সেকুলারিজমের ডেফিনেশন ও ব্যাখ্যা খুবই সহজ: রাষ্ট্র পরিচালনায় কোনভাবে ধর্মীয় ভাবনা-চিন্তা, নিয়ম-কানুন, ট্রেডিশন, ইত্যাদি প্রয়োগ করা যাবে না, রাষ্ট্র চালনার জন্য আধুনিক পলিটিক্যাল সায়েন্স, ফিলোসফি, পলিটিক্যাল ইকোনোমিক্স, সোস্যাল সায়েন্স থেকে উদ্ভুত তত্ব, ভাবনা ইত্যাদি প্রয়োগ করতে হবে; আধুনিক প্রজাতন্ত্রগুলো রাষ্ট্র পরিচালনার তত্বগুলো থেকে রূপরেখা (সংবিধান ) তৈরি করে, দেশের মানুষের সন্মতিক্রমে পাশ করায়ে, উহার সাথে সংগতি রেখে দরকারী আইন, নিয়ম-কানুন তৈরি করে, উহা নাগরিকদের ভালোর জন্য প্রয়োগ করবে। কঠিন কিছু নয়, সহজ ও লজিক্যাল ভাবনা।
শিক্ষিতদের মাঝে এসব নিয়ে আলোচনার একটি উপযুক্ত প্লাটফর্ম হচ্ছে ব্লগ; বাংলা ব্লগে হয়তো ৪/৫ লাখ বাংগালী বিবিধ সময়ে ব্লগিং করেছেন, এবং সেকুলারিজম একটি আলোচ্য বিষয় ছিলো সব সময়; এবং বেশীরভাগ ব্লগারেরা সেকুলারিজমের পক্ষে বক্তব্য রেখেছেন। যারা সেকুলারিজম'এর বিরোধীতা করেন, তাঁদের সঠিক কোন বক্তব্য থাকে না; তাঁরা মনে করেন যে, সেকুলারিজম মানে ধর্মহীন সমাজ। সেকুলারিজম ধর্মহীনতার পক্ষে বা বিপক্ষে কোন ভুমিকা রাখে না; ইহা আধুনিক পলিটিক্যাল সায়েন্স ও অর্থনৈতিক ভাবনার প্রয়োগ করে মাত্র।
কোন সেকুলার রাষ্ট্র ধর্মহীনতাকে সাপোর্ট করে না, ধর্মীয়রা রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে সবার সমান সুযোগ সুবিধা ভোগ করেন, ধর্মীয় হওয়ার কারণে কেহ আলাদা সুযোগ সুবিধা পাওয়ার কথা নয়, না কোনভাবে অধিকার বন্চিত হওয়ারও কথা নয়; এজন্য পশ্চিমের দেশগুলো সেকুলারিজম প্রয়োগ করেছে খুবই সহজে।
আমাদের অন্চলের ধর্মীয়রা মনে করেন যে, রাষ্ট্র পরিচালনায় ধর্মীয় অনুশাসন থাকতে হবে; কারণ, ধর্মীয় অনুশাসন মানুষের একাল ও পরকালের পথকে সঠিক রাখে। কিন্তু রাষ্ট্র কারো পরকালের ভার নেয়ার কথা নয়, রাষ্ট্র মানুষের নাগরিক জীবনের সুখ-শান্তির কাজে নিয়োজিত। রাষ্ট্রীয় তত্বগুলো লজিক্যাল ভাবনার উপর প্রতিষ্ঠিত, ধর্মীয় নিয়ম-কানুন লজিক্যাল ভাবনার উপর প্রতিষ্ঠিত নয়, এগুলো কতগুলো বিশ্বাস, যা মধ্যযুগের মানুষ রচনা করেছেন; মধ্যযুগের মানুষ আজকের মানুষের চেয়ে কম অভিজ্ঞ, কম-শিক্ষিত ও কম দক্ষ ছিলেন; আমরা তাদের মতো জীবনে ফেরত যেতে চাহি না, তাদের জীবন ছিলো অনেক কষ্টকর।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৫৭