বর্তমান সময়ে ফেসবুক ও ইউটিউব জগতের সারা জাগানো বাংলাদেশী Dr. Jahangir Kabir। যদিও পত্রিকায় তাকে নিয়ে কোন সংবাদ আমার চোখে পরে নাই বা দেখা মেলে নাই "ইত্যাদি"তেও, কেননা আমরা বরাবরই পরশ্রীকাতর, ভিনদেশীদের নিয়ে মাতামাতি করতে সর্বদা পচ্ছন্দ করি। সম্প্রতি তাকে থামানোরও বেশ চেষ্টা চলছে মর্মে একটা পোষ্ট করলে সেটি সোসাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় সেখান থেকেই খবরটায় চোখ পড়লে প্রথমে এড়িয়ে যাই, কয়েকদিন পর আবারও যখন সামনে চলে আসে তখন সংবাদটি পড়ে তার সম্পর্কে জানার আগ্রহে তার ইউটিউব চ্যানেল গুলো থেকে ভিডিও দেখতে থাকি। পাশাপাশি তার বিপক্ষে বা সমালোচনা মূলক পোষ্ট ও ভিডিও চলে আসলে সামনে। তবে তার ডায়েটের ব্যপারটা আমার বেশ ভালো লাগে এবং সকল সমালোচনার দিকে না তাকিয়ে শুরু করি।
আমার ওজন তখন ৯৩ কখনও কখনও ৯৪.৫০। এ ওজন গত একবছর ধরে ধরে রেখেছি অনেক পরিশ্রম করে। মেদ কমানোর ম্যাজিক পানীয় নামে পরিচিত লেবু পানি খেয়েছি টানা ৬/৭মাস (চিনি ছাড়া), রাতে রুটি খেয়েছি প্রায় বছর ২ (২০১৬/২০১৭তখন, ওজন ছিল ৯০-৯১কেজি), দিনে ১বেলা ভাত খেয়ে বাকি দুবেলা রুটি খেয়েছি মাস কয়েক কিন্তু কোন কিছুতেই ওজন আর কমছিল না। আল্লাহ পাকের রহমতে উনার ডায়েট চার্ট মোতাবেক ১৩দিন চলে আজ সকালের ওজন ৮৭কেজি। যেদিন শুরু করেছিলাম সেদিনের ওজন ছিল ৯৪কেজি। প্রথম ২দিন করার পর বাসায় গেস্ট আসল দুই দিন বন্ধ হল, তারপর টানা ৫দিন করলাম, শুক্রবার আমি না খেলে নাকি রান্না করা যায় না তাই বাধ্য হেয়ে খেতে হল তারপর আবার ৬দিন, আবারও শুক্রবার আবারও নাকি খেতেই হবে বাধ্য হয়েই খেতে হল।
সবকিছুই সাথে মানুষের ইচ্ছে শক্তি ও উৎসাহ জরুরী। আমার ক্ষেত্রে শুধু ইচ্ছা শক্তিটাই ছিল কোনরূপ উৎসাহ তো ছিলই বরং তিরষ্কার ও হাসি তামাশায় ভরা ছিল প্রথম ৫দিন, দ্বিতীয় ৬দিন ঝগড়াঝাটি করে কোনরূপ ম্যানেজ করলাম, জানিনা সামনের দিনগুলি কেমন হয়। রান্না রসকি বউ হলে ভোজন রসিক জামাই না পরলে এ সমস্যা থেকে মুক্তির উপায় নেই। উনার ডায়েট চার্টের মজার ব্যপার হল আমি যেখানে আগে ভাত না খেয়ে থাকার কল্পনাও করতে পারতাম না সেখানে দিব্যি ভাত না খেয়ে চলে যাচ্ছে কোন কিছু মনেই হচ্ছে না এবং শরীরে শক্তিরও কোন ঘাটতি নেই। প্রথম কয়েকদিন বেশ খারাপ লেগেছিল কিন্তু পরবর্তীতে আর কোন খারাপ লাগা নেই।
উনার ডায়েট চার্ট মোতাবেক চলতে গিয়ে অনেকেই ঝামেলায় বাধিয়ে ফেলছেন তার মধ্যে মেয়েরা অন্যতম। কারণ অনেক মেয়েরাই মহাকবি নিউটনের অপ্রকাশিত কবিতার শেষ প্যারর আগের প্যারাওও নাকি মুখস্ত রাখে। যেমন তার ডায়েট চার্টে প্রথম ৭দিন ফাস্টিং বা ১ বেলা খেয়ে রোজা রাখার প্রিপারেশন, কিন্তু কিছু কিছু অতি মনের জোড়ে প্রথমেই ১বেলা খেয়ে রোজা রাখতে গিয়েই বেহুশ, দোষ ডাক্টার সাহেবের (স্বয় আমার বাসায়)।
উনার ডায়েটের প্রথম শর্ত রিফাইনিং ভোজ্য তেল (সয়াবিন/রাইস ব্রান্ড/সূর্যমূখী) বাদ দিতে বলছেন যার ফলে তেল কারবারীরা তার পেছনে লাগবেন এটাই স্বাভাবিক, সকল ধরনের প্যাকেট জাত মসলা ও প্যাকেট জাত খাবার পরিহার করতে বলছেন সেখানে প্যাকেটজাত মসলা ও খাবার প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান তার পেছনে লাগবে না তা হয় নাকি। আবার তার চিকিৎসায় ওষুধের ব্যবহার অনেক কম যার ফলে অষুধ ব্যবসায়ীরা নাখোশ বিশেষ করে ইনসুলিন ও ডায়াবেটিকস রোগির যে সমস্ত ওষুধ লাগে সে সমস্ত অষুধ কারবারীরা। শুধু যে অসাধু ব্যবসায়ীরাই পেছনে লাগবে তা নয় অনেক ডাক্টারও তার বিরোধিতা করবে এটাই স্বাভাবিক কেননা আমি যদি ইউটিউব দেখে সুস্থ্য থাকি সেখানে ডাক্টারের স্মরনাপন্ন হব না এটাই স্বাভাবিক ফলে তাদের ব্যবসাও হবে না।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই আগস্ট, ২০২২ দুপুর ১২:৪০