এখন কাউকেই চিনি না। তাই একটু কেমন জানি লাগছিল। ৮ই মে সকালে গিয়ে হাজির হলাম যাত্রার স্থান ফার্মগেটের বাটা বাজার এর সামনে। আশে-পাশে তাকাচ্ছি, ক্যামেরা হাতে কাউকে দেখা যায় কিনা। ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও নাকি ধান ভানে - সেকথা প্রমাণ করতেই মনে হয় একে একে চারজন পরিচিত ব্লগার এসে হাজির। প্রথমে এলো মাহমুদুল হাসান রুবেল। বাসে উঠার পর পেলাম ইয়ামিন, যীশু আর ফয়সলকে।
আগে বলা হয়েছিল জনপ্রতি ২০০-২৫০ টাকা লাগতে পারে। বাসে উঠার পর সাদমান জানালো ২৫০ টাকা করে দিতে হবে। কথা বলতে বলতে আর শুনতে শুনতে একসময় এসে হাজির হলাম জমিদার বাড়ীতে। মূল গেটের উপর ৪টা সিংহের মূর্তি। তবে সিংহের লেজটা মনে হলো বানরের।
প্রথম সারিতে প্রায় একই রকমের ৪টি বাড়ী। মাঝখানের ২টি একদম ফিটফাট, রং করা। আর দুই পাশের ২টি জীর্ণ-শীর্ণ। প্রতিটাই ৩ তলা। এগুলো সব বন্ধ। প্রবেশাধিকার নেই। রং করা বাড়ী দু'টিতে জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা হবে। পিছনের সারিতে আরো ৩টি বাড়ী, যার দু'টিতে আমাদের ঢুকতে দেয়া হয়েছিল। সবগুলোই ভাঙ্গাচোরা। পিছনে প্রায় পানি শুন্য একটা পুকুর, যার অনেকগুলি সিড়ি ওয়ালা ঘাট আছে। পুকুরের এক কোনায় একটা সুড়ঙ্গের মতো, শেষ মাথায় গ্রিল আছে। এটা যে কিসের জন্য জানতে পারি নাই। তবে আমার ব্যক্তিগত ধারণা আশে-পাশের কোন নদী বা খালের সাথে সংযোগ ছিল এই সুড়ঙ্গের। পুকুরের একেবারে শেষ মাথায় এক সারি গণ শৌচাগার। এই ব্যাপারটি বেশ ইন্টারেষ্টিং।
যাওয়ার পর যে যার মতো ছবি তোলার কাজ শুরু করলো। সাথে আসা মহিলা আর পূরুষ ফটোগ্রাফারদের কয়েকজন আবার মডেল হিসেবে পোজ দিচ্ছিলেন। দুপুর বেলা ঢাকা থেকে আসলো চিকেন বিরিয়ানী আর পানি। খাওয়া দাওয়ার পর আবার শুরু হলো ফটোগ্রাফি। এসময় কয়েকজনকে দেখলাম ষ্ট্রোব লাইট নিয়ে বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্ট করতে।
বিকেল ৫টার দিকে যাত্রা শুরু হলো ঢাকার উদ্দেশ্যে। এক মহিলার কথা একটু বলতেই হয়। মহিলাকে বাচাল বলবো কিনা বুঝতেছিনা। বেশ উচ্চস্বরে কথা বলে আর কথার আগে-পিছে হাহা-হিহি তো আছেই। সকালে যাওয়ার সময় শুনলাম বলতেসে - জান আমার না একমাস ছুটি। বস এর ডিভোর্স হয়েছে তাই। বিকেলে ঢাকা আসার সময় আবার সেই একই কাহিনী - বসের ডিভোর্স হয়েছে। তাই একমাস ছুটি পাইছি। কি মজা। আর আমার কেবল কানে বাজছিল বাংলালিংকের সেই এডটা - ইস! কতো কথা বলেরে।
তবে সব মিলিয়ে চমৎকার কাটলো একটা দিন।
টিটিএল - বালিয়াটি জমিদার বাড়ী ফটোওয়াক - ফ্লিকার
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই মে, ২০১০ রাত ২:২০