somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভালো লাগা টিভি সিরিয়ালগুলো,রিভিউ উইথ ডাউনলোড লিঙ্ক- (পর্ব২) ''How I Met Your Mother

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১১ রাত ১০:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ফ্রেন্ডস শেষ হবার পর প্রায় দেড় বছর টিভি সিরিয়াল দেখা বন্ধ ছিলো। আসলে ফ্রেন্ডস এর সাথে তুলনা করার মত কিছু পাইনি। হটাৎ করে একদিন স্টার ওয়ার্ল্ড এ দেখলাম নতুন একটা এপিসোডের এড দেখাচ্ছে। নাম how i met your mother.নামটা খুব মজার লাগল। আইএমডিবি তে চেক করে কাহিনী পড়ে ফেললাম। স্টোরিটাও মজার লাগলো।
২০০৫-০৬ এর দিকে ইন্টারনেট এখনকার মত এতটা ফাস্ট ছিলনা। তাই রাইফেল স্কয়ারে গিয়ে ডিভিডি কিনে ফেললাম প্রথম সিজনের। তখনো জানতাম না এই সিরিয়ালের একটা ক্যরেক্টার হতে যাচ্ছে আমার সবচেয়ে প্রিয়। এমনকি এখন পর্যন্ত যত সিরিয়ালের যত চরিত্র দেখেছি তার মাঝে সবচেয়ে অসাম। যারা অলরেডি হাও আই মেট ইওর মাদার দেখেছেন তারা নিশ্চই বুঝে গেছেন কার কথা বলছি।
সে আলোচনায় যথা সময়ে আসা যাবে। আগে আপনাদের সাথে পরিচয় করি দেই সিরিয়ালটির।

পরিচিতিঃ

how i met your mother ইউএসের সিবিএস করপোরেশনের হাত ধরে যাত্রা শুরু করে ২০০৫ এর শেষের দিকে। প্রডাকশন হাউস ছিলো 20th century fox. ক্রেগ থমাস এবং কারটার বে ছিলো মুল আইডিয়াদাতা। অধিকাংশ এপিসোড পরিচালনা করেন পামেলা ফ্রিম্যান। তাদের নিজের জ়ীবনের উপর ভিত্তি করেই তারা স্টোরি দাড়া করান। তাদের বন্ধুত্ব, লাইফস্টাইল, প্রতিদিনকার যে সব কাজ এবং স্টুপিডিটি হাসির জন্ম দেয় তার
ই চিত্রায়ন করা হয়েছে how i met your mother এ। মুল চরিত্র টেড কে দাড়া করানো হয়েছে বে'র উপর বেস করে এবং থমাস এবং তার ওয়াইফ রেবেকার উপর বেস করে তৈরি করা হয়েছে মার্শাল এবং লিলির চরিত্র। প্রথমে নিজেদের স্টুডিওতে শুটিং করলেও পরে লাইভ অডিয়েন্সের সামনে সবগুলো এপিসোড ধারন করা হয়। মাঝখানে ২০০৭-২০০৮ এর দিকে 'রাইটারস গিল্ড অফ আমেরিকা স্ট্রাইকের' কারনে শোটি বন্ধ হয়ে গেলেও পরে ২০০৮ এর শেষে বিপুল জনপ্রিয়তার কারনে আবার শুরু হয়। মোট ৬ টা সিজনে প্রচার করা হয় ১৩৬ টি এপিসোড। ২০১১ এর নভেম্বরের দিকে আসছে সিজন ৭। আমি অনেক আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছি দেখার জন্য।


চরিত্রঃ

মূল চরিত্র ৫ জন ফ্রেন্ড। জস রেন্ডর অভিনয় করেছেন টেড মোসবি চরিত্রে, কবি স্মাল্ডার অভিনয় করেছেন রবিনের চরিত্রে, লিলি চরিত্রে অভিনয় করেছেন আমেরিকান পাই এর সেই কিউট পিচ্চি মেয়ে আলিসন হ্যনিগান(যদিও এখন আর পিচ্চি নাই), মার্শাল চরিত্রে অভিনয় করেছএ জেসন সেগাল। এবং সবচেয়ে জনপ্রিয় ও মজার বার্নি স্টিন্সন চরিত্রে অভিনয় করেছে নেইল প্যাট্রিক হারিস। কুমার এন্ড হ্যরল্ড ছবিতে নিজ নামে গেস্ট আপিয়ারেন্স এ ছিলো এই অভিনেতা।
টেড মোসবির কনফিউসিং, রবিনের স্মার্টনেস, লিলির চাইল্ডিশ, মার্শালের এথিকাল আর বার্নির প্লেবয় টাইপের চরিত্র কাহিনীতে যেমন ভার্সাটালিটি এনেছে তেমনি স্টোরিকে অনেক সমৃদ্ধও করেছে।

