somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

না

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১০ রাত ১:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অন্য পাঁচটা দিনের মতই ঘুম ভাঙ্গলো কাঁপুনিতে।
পূর্ব তুরস্কের ঘর বাড়ি কেঁপে উঠল ভূ-প্লেটের অস্বাভাবিক আচরনে আর এদিকে আমার কানের বিশ্রামরত ইয়ারড্রামসদুটিতে কাঁপুনি ধরাল রুম্মেটের মোবাইল সেটে বেজে ওঠা সর্বোচ্চ ভলুউমের রিংটোন|যাই ঘটুক; আমি ঘুমাব-ভেবে আমি যখন ভাঙ্গা ঘুমের ভবিস্যত নিয়ে চিন্তিত তখনই তুর্কমেন রুম মেট এর আবদারপূর্ণ আহ্বান আমাকে ভাবিয়ে তুলল। তুর্কিস এর সাথে ভাঙ্গা ভাঙ্গা দু একটা ইংরেজি মেশানো গলায় সে আমাকে যা বলতে চাইল তার মানে বুঝলাম তার সাথে আমার যেতে হবে।যাবার পথে আরও অনেক তুর্কমেন আর কিছু আজার্বায়জেনিদের সমাগম দেখলাম। ওদের অর্ধ বোধগম্য কিচিরমিচির এর সাথে নিজের সন্দেহ, আশংকা আর প্রত্যাশার রং মিশিয়ে যা পেলাম তা হলো TRT টিভি চ্যানেল এর অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করতে আমরা চ্যানেলটির স্টুডিওতে যাচ্ছি। এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহনকারীদের প্রত্যেককে ১০ (দশ) লিরা করে দেওয়া হবে শুনে মনের আশংকার শতভাগই লজ্জাতে পরিনত হলো! নিজেকে কেমন যেন দেশে রাজনৈতিক মিছিলমিটিং এ অংশগ্রহনকরার জন্য জড়ো হওয়া ১০ টাকার স্বেচ্ছাসেবক(!)দের মত লাগছিল!একেতো ১০ টাকার তুলনায় ১০ লিরা প্রায় ৫০ গুন বেশি ;তার উপর রাস্তায় গলাফাটানো স্লোগানের চাইতে মনোরম স্টুডিও তে বসে দু-চারবার তালি মারা তো অনেক সম্মানজনক ভেবেও নিজেকে যে একটু ছোট মনে হচ্ছিলনা তা আমি দাবি করতে পারিনা । যাইহোক, শেষ পর্যন্ত TRT চ্যানেল এর স্টুডিওতে গিয়ে হাজির হলাম LIVE প্রোগ্রাম শুরু হবার মিনিট ১৫ আগে । দেখলাম নাম লেখাতে তুর্কমেনদের লাইন পড়ে গিয়েছে। আমার মন সেই লাইনে দাঁড়াতে সায় দেয়না । আমি বসেই থাকি যতক্ষণ না কারাবানের (আমার রুমমেট) আমার কথা মনে পড়ে যায় ! কারাবানের চোখে আমার অনিচ্ছার চাইতে অপটুতাই বেশি করে ধরা পড়ে হয়ত। আমিও ওকে ভাবনা থেকে মুক্তি দেবার জন্য আমার নাম লেখাতে যাই ।আমার গায়ের রং আমার দেশ সম্বন্ধে প্রডাকশন বয় এর কৌতুহল জাগায়। এই ইচ্ছেটা প্রথম প্রথম আমি খুবই গুরুত্ব দিতাম ।বাংলাদেশ না চিনলে তাকে হিন্দুস্থান অথবা পাকিস্থান এর পাশে বলে কিভাবে চেনাব তা নিয়ে অনেক উত্কন্ঠিত হতাম ।
কিনতু এবার প্রডাকশন বয় যখন দ্বিতীয়বার দেশের নাম শুনতে চায় আমি তখন নিস্পৃহভাবে বাংলাদেশ বলেই থেমে যাই ।আমার রুমমেট পাশে দাঁড়িয়ে তাকে বোঝাবার চেষ্টা করতে থাকে যে আমি কুর্দিশ নই , ফরেইনার ! বাংলাদেশ বলে একটা দেশ আছে বলে সে মুটিমুটি নিশ্চিত ! বেচারা আমি রাগ দু:খ আর লজ্জায় মাটিতে মিশে যেতে থাকি আর ভাবতে থাকি বুটের তলায় যারা তোমাদের পিশতে পারে তারাই ক্ষমতাধর, টাকা দিয়ে যারা তোমাদের সংবিধান কিনতে পারে তারাই শক্তিশালী , যাদের কথায় তোমরা দিন রাত উঠে বসে রাজা রাজা ভাব নিয়ে থাক তারাই তো তোমাদের সব । তোমাদের স্বল্প জানার এ পৃথিবীতে শোষিত হও যাদের দ্বারা আর শাসন কর যে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোকে তাদের ছাড়া আর কি জান তোমরা ? আমার দেশের মানুষ ভাষার জন্য প্রাণ দিলেও বা কি আর তুরস্কের খেলাফতের পতনকালে গলা ফাটিয়ে কাঁদলেই কি ! তোমাদের কিছুতেই আসে যায়না ।আমার দেশের মানুষ ২০০ স্বাধীন দেশের লক্ষ জ্ঞানী মানুষের ভিড়ে নোবেল পুরস্কার জয় করে আনলেও না , তোমাদের প্রধানমন্ত্রী আরও ১০ বার আমার দেশ থেকে মুগ্ধ হয়ে ফিরে আসলেও না -তোমরা আমাদের চিনবেনা ।তাই আমি কোনো কথা বলিনা ।স্টুডিওর ভিতরে গিয়ে বসি । অনুষ্ঠান একসময় শেষ হয় । সবাই আবার লাইন এ দাঁড়িয়ে পড়ে । আমি এবার যাই না।বে লাইন এ থাকাতে আমার প্রাপ্য কারাবান নিয়ে আসে ! আমি এবার না বলি ! না বলিয়াই প্রমান করি আমি উহা চাই নাই ।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে নভেম্বর, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:১৫
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×