জয়-পরাজয়, উত্থান- পতন , ভালবাসা-বিরহ, প্রেম- বিদ্রোহ , খ্যাতি - তিরস্কার - এর সবকিছুই এক জীবনে দেখে গিয়েছেন তিনি। বাংলা গজল,হামদ নাত রচনায় যেমন তার জুড়ি নেই তেমনি শ্যামা সঙ্গীত রচনাতেও তিনি অনবদ্য। সেই নজরুলই আবার লিখেছেন
''মানুষেরে ঘৃণা করি’
ও’ কারা কোরান, বেদ, বাইবেল চুম্বিছে মরি’ মরি’
ও’ মুখ হইতে কেতাব গ্রন্থ নাও জোর ক’রে কেড়ে,
যাহারা আনিল গ্রন্থ-কেতাব সেই মানুষেরে মেরে,
পূজিছে গ্রন্থ ভন্ডের দল! মূর্খরা সব শোনো,
মানুষ এনেছে গ্রন্থ;-গ্রন্থ আনেনি মানুষ কোনো।
আদম দাউদ ঈসা মুসা ইব্রাহিম মোহাম্মাদ
কৃষ্ণ বুদ্ধ নানক কবীর,-বিশ্বের সম্পদ,
আমাদেরি এঁরা পিতা-পিতামহ, এই আমাদের মাঝে
তাঁদেরি রক্ত কম-বেশী ক’রে প্রতি ধমনীতে রাজে!
আমরা তাঁদেরি সন্তান, জ্ঞাতি, তাঁদেরি মতন দেহ,
কে জানে কখন মোরাও অমনি হয়ে যেতে পারি কেহ।
হেসো না বন্ধু! আমার আমি সে কত অতল অসীম,
আমিই কি জানি-কে জানে কে আছে
আমাতে মহামহিম।''
সাম্যবাদের এই অপ্রতুল প্রকাশ- সে তো কেবল নজরুলেই ।
নজরুল একাধারে যেমন কবি তেমন উনি সুরস্রষ্টা, ছন্দের আবিষ্কারক , রাগ রুপায়নকারী। তেওড়া তালের সাত মাত্রাকে অন্যভাবে সাজিয়ে 'মহুয়া বনে ডাকে পাপিয়া ' গানটি তিনি সাজিয়েছেন 'প্রিয়া ছন্দ ' তালে। আবার 'চৈতালি চাদনী রাতে ' গানটিতে তিনি ব্যাবহার করেছেন স্ব-উদ্ভাবিত 'মধু মাধবিসারং ' রাগ।
পুত্রশোকে কাঁতর কবি লিখেছেন 'শুন্য এ বুকে পাখি মোর আয়, ফিরে আয় ফিরে আয় '- এ অসাধারন গানটি।
'পথহারা পাখি কেদে ফেরে একা ' এ গানটি যেমন অন্তরে দুঃখের ঝড় তোলে আবার নজরুলের 'কারার ঐ লৌহ কপাট ' গানটি তারুন্যের মাদকতাকে ফুঁসলে দেয়।
নজরুল আমার , নজরুল বাঙ্গালির ,নজরুল প্রতিটি মানবপ্রেমী বিশ্ব মানবতাবাদীর সম্পদ।
তুমি রবে নিরবে হৃদয়ে মম...
১১৫তম জন্মবার্ষিকীতে আনন্দদায়ক , প্রেরনাময়, ভালোবাসার এ মানুষটাকে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



