somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অন্য গ্রহের মেয়ে- পর্ব ১

১৫ ই জুন, ২০২১ দুপুর ২:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




ছেলেটির নাম বর্ণ। এবার বিবিএ ফোর্থ সেমিস্টার এ পড়ছে। ভার্সিটি যাবে খুব তাড়াহুড়ো করে রেডি হচ্ছে কারণ ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়ে গিয়েছে। ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে বারান্দায় গিয়ে মুখ মুছতেই চোখ আটকে গেল বর্ণের সামনের বাসার জানালায়। পরীর মত একটি মেয়ে বসে আছে একদিকে তাকিয়ে। যেন খুব মন দিয়ে কিছু দেখছে। বর্ণও মেয়েটির তাকিয়ে থাকা দেখে তোয়ালে হাতে নিজেও বাম দিকে তাকালো। কি আছে ওখানে এত মনোযোগ দিয়ে দেখার মত। ঠিক ঐ সময় বর্ণের বাবা ডাকলেন নাস্তা করতে।


রাতে ঘরে ফিরে আলো জালিয়ে জানালার পাশে চেয়ারে গা এলিয়ে দিতেই হঠাৎ চোখ গেল আবারো সামনের বাসার সেই তার বরাবর জানালাটার দিকে। মেয়েটা মোবাইল হাতে নিয়ে কানে এয়ারফোনে গান শুনছে আর মাথা দুলাচ্ছে। যদিও সকালের মত চেহারাটা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে না। বর্ণ অপলক চেয়ে রইলো। করিম চাচার কাছে সকালে সে খবর নিয়েছে, জানুনীড় এ নতুন ঐ ভাড়াটে এসেছে। আগে দুই ছেলে আর মা বাবা যে ফ্যামিলি ছিল তারা চলে গেছে বাসা ছেড়ে নিজের ফ্ল্যাটে। এখন যারা ভাড়া এসেছেন মা বাবা আর তাদের একমাত্র মেয়ে। কলেজে পড়ছে এবার।

বর্ণ একরাতে কম্পিউটার এ তার এস্যাইনমেন্ট করছে হঠাৎ ঘাড় ডানে ঘোরাতেই তার জানালা পেরিয়ে বারান্দা দিয়ে ঐ মেয়ের জানালা তে দেখা যাচ্ছে মেয়েটি কি দারুণ নাচ্ছে। যেন একটা ময়ূর। নীল একটা গাউন পরে হাত পা মেলে মেলে নাচ্ছে সে। বর্ণ কম্পিউটারের মনিটরে তাকিয়ে সময় দেখল, রাত তখন ২টা ছুঁই ছুঁই। বর্ণ অবাক হয়ে ভাবে এইসময় কেউ নাচে?
বর্ণ চট জলদি তার ঘরের বাতি নিভিয়ে দিল। পাছে সে যে তাকিয়ে আছে মেয়েটি না দেখে ফেলে। সে তার রুমের লাইট বন্ধ করে লুকিয়ে জানালা দিয়ে মেয়েটির নাচ দেখছে।

বর্ণ এখন সুযোগ পেলেই মেয়েটির জানালায় উঁকি দেয়। মেয়েটি কখনো কাপড় গুছায়, কখনো বিছানা পরিষ্কার করে, সন্ধ্যায় বা রাতে গান শোনে। আবার ফাঁকে ফাঁকে ঢুলে ঢুলে বই খাতা নিয়ে পড়তেও দেখা যায়। আবার কখনো রাত ৩ টার সময় মাথায় তোয়ালে পেছানো সদ্য গোসল করে বেরিয়ে আসতেও দেখে বর্ণ অবাক হয়।
মেয়েটিকে সকাল বিকেল, রাতে দেখা তার একটা অভ্যেসের মত হয়ে গেছে যেন। আর মেয়েটির বাসায়ও কাউকে সেরকম দেখা যায় না। মাঝে ২দিন কি ৩দিন বুড়ো গোছের একজন লোককে দ্যাখে বর্ণ, মেয়েটির রুমে বসে কথা বলতে। ধরেই নিয়েছে যে উনি ই মেয়েটির বাবা। এছাড়া ছোট একটি মেয়েকে দেখা যায়, হয়ত তার কাছে সাহায্যকারি।

একদিন বিকেলে ভার্সিটি থেকে এসে ব্যাগটি খাটে রেখে সে তার চেয়ারে বসে ডানে তাকাতেই দেখলো মেয়েটি জানালার পাশে বসে অঝরে কাঁদছে। বর্ণের কেমন যেন অস্থির লাগতে লাগল। কি হয়েছে মেয়েটির? কেন এভাবে কাঁদছে? সে চেঁচিয়ে করিম চাচাকে ডাকল। ধড়ফড় করে দোতলায় উঠে এলেন বর্ণের কাছে করিম চাচা কি হয়েছে জানতে। বর্ণ মেয়েটিকে দেখিয়ে জিজ্ঞেস করলো, "আপনি কি মেয়েটি সম্পর্কে কিছু জানেন চাচা?"
করিম চাচা বললেন, "কোন মেয়েটি ছোট সাহেব?" ততক্ষণে জানালা থেকে সরে গেছে মেয়েটি।
বর্ণ জানালার দিকে তাকিয়ে করিম চাচা কে বললো, "আরে জানুনীড়ের নতুন ভাড়াটিয়াদের মেয়েটি।"
করিম চাচা বললেন, "আমি কি করে জানবো ছোট সাহেব। তবে আপনি বললে খোঁজ নিতে পারি।"
"না থাক"- বলে করিম চাচা কে চলে যেতে ইশারা করল বর্ণ।
তারো এখন ভীষন খারাপ লাগছে, কেন কান্না করছিল মেয়েটি, কি হয়েছিল তার?
এমন ফুটফুটে , হাসি আনন্দে থাকা মেয়ে, এভাবে কেন কাঁদবে?
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জুন, ২০২১ বিকাল ৪:১৩
৪টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×