somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কেউকারাডং এডভেন্চার -১

২৪ শে এপ্রিল, ২০০৯ বিকাল ৪:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হঠাৎ করেই আমার এক বন্ধুর মাথায় পাগলামি উটছে ২৬ শে মার্চ কেউকারাডং এ যাবে। আমাকে ফোন করল আমি বল্লাম যাওয়া যায়।আমরা ৪ আধা পাগল বন্ধু প্ল্যান করলাম বান্দরবন কেওকারাডং যাব।গাড়ি এর টিকেট কাটলাম, এবার হোটেলের রুম বুকিং করতে গিয়ে টের পেলাম আসল কাহিনি,প্ল্যান হল যেখানে রাইত সেখানে কাইত।!!!!!

আমি ভাবলাম হেঃ হেঃ হেঃ, আমাকে ভয় দেখায় , আমিও এমন ভাব করলাম যে সত্যি সত্যি জন্গলে থাকতে যাচ্ছি। যেদিন যাত্রা করব সেদিন সকালে ফোন করলাম বন্ধুর কাছে , কোন হোটেলে থাকব? আমি ঝাড়ি খাইলাম জবাবে "যেখানে রাইত সেখানে কাইত।"আমি ধরা , তারাতারি গুগল ম্যাপ বের করলাম, খাইছে এ দেখি পাহাড় আর পাহাড় আর দেখি জন্গল। তারাতরি পাহাড়ে চরার জুতা , ছুরি , প্যারাসিটামল , মশা ও শাপের ঔষধ ,পানি পিউরিফিকাশন ট্যাবলেট, স্যালাইন জোগার করলাম।

যাত্রা শুরু করলাম কলাবাগান থেকে রাত ১১ টায়,গারিতে বেশির ভাগই উপজাতি(চেহারা দেখে অনুমান করলাম)।গারিতে তেমন উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটেনি, খালি একজন মাঝপথে অভিযোগ করল এসি নাকি গরম বাতাস দিচ্ছে ;) ।সকালে বান্দরবন ,আনেক সুন্দর, বাস থেকে নেমে জিগ্গেস করলাম কেউকারাডং কিভাবে যায়? একজন রিকসা চালক জবাব দিল তারাতারি তারাতারি ১ম ট্রিপ মিস করবেন ,অল্প কিছু নাস্তা করে লাফিয়ে উটলাম রিকসায় মনে মনে ভাবতে লাগলাম আহা রিকশায় চড়ে কেউকারাডং ।১০ মিনিট পড়ে একটা বাস স্টপে নিয়ে আসল বল্ল নামেন,এখান থেকে যেতে হবে,চান্দের গারিতে তারাতারি টেকেট কাটেন।টিকেট কেটে গারিতে উটলাম, ১২ জনের কাপাছিটি ৪০ জন যেতে হবে।তা না হলে চান্দের গারি, ফুল লোড নিয়ে পাহাড় পারি দিতে লাগল,প্রায় ৪৫ কিমি পারি দিলাম।চাপাচাপিতে এক্কেবারে ভর্তা তার উপর আকাবাকা পাহাড়ি রাস্তা , ড্রাইভার ভাই একটু ভূল করলে সর্বনাষ।চুপচাপ সুরা কিরাত পরতে লাগলাম।





প্রায় ২ ঘন্টা ৩০ মিনিট পর রুমা ঘাটে পৌছলাম,আহা অনেক্ষন পরে প্রানের দেখা পেলাম।দারুন নদী।সান্গু নদী।আমার দেখা আমার সবচাইতে সুন্দর নদি।দেখা মাত্র যে কেউ প্রেমে পরবে।শান্ত এবং সুন্দর।


রুমা ঘাট থেকে রুমা বাজার, নৌকা ভাড়া করলাম প্রায় ১ ঘন্টা , বাতাসের অনুকুলে।রুমা বাজারে গিয়ে প্রথম কাজ খাওয়া, বন মোরগের মাংশ কি যে মজা না খেলে বোঝানো যাবে না।খেয়ে দেয়ে ঘুম পাচ্ছে,এমন সময় আৎকে উটলাম , যে ১৫ কিমি হাটতে হবে।আমর মাথা চক্কর দিলো ১৫ কিমি তাও পাহাড়ী উচুনিচু রাস্তা।এমন সময় মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে!!একটা উপায় বের করতে হবে,একজন গাইড ভাড়া করলাম, গাইড বুদ্ধি দিল চান্দের গাড়ীতে করে যাবার জন্য।সবাই মহাখুশী,গাড়ী ভারা করে গাড়িতে চেপে বসলাম।রুমা থানাতে এন্ট্রি করে যাত্রা শুরু করলাম।



