সব শিক্ষিত দেশে, বড় বড় ইস্যুতে নালিশ করার একটা স্হান থাকে; আমেরিকাতে বিবিধ লেভেলের জনপ্রতিনিধি আছে, তাদের অফিস আছে, মানুষ সেখানে যেতে পারে, নালিশ করতে পারে; ব্যক্তির নালিশগুলো শুনেন জনপ্রতিনিধিরা। বেশী মানুষ নালিশ করলে, সেটার উপর পাবলিক শুনানী হয়, টাউনহল মিটিং হয়, নালিশ উপরের দিকে যেতে থাকে; শেষে উহা কংগ্রেস বা প্রসিডেন্ট অবধি পৌঁছতে পারে; স্বয়ং প্রেসিডেন্টকে লিখা যায়; সময় লাগলেও(২/১ মাস) প্রেসিডেন্ট'এর উত্তর পাওয়া যায়। আমেরিকার আরেক উপায় হলো, কোর্টে যাওয়া; কোর্ট অবস্হা বুঝে সপ্তাহ'খানেকের মাঝে শুনানী শুরু করবে। এই ব্যতিত বড় বড় বিষয়ে কংগ্রেস নিয়মিত শুনানীর ব্যবস্হা করে। সর্বশেষ স্হান: হাইকোর্ট, সুপ্রীমকোর্টও বড় বড় সমস্যা নিয়ে ফেডারেল ও ষ্টেইট গর্ভমেন্টগুলোকে সমাধান বের করার জন্য চাপ দিতে পারে।
বাংলাদেশে লোকেল গভর্মেন্ট'এর চেয়ারম্যান ইত্যাদি আসলে এত নীচু মানের লোকজন ইত্যাদি থাকে যে, ইহাদের কাছে কোন বিষয়ে নালিশ করতে গেলে, বরং বিপদ হওয়ার সম্ভাবনা আছে! আমার এলাকার এমপি'র কোন অফিস নেই, ঢাকাতে উনার বাসা আছে; বাসায় উনাকে পাওয়া যায় না। তবে, গ্রামে উনার বাড়ী আছে, উনি গ্রামের বাড়ীতে এলে দেখা করা সম্ভব, এবং মানুষজন দেখা করেন। কিন্ত, বদি'র বউ'এর মতো এমপি'র কাছে নালিশ করা কি বুদ্ধিমানের কাজ হবে?
১৯৯৬ সালের সরকারের সময়, শেখ হাসিনার সাথে পরিচিত ও উঁচু লেভেলের মানুষজন দেখা করার জন্য মাসে একদিন সময় ছিলো; কিন্তু এসব মানুষের সাহায্যের দরকার ছিলো না, বা নালিশের কিছু ছিলো না; সাধারণ মানুষ, যাদের কিছু বলার, কিংবা নালিশ করার কিছু ছিলো, তারা উনার চিল-কাউয়ার দল ভেদ করে অতটুকু পৌঁচতে পারতেন না। বর্তমানে, উনার সাথে সাধারণ মানুষের দেখা করার, বা নালিশ করার কোন সময়সুচি, বা নিয়ম নেই; বর্তমানে, উনার দলের লোকেরা ও ২/৪ জন নামকরা নাগরিক: গায়ক, অভিনেতা, লেখক ইত্যাদিরা দেখা করতে পারেন।
আমাদের প্রেসিডেন্ট'এর ক্ষমতা ও কাজকর্মের প্যাটার্ণ থেকে বুঝা যায় যে, উনি নাগরিকদের বড় বড় সমস্যা নিয়ে নালিশগুলো শুনতে পারতেন, ও সমাধান খুঁজতে পারতেন; সমাধান না করতে পারলেও, শান্তনা দিতে পারতেন; কিন্তু উনি ঐ ধরণের কোন ব্যবস্হা রাখেননি। উনি হয়তো এসব বিষয় বুঝার মত অভিজ্ঞ নন; কিন্তু বিশ্বে যা ঘটছে, উনার জানার কথা। উানর একটা সমস্যা হতে পারে, উনি পার্টি থেকে সিলেকটেড; ফলে, হয়তো, বড় পোষ্টে থাকলেও কলকাঠি উনার হাতে নেই।
দেশের প্রেসিডেন্টকে নিজের মতো করে কাজ করতে দেয়া, ও দলের প্রভাবের বাহিরে রাখার একটা উপায় হলো, জনভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। কিন্তু সমস্যা হলো, শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ তা করতে দেবে না সহজে! সমস্যার ফয়সালা হোক না হোক, রাষ্ট্রে, নালিশ করার মতো একটা স্হান থাকার দরকার!
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জুলাই, ২০১৯ রাত ১২:৩৬