somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইসলামী বইঃ তিনটি মৌলনীতি ও তার প্রমাণ পঞ্জি , ২/৩

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১১ রাত ২:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পূর্বের পোষ্ট http://www.somewhereinblog.net/blog/chablog

মূলঃ মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওয়াহ্হাব
অনুবাদঃ মুহাম্মাদ ইব্রাহীম



الأصول الثلاثة
তিনটি মৌল নীতি


যদি তোমাকে জিজ্ঞাসা করা হয় সেই তিনটি মৌল নীতি কি যা প্রত্যেক মানূষেরই জানা অবশ্য কর্তব্য তুমি উত্তর দেবে যে, বিষয় তিনটি হলঃ
(১) প্রত্যেক মানুষকে তার প্রভু সম্পর্কে জানা, (২) তাঁর দ্বীন বা জীবন বিধান এবং (৩) তাঁর নবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কে জানা।

الأصل الأول
প্রথম মৌল নীতি


প্রভু সম্পর্কে জ্ঞানঃ যদি তোমাকে জিজ্ঞাসা করা হয়, “তোমার প্রভু কে?” তা হলে বলঃ সেই মহান আল্লাহ্ যিনি আমাকে ও অন্যান্য সকল সৃষ্টি জীবকে তাঁর বিশেষ নে’য়ামতসমূহ দ্বারা লালন পালন করেন। তিনি আমার একমাত্র প্রভূ, তিনি ব্যতীত আমার অন্য কোন মা’বুদ নেই। এর সমর্থনে পবিত্র কুরআনের প্রমাণ হচ্ছেঃ
اَلْحَمْدُ لِلّهِ رَبِّ الْعالَمِيْنَ
আয়াতের অর্থঃ
“যাবতীয় প্রশংসা কেবল আল্লাহরই জন্য যিনি বিশ্ব চরাচরের পালনকর্তা।” (সূরা আল- ফাতেহাঃ১)


আল্লাহ ছাড়া সব কিছুই হচ্ছে তাঁর সৃষ্ট ব¯ত্তু এবং আমিও সেই সৃষ্ট জগতের একটি অংশ মাত্র। আর যখন তুমি জিজ্ঞাসিত হবে, “তুমি কিসের মাধ্যমে তোমার প্রভুকে চিনেছ?”
তথন তুমি উত্তর দেবে, তাঁর নিদর্শন সমূহ ও তাঁর সৃষ্টিরাজির মাধ্যমে (আমি আমার প্রভুকে চিনেছি)। তাঁর নিদর্শন সমূহের মধ্যে রয়েছে দিবা-রাত্রি, রবিশশী আর তাঁর সৃষ্ট ব¯ত্তু সমূহের মধ্যে রয়েছে সপ্ত আকাশ, সপ্ত যমীন এবং যা কিছু তাদের ভিতরে এবং যা কিছু এতদুভয়ের মধ্যস্থলে রয়েছে।

কুরআন থেকে প্রমাণ
وَمِنْ آياتِهِ الَّيْلُ وَالنَّهارُ وَالشَّمْسُ وَالْقَمَرُ لاَ تَسْجُدُوا لِلشَّمْسِ وَلاَ لِلْقَمَرِ وَاسْجُدُوْا لِلّه الّذِي خَلَقَهُنَّ إِنْ كُنْتُمْ إِيَّاهُ تَعْبُدُوْنَ.
আয়াতের অর্থঃ
“আর (দেখ) তাঁর নিদর্শন সমূহের মধ্যে রয়েছে রাত্রি ও দিন, সূর্য ও চন্দ্র। তোমরা সূর্যকে সাজ্দাহ করবে না, চন্দ্রকেও নয়। বরং সাজ্দাহ করবে একমাত্র সেই আল্লাহকে যিনি ঐ সবকে সৃষ্টি করেছেন, যদি তোমরা একমাত্র তাঁরই ইবাদত করতে ইচ্ছুক হও।”(সূরা আল-হা-মীম সাজ্দাহ্ঃ ৩৭)


