somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আশায় নিরাশায় দোলে ভবিষ্যৎ

০১ লা জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছবিঃ সংগ্রহীত
৫ই আগস্ট ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে আশার সঞ্চার হয়েছিল ৩১শে ডিসেম্বর 'মার্চ ফর ইউনিটি'তে এসে কিছুটা শঙ্কায় বছরটি শেষ হল। আগত নতুন বছরেই মনে হয় আমাদের ভাগ্যের লিখন লিখিত হয়ে যাবে। কি আছে সেই ভাগ্যে তা অনুমান করা মনে হয় খুব বেশি কঠিন নয়।

৩০শে ডিসেম্বর অভ্যুত্থান-কারী ছাত্ররা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিকট একটি খসরা ঘোষণাপত্র পেশ করেছে এবং সেটা ১৫ই জানুয়ারির মধ্যে সকল দলের মতামতের ভিত্তিতে জারী করার দাবী করেছে। তাদের উদ্দেশ্য হল অভ্যুত্থানের একটা আইনগত স্বীকৃতি আদায় করা। কারণ তারা ইতিমধ্যেই শঙ্কায় ভুগছে যে তাদের দ্বারা সংঘটিত অভ্যুত্থানের দাবীদার অনেকেই দাঁড়িয়ে গেছে এবং সেই দাবীতে অন্যরা অভ্যুত্থানের মূল উদ্দেশ্যকে ভিন্ন দিকে নিয়ে যাবে। এটা ঠিক যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল দীর্ঘদিন ধরে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন সংগ্রাম করে আসলেও একমাত্র ৫ই আগস্টে ছাত্রদের ডাকা 'ঢাকা ঘেরাও' কর্মসূচীই স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়েছিল এবং জেল থেকে সকল রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীদের মুক্তি ঘটেছিল। এখন এই মুক্তিপ্রাপ্ত রাজনৈতিক দলগুলোই ছাত্রদের অভ্যুত্থানের মূল উদ্দেশ্যকে প্রশ্নবিদ্ধ ও ক্রমাগত বাঁধাগ্রস্ত করে চলছে, এমনকি সংস্কার করার অধিকারের প্রশ্নও তারা তুলছে!

প্রকৃতপক্ষে রাজনীতি হল ক্ষমতার প্রশ্ন। আবার ক্ষমতা হল দলগুলোর শক্তির প্রশ্ন। আর এর বাইরে আছে জনগণের শক্তি। জনগণের শক্তি মূল শক্তি হলেও এখন পর্যন্ত পৃথিবীর কোন দেশেই জনগণের শক্তি ক্ষমতায় যেতে পারেনি। রাষ্ট্র ও সংবিধান হল কাঠামোগত শক্তি এবং এর হাতিয়ার হল সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিচারবিভাগ ও আমলা। জনগণের শক্তিকে ব্যবহার করে আওয়ামী লীগ বিভিন্ন দলগুলোর সাথে ঐকমত ছাড়াই বাহাত্তুরের সংবিধান রচনা করেছিল। এই সংবিধানের বলেই এতদিন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সেনাশাসন ক্ষমতায় বসেছে এবং এখনো টুকটাক সংস্কার করে এই সংবিধানের আলোকেই ভবিষ্যতে ক্ষমতায় বসতে চাচ্ছে। কিন্তু এই সংবিধান রাজনৈতিক ক্ষমতা বদলের পথ তৈরি করে দিলেও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণের পথ তৈরি করেনি। রাজনৈতিক দলগুলো প্রচার করে করে এটা প্রতিষ্ঠিত করেছে যে কেবলমাত্র স্বাধীনভাবে ভোট দেয়ার সুবিধা করে দেয়াই জনগণের আকাঙ্ক্ষা। কিন্তু জনগণের মৌলিক অধিকার সমূহ অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা, বাক স্বাধীনতা ও সুষ্ঠ বিচার ব্যবস্থার আকাঙ্ক্ষা পূরণের কোন সুনির্দিষ্ট ধারা সংবিধানে নেই।
৫ই আগস্টের ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন থাকলেও জনগণের শক্তিকে সংহত ও সংগঠিত রূপ দেয়া যায়নি। ফলে অভ্যুত্থানের নেতৃবৃন্দকে বার বার জনগণের স্বার্থ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সাথেও ঐক্যের কথা বলতে হচ্ছে। হয়ত এটাই এই অভ্যুত্থানের একটি প্রথম রাজনৈতিক ধাপ। আর হয়ত আমরাও পরবর্তী ধাপের আশায় নিরাশায় দুলতে থাকব।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৮
৫টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=আকাশে তাকিয়ে ডাকি আল্লাহকে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০১


জীবনে দুঃখ... আসলে নেমে
শান্তি গেলে থেমে;
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হই উর্ধ্বমুখী,
আল্লাহকে বলি সব খুলে, কমে যায় কষ্টের ঝুঁকি।

আমি আল্লাহকে বলি আকাশে চেয়ে,
জীবন নাজেহাল প্রভু দুনিয়ায় কিঞ্চিত কষ্ট পেয়ে;
দূর করে দাও সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

"ছাত্র-জনতার বেপ্লবের" ১৮ মাস পরে, আপনার ভাবনাচিন্তা ঠিক আগের মতোই আছে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৭



২০২৪ সালের পহেলা জুলাই "ছাত্র-জনতার বেপ্লব শুরু হয়, "৩৬শে জুলাই" উহা বাংলাদেশে "নতুন বাংলাদেশ" আনে; তখন আপনি ইহাকে ব্যাখ্যা করেছেন, ইহার উপর পোষ্ট লিখেছেন, কমেন্ট করেছেন; আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

×