পেছনে যা কারণ থাকুক না কেন, শেখ হাসিনা জাতির টাকায় পদ্মাসেতু করার সিদ্ধান্ত নেয়টা সঠিক ছিলো; কিন্তু সাথে সাথে একটা বড় ভুল করেছেন, সেতু করার দায়িত্বটা চীনাদের দিয়ে; সেতু করার জন্য দেশে একটা কনসোর্টিয়াম করার দরকার ছিলো: এতে সরকারী, মিলিটারী ইন্জিনিয়ারেরা থাকতেন, সাথে বেসরকারী খাতের নামকরা ইন্জিনিয়ার ও ইন্জিনিয়ার্স এসোসিয়েশন থেকে অভিজ্ঞ ইন্জিনিয়ার ও বুয়েটকে নেয়ার দরকার ছিলো। আমাদের টেকনোলোজী ও টুলস ছিলো না, এগুলো কেনা যেতো, ভাড়া নেয়া যেতো। এরপর বিদেশী ২/৪ জন অভিজ্ঞ সেতু ডিজাইনার, ফিল্ড ইন্জিনিয়ার, প্রজেক্টলীড ও ইনস্পেকশানের লোকবল নিলে হতো।
যাক সেটা হয়নি; এখন থেকে সরকারের উচিত হবে, বড় প্রজেক্টগুলো এককভাবে দেশী/বিদেশী কাউকে না দিয়ে সরকারী কনসোর্টিয়াম ও প্রাইভেট কোম্পানীর মাধ্যমে করা, পরিমাণ মতো বিদেশী প্রজেক্টলীড নেয়া; এতে দেশীয় ইন্জিনিয়ারেরা কাজ শিখবেন ও ক্রমেই দেশীয় টেকনোলোজী গড়ে উঠবে। পদ্মাসেতুতে যেসব টেকনোলোজী ব্যবহৃত হচ্ছে, এগুলো আমাদের লোকেরা ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছে না, আমাদের লোকেরা দর্শক ব্যতিত কিছুই নয়।
দেশের বাজেটে দেখা যায় যে, উন্ময়নের জন্য বিপুল টাকা রাখা হয়; টাকার সংখ্যা ও মিনিষ্ট্রিগুলোর লোকবল, তাদের অভিজ্ঞা, দক্ষতা দেখলে মনে হয়, এত টাকা খরচ করার মতো জনবলও তাদের নেই; ফলে, ঘোষিত প্রজেক্টগুলো সময় মতো শুরুই করতে পারে না। এখন কিছু কনষ্টাকশন কাজ মিলিটারী করছে; মিলিটারী কিন্তু বাহিরের লোকজনকে নেয়ার কথা নয়; ফলে, তাদের অভিজ্ঞতা সরকারী কিংবা প্রাইভেটের লোকেরা শেয়ার করতে পারছে না; মিলিটারী যেসব টেকনোলোজী কিনে, ওগুলো বিনা ব্যবহারে পড়ে থাকলেও কেহ সেগুলো ব্যবহার করতে পারবে না। এইজন্য সরকার নতুন উদ্যমী ইন্জিনিয়ারদের নিয়ে ছোট ছোট গ্রুপ করে, মিলিটারী ও প্রাইভেটের সমন্ময় করে বড় বড় প্রজেক্টগুলো করা উচিত।
দেশের কাজ বিদেশীরা করছে চড়া দামে, আর দেশের মানুষ বিদেশে গিয়ে সস্তা দামে শ্রম বিক্রয় করছে; দু'টোতেই আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি; এভাবে অর্থনীতি চলতে পারে না; রেমিট্যান্সের টাকর একাংশ যদি বাহিরের লোকেরা নিয়ে যায়, আরেক অংশ যদি রিজার্ভে চলে যায়, আমরা এই চক্র থেকে বের হতে পারবো না। আমাদের মানুষ বিদেশে আছে অনেক দীর্ঘ সময়, আমাদের জীবনযাত্রার মান কম, কিন্তু সেই তুলনায় আমাদের নতুন গ্রেজুয়েটরা বেশী বেকার, ইহার সমাধান খোঁজা দরকার।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:৪৫