আরও প্রমাণঃ
إِنَّ رَبَّكُمْ اللهُ الَّذِيْ خَلَقَ السَّمَواتِ وَالْأَرْضَ فِيْ سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَواى عَلَى الْعَرْشِ يُغْشِى الَّيْلَ النَّهاَرَ يَطْلُبُهُ حَثِيْثًا وَّالشَّمْسَ وَالقَمَرَ وَالنُّجُوْمَ مُسَخَّراتٍ بِأَمْرِه أَلاَ لَهُ الخْلْقُ وَالْأْمْرُ تَبارَكَ اللهُ رَبُّ الْعالَمِيْنَ.
আয়াতের অর্থঃ
“নিশ্চয় তোমাদের প্রভু-প্রতিপালক হচ্ছেন সেই আল্লাহ যিনি আকাশ ও পৃথিবীকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তিনি আরশের উপর আরুঢ় হয়েছেন। তিনি রজনীর দ্বারা দিবসকে সমাচ্ছন্ন করেন, যে মতে তার ত্বরিৎ গতিতে একে অন্যের অনুসরণ করে চলে। আর (সৃষ্টি করেছেন) সূর্য, চন্দ্র ও নক্ষত্ররাজিকে স্বীয় নির্দেশের অনুগত রূপে (জেনে রাখো!) সৃষ্টি করার ও হুকুম প্রদানের মালিক মুখতার একমাত্র তিনিই। সর্বজগতের অধিস্বামী সেই আল্লাহ মহা পবিত্র।”(সূরা আল-আ’রাফঃ ৫৪)
তিনি আমাদের একমাত্র প্রভু, তিনিই আমাদের উপাস্য।
এ প্রসংগে কুরআনের ঘোষণাঃ
يآيُّهَا النَّاسُ اعْبُدُوا رَبَّكُمُ الَّذِي خَلَقَكُمْ وَالَّذِيْنَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُوْنَ. الَّذِيْ جَعَلَ لَكُمُ الأَرْضَ فِراشاً وَّالسَّماءَ بنَِاءً وأنزلَ مِنَ السَّمَاءِ مَاءً فأخْرَجَ بِهِ مِنَ الثَّمراَتِ رِزْقاً لَّكُمْ فَلاَ تَجْعلُوا لِلّه أنداَدً وَأنتُمْ تَعْلَمُون.
আয়াতের অর্থঃ
“হে মানব সমাজ! তোমরা দাসত্ব বরণ করবে (অর্থাৎ ইবাদত করে চলবে) সেই মহান প্রতিপালক-প্রভুর যিনি তোমাদেকে এবং তোমাদের পুর্ববর্তীদেরকেও সৃষ্টি করেছেন, তাহলে তোমরা সংযমশীল (ধর্মভীরু) হতে পারবে। যিনি তোমাদের জন্যে যমীনকে করেছেন শয্যা স্বরূপ, আস্মানকে ছাদ স্বরূপ। যিনি আকাশ হতে বৃষ্টি ধারা অবতীর্ণ করেন, অতপর এর দ্বারা উদ্গত করেন নানা প্রকার ফলশস্য তোমাদের উপ-জীবিকা হিসেবে। অতএব তোমরা কোন কিছুকেই আল্লাহর সমকক্ষ ও অংশীদার করোনা, অথচ তোমরা অবগত আছ।”(সূরা আল-বাকারাঃ ২১-২২)

ইবনে কাসীর বলেছেন, “এ সমস্ত জিনিসের যিনি সৃষ্টিকর্তা তিনিই ইবাদতের একমাত্র যোগ্য।”
ইবাদতের প্রকার সমূহ যা আল্লাহ তাআলা নির্দেশিত করেছেন তা হচ্ছেঃ
(ক) الإسلام( আল- ইসলাম)- আল্লাহর আনুগত্যে নিজেকে সমর্পণ করা।
(খ) الإيمان ( আল-ঈমান)- বিশ্বাস স্থাপন করা।
(গ) الاحسان (আল-ইহসান)- নিষ্ঠার সাথে কাজ করা। দয়া-দাক্ষিণ্য ও সহানুভূতি প্রদর্শন, উপকার সাধন করা।
(ঘ) الدعاء (আদ-দো’য়া) প্রার্থনা, আহবান।
(ঙ) الخوف (আল-খাওফ) ভয়-ভীতি।
(চ) الرجاء (আর-রাজা) আশা-আকাংখা।
(ছ) التوكل (আত্-তাওয়াক্কুল) নির্ভরশীলতা, ভরসা।
(জ) الرغبة (আর-রাগ্বাহ) অনুরাগ, আগ্রহ।
(ঝ) الرهبة (আর-রাহ্বাহ) ভয় ভীতি।
(ঞ) الخشوع (আল-খূশূ) বিনয়-নম্রতা।
(ট) الخشية (আল-খাশিয়াত) অমংলের আশংকা।
(ঠ) الإنابة (আল- ইনাবাহ) আল্লাহর অভিমুখী হওয়া, তাঁর দিকে ফিরে আসা।
(ড) الاستعانة (আল-ইস্তে’আনাত) সাহায্য প্রার্থনা করা।
(ঢ) الاستعاذة (আল-ইস্তে-আযা) আশ্রয় প্রার্থনা করা।
(ণ) الاستغاثة (আল-ইস্তেগাসাহ) নিরুপায় ব্যাক্তির বিপদ উদ্ধারের জন্য আশ্রয় প্রার্থনা।
(ত) الذبح (আয্-যাবাহ) আতœত্যাগ বা কুরাবানী করা।
(থ) النذر (আন্-নযর) মান্নত করা।