স্টোরিঃ

প্রথম এপিসোড শুরু হয় ২০৩০ সাল থেকে। পাস্ট টেন্স নেরেটিভে মুল চরিত্র টেড মোসবি তার ছেলে এবং মেয়েকে গল্প শোনানো শুরু করে কিভাবে তাদের মার সাথে পরিচয় হয়।এখান থেকেই নামকরন 'how i met your mother'.
সেই ঘটনা বলতে গিয়ে পর্যায়ক্রমে চলে আসে নানান কাহিনী। মার্শাল আর লিলি টেডের হাই স্কুল ফ্রেন্ড। স্কুল লাইফ থেকেই মার্শাল আর লিলি এঙ্গেজড। পারফেক্ট কাপলের উদাহরন দেখানো হয়েছে এই দুটি চরিত্র দিয়ে। অন্যদিকে টেড ছিল কিছুটা সরল প্রকৃতির ভালো মানুষ। সারাক্ষন কনফিউসড থাকে। নিজের ক্যরিয়ার এইমে সেটেল হতে পারলেও সেটেল হতে পারেনা কোন রিলেশনশিপে। অনেকগুলো এপিসডে আরেক চরিত্র রবিনের প্রতি তার ক্রাশ দেখানো হলেও পরের দিকের সিজনে তা ভেঙ্গে যায়।বুঝানো হয় মানুষের জীবনে অনেক সময়ে ইনফ্যাচুয়েশন আসে সত্যের মত করে।
২০০৫ সাল থেকে টেড তার গল্প শুরু করে। প্রথমে দেখনো হয় মার্শাল তার লং টাইম গার্লফ্রেন্ড লিলিকে প্রপোজ করার সিদ্ধান্ত নেয়। আর টেড তখন হটাৎ করেই উপলদ্ধি করে তার নিজেরো সেটেল হয়ার টাইম চলে এসছে। টেড খোজা শুরু করে তার ট্রু লাভ। তাকে সাহায্য(!) করে ফ্রেন্ড বার্নি(নেইল পাত্রিক হারিস)। বার্নি হচ্ছে বর্তমান আমেরিকান তরুনদের আইকন। অল টাইম স্যুট পরিহিত বার্নির জীবনের একমাত্র এম্বিশন নিউ স্যুট, ওয়ান গার্ল, ওয়ান ডেট, ওয়ান নাইট এন্ড ফরগেট ইট। প্রতিদিন নিত্য নতুন মেয়ে পটানোকে এক রকম শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে যায় বার্নি চরিত্রটি। অসাধারন ডায়ালগ আর ক্যরেক্টারাইজেশন বার্নি চরিত্রের মাধ্যমে how i met your mother
কে দেয় এক নতুন মাত্রা। এই অবস্থায় টেডের সাথে পরিচয় হয় রবিনের। প্রথম ডেটেই প্রেমে পড়ে জায় টেড। অন্যদিকে রবিন চরিত্রটি কিছুটা ক্যরিয়ার লাভিং এবং আন্সেটেল্ড। এই পাচ ফ্রেন্ডের জীবনের নানা দর্শন, কাজকর্ম আর চিন্তা ভাবনা আপনাকে দিবে নির্মল আনন্দ। প্রায় প্রতিটা ডায়ালগেই আপনি হাসি থামাতে পারবেন না। সবচেয়ে মজার ব্যপার হচ্ছে টেডের প্রতিটা ডেটেই আপনার মনে হবে এই বুঝি হতে যাচ্ছে টেডের হবু ওয়াইফ। কিন্ত না, এখন পর্যন্ত টেডের টেডের ছেলেমেয়েদের মা কে আড়ালেই রেখেছেন কাহিনীকার। হয়তো শেষ এপিসোডে এই পর্দা ফ্লাশ করবেন পরিচালক।


how i met your mother এর দুইটা বৈশিষ্ট অন্য সব সিটকম থেকে আলাদা করেছে সিরিয়ালটকে।
এক, প্রায় প্রতিটা এপিসডে জীবনের বাস্তবতার কিছু লেসন কে কেন্দ্র করে কাহিনী তৈরি করা হয়েছে। দেখতে দেখতে আপনি নিজেই ঢুকে যাবেন ক্যরেক্টারে। নিজের অজান্তেই চিন্তা করে উঠবেন, আরে তাইতো, আমাদের জীবনেওতো এমনটাই ঘটে। অটোমেটিক একটা কম্পারিজন চলে আসবে। এই টিভিশো আপনাকে নতুন করে কিছু জিনিস ভাবতে সাহায্য করবে।
দুই, বার্নি স্টিন্সন। অসাধারন চরিত্র। বার্নির জীবনাদর্শন আপনাকে হয়তো বলবে,জীবনটা এমন হলেও মন্দ হতো না। স্ক্রিপ্ট রাইটারের প্রশংশা না করলেই না। আমার প্রায়
ই মনে হয়, বার্নির মত একটা ফ্রেন্ড থাকলে মন্দ হত না। আরেকটা ব্যপার, বার্নি ব্যক্তিগত জীবনেও বেশ রসিক একজন মানুষ। সফল অভিনেতা, অস্কার, টনি, এমির মত অনুস্টহানের উপস্থাপক, আমেরিকান আইডল,সো ইউ থিঙ্ক ইউ কেন ড্যান্স এর অতিথি বিচারক এবং একজন গায়ক ও বটে। এখন পর্যন্ত আমার সবচেয়ে প্রিয় ক্যরেক্টার।বুঝতেই পারছেন আমি বার্নিকে নিয়ে বেশ অবসেসড।আসলে চার্লি শীনের(টু এন্ড এ হাফ মেন) পর এমন একজনকে পেলাম যে সফলভাবে নিজের যায়গা ধরে রেখেছে।

ছবিঃ বার্নি স্টিন্সন

এওয়ার্ডঃ

২০০৬ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত টানা এমি এওয়ার্ড জিতে নেয় বিভিন্য ক্যাটাগরিতে, ২০০৭,০৮ এ জিতে পিপলস চয়েস এওয়ার্ড, ২০১০ এ গল্ডেন গ্লোব পুরস্কার এবং আরো অনেক। এর মাঝে ১২টি পুরস্কার বার্নি একাই পায়।

এক নজরে how i met your motherঃ


Genre Sitcom
Format Narrative in past tense
Create by Carter Bays
Craig Thomas
Directed by Pamela Fryman (most episodes)
Starring Jason Segel
Cobie Smulders
Neil Patrick Harris
Alyson Hannigan
Narrated by Bob Saget (uncredited)
Opening theme "Hey Beautiful" by The Solids

Language(s) English
No. of seasons 6
No. of episodes 136 (List of episodes)

Executive producer(s) Carter Bays
Pamela Fryman
Rob Greenberg
Craig Thomas
Camera setup Multi-camera
Running time 22 minutes
Production company(s) Bays & Thomas Productions
20th Century Fox Television

Original channel CBS

Original run September 19, 2005 – present


যারা দেখেননি আজি দেখা শুরু করে দিন। নিজের সেন্স অফ হিউমার,সেন্স অফ লাইফ কে ডেভেলপ করে নিন।
ডাউনলোড লিঙ্কঃ
সরাসরি দেখার জন্যঃ
প্রথম পর্বের লিঙ্কঃ Click This Link
...............................................................
হাসান মাহবুব। উনি নিজেও হয়তো জানেন না উনি কতটা শক্তিশালি লেখক। হাসান ভাইয়ের গল্পগুলো মনে হয় যেন আমার নিজের গল্প। খুব হিংসা হয় হাসান ভাইকে। ওনার মত গল্প লিখতে পারলে নিজেকে স্বার্থক মনে করতাম। এই পোস্ট আমাদের সবার প্রিয় হাসান ভাইকে উৎসর্গ করা হলো
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১২ দুপুর ১২:২৭
২১টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×