মোবাইল ফোনে নেটওয়ার্ক না থকলে কি হবে?গান ঠিকি বাজে , কানে হেড ফোন দিয়ে হিপ হপ গান শুনতে শুনতে খোশ মেজাজেই ড্রাইভার গাড়ি চালাচ্ছে।কিন্তু কলিজায় পানি নাই কারো।কি বলব !! যদি একটু এদিক ওদিক হ্য় তাহলেই শেষ!!!!বলতে না বলতেই দেখি আরেকটি চান্দের গাড়ি পাহাড়ের কিনারে গাছের সাথে ঝুলে আছে,আমদের ড্রাইভার গাড়ি থামিয়ে হেড ফোন খুলে পাহাড়ি ভষায় কি প্রশ্ন করল পাহাড়ি ভষায় কি উত্তর ও পেলো।আমি জিগ্গেস করলাম কিভাবে ঘটল? আমার দিকে তিক্ন দৃষ্টিতে তাকাল।উত্তর না দিয়েই হিপ হপ মেজাজে গাড়ি চালাতে লাগল।


একটি পহাড়ের চুড়ায় উঠলাম,হায় হায় এ কি ?দেখি সামনের পাহাড়ে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। আর সে কি কাঠ পোড়ার শব্দ! আমি ড্রাইভার কে জিগ্গেস করলাম কি ব্যাপার?হিপ হপ ড্রাইভারের চোখে মুখে বিস্বয় আর ভিতি!আমাদের গাইড আমাদের আস্বস্হ করল ভয়ের কিছু নেই জুম চাষ,তবে বাতাস বিপরিত দিকে,গাড়ি ঝুকি পুর্ন ভাবে দ্রুত চলতে লাগল,
যেন আগুন আমাদের ক্ষতি না করতে পারে,আগুনের প্রচন্ড তাপ,চারিদিকে আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছে,তার মধ্যে গাড়ি ছুটে চলছে,এক্কেবারে সিনেমা!!!!! আমি চোখ বন্দ করে সুরা কিরাত যা পারি তা এক এক করে পরতে লাগলাম। আল্লাহ তার বান্দাদের অনেক ভালোবাসেন।





গড়ি একটি পাহড়ী পারায় এসে থামল,চারিদিকে কান্না চিৎকার আহাজারি,বাতাস বিপরিতে থাকর জন্য আগুন জুম চাষীদের বাড়ি-ঘড় পুরিয়ে দিচ্ছে ,আমরা লাঠি সোঠা নিয়ে আগুন নিভানোর জন্য প্রস্তুতি নেই।গাইড আমাদের বাধা দিল,আগুনের তিব্রতা প্রকট তাছাড়া পরিশ্রম করলে দেহে পানি শূন্যতা দেখা দিতে পারে, এখানে পানির যোগান নাই।
পাহাড়িরা বুদ্বি করে নিজেদের ঘর নিজেরাই পুড়িয়ে দিচ্ছে যেন বাতাস আগুন না ছড়াতে পারে।ভাল কাজ দিল আগুন কমে আসল।



আমরা আবার যাত্রা শুরু করলাম।কিছুক্ষন পর যাত্রা বিরতি ,গাড়ি এবং ড্রইভার বিশ্রাম নিচ্ছে সামনে অনেক কঠিন রাস্তা মনে হচ্ছে।উপরে তকিয়ে দেখি অনেক উচূ পাহাড় কিছু ঘর বারি দেখা যাচ্ছে ,বগা লেক।আমরা ঐখানে যাচ্ছি,এতক্ষন ছিল ইটের রাস্তা এখন বালুর রাস্তা,অনেক কষ্টে গাড়ি উপরে উঠছে,ভ্য় হচ্ছে যদি গাড়ি উল্টে যায়।গাড়ি উল্টালো না তবে গাড়ি বালুতে আটকা পরে গেলো,আমরা সবাই সাহায্য করলাম ক্ষাদ থেকে উঠানোর জন্য, একটি পাথর ভেংগে চাকার নিচে দিতেই গাড়ি লাফ দিয়ে চালু হল।অল্প কিছুক্ষন পর পৌছলাম বগালেকে।





আমার যাত্রা সার্থক, ১ কিমি উপরে উঠে আমি এমন সুন্দর টলমলে লেক দেখতে পাবো ভাবিনি, আল্লাহ পৃথিবি কে আশ্চর্য রকম সুন্দর করে তৈরি করেছেন


চলবে.....(বগালেক থেকে কেউকারাডং এবং ফিরে আসা)




৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে কোন প্রজন্ম সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত? ১৯৭১ থেকে একটি সংক্ষিপ্ত ভাবনা

লিখেছেন মুনতাসির, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৩

বাংলাদেশে দুর্নীতির প্রশ্নটি প্রায়ই ব্যক্তি বা দলের দিকে ছুড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু একটু গভীরে গেলে দেখা যায়, এটি অনেক বেশি প্রজন্মভিত্তিক রাজনৈতিক - অর্থনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে যুক্ত। ১৯৭১ এর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×