এগুলি এবং অন্যান্য যে পদ্ধতি সমূহের আদেশ ও নির্দেশ আল্লাহ দিয়েছেন সবকিছুই তাঁর সšত্তষ্টি বিধানের জন্যে, কেবলমাত্র তাঁর নিকটেই চাইতে হবে, অন্যের কাছে নয়। এর প্রমাণ হিসেবে কুরআনের ঘোষণাঃ
وأَنَّ الْمَساجِدَ لِلّهِ فَلا تَدْعُوا مَعَ الله أحَداً.
আয়াতের অর্থঃ
“আর সিজদার স্থানসমূহ একমাত্র আল্লাহর জন্যই নির্ধারিত। অতএব আল্লাহর সংগে কাউকেই আহবান করবে না।”(সূরা আল-জিনঃ ১৮)
ফলতঃ কেউ যদি উপরোক্ত বিষয়ের কোন একটি আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্য কারো জন্য সম্পাদন করে তবে সে মুশরিক ও কাফের রূপে পরিগণিত হবে।
এ সম্পর্কে কুরআন মাজীদ হতে প্রমাণঃ
وَمَنْ يَدْعُ مَعَ الِله إلهاً آخرَ لاَ بُرْهَانَ لَهُ بِهِ فإنَّمَا حِسَابُهُ عِنْدَ رَبِّهِ إنَّهُ لَا يُفْلِحُ الْكَافِرُوْنَ.
আয়াতের অর্থঃ
“যে ব্যক্তি এক আল্লাহর সাথে অন্য কোন উপাস্যকে আহবান করে, তার নিকট তার সমর্থনে কোনই যুক্তি প্রামাণ নেই তার হিসেব-নিকেশহবে তার প্রভুর কাছে, নিশ্চয়ই কাফের ও অবিশ্বাসী লোকেরা কখনই সফলকাম হতে পারবে না।” (সূরা মূ’মেনুনঃ ১১৭)
হাদীস হতে প্রমাণঃ
الدعاء مخ العبادة
দো’য়া বা প্রার্থনা হচ্ছে উবাদতের সারাংশ। এর সমর্থনে কুরআন হতে প্রমাণঃ-
وقَالَ رَبُّكُمْ ادْعُوْني أسْتَجِبْ لَكُمْ إنَّ الّذِيْنَ يَسْتَكْبِرُونَ عَنْ عِبَادَتِي سَيَدْخُلُونَ جَهَنّّمَ داخرِينَ.
আয়াতের অর্থঃ
“আর তোমাদের প্রভু বলেনঃ তোমরা সকলে আমাকেই একক ভাবে ডাকবে, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব, যারা অহমিকার বশে আমার বন্দেগী করা অস্বীকার করে, তারা তো জাহান্নামে প্রবেশ করবে অতিশয় ঘৃণিত অবস্তায়।”(সূরা মূ‘মেনঃ ৬০)
ভয়ঃ- এ প্রসংগে কুরআনের ঘোষণাঃ
فَلاَ تَخافُوهُمْ وَخَافُوْنِ إنْ كُنْتُمْ مُؤمِنيْنَ.
আয়াতের অর্থঃ
“অতঃপর তোমরা তাদের ভয় করবে না। বরং আমাকেই ভয় করে চলবে, যদি তোমরা প্রকৃত মু’মিন বা বিশ্বাসী হয়ে থাক। (সূরা আলে ইমরানঃ ১৭৫)
আশাঃ- এর দলীল হিসেবে কুরআনের ঘোষণাঃ
فَمَنْ كانَ يَرْجُوْا لِقاءَ رَبِّهَ فَلْيَعْمَلْ عَمَلاً صَالِحاً ولاَ يُشْرِكْ بِعِبادَةِ رَبِّهِ أحَداً.
আয়াতের অর্থঃ
“অতএব যে ব্যক্তি প্রভুর সাক্ষাৎ লাভের আশা-আকাঙ্খা পোষণ করে, সে যেন সৎ কর্মগুলো নিষ্ঠার সাথে সম্পাদন করতে থাকে। আর নিজ প্রভুর ইবাদতে অপর কাউকে শরীক না করে।” (সূরা কাহাফঃ ১১০)
নির্ভরশীলতাঃ এ বিষয়ে কুরআনের ঘোষণাঃ
وَعَلَى اللهِ فَتوَكَّلُوْا إنْ كُنْتُمْ مُؤمِنينَ.
আয়াতের অর্থঃ
“আর তোমরা একমাত্র আল্লাহর উপরেই নির্ভর করবে, যদি তোমরা প্রকৃত পক্ষে মু’মিন হও।” (সূরা মায়েদাহ্ ঃ ২৩)

আল্লাহ আরও বলেছেনঃ
ومَنْ يَتَوَكَّلْ عَلَى اللهِ فهُوَ حَسْبُهُ.
আয়াতের অর্থঃ
“আর যে ব্যক্তি সকল অবস্থায় একমাত্র আল্লাহর উপরই নির্ভরশীল হয়, তার জন্য তিনিই (আল্লাহ) যথেষ্ট।”(সূরা তালাকঃ ৩)
আগ্রহ ভয় মিশ্রিত শ্রদ্ধা ও বিনয়ঃ এ সম্পর্কে পবিত্র কুরআনের ঘোষণাঃ
إنَّهُمْ كانُوْا يُسَارِعُونَ في الخَيْرَاتِ و يَدْعُوْنَنا رَغَباً وَّرَهَبا وَكانُوا خَاشِعِيْنَ.
আয়াতের অর্থঃ
“নিশ্চয়ই এরা সৎকর্মে ত্বরিত ও সদা তৎপর ছিল। আর ভক্তি ও ভয় সহকারে আমাকে আহবান করতো এবং আমার প্রতি এরা বিনয়-নম্র।”(সূরা আম্বিয়াঃ ৯০)
অমংগলের আশংকাঃ এ ব্যাপারে কুরআন থেকে প্রমাণঃ
فلا تَخْشَوْهُمْ وَاخْشَوْنِي وَلِأُتَّمَ نِعْمَتِي عَلَيْكُمْ وَلَعَلَّكُمْ تَهْتَدُوْنَ.
আয়াতের অর্থঃ
“কদাচ তাদের ভয় করোনা, একমাত্র আমাকেই ভয় করে চল। যাতে করে তোমাদের প্রতি আমার নে’য়ামত সর্বতোভাবে পূর্ণ করে দিতে পারি, ফলে তোমরা (লক্ষ্যে পৌঁছার) পথ প্রাপ্ত হতে পারবে।”(সূরা আল- বাকারাঃ ১৫০)
নৈকট্যলাভের কামনা এবং কৃত পাপের জন্যে অনুশোচনাঃ
এ প্রসংগে পবিত্র কুরআনের ঘোষণাঃ
وَأنِيبُوا إلَى رَبِّكُمْ وأسْلِمُوا لَهُ مِنْ قَبْلِ أنْ يَأْتِيَكُمُ الْعذابُ ثُمَّ لاَ تُنْصرُونَ.
আয়াতের অর্থঃ
“আর তোমরা সকলে স্বীয় প্রভূর পানে ফিরে এস এবং তোমাদের উপর আযাব সমাগত হবার পূর্বেই তাঁর নিকট সর্বতোভাবে আতœ সমর্পণ কর, কেননা (আযাব আসার) পর তোমরা আর সাহায্য প্রাপ্ত হবে না।”(সূরা আল –যুমারঃ ৫৪)

