..চিঠিটা পেয়ে কি তুই খুব অবাক হয়েছিস?দেখলি,পোস্ট করে চিঠি দেয়ার কথা কিন্তু তুইই আগে বলেছিস। আর এখন চিঠি দিয়ে আমিই ফার্স্ট। আবশ্য তুইও ফার্স্ট। চিঠিটা পড়ে।
বলতো, চিঠিটা আমি কোথায় পোস্ট করেছি।
তুই তো জানিস, বর্ণমালা স্কুলের সামনে আমার টিচার পড়ায়। ওখানে একটা পোস্ট বক্স আছে। আমি পড়তে যেয়ে চিঠিটা বক্সে ফেলে দিয়ে এসেছি। এবার বুঝলি?
আমার অনেক দিনের সখ ছিলো রে, আমি নিজ হাতে চিঠি পোস্ট করবো। এবার বুঝি সখটা পূরণ হলো।
জানিস, এরকম চিঠি চিঠি ব্যাপার আমার খুব ভালো লাগে। যখন কলেজে ছিলাম, তখন নাজমার সঙ্গে এরকম করতাম। আমি ওকে চিঠি দিতাম। ও আমাকে দিতো। ছোটোবেলায় মনে হতো, ইস্..কবে যে বড় হবো। আমাকে কেউ চিঠি লিখবে। আমি লিখবো। মামা যখন আমকে চিঠি লিখতো, আমার এত্ত খুশি লাগতো। আমিও ঝটপট লিখতে বসে যেতাম। জানিস্, আমার একটা চিঠি মামা খুব যত্ন করে রেখেছিলো। মামা যেখানে যেতো, আমার চিঠিও সেখানে যেতো। বল্তো, আমার চিঠিটা মামা কোথায় রেখেছিলো?
তার মানিব্যাগে। আমিও দেখেছিলাম চিঠিটা।তখন ক্লাস ফোর বা ফাইভ। এতো আগের চিঠি দেখে খুব অবাক হয়েছিলাম । অবশ্য পড়তে পারি নি। আমি যদি কখনও বলি, মামা আপনি আমাকে যে ভালোবাসেন, তার প্রমাণ কি? তখন আমাকে ঝটপট চিঠিটা বের করে দেখাবে ।
বুঝলি, এটা আমার জন্যে মামার ভালোবাসার দলিল। মামীও দেখেছে। আর পড়ে নাকি খুব মজা পেয়েছে। কি লিখেছিলাম, কে জানে ।
তবে মজার ব্যপার কি জানিস? কয়েকদিন আগে সেই মানিব্যাগটা পকেটমার হয়ে গেছে। মানিব্যাগ তো গেছে গেছেই, সাথে আমার দলিলটাও ফুট্টুস। শুনে আমি হাসতে হাসতে কি বলেছি শুনবি?
"মামা, আপনি যে আমাকে ভালোবাসেন তার প্রমাণ কি?"
আচ্ছা, আমার চিঠিটা পড়ে তোর কেমন লাগছে? তুই কি পড়ে আমাকে কোনো চিঠি দিবি? জানিস্, আমার কাছে নাজমা, ইভা, সোহাগ ওদের চিঠি আছে। তোর কবিতা আর পেছনে লেখা ছোট্ট কথা আছে।
আমি কি তোকে আর কখনো চিঠি দিয়েছি। আমার মনে হয় দিয়েছি।
আচ্ছা, আজ এ পর্যন্তই, কেমন?
ভালো থাকিস ।..
(গতকাল ডায়েরীর পাতা ঘাটতে ঘাটতে চিঠিটা পাই। মনেই ছিল না এর কথা। পোস্ট করার কথা ছিলো।কিন্তু পরে আর করা হয় নাই। যখন নিয়ে গেছি, দেখি বক্সে তালা। আর কি। ফিরে আসছি।
তখন ঐখানে পোস্ট করতে পারি নাই, এখন এইখানে পোস্ট করলাম।ও পড়ার আগে অন্যেরা পড়বে। এইই যা..!!)
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মে, ২০১২ দুপুর ১২:২৮