আমেরিকান রাজনীতিতে কাউকে কুপোকাত করতে হলে, তাকে 'সোস্যালিষ্ট' কিংবা 'কম্যুনিষ্ট' মতবাদের লোক বললেই কাজ করে। আসলে, আমাদের শেখ সাহেব সোস্যালিষ্ট হয়ে যাচ্ছে ভেবেই আমেরিকার সিআইএ উনাকে হত্যা করেছিলো; শেখ সাহেব মনেপ্রাণে ক্যাপিটেলিজমে বিশ্বাসী ছিলেন; দেশের অবস্হা খারাপ দেখে, উনি কিছু সোস্যালিষ্ট পদক্ষেপ নেয়ার কথা ভাবছিলেন।
আমেরিকার এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে (নভেম্বর ৩, ২০২০) জন্য ডেমোক্রেটিক প্রার্থী নির্বাচনের প্রসেস (প্রাইমারী ভোট) চলছে; ইহাতে আপাতত সামনে আছেন বার্ণি সেন্ডার্স নামে এক ইহুদী সিনেটর। আমেরিকানরা আজ অবধি কোন ইহুদীকে প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত করেনি; ফলে, বার্ণির ব্যাপারে এখনো কিছু বলা যাচ্ছে না। কিন্তু আমেরিকান অর্থনীতিকে ফ্রান্স, কানাডা বা সুইডেনের মতো করে সাজানো যায় কিনা, সেটা নিয়ে কথা বলছে বার্ণি সেন্ডার্স; ইহা ঠিক সোস্যালিজম নয়।
সোস্যালিষ্ট অর্থনীতির দার্শনিক, কার্ল মার্কসও ইহুদী ছিলেন; বেশীরভাগ বাংগালী উহা জানার কথা নয়; তারপরও বাংগালীরা মনেপ্রানে সোস্যালিজম বিরোধী। কার্ল মার্কস একটি বইতে উনার অর্থনৈতিক ভাবনাগুলোকে লিপিবদ্ধ করেছেন; বাংগালী শিক্ষিতদের শতকরা ৫০ জন বইটার নাম অবশ্যই জানেন না; এদের মাঝে আমাদের ব্লগার নুরু সাহেবও আছেন; এবং আমি সিওর যে, এবারের বই মেলায়, কোন ষ্টলে বইটি নেই। যাক, সেন্ডার্সও ইহুদী; মনে হয়, নিজ ধর্মের বড়ভাই কার্ল মার্কস নিয়ে ইনি ভাবনাচিন্তা করছেন।
এই সপ্তাহে, ক্যাপিটেলিষ্ট আমেরিকা কৌশলে একটা সংবাদ ছড়িয়ে দিয়েছে যে, মস্কো বার্ণিকে সাহায্য করার চেষ্টা করছে; আমেরিকানরা শিক্ষিত জাতি হলেও, মস্কো ও বেইজিং সম্পর্কে তাদের বেশ ভুল ধারণা আছে, তারা মনে করে যে, মস্কো ও বেইজিং মানেই সোস্যালিজম। আসলে, বর্তমান মস্কো ও বেইজিং মানবতা-বিরোধী, গলাকাটা ক্যাপিটেলিজমের রাজধানী।
বিশ্বের বেশীরভাগ তরুণদের মতো, আমেরিকার তরুণরাও কিছুটা সোস্যালিষ্ট মনোভাবের, এরা বার্ণির খরচ যোগান দিচ্ছে, এবং ওর মিটিং ইত্যাদিতে ভীড় করছে; গতবারের প্রাইমারীতেও এরা ছিলো, কিন্তু ভোটেরদিন উপস্হিত ছিলো না। এবার যেভাবে তরুণরা বার্ণিকে সাপোর্ট করছে, তারা যদি ভোট দেয়, বার্ণি হয়তো প্রার্থী হয়ে যাবে; সেটা বুঝা যাবে ৩রা মার্চ, সেদিন আমেরিকার সুপার টুইসডে প্রাইমারী।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪২