somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভালোবাসায় তাঁকে শেষ বিদায়-------আব্দুর রব নাহিদ

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


তিনি ছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের বেশ কয়েক জন সাংবাদিকের সরাসরি কারিগর। আর তাঁর কাছ থেকে সাংবাদিক হিসেবে শিক্ষা নিয়ে বা তার হাত ধরেই উঠে এসেছেন অনেক সাংবাদিক। এখন তাদের অনেকেই ঢাকার বিভিন্ন গণমাধ্যমে কাজ করছেন, অনেকেই কাজ করেন রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে। আমরা যারা এখন বিভিন্ন গণমাধ্যমে কাজ করছি তাদের অনেকেই তার কাছে পেয়েছি সাংবাদিকতার শিক্ষার অনেক কিছু। এই ভাবেই চাঁপাইনবাবগঞ্জের সাংবাদিকতার অনেকের শিক্ষক সৈয়দ নাজাত হোসেনের বিদায় বেলায় কথা গুলো বলছিলেন তার সহকর্মীরা।
সাপ্তাহিক সোনামসজিদ পত্রিকার সম্পাদক জোনাব আলী বলেন, আমি যেখানে যায়, সেখানেই বলি, আমার সাংবাদিকতার গুরু সৈয়দ নাজাত হোসেন। তিনি একটি ঘটনা মনে করে বলেন, আমি আর নাজাত ভাই একবার ঢাকায় একটা টেলিভিশনে গিয়েছিলাম, তখন দেখি নাজাত ভাই যেখান দিয়ে যাচ্ছেন, সবাই উঠে দাঁড়িয়ে তাকে সালাম করছেন, বলছেন কেমন আছেন নাজাত ভাই, আমি অবাক হয়ে গেলাম, ঢাকার এতো মানুষ নাজাত ভাইকে চিনে!
চাঁপাইনবাবগঞ্জের আরেক সাংবাদিক বর্তমানে একটি বেসরকারি টেলিভিশনে কর্মরত শহীদুল হুদা অলক প্রায়ত সাংবাদিক নাজাত হোসেনের কাছে তার সাংবাদিকতার হাতে খড়ি উল্লেখ করে জানান, তার বাবা প্রয়াত শামসুল হুদা সাংবাদিকতা করতেন, সেই সুবাদে একদিন তাদের বাড়িতে তার বাবা’র সঙ্গে কথা বলার জন্য টেলিফোন করেছিলেন তখনকার সাপ্তাহিক নবাবগঞ্জ বার্তা’র সম্পাদক সদ্য প্রয়াত সৈয়দ নাজাত হোসেন। তিনি বলেন, ‘টেলিফোনটি রিসিভ করার পর কথার একপর্যায়ে তাকে বলেছিলাম, চাচা আপনার অফিসে আমি দুটো নিউজ দিয়ে এসেছিলাম’। পরে সপ্তাহে দেখি আমার নাম দিয়েই একটা নিউজটি প্রকাশ করেছে নবাবগঞ্জ বার্তা’। তিনি বলেন, সেই থেকেই সাংবাদিকতায় আগ্রহের জন্ম। আমি সাংবাদিক হওয়ার পথে হাটা শুরু করি’।
তাঁর (প্রয়াত সাংবাদিক সৈয়দ নাজাত হোসেন) হাত ধরেই আসলে আমাদের সমসাময়িক অনেকেই সাংবাদিকতায় এসেছে বলেন, সাংবাদিক অলক।
আরেক সাংবাদিক ইমতিয়ার ফেরদৌস সুইট বলেন-প্রায়ত সৈয়দ নাজাত হোসেন একজন উদার মনের সম্পাদক ছিলেন। এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ২০০০ সালে তিনি নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজে অনার্সের ছাত্র। ওই সময়ই তিনি সৈয়দ নাজাত হোসেন সম্পাদিত দৈনিক নবাবে শিক্ষানবিশ রিপোর্টার হিসাবে যুক্ত হন। ওই সময় তৎকালীন প্রধান মন্ত্রী চাঁপাইনবাবগঞ্জ সফরে আসলে, নিউজের গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে ওই নিউজটি সম্পাদক নিজেই কাভার করার সিদ্ধান্ত নেন। সেই সাথে আমাকেও বলেন-তুমিও নিজের মত করে নিউজটি কাভার করবা, এতে তোমার শিক্ষা হবে। আমার প্রয়োজনীয় পাসসহ সবকিছু তিনি সংগ্রহ করে দিলেন। আমি নিউজটি আমার মত করে কাভার করে, যখন পত্রিকা অফিসে আসলাম, তখন তিনি অনেকখানি নিউজ রেডি করে কম্পোজে পাঠিয়ে দিয়েছেন। পরে আমি আমার নিউজ টা লিখে যখন তাকে দিলাম তখন তিনি কম্পিউটার অপারেটরকে ডেকে বললেন, আমি যে নিউজটি দিয়েছি, সেই নিউজটি স্টপ করে দাও, সুইটের নিউজটা যাবে। বর্তমানে একটি বেসরকারি টেলিভিশনে কাজ করা এই সাংবাদিক, সেই দিনের স্মৃতি মনে করে বলেন, পরদিন আমার বাইনেমে লিড নিউজ প্রকাশ হলো, এতো উদার মনের মানুষ আমি আর দেখিনি।
সৈয়দ নাজাত হোসেন বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনা করতেন, বিশেষ করে বিভিন্ন অপরাধ, এর ধারা, তার সবসময় জানা থাকত। তিনি আরো বলেন, আমি যখন দৈনিক নবাবে কাজ করতাম তখন তিনি আমাকে সন্মানী দিয়েছেন, আমার জানা নাই, কেউ নবাবে বিনা পয়সায় কাজ করত, এমনকি শিক্ষানবিশ হিসাবেও যারা কাজ করছেন তাদেরও তিনি টোকেন মানি হলেও কিছু দিতেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জের মত জেলা শহরে তথা মফস্বল সাংবাদিকায় তখনই বিষয়গুলো ভেবেছেন। এককথায় বলতে পারি, তিনি একজন পেশাদার সাংবাদিক ছিলেন, ছিলেন একজন সাংবাদিক গড়ার কারিগর।
এই তিন জনই নয়, অনেকের তিনি গুরু শিক্ষক, তার সৃষ্টিশীলকাজ গুলো দেখে তরুন প্রজন্ম অনুপ্রাণিত হবে, কর্মক্ষেতে কাজে লাগাবে সেই শিক্ষা, এভাবেই বেঁচে থাকবেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের মত মফস্বল শহরের সাংবাদিকতার পথপ্রদর্শক, সৈয়দ নাজাত হোসেন।

সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৫১
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রোড জ্যাম ইন ভিয়েতনাম

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৭



আমার ধারনা ছিল জটিল জ্যাম শুধু বাংলাদেশেই লাগে । কিন্তু আমার ধারনা ভুল ছিল । ভিয়েতনামে এরকম জটিলতর জ্যাম নিত্য দিনের ঘটনা । ছবিটি খেয়াল করলে দেখবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেভাবে শরণার্থীরা একটি দেশের মালিক হয়ে গেলো!

লিখেছেন মাঈনউদ্দিন মইনুল, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৬



এবার একটি সেমিনারে প্রথমবারের মতো একজন জর্ডানির সাথে পরিচয় হয়। রাসেম আল-গুল। ঘনকালো মাথার চুল, বলিষ্ট দেহ, উজ্জ্বল বর্ণ, দাড়ি-গোঁফ সবই আছে। না খাটো, না লম্বা। বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। প্রতিটি সেশন... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×