somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিউইয়র্কে খাবারের যেই অভাব, আফ্রিকা ও বাংলাদেশে কি হচ্ছে!

০৯ ই মে, ২০২০ সকাল ১১:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



করোনার ফলে নিউইয়র্ক শহরে খাবারের অভাব দেখা দিয়েছে; আশপাশের বেশীর ভাগ ছোট প্রোসারী বন্ধ হয়ে গেছে, সাপ্লাই নেই; কিংবা কর্মচারীর করোনা ধরা পড়েছিলো, হয়তো; পুলিশ বন্ধ করে দিয়েছে! বাংগালীদের অনেক গ্রোসারী পুলিশের নির্দেশে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আমি দীর্ঘ সময় নিউইয়র্কের গ্রামে কাজ করেছি; গ্রামগুলোতে ছোট গ্রোসারী নেই, আছে বড় সুপার মার্কেট ও ফারমার মার্কেট, এবং বেশ দুরে দুরে। আমি নিউইয়র্ক শহরে চাকুরী নিয়ে আসার পর, বাংগালী এলাকায় উঠেছি, যেখানে আমার এলাকার লোকজন আছেন, সেটা আড্ডার জন্য। বাংগালী দোকানে আমাকে খুব একটা যেতে হতো না, কাছেই গায়েনীজদের একটা পরিচিত দোকান ছিলো, সেটা এখন নেই। আমাদের পাশেই তুর্কীদের একটা বড় দোকান আছে; কিন্তু দোকানটার ভেতরে চীনাদের দোকানের মতো গিন্জী, এত বেশী জিনিষপত্র; উহা এখনো খোলা আছে, গিন্জী দেখে আমি ভেতরে যেতে চাই না। একটা সুপার মার্কেট আছে মাইল খানেক দুরে; করোনার মাঝে ওখানে রাত ২টায় একবার বাজার করেছি, তখনও প্রচুর লোকজন, ভেতরে প্রায় শ'খানেক মানুষ ছিলো।

সাপ্লাই না থাকাতে খাবারের কিছু কিছু আইটেমের দাম অনেক অনেক বেড়ে গেছে, শাক-সবজী ও ফলমুলের দাম আকাশচুম্বী; এই দেশের অনেক সিনিয়র সিটিজেনের আয় একেবারেই সীমিত, এরা কি করে যে চলছে কে জানে। নিউইয়র্কে অনেক অবৈধ ও সরকারী ন্যুনতম সাহায্য-পাওয়া বয়স্ক রিফিউজী (পুর্ব ইউরোপ থেকে) আছেন; এরা কিভাবে চলছেন, কে জানে। ভালো সময়েও এরা চলতে পারতো না। অনেক মানুষ নিউইয়র্ক ছেড়ে চলে গেছে।

কয়েক বছর আগের কথা, এক সুপার মার্কেটে বাজার করার সময় দেখি, ২ জন বয়স্ক মহিলা তাদের ভ্যানিটি ব্যাগে ক্যানড-ফিশ ঢুকাচ্ছে চুরি করে নিয়ে যেতে; আমি কৌশলে কাছে গিয়ে ইংরেজীতে বললাম যে, তোমাদেরকে ক্যামেরার মাধ্যমে সিকিউরিটি দেখছে, এগুলো রেখে তাড়াতাড়ি দোকান ত্যাগ কর। কথা শেষ হওয়ার আগেই মাঝারি বয়সের একজন আফ্রিকান আমেরিকান সিকিউরিটি এসে উপস্হিত; সে বললো,
-তোমারা যে যেখানে আছ, সেভাবে থাক, নড়বে না।
সে ওয়ারলেসে আরেকজনকে এখানে আসতে বলে, আমাকে বললো,
-এই মহিলা ২টি তোমার লোক, এদের চেন?
-না, আমার লোক নন।
-তা'হলে তুমি যাও।
আমি বললাম,
-এরা দরিদ্র মানুষ, খাবারগুলো রেখে এদেরকে চলে যেতে দাও।
-তোমাকেও পুলিশে দেবো, দাঁড়াও; এদের সাথে তুমিও জেলে যাবে।
-শোন, এরা দরিদ্র হলেও সাদা; এরা জেলে যাবার আগে, তোমার জেলে যাবার সম্ভাবনা ২০০ ভাগ।

এই সময়, আরকজন সিকিউরিটি এলো সে সাদা; সে যথাম্ভব সবকিছু দেখেছে ক্যামেরায়; প্রথম সিকিউরিটি মহিলাদের ব্যাগগুলো নিয়ে নিলো। পুলিশ কল করে কথা বলার শুরু করলো; আমি সাদা সিকিউরিটিটাকে বললাম,
-এরা গরীব মানুষ, পারলে পুলিশে দিওনা, আমি যাচ্ছি।
কালো মিয়া সাদাটাকে বললো,
-ওকে যেতে দিওনা, পুলিশ আসছে।
কালো মিয়াকে লক্ষ্য করে বললাম,
-আমার আগে তোমার যাবার সময় এসে যাবে; দেখ প্যারোল মেরোল ভংগ করে বসে আছ কিনা! পুলিশ এলে, তোমার আইডি দেখবে।

ভাবছি, এই ধরণের দরিদ্রদের কি হচ্ছে! তারপরও এটা নিউইয়র্ক শহর, খাবার না থাকলে বলার মতো যায়গা আছে, টেলিফোনে বলা যায়; টেলিফোনে জানালে মাঝ রাতেও এসে খাবার দিয়ে যাবে; কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ কাকে জানাবে, আফ্রিকার মানুষ কাকে জানাবে?
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই মে, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩৭
৩০টি মন্তব্য ২৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মানুষের জন্য নিয়ম নয়, নিয়মের জন্য মানুষ?

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৭



কুমিল্লা থেকে বাসযোগে (রূপান্তর পরিবহণ) ঢাকায় আসছিলাম। সাইনবোর্ড এলাকায় আসার পর ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি আটকালেন। ঘটনা কী জানতে চাইলে বললেন, আপনাদের অন্য গাড়িতে তুলে দেওয়া হবে। আপনারা নামুন।

এটা তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটা গাছ কাঠ হলো, কার কী তাতে আসে গেলো!

লিখেছেন নয়ন বড়ুয়া, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:০৬



ছবিঃ একটি ফেসবুক পেইজ থেকে

একটা গাছ আমাকে যতটা আগলে রাখতে চাই, ভালো রাখতে চাই, আমি ততটা সেই গাছের জন্য কিছুই করতে পারিনা...
তাকে কেউ হত্যা করতে চাইলে বাঁধাও দিতে পারিনা...
অথচ... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। কালবৈশাখী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:২৪



গত পরশু এমনটি ঘটেছিল , আজও ঘটলো । ৩৮ / ৩৯ সে, গরমে পুড়ে বিকেলে হটাৎ কালবৈশাখী রুদ্র বেশে হানা দিল । খুশি হলাম বেদম । রূপনগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×