আমাদের পঞ্চম শ্রেণীর বিজ্ঞান বইয়ে বিভিন্ন ভ্রান্তি দেখা যায় । পরিবেশ পরিচিতি বিজ্ঞান বইয়ের দ্বাদশ অধ্যায়:পৃথিবী ও বিশ্বজগৎ অধ্যায়ে বেশ কিছু ভ্রান্তি লক্ষ করা যায়।
১.ধ্রুবতারা একটি তারা যা বছরে উত্তর আকাশে একই যায়গায় থাকে।ইহা পৃথিবী থেকে প্রায় ৪৩০ আলোকবর্ষ দূরে।কিন্তু আমাদের বিজ্ঞান বইয়ে ধ্রুবতারার দুরত্ব দেওয়া আছে ৮২,১১,০০,০০০ কি.মি ।আলোর গতি ১ সেকেন্ডে ৩০,০০০০০ কি.মি ।তাহলে কী ধ্রুবতারার দুরত্ব প্রায় ৪.৫৬১৬৬৬৬৬৭ আলোকমিনিট ? আর এই দুরত্ব যদি সত্যি এতো কাছে হতো তাহলে এ পৃথিবীতে আমাদের অস্তিত্ব থাকতো না !ধ্রুবতারা আসলে একটি তারা নয় । ইহা তিনটি তারা মিলে একটি তারার মতো দেখায় ।এই তিন তারার মধ্যে সবচেয়ে উজ্জল যে তারা সে তারার উজ্জলতা সূর্য অপেক্ষা ১৮০০ গুণ বেশী । আমরা তাহলে পরীক্ষার খাতায় কোন তথ্যটি লিখবো ? এই ভ্রান্ত তথ্যটি কি লিখবো ?
২.আমাদের বিজ্ঞান বইয়ে লেখা আছে “সৌরজগতে রয়েছে ৮ টি গ্রহ,৪১টি উপগ্রহ”। কিন্তু বৃহস্পতির সত্যিকারে একারই আছে ৬৩ টি উপগ্রহ! সৌরজগতের মোট উপগ্রহ সংখ্যা ১৪০ টি । এই ভ্রান্ত তথ্যটি পরীক্ষার খাতায় কী লিখবো ?
৩.নীহারিকা সকল তারার উৎপত্তিস্থল । নীহারিকা থেকে ছোট,বড়,মাঝারি সকল তারা সৃষ্টি হয়েছে । আমাদের বিজ্ঞান বইয়ে লেখা আছে “নীহারিকা মহাকাশের কম আলোকিত তারকারাজির আস্তরণ।কোন কোন নীহারিকা সূর্যের চেয়েও বড় ।” কোন নীহারিকা এ পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয়নি যা সূর্যের চেয়ে ছোট । বরং কিছু প্রায় অনেক নীহারিকা আছে যা কয়েক আলোকবর্ষ বিস্তৃত । ছোট তারকারাজির আস্তরণ নিহারীকা নয় । বরং ছোট তারকারাজির উৎপাদক নীহারিকা ।
৩.আমাদের সৌরজগৎ একটি মাঝারি আকৃতির ছায়াপথের ভেতর । খুব অন্ধকার আকাশে মেঘের মতো সাদা একটি জিনিস দেখা যাবে । এটাই হলো ছায়াপথ । আমাদের বিজ্ঞান বইয়ে লেখা আছে যে এই ছায়াপথ উত্তর দক্ষিণে অবস্থান নিয়েছে । আসলে এই ছায়াপথ দক্ষিণ-পূর্ব থেকে দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে অবস্থাণ নিয়েছে ।
৪.সূর্যের ব্যাস ১৪ লক্ষ কি.মি ।কিন্তু আমাদের বইয়ে আছে সূর্যের ব্যাস ১৩ লক্ষ ৮৪ হাজার কি.মি । এখানেও একটি ভ্রান্তি দেখা যায় ।
এ রকম আরও অনেক ভ্রান্তিপূর্ণ তথ্য আমাদের এই বিজ্ঞান বইয়ে আছে । আমাদের তো মূল তথ্যভান্ডার আমাদের পাঠ্যপুস্তক । এই মূল তথ্যভান্ডারেই যদি ভুল থাকে তাহলে আমাদের জ্ঞানেও ভুল থেকে যাবে !
তথ্যসূত্র:DK ILLUSTRATED ENCYCLOPEDIA OF THE UNIVERSE