সাহায্য প্রার্থনা সম্পর্কে প্রমাণঃ
¬¬¬¬ إيَّاكَ نَعْبُدُ وَإيّاكَ نَسْتَعِيْنُ.
আয়াতের অর্থঃ
“(হে আমাদের প্রভু), আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত করি আর একমাত্র তোমারই নিকট সাহায্য প্রার্থনা করি” (সূরা আল-ফাতেহাঃ ৪)
আর হাদীস শরীফে এসেছেঃ
إذَا اسْتَعَنْتَ فَاسْتَعِنْ بِاللهِ.
হাদীসের অর্থঃ
“যখন তুমি সাহায্য চাইবে তখন এবমাত্র আল্লাহর নিকটেই তা (বিনম্র ভাবে) চাইবে।”(আহমদ ও তিরমিযী)
আশ্রয় কামানা প্রসংগে কুরআনের ঘোষণাঃ
قُلْ أعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ * مَلِكِ النَّاسِ.
আয়াতের অর্থঃ
“বল, আমি বিশ্বমানবের প্রভু প্রতিপালক ও মানব মন্ডলীর অধিপতির নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি।”(সূরা আন-নাসঃ ১,২)
বিপন্ন ব্যত্তির আশ্রয় কামনাঃ এ প্রসংগে কুরআনের ঘোষণাঃ-
إذْ تَسْتَغِيْثُونَ رَبَّكُمْ فَاسْتَجَابَ لَكُمْ
আয়াতের অর্থঃ
“আারও (স্মরণ কর) যখন তোমরা (বিপন্ন অবস্থায়) তোমাদের প্রভু পরোয়ারদিগারের নিকট সাহায্যের জন্য আবেদন জানিয়েছিলে তখন তিনিই তোমাদের আবেদনে সাড়া দিলেন (উহা কবুল করলেন)। (সূরা আনফালঃ ৯)
আত্মত্যাগ ও কুরবানীঃ এই বিষয়ে পবিত্র কুরআনের ঘোষণাঃ-
قُلْ إنَّ صَلاَتِي وَنُسُكِى وَمَحْيَاىَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ * لَا شَرِيْكَ لَهُ وَبِذَلِكَ أُمِرْتُ وَأنَا أوَّلُ الْمُسْلِمِيْنَ.
আয়াতের অর্থঃ
(“হে রাসূল) বলে দাওঃ আমার নামায, আমার কুরবানী, আমার জীবন, আমার মরণ উৎসর্গকৃত বিশ্বজগতের প্রতিপালক আল্লাহর জন্যই। তাঁর কোনই শরীক নেই; এবং আমি এ জন্য আদিষ্ট্ আর আমিই হচ্ছি মুসলিমদের অগ্রণী। (সূরা আল-আন’আমঃ ১৬২-১৬৩)
হাদীস শরীফে এর প্রমাণঃ
لَعَنَ اللهُ مَن ذَبَحَ لِغَيرِ اللهِ.
“আল্লাহকে বাদ দিয়ে যারা অপরের নামে বলিদান করে আল্লাহ তাদের অভিশাপ দেন।”ঃ
মান্নতঃ পবিত্র কুরআনে এর প্রমাণঃ
يُوْفُوْنَ بِالنَّذْرِ وَيَخَافُونَ يَوْماً كانَ شَرُّهُ مُسْتَطِيْراً.
আয়াতের অর্থঃ
“তারা অংগীকার পূরণ করে আর সেদিনকে (কিয়ামত দিবসকে) ভয় করে চলে, যেদিনের বিপদ-আপদ হবে সর্বব্যাপী ও সর্বগ্রাসী।”(সূরা আদ-দাহারঃ ৭)




الأصل الثاني
দ্বিতীয় মৌল নীতি


প্রমানপঞ্জীসহ ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে পরিচয় ও জ্ঞান লাভ। আর তা হচ্ছেঃ এক অদ্বিতীয় আল্লাহর নিকট পূর্ণ আত্ম-সমর্পণ এবং অকুণ্ঠ নিষ্ঠার সংগে তাঁর আনুগত্য বরণঃ
আর সেই সংগে শির্কের কলূষ-কালিমা হতে মুক্ত ও বিশুদ্ধ থাকা। উহার তিনটি পর্যায় রয়েছেঃ
(ক) ইসলাম, (খ) ঈমান ও (গ) ইহসান।


المرتبة الأولى
প্রথম পর্যায়ঃ ইসলাম

ইসলামের স্তম্ভ হচ্ছে পাঁচটিঃ-
১) ‘আল্লাহ ব্যতীত নেই কোন মা’বুদ এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর রাসূল’- একথার সাক্ষ্য প্রদান করা।
২) নামায সুপ্রতিষ্ঠিত করা।
৩) যাকাত সঠিকভাবে প্রদান করা।
৪) রামাযান মাসে রোযাব্রত পালন করা।
৫) আল্লাহর ঘর যিয়ারত (হজ্জ) করা।
তাওহীদ সম্পর্কিত সাক্ষ্যদানের দলীল প্রমাণঃ
কুরআন হতেঃ
شَهِدَ اللهُ أنَّهُ لاَ إلَهَ إلاَّ هُوَ وَالْمَلاَئِكَةُ وَأُولُوا الْعِلْمِ قَائِماً بِالْقِسْطِ لاَ إلَهَ إلاَّ هُوَ الْعَزِيْزُ الْحَكِيْمُ.
আয়াতের অর্থঃ
“আল্লাহ ঘোষণা করেন, যে একমাত্র তিনি ব্যতীত সত্যিকার কোন উপাস্য নেই। আর ফিরিশতাবৃন্দ এবং ন্যায়নিষ্ঠ জ্ঞানবান ব্যত্তিগণ ঘোষণা করেন যে, মহাপরাক্রান্ত ও প্রজ্ঞাময় আল্লাহ ব্যতীত সত্যিকার কোন উপাস্য নেই।।”(সূরা আলে-ইমরানঃ১৮)

এর তাৎপর্যঃ- প্রকৃতপক্ষে তিনিই একমাত্র ইবাদতের যোগ্য। এর দু’টি দিক রয়েছেঃ একটি নেতিবাচক, অপরটি ইতিবাচক। ইকবাচক দিকটি এই যে, সেই একক প্রভু ছাড়া কোনই মা’বুদ নেই এর দ্বারা আল্লাহ ছাড়া অন্য সব কিছুর ইবাদত করা সম্পূর্ণরূপে নাকচ করা হয়েছে। দ্বিতীয় ইতিবাচক, এর দ্বারা ইবাদত দৃঢ়তার সংগে একমাত্র আল্লাহ’র জন্যই সাব্যস্ত করা হয়েছে। তাঁর রাজত্বে যেমন কোন অংশীদার নেই, তেমনি তাঁর ইবাদত ক্ষেত্রেও কোন অংর্শদার থাকতে পারে না।


পবিত্র কুরআন হতে এর জলন্ত প্রমাণ ও ব্যাখ্যা নিুরূপঃ
وإذْ قَالَ إبْراهِيْمُ لِأبِيْهِ وَقَوْمَهِ إِنَّنِي بَرَاءٌ مِمَّا تَعْبُدُوْنَ إِلاَّ الَّذِيْ فَطَرَنِي فَإنَّهُ سَيَهْدَيْنَ * وَجَعَلَها كَلَمَةً بَاقِيَةً فِي عَقِبِهِ لَعَلَّهُمْ يَرْجِعُوْنَ.
আয়াতের অর্থঃ
“এবং যখন ইব্রাহীম (আলায়হিস্ সালাম) নিজ পিতা ও নিজ সমপ্রদায়কে বলেনঃ তোমরা যে সব মূর্তির পূজা অর্চনা করছঃ আমি তা হতে সম্পূর্ণ মুক্ত আমি তাঁরই ইবাদত করি যিনি আমাকে পয়দা করেছেন আর তিনিই আমাকে সৎপথে পরিচালিত করবেন এবং ইবরাহীম এক চিরন্তন কলেমারূপে রেখে গেছেন তাঁর পরবর্তীদের জন্যে, যাতে তারা সেই বাণীর পানে ফিরে যেতে পারে।(সূরা আয্-যুখরুফঃ ২৬-২৮)

قُلْ يَأهْلَ الْكِتَابِ تَعَالَوْا إِلَى كَلِمَةٍ سَوَاءٍ بَيْنَنَا وَبَيْنَكُم أَلاَّ نَعْبُدَ إَلاَّ اللهَ وَلاَ نُشْرِكُ بِهِ شَيْئاً وَلاَ يَتَّخِذْ بَعْضُنَا بَعْضاً أَرْبَاباً مِنْ دُوْنِ اللهِ * فإنْ تَوَلَّوْا فَقُوْلُوا اشْهَدُوا بِأنَّا مُسْلِمُوْنَ.
আয়াতের অর্থঃ
“বল হে আহলে কিতাব! তোমরা এমন এক বানীর প্রতি আস যা আমাদের ও তোমাদের সমনীতি সরূপ। আমরা সকলে কদনুসারে অংগীকার করি যে, আমরা আল্লাহ ব্যতীত আর কারো ইবাদত করবো না, আমরা কোন কিছুই তাঁর শরীক করব না। আর আমরা একে অপরকে আল্লাহ ছাড়া কস্মিনকালে প্রভু বলে গ্রহন করব না, কিšত্তু তারা যদি এতে পরাম্মুখ হয়, তাহলে তোমরা (আহলে কিতাবদের) বলে দাও,- জেনে রাখো, আমরা হচ্ছি আল্লাহতে আত্মসমর্পিত মুসলিম ।”(সূরা আলে-ইমরানঃ ৬৪)
মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহ ‘আলায়হি ওয়া সাল্লাম যে আল্লাহর একজন (প্রেরিত) রাসূল তাঁর সাক্ষ্যদান সম্পর্কে কুরআন হতে অকাট্য প্রমাণঃ
لَقَدْ جَاءَكُمْ رَسُوْلٌ مِنْ أنْفُسِكُمْ عَزِيْزٌ عَلَيْهِ مَا عَنِتُمْ حَرِيْصٌ عَلَيْكُمْ بِالْمُؤمِنِيْنَ رَءُوْفٌ رَّحِيْمٌ.
আয়াতের অর্থঃ
“নিশ্চয় তোমাদের সমীপে সমাগত হয়েছেন তোমদেরই মধ্যহতে একজন রাসূল যাঁর পক্ষে দূর্বহ ও অসহনীয় হয়ে থাকে তোমাদের দুঃখকষ্টগুলি, যিনি তোমাদের জন্য সদা আগ্রহী ও উৎসুক। মু’মিনদের প্রতি যিনি চীর øেহশীল ও সদা করুণাপরায়ণ।”(সূরা আত্-তাওবাঃ ১২৮)
মুহাম্মদ আল্লাহর রাসূল এ কথার তাৎপর্য এই যে তিনি যা আদেশ করেন তা অনূসরণ করা, তিনি যে বিষয়ে সংবাদ প্রদান করেন তা সত্য বলে স্বীকার করা, আর যা নিষেধ করেন তা বর্জন করা এবং তাঁর আদেশ অনুযায়ী আল্লাহর ইবাদত করা।


আল্লাহর একত্ববাদ, নামায ও যাকাত সম্পর্কে ব্যাখ্যাঃ
এ সম্পর্কে কুরআনের জ্বলন্ত প্রমাণ ও ব্যাখ্যা নিুরূপেঃ-
وَمَا أُمِرُوا إِلَّا لِيَعْبُدُوا اللهَ مُخْلِصِيْنَ لَهُ الدِّيْنَ حُنَفَاءَ وَيُقِيْمُو الصَّلاَةَ وَيُؤْتُوا الزَّكَواةَ وَذَلِكَ دِيْنُ الْقَيِّمَةِ.
আয়াতের অর্থঃ
“এবং তাদের তো কেবল এ আদেশই দেওয়া হয়েছিল যে, তারা একনিষ্ঠ ভাবে আল্লাহর ইবাদত করে দ্বীন ইসলামকে খালেস করে নিবে কেবল আল্লাহর জন্য। আর নামায প্রতিষ্ঠিত করবে, যাকাত প্রদান করতে থাকবে। ব¯ত্ততঃ এটাই হচ্ছে সুদৃঢ় ধর্ম।”(সূরা আল-বাইয়্যেনাহঃ ৫)
রোযাব্রত সম্পর্কে কুরআনের ঘোষণাঃ
يآيُّهًا الَّذِيْنَ أَمَنُوا كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الذين من قبلكم لعلكم تتقون.
আয়াতের অর্থঃ
“হে মুমিনগণ, সিয়াম সাধনা তোমাদের উপর ফরয করা হয়েছে যেমনভাবে ফরয করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর, যেন তোমরা সংযমশীল হয়ে থাকতে পার।”(সূরা আল-বাকারাঃ১৮৩)

হজ্জের প্রমাণ সম্পর্কে কুরআনের ঘোষণাঃ
ولله على الناس حج البيت من استطاع إليه سبيلا ومن كفر فإن الله غني عن العالمين.
আয়াতের অর্থঃ
“এবং হজ্বের উদ্দেশ্যে সফরের সামর্থ রাখে যে ব্যক্তি তার জন্য আল্লাহর উদ্দেশ্যে কা’বাগৃহের হজ্ব করা অবশ্য কর্তব্য, কিšত্তু যদি কোন ব্যক্তি এ আদেশ অমান্য করে তা হলে (যেনে রেখ) আল্লাহ (শুধু সে কেন বরং) সমস্ত বিশ্বজগত হতেই বেনিয়ায বা অমুখাপেক্ষী।”(সূরা আলে-ইমরানঃ ৯৭)



المرتبة الثانية
দ্বিতীয় পর্যায় (ঈমান)

ঈমানের শাখা প্রশাখা সত্তরেরও অধিক। এর মধ্যে সর্বোচ্চ হচ্ছেঃ ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ মুখে উচ্চারণ করা। আর সর্বনিু হচ্ছে পথ থেকে কষ্টদায়ক ব¯ত্তু দূরে সরিয়ে দেয়া, আর লজজা শীলতা হচ্ছে ঈমানের শাখা সমূহের মধ্যে একটি শাখা।
أركانه ستة
ঈমানের রূকুন ছয়টি
যথাঃ (১) আল্লাহ। (২) ফিরিশতাকুল। (৩) আসমানী কিতাব সমূহ। (৪) রাসূলগণ। (৫) কিয়ামত দিবস ও (৬) তকদীর বা ভাগ্যের ভাল-মন্দের প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন করা।

এর সমর্থনে কুরআনের দলীলঃ
ليس البرّ أن تولوا وجوهكم قبل المشرق والمغرب ولكن البر من آمن بالله واليوم الآخر والملائكة والكتاب والنبيين وآتى المال على حبه ذوى القربى واليتمى والمساكين وابن السبيل والسائلين وفي الرقاب وأقام الصلاة وآتى الزكاة والموفون بعهدهم إذا عاهدوا والصابرين في البأساء والضراء وحين والبأس أولئك الذين صدقوا وأولئك هم المتقون.
আয়াতের অর্থঃ
“তোমরা পূর্ব অথবা পশ্চিম দিকে মুখ ফিরাবে এতে কোনই পূণ্য ও কল্যাণ নেই। বরং পূণ্যের অধিকারী হচ্ছে সেই ব্যত্তি যে আল্লাহ, কিয়ামত, ফিরিশতাকুল,কিতাবসমূহ ও নবীকুলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে, আর যে ব্যক্তি অর্থের প্রতি আসকিত থাকা সত্বেও আত্বীয় স্বজনদের, ইয়াতীমদের, মিসকীনদের, সাওয়ালকারী ভিক্ষুকদের এবং দাস-দাসীদেরকে র্অথদান করে, এবং যে ব্যক্তি নামায সুপ্রতিষ্ঠিত করে, যাকাত প্রদান করে এবং অংগীকার করলে তা পূর্ণ করে থাকে। অর্থ সংকটে, দূঃখ-দারিদ্রে ও রণবিভীষিকায় অবিচলিত থাকে এরাই হচ্ছে সেই সমস্ত লোক যারা সত্যপরায়ন, আর এরাই হচ্ছে ধর্মভীরু পরহেযগার।”(সূরা আল-বাকারাহ্ঃ ১৭৭)
তকদীর সমপর্কে কুরআনের ঘোষণাঃ
إنا كل شيء خلقنه بقدر
আয়াতের অর্থঃ
“নিশ্চয় আমি প্রতিটি জিনিসের তাকদীর নির্ধারণ করে সৃষ্টি করেছি।”(সূরা আল-কামারঃ ৪৯)


المرتبة الثالثة
তৃতীয় পর্যায় ইহসান

ইহসান-এর স্তম্ভ মাত্র একটি, সেটা হচ্ছে আল্লাহর ইবাদত করার সময় তুমি যেন তাকে দেখতে পাচ্ছ (এটা মনে করা) আর যদি তুমি দেখতে না পার তবে এ কথা মনে করে নিতে হবে যে, নিশ্চয় তিনি তোমাকে দেখছেন।
এর সমর্থনে কুরআনের ঘোষণা নিুরূপঃ
إن الله مع الذين اتقوا والذين هم محسنون.
আয়াতের অর্থঃ
“যারা সংযমশীল ও সৎকর্মপরায়ণ আল্লাহ তাদের সংগে রয়েছেন।”(সূরা আন্-নাহরঃ ১২৮)
আল্লাহ্ পাক আরও বলেছেনঃ
وتوكل على العزيز الرحيم * الذين يراك حين تقوم * وتقلبك في الساجدين * إنه هو السميع العليم.
আয়াতের অর্থঃ
“আর ভরসা কর সেই পরাক্রান্ত ও কৃপানিধানের উপর যিনি তোমাকে দেখেন যখন তুমি নামাযে দাঁড়াও আর যখন তুমি নামায আদায়কারীদের সংগে উাঠাবসা কর। নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞাতা।” (সূরা আশ্-শু’আরাঃ ২১৭-২২০)
আল্লাহ পাক আরও বলেনঃ
وما تكون في شأن وما تتلوا منه من قرآن ولا تعملون من عمل إلا كنا عليكم شهوداً إذ تفيضون فيه
আয়াতের অর্থঃ
“এবং তুমি (হে রাসূল) যে কোন পরিস্থিতির মধ্যে অবস্থান করনা কেন, আর তৎসম্পর্কে কুরআন হতে যা কিছু আবৃত্তি করনা কেন এবং তোমরা (হে জনগণ!) যে কোন কর্ম সম্পাদন করানা কেন আমি সেই সমস্তের পূর্ণ পর্যবেক্ষক হয়ে থাকি যখন তোমরা উহাতে প্রবৃত্ত হও।”(সূরা আল-ইউনূসঃ৬১)

এসম্পর্কে হাদীসের প্রমাণ হচ্ছে জিব্রীল ‘আলায়হিস্ সালাম এর এই সুপ্রসিদ্ধ হাদীসঃ-
হযরত ‘ওমর বিন খাত্তাব রাযিআল্লাহু আন্হু হতে বর্ণিত, তিনি বলেছেনঃ “একদা আমরা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলায়হি ওয়া সাল্লাম এর নিকট বসেছিলাম এমতাবস্থায় সেখানে মিশমিশে কালকেশ, ধবধবে সাদা পোষাক পরিহিত একজন মানুষ এসে উপস্থিত হলেন। ভ্রমণের কোন নিদর্শনই তার মধ্যে বিদ্যমান ছিলনা, অথচ আমরা কেউ তাকে চিনতে পারিনি। অতঃপর তিনি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলায়হি ওয়া সাল্লাম এর সম্মুখে হাঁটু গেড়ে বসলেন এবং হস্তদ্বয় তাঁর উরুদেশে রাখলেন, এরপর বললেন, হে মুহাম্মদ! আমাকে ইসলাম সম্পর্কে সংবাদ প্রদান করুন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাহ বললেনঃ
(১) “সাক্ষ্য প্রদান করা যে, আল্লাহ ব্যতীত নেই কোন সত্যিকার মা’বূদ এবং মুহাম্মদ সালাল্লাহু ‘আলায়হি ওয়া সাল্লাম তাঁর রাসূল।
(২) নামায সুপ্রতিষ্ঠিত করা।
(৩) যাকাত প্রদান কর্

(৪) রমযানমাসে রোযাব্রত পালন করা এবং
(৫) পথের সম্বল হলে আল্লাহর ঘর (কবা শরীফ) যিয়ারত করা।
আগšত্তক বললেনঃ আপনি ঠিক বলেছেন। তিনি নিজেই জিজ্ঞেস করছেন আবার নিজেই তার সত্যায়ন করছেন। এতে আমরা আশ্চর্য না হয়ে পারলাম না। অতঃপর তিনি বললেনঃ আমাকে ঈমান সম্পর্কে অবহিত করুন। নবী সাল্লাহল্লাহু ‘আলায়হি ওয়া সাল্লাম বললেন,ঃ (তা হলো এই যে,) আল্লাহ, ফিরিশতাকুল, কিতাব সমূহ, রাসূলগণ, শেষ দিবস এবং ভাগ্যের ভাল-মন্দের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা। এরপর আগšত্তক বললেনঃ আমাকে ইহসান সম্পর্কে সংবাদ দিন। উত্তরে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলায়হি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ যখন তুমি ইবাদতে লিপ্ত হবে, তখন তুমি, যেন আল্লাহকে স্বচক্ষে দেখছ একথা মনে মনে চিন্তা করতে হবে, আর যদি এটা সম্ভব না হয়, তবে নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাকে দেখছেন একথা মনে মনে ভাবতে হবে।
অতঃপর আগšত্তক বললেনঃ “আমাকে রোয কিয়ামত সম্বদ্ধে অবহিত করুন” নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলায়হি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ-
এ বিষয়ে জিজ্ঞাসিত ব্যক্তি জিজ্ঞাসাকারী অপেক্ষা অধিক জানে না।
এরপর আগšত্তক রোয কিয়ামতের নিদর্শন সমূহ জানতে চাইলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলায়হি ওয়া সাল্লাম উত্তরে বললেনঃ
যখন পরিচারিকা স্বীয় প্রভূর জন্ম দেবে, নগ্নদেহ ও নগ্ন পদ বিশিষ্ট ও জীর্ণ শীর্ণ পোষাক পরিহিত ছাগলের রাখালরা সুউচ্চ অট্রালিকায় বসবাস করবে, তখনরোয কিয়ামতের আগমন ঘটবে।
হাদীস বর্ণনাকারী বললেনঃ আগšত্তক পরক্ষণেই প্রস্থান করলেন্ এরপর আমরা কিছুক্ষণ নীরব নিস্তদ্ধ থাকলাম। অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলায়হি ওয়া সাল্লাম বললেন উনি হচ্ছেন জিব্রীল ‘আলায়হি ওয়া সাল্লাম, তোমাদের ধর্মীয় শিক্ষা প্রদানর্থে তোমাদের কাছে এসেছিলেন।

----------------বাকিটুকু পরবর্তী পোষ্টে http://www.somewhereinblog.net/blog/chablog/29304224
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১১ ভোর ৪:০২
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদিকে গুলি করলো কে?

লিখেছেন নতুন নকিব, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:২৬

হাদিকে গুলি করলো কে?

ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা ৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী রাজপথের অকুতোভয় লড়াকু সৈনিক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলিবিদ্ধ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জীবনের চেয়ে তরকারিতে আলুর সংখ্যা গণনা বেশি জরুরি !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:১৭


বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দেশবাসী একটা নতুন শব্দ শিখেছে: রুট ভেজিটেবল ডিপ্লোম্যাসি। জুলাই আন্দোলনের পর যখন সবাই ভাবছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইতিহাসের সেরা ম‍্যাটিকুলাস ডিজাইনের নির্বাচনের কর্মযজ্ঞ চলছে। দলে দলে সব সন্ত্রাসীরা যোগদান করুন‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৪:৪৪



বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ব নিকৃষ্ট দখলদার দেশ পরিচালনা করছে । ২০২৪-এর পর যারা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী দিয়ে দেশ পরিচালনা করছে । তাদের প্রত‍্যেকের বিচার হবে এই বাংলার মাটিতে। আর শুধুমাত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির হত্যাচেষ্টা: কার রাজনৈতিক ফায়দা সবচেয়ে বেশি?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১৮


হাদির হত্যাচেষ্টা আমাদের সাম্প্রতিক রাজনীতিতে একটি অশনি সংকেত। জুলাই ২০২৪ আন্দোলন-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের দ্বিধাবিভক্ত সমাজে যখন নানামুখী চক্রান্ত এবং রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অন্তর্কলহে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও আয়-উন্নতির গুরুত্বপূর্ন প্রশ্নগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×