কি আর করা। মনে মনে এখনই আব্বুর গিফট ।
৫ই ফেব্রুয়ারী আব্বুর জন্মদিন। সেইদিন একটা লেখা লিখছিলাম।
সেইটা আজকে এইখানে দিলাম..
৫ই ফেব্রুয়ারী ২০১১ খ্রি।
আব্বুর বার্থডে আজকে। প্রত্যেকবার কেক এনে রাখি রাত বারোটায় কাটবে বলে। এইবার কেনো যেন হলো না। ধুর!!
আজকে আবার আমার বাবার চাকুরি থেকে রিটায়ার করার দিন। আব্বুর এইজন্যে কয়েকদিন ধরে মন খারাপ। মন খারাপ তো হবেই।
আমরা যখন স্কুল ছাড়ি তখন আমারো খুব মন খারাপ ছিলো। সেটা তো দশ বছরের ধাক্কা। আমার অবশ্য আরেকটু কম। আমি ক্লাস থ্রি থেকে ওদের সাথে। তারপর কলেজ। কলেজে কিছুই মনে হয় নি।কারন আমার কলেজ আমার পছন্দ ছিলো না। আর এখন তো এখনই। এইদিকে আব্বু, সেই ১৯৮১ থেকে এই অগ্রনী ব্যাংকে। খারাপ তো লাগবেই।
আজকে ভাইয়া সবার আগে আব্বুকে উইশ করলো রাতে।তারপর আমি আর ইভা। সকালে আবার। আব্বু অফিসে। ফোনে আবার। সাথে বললাম, আসার সময় স্পেশ্যাল কিছু নিয়ে যেন আসে। কি আনবে জিজ্ঞেস করতেই বললাম, “ঠিক আছে…একটা কেক নিয়ে আসবা।” আব্বু হাসতে হাসতে বললো আনবে।
আমার আব্বু অসম্ভব ভালো একটা লোক। সপ্তাহে যে দুইদিন ছুটি সেই দুইদিনও ব্যাস্ত।
হয়তো কারো ছেলে তার দেখা-শোনা করেনা।যাও ওখানে।কারো মেয়ের বিয়ে।আব্বুকে বললো। হেল্প। ওখানে রাস্তা ভাঙ্গা,নিজেদের সাধ্যের বাইরে। যাও এমপি’র কাছে। মসজিদের কাজ, সমাজের কাজ, মিটিং, বিচার, সালিশ সব কিছুতে থাকবেই আব্বু। ছুটির দিন কিংবা রাতে বাসায় কত জন যে এসে এসে জিজ্ঞেস করে, ভাই কোথায়? কাকা বাসায় নাই? আম্মু জবাব দিতে দিতে বিরক্ত।
বলে, “তোর আব্বুর শুধু সমাজসেবা। ছুটির দিনে মানুষ বাসায় থাকে। তোর বাবার বাসায় থাকারও টাইম হয় না।”
আমি বলি, “দেখলা আম্মু, আমার আব্বু কত মহান। পরের জন্যে নিজেরে বিলায় দেয়। আব্বু কত বড় মাপের লোক?’ শুনে আম্মু আর কি বলবে।
আর ভাইয়া বলে, “একদিন নাকি বড় একটা রোড বানিয়ে সবাই তার নাম দেবে শফিকুল ইসলাম রোড। কেউ জিজ্ঞেস করবে এই রোডের এই নাম কেনো ভাই? উত্তর হবে, এই নামে অনেক ভালো একজন লোক ছিলো আমাদের এলাকায়। তার নামে নাম।”
এইরকম আরও কত কথা।
আমাদের ৩ জনকে নিয়ে আব্বুর কত স্বপ্ন! ভাইয়া ইভা ওরা খুব পড়ে। ওরা অনেক লক্ষী। আমি যে কি। পড়া-শোনা বাদে সব কিছুতেই থাকি। তারপরও আব্বু আমাকে অনেক আদর করে। আমিতো বলিই আমি আব্বুর সবচে আদরের মেয়ে। আমার কোনো কিছুতে আম্মু কিংবা ভাইয়া যখন বকা দেয় তখন আব্বু বলে, ব্যাপার না।
আব্বুকে আমি অনেক ভালোবাসি। আমরা ৩ জনই অনেক ভালোবাসি।যাদের সাথে আব্বুর পরিচয় মনে হয় তারাও। এই পৃথিবীর সবাই যদি আব্বুকে চিনতো মনে হয় সবাইই অনেক ভালোবাসতো।
শুভ জন্মদিন আব্বু। তোমাকে অনেক অনেক অনেকভালোবাসি ।
তুমি আরও অনেক অনেক দিন আমাদের মাঝে যেন থাকো। এতোদিন তুমি আর আম্মু আমাদের আগলে রাখছো। এইবার তো আমাদের পালা…
আব্বু জানো, তুমি পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো বাবা..।।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জুন, ২০১১ বিকাল ৪:৪১