somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আলোর মিছিল এবং...

২৬ শে মার্চ, ২০০৯ ভোর ৬:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পঁচিশে মার্চের কালো রাতে শহীদ স্মরণে এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে আয়োজিত হয় আলোচনা সভার। সভা শেষে ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটির নেতৃত্বে মোমবাতি হাতে সবাই আলোর মিছিল নিয়ে যায় জগন্নাথ হলের দিকে যেখানে আছে কালরাত্রিতে নিহত শহীদদের গণকবরে নির্মিত সৌধ। সেখানে আলো জ্বেলে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা, ভালোবাসার চিহ্ন রেখে এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের শপথ নেয়ার মাধ্যমে মিছিলটি শেষ হয়। `স্লোগান ৭১` এর আয়োজনে সেখানে একাত্তরের সেই রাতের আবহ তৈরি করা হয় যার মাধ্যমে সবাই যেন ফিরে যায় সেই কাল রাতে।
পুরো আয়োজনের কয়েকটি বিষয় যেগুলো এক অর্থে এই আয়োজনের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করেছে বলে আমার মনে হয়েছে।
শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে মিছিলটি সারিবদ্ধ ভাবে সমবেত কণ্ঠে দেশাত্ববোধক গান গাওয়ার মাধ্যমে শুরু হলেও কয়েক কদম যেতে না যেতেই সবাই বিক্ষিপ্ত হয়ে এলোমেলোভাবে হাঁটতে শুরু করে। কেউ কেউ এমনকি নিজেদের মাঝে ঊচ্চঃস্বরে গল্প করতে শুরু করে!
একটু সামনে যেতেই মিছিলের মাঝ থেকে স্লোগান দেয়া শুরু হয় `জয় বাংলা` বলে। পুরো মিছিলের মাঝে জনাকতক মানুষের একটি বিশেষ দল শ্লোগান দিতে থাকে এবং বাকিদের কেউই এতে গলা মেলায়নি। মিছিলের পরে,কেউ কেউ মিছিলের মাঝেই এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে।
মিছিলে মধ্যবয়স্ক বাবার হাত ধরে হাঁটছিলো একটি মেয়ে। সে এসেছিলো আলোর মিছিলে অংশ নিতে। কিন্তু আমাদের তথাকথিত সমাজ তাকে উপহার দেয় তার অনেক কালো দিকের একটি।
তাঁরা হাটছিলো মিছিলের একপাশ দিয়ে।কিছুপরে চার-পাঁচজন ছেলে তাঁদের পিছনে হাঁটতে শুরু করে। তাঁরা পুরোটা সময় তাদের পিছু লেগে থাকে এবং বাজে সব মন্তব্য করতে থাকে।
............................................................................................................................................................................................................।



ঘটনাটার সমাপ্তি দু`রকম হতে পারে:

সমাপ্তি ১: মেয়েটি তাঁর বাবার হাত ধরে মুখ নিচু করে হাঁটছে। তাঁর চোখের কোণে নোনা ছবি।সমাজের অন্ধকার তাঁর মুখে এঁকেছে নোনা ছবি।
মেয়েটির বাবাও হাঁটছেন কিন্তু অপমান আর গ্লানি তাঁকে বারংবার থমকে দিচ্ছে। এ অপমান ব্যার্থতার। এ গ্লানি দেশকে স্বাধীন করার। তিনি পারেননি আলোর ছোঁয়ায় সব অন্ধকার দুর করতে।তিনি পারেননি।

সমাপ্তি ২:
বাবা শান্ত অথচ দৃঢ় পায়ে এগিয়ে চলেছেন সামনে, সন্তানের হাত ধরে। আর একবার, আরো একবার তিনি পেরেছেন অগ্নি শিখায় সকল অশুভকে পুড়িয়ে সময়কে শুদ্ধ করতে। তিনি তাঁর এবং আরো লাখো সন্তানের পথকে আরো একবার আলোকিত করতে। মেয়েটি হাঁটছে বাবার হাত ধরে, যে হাত তাঁর আশ্রয়, তাঁর শক্তি। মোমের আলো তাঁর চোখে মুখে পরম মমতায় এঁকে দিচ্ছে স্বাধীনতার অপূর্ব, মায়াময় ছবি।

...........প্রিয় পাঠক, স্বাধীনতার সূ্র্য সকালে সমাপ্তিটা বেছে নেয়ার দায়িত্ব আপনাদের কাছেই রইল।।
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে কোন প্রজন্ম সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত? ১৯৭১ থেকে একটি সংক্ষিপ্ত ভাবনা

লিখেছেন মুনতাসির, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৩

বাংলাদেশে দুর্নীতির প্রশ্নটি প্রায়ই ব্যক্তি বা দলের দিকে ছুড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু একটু গভীরে গেলে দেখা যায়, এটি অনেক বেশি প্রজন্মভিত্তিক রাজনৈতিক - অর্থনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে যুক্ত। ১৯৭১ এর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×