি উল্টালো না তবে গাড়ি বালুতে আটকা পরে গেলো,আমরা সবাই সাহায্য করলাম ক্ষাদ থেকে উঠানোর জন্য, একটি পাথর ভেংগে চাকার নিচে দিতেই গাড়ি লাফ দিয়ে চালু হল।অল্প কিছুক্ষন পর পৌছলাম বগালেকে।
আমার যাত্রা সার্থক, ১ কিমি উপরে উঠে আমি এমন সুন্দর টলমলে লেক দেখতে পাবো ভাবিনি, আল্লাহ পৃথিবি কে আশ্চর্য রকম সুন্দর করে তৈরি করেছেন
চলবে.....(বগালেক থেকে কেউকারাডং এবং ফিরে আসা